প্রবন্ধ বিনয়ী হও – পর্ব : ২

Golam RabbyVerified member

Knowledge Sharer
ilm Seeker
HistoryLover
Q&A Master
Salafi User
Joined
Jan 3, 2023
Threads
887
Comments
1,040
Reactions
9,944
মহানবী (সা:) বলেন, অবশ্যই আল্লাহ তাআলা আমাকে প্রত্যাদেশ করেছেন যে, 'তোমরা বিনয়ী হও, যাতে কেউ কারো প্রতি অত্যাচার না করে এবং একে অন্যের উপর গর্ব না করে।' [মুসলিম]

তিনি আরো বলেন, “মুমিনগণ সরল-বিনম্র হয়। ঠিক লাগাম দেওয়া উটের মত; তাকে টানা হলে চলতে লাগে এবং পাথরের উপরে বসতে ইঙ্গিত করলে বসে যায়।” [সহীহুল জামে: ৬৬৬৯]

অতএব তুমি বিনয়ী ও সুখী হতে চাইলে আল্লাহ ও তাঁর রসূলের উক্ত উপদেশের উপর আমল কর। আর সেই সাথে কবির এই কবিতার নির্দেশ মেনে নাও:

'হেনভাবে পথ দিয়া করিবে গমন,
না করে সালাম কেহ, না ছাড়ে আসন।
লোক মাঝে হেনভাবে কর অবস্থান,
ব্যস্ত হয়ে কেহ নাহি দেয় উচ্চস্থান।
মসজিদে যাও যদি হেনভাবে যেও,
ইমামতি করিবারে নাহি কহে কেহ।'

মানুষ নিজের কাছে যত ছোট হয়, অপরের চোখে তত বড় হয়। অতএব বড় যদি হতে চাও ছোট হও আগে। যদি সর্বোচ্চ আসন পেতে চাও, তাহলে নিম্নস্থান থেকে আরম্ভ কর।

মহানবী (স) বলেন, “বান্দা (অপরকে) ক্ষমা প্রদর্শন করলে আল্লাহ তার সম্মান বর্ধন করেন। আর আল্লাহর ওয়াস্তে যে ব্যক্তি বিনয়াবনত হয় আল্লাহ তাকে সুউন্নত করেন।” [মুসলিম]

তিনি আরো বলেন, “প্রত্যেক মানুষের মাথায় লাগামের কড়িয়াল (মর্যাদা) আছে এক ফেরেশতা হাতে। যখন মানুষ বিনয়ী হয়, তখন ফেরেশতাকে বলা হয় যে, তুমি ওর (কড়িয়াল তুলে ধর, অর্থাৎ ওকে নিয়ন্ত্রণে রাখ এবং ওর) মর্যাদা উন্নীত কর। আর যখন সে অহংকারী হয়, তখন তাকে বলা হয় যে, ওর (কড়িয়াল ছেড়ে দাও, অর্থাৎ ওকে নিয়ন্ত্রণে রেখো না এবং ওর) মর্যাদা অবনত কর।” [সহীহুল জামে: ৫৬৭৫]

বিনয়ের সুফল স্বরূপ মানুষের ভালোবাসা পাওয়া যায়, বিনয়ী মধুরভাষীকে সবাই প্রেম দিতে চায়। আর অল্প নিয়ে তুষ্ট হলে মনের আরাম পাওয়া যায়। অতএব তুমি সমুদ্রের মত প্রশস্ত হৃদয়, সূর্যের মত উদার এবং মাটির মত নরম ও বিনয়ী হও।

ধানের যে শিষগুলিতে চালে পরিপুষ্ট ধান থাকে সেগুলি মাটির দিকে ঝুঁকে থাকে। কিন্তু যেগুলিতে চাল থাকে না; বরং খালি থাকে সেগুলিই উপর দিকে মাথা তুলে দাঁড়িয়ে থাকে।

ফলের ভারে বৃক্ষ নত হয়, নিচু মেঘে বৃষ্টি বর্ষণ হয়। অতএব তোমার জ্ঞান, শক্তি বা সম্পদ বৃদ্ধি হলে তোমার বিনয় বৃদ্ধি হওয়া উচিত। যেহেতু বিদ্যার ভূষণ হল বিনয়, শক্তির ভূষণ হল ক্ষমাশীলতা এবং ধনবতার অলংকার হল দানশীলতা।

তোমার থেকে যারা বড় তাদের কাছে বিনয় প্রকাশ করা তোমার কর্তব্য, তোমার যারা সমবয়সী তাদের কাছে বিনয় প্রকাশ করা তোমার ভদ্রতা। আর তোমার থেকে যারা ছোট তাদের কাছে বিনয় প্রকাশ করা তোমার
মহত্ত্বের পরিচয়

আর জেনে রেখো যে, গর্ব হল আল্লাহর পোশাক, বিনয় পুরুষের পোশাক এবং লজ্জাশীলতা নারীর পোশাক ।
বিনয়ী মানুষের বহু নিদর্শন আছে।

তুমি বিনয়ী হতে চাইলে নিম্নের উপদেশ গ্রহণ কর :

  • পথ চললে অপরকে রাস্তা দেবে। নিজে পিছনে হাঁটবে। গাড়িতে অপরকে সীট দেবে।
  • মেহমানকে অগ্রসর হয়ে স্বাগতম জানাবে। বিদায়ের সময় পিছনে পিছনে দরজা পর্যন্ত যাবে।
  • সাক্ষাতে আগে সালাম দেওয়ার চেষ্টা করবে।
  • শিশুদেরকেও সালাম দেবে।
  • অনেক জানলেও আদবে না জানার মত বসবে।
  • নিজের জন্য কারো দাঁড়ানোকে পছন্দ করবে না।
  • স্বমতবিরোধী হলেও সকল মানুষের সাথে স্থিতমুখে কথা বলবে।
  • সকলের কথার উত্তর দেবে।
  • ভুল করে ফেললে তা স্বীকার করবে। যেহেতু যে ভুল করে ভুল স্বীকার করে, তার মর্যাদা ক্ষুন্ন হয় না। বরং তার মহত্ব বেশী প্রমাণিত হয়।
  • অন্যের বোঝা বহে দেবে।
  • স্বমতবিরোধী হলেও গরীব ও দুর্বল শ্রেণীর মানুষদের সাথে বসবে।
  • মজলিসে যা আসবে তাই খাবে। 'এটা খাই না, ওটা খাই না' বলে নাক সিঁটকাবে না।
  • হেলান দিয়ে খাবে না।
  • চাকর বা দাসের সাথেও খাবে। মহানবী (স) বলেন, “সে ব্যক্তি অহংকারী নয়, যার সাথে তার খাদেম আহার করে, বাজারে গাধায় চড়ে এবং ছাগী বেঁধে দোহন করে।" [সহীহুল জামে: ৫৫২৭]
  • অপরের সামনে পায়ের উপর পা চাপিয়ে বসবে না এবং পা দুলাবে না।
  • স্বাভাবিকভাবে মিষ্টি কথা বলবে।
  • সংসারের কাজে স্ত্রীকে সহযোগিতা করবে।
  • নিজের খিদমত নিজে করবে।
  • সফরে সঙ্গীদের সমান কাজ করবে।

[বই- সুখের সন্ধান, লেখক: শাইখ আব্দুল হামীদ ফাইজী আল মাদানী; প্রকাশনী: ওয়াহীদিয়া ইসলামিয়া লাইব্রেরি]
 
আল্লাহ উত্তম বিনিময় দান কররুক
 
মহানবী (সা:) বলেন, অবশ্যই আল্লাহ তাআলা আমাকে প্রত্যাদেশ করেছেন যে, 'তোমরা বিনয়ী হও, যাতে কেউ কারো প্রতি অত্যাচার না করে এবং একে অন্যের উপর গর্ব না করে।' [মুসলিম]

তিনি আরো বলেন, “মুমিনগণ সরল-বিনম্র হয়। ঠিক লাগাম দেওয়া উটের মত; তাকে টানা হলে চলতে লাগে এবং পাথরের উপরে বসতে ইঙ্গিত করলে বসে যায়।” [সহীহুল জামে: ৬৬৬৯]

অতএব তুমি বিনয়ী ও সুখী হতে চাইলে আল্লাহ ও তাঁর রসূলের উক্ত উপদেশের উপর আমল কর। আর সেই সাথে কবির এই কবিতার নির্দেশ মেনে নাও:

'হেনভাবে পথ দিয়া করিবে গমন,
না করে সালাম কেহ, না ছাড়ে আসন।
লোক মাঝে হেনভাবে কর অবস্থান,
ব্যস্ত হয়ে কেহ নাহি দেয় উচ্চস্থান।
মসজিদে যাও যদি হেনভাবে যেও,
ইমামতি করিবারে নাহি কহে কেহ।'

মানুষ নিজের কাছে যত ছোট হয়, অপরের চোখে তত বড় হয়। অতএব বড় যদি হতে চাও ছোট হও আগে। যদি সর্বোচ্চ আসন পেতে চাও, তাহলে নিম্নস্থান থেকে আরম্ভ কর।

মহানবী (স) বলেন, “বান্দা (অপরকে) ক্ষমা প্রদর্শন করলে আল্লাহ তার সম্মান বর্ধন করেন। আর আল্লাহর ওয়াস্তে যে ব্যক্তি বিনয়াবনত হয় আল্লাহ তাকে সুউন্নত করেন।” [মুসলিম]

তিনি আরো বলেন, “প্রত্যেক মানুষের মাথায় লাগামের কড়িয়াল (মর্যাদা) আছে এক ফেরেশতা হাতে। যখন মানুষ বিনয়ী হয়, তখন ফেরেশতাকে বলা হয় যে, তুমি ওর (কড়িয়াল তুলে ধর, অর্থাৎ ওকে নিয়ন্ত্রণে রাখ এবং ওর) মর্যাদা উন্নীত কর। আর যখন সে অহংকারী হয়, তখন তাকে বলা হয় যে, ওর (কড়িয়াল ছেড়ে দাও, অর্থাৎ ওকে নিয়ন্ত্রণে রেখো না এবং ওর) মর্যাদা অবনত কর।” [সহীহুল জামে: ৫৬৭৫]

বিনয়ের সুফল স্বরূপ মানুষের ভালোবাসা পাওয়া যায়, বিনয়ী মধুরভাষীকে সবাই প্রেম দিতে চায়। আর অল্প নিয়ে তুষ্ট হলে মনের আরাম পাওয়া যায়। অতএব তুমি সমুদ্রের মত প্রশস্ত হৃদয়, সূর্যের মত উদার এবং মাটির মত নরম ও বিনয়ী হও।

ধানের যে শিষগুলিতে চালে পরিপুষ্ট ধান থাকে সেগুলি মাটির দিকে ঝুঁকে থাকে। কিন্তু যেগুলিতে চাল থাকে না; বরং খালি থাকে সেগুলিই উপর দিকে মাথা তুলে দাঁড়িয়ে থাকে।

ফলের ভারে বৃক্ষ নত হয়, নিচু মেঘে বৃষ্টি বর্ষণ হয়। অতএব তোমার জ্ঞান, শক্তি বা সম্পদ বৃদ্ধি হলে তোমার বিনয় বৃদ্ধি হওয়া উচিত। যেহেতু বিদ্যার ভূষণ হল বিনয়, শক্তির ভূষণ হল ক্ষমাশীলতা এবং ধনবতার অলংকার হল দানশীলতা।

তোমার থেকে যারা বড় তাদের কাছে বিনয় প্রকাশ করা তোমার কর্তব্য, তোমার যারা সমবয়সী তাদের কাছে বিনয় প্রকাশ করা তোমার ভদ্রতা। আর তোমার থেকে যারা ছোট তাদের কাছে বিনয় প্রকাশ করা তোমার
মহত্ত্বের পরিচয়

আর জেনে রেখো যে, গর্ব হল আল্লাহর পোশাক, বিনয় পুরুষের পোশাক এবং লজ্জাশীলতা নারীর পোশাক ।
বিনয়ী মানুষের বহু নিদর্শন আছে।

তুমি বিনয়ী হতে চাইলে নিম্নের উপদেশ গ্রহণ কর :

. পথ চললে অপরকে রাস্তা দেবে। নিজে পিছনে হাঁটবে। গাড়িতে অপরকে সীট দেবে।
. মেহমানকে অগ্রসর হয়ে স্বাগতম জানাবে। বিদায়ের সময় পিছনে পিছনে দরজা পর্যন্ত যাবে।
.সাক্ষাতে আগে সালাম দেওয়ার চেষ্টা করবে।
. শিশুদেরকেও সালাম দেবে।
. অনেক জানলেও আদবে না জানার মত বসবে।
. নিজের জন্য কারো দাঁড়ানোকে পছন্দ করবে না।
. স্বমতবিরোধী হলেও সকল মানুষের সাথে স্থিতমুখে কথা বলবে।
. সকলের কথার উত্তর দেবে।
.ভুল করে ফেললে তা স্বীকার করবে। যেহেতু যে ভুল করে ভুল স্বীকার করে, তার মর্যাদা ক্ষুন্ন হয় না। বরং তার মহত্ব বেশী প্রমাণিত হয়।
. অন্যের বোঝা বহে দেবে।
. স্বমতবিরোধী হলেও গরীব ও দুর্বল শ্রেণীর মানুষদের সাথে বসবে।
. মজলিসে যা আসবে তাই খাবে। 'এটা খাই না, ওটা খাই না' বলে নাক সিঁটকাবে না।
. হেলান দিয়ে খাবে না।
. চাকর বা দাসের সাথেও খাবে। মহানবী (স) বলেন, “সে ব্যক্তি অহংকারী নয়, যার সাথে তার খাদেম আহার করে, বাজারে গাধায় চড়ে এবং ছাগী বেঁধে দোহন করে।" [সহীহুল জামে: ৫৫২৭]
. অপরের সামনে পায়ের উপর পা চাপিয়ে বসবে না এবং পা দুলাবে না।
. স্বাভাবিকভাবে মিষ্টি কথা বলবে।
. সংসারের কাজে স্ত্রীকে সহযোগিতা করবে।
. নিজের খিদমত নিজে করবে।
. সফরে সঙ্গীদের সমান কাজ করবে।

[বই- সুখের সন্ধান, লেখক: শাইখ আব্দুল হামীদ ফাইজী আল মাদানী; প্রকাশনী: ওয়াহীদিয়া ইসলামিয়া লাইব্রেরি]
সুবহানাল্লাহ
 
Back
Top