• আসসালামু আলাইকুম, খুব শীঘ্রই আমাদের ফোরামে মেজর কিছু চেঞ্জ আসবে যার ফলে ফোরামে ১-৩ দিন আপনারা প্রবেশ করতে পারবেন না। উক্ত সময়ে আপনাদের সকলকে ধৈর্য ধারণের অনুরোধ জানাচ্ছি।
‼️ পোস্টটি সুন্দরভাবে দেখতে এখানে ক্লিক করুন।‼️

বানর সদৃশ মানুষই কি আমাদের পূর্ব পুরুষ? - বিবর্তনবাদের বিভ্রান্তি ৬

Habib Bin Tofajjal

If you're in doubt ask الله.

Forum Staff
Moderator
Generous
ilm Seeker
Uploader
Exposer
HistoryLover
Q&A Master
Salafi User
Threads
690
Comments
1,222
Solutions
17
Reactions
7,100
Credits
5,773
১৯৬৫ সালের ২৯শে মে প্রকাশিত Science News Letter এ সম্পর্কে বলেছে, ‘বিবর্তনবাদীরা আমাদের পূর্ব পুরুষকে দেখেছে লোমশ, লেজবিহীন এবং বর্তমান কালের দীর্ঘবাহু বানরের তুলনায় খানিকটা বড়। ওগুলির ছিল ঘূর্ণায়মান মুখাবয়বীয় মাংসপেশী, মানসিক উচ্চতা কিছুই নয়। ওরা দক্ষ আরোহী ছিল, জীবনের বেশীর ভাগ সময় তারা গাছেই অতিবাহিত করেছে। যমীনে ওরা আধাসোজা আকৃতিতে দাঁড়াতে পারত, তারা চার পায়ে ভয় দিয়ে হাঁটতে পারত, পায়ে দৌঁড়াতে পারত। এই আধা বন মানুষ বাহ্যত কথা বলতে পারত না’ (১১৬)।

ক্রমবিকাশবাদীরা দাবী করেছেন যে, পশু ও মানুষের মধ্যম পর্যায় বা স্তর হ’ল ‘প্রাগৈতিহাসিক’ মানুষ, যা অধুনালুপ্ত (১১৫)। কিন্তু প্রশ্ন হ’ল, বানরের ন্যায় একটা অনুন্নত প্রাণী কেন বেঁচে থাকবে এবং কল্পনায় ধরে নেওয়া সকল ‘উন্নত’ ও ‘প্রাগৈতিহাসিক’ মানুষ কেন বিলুপ্ত হয়ে যাবে? এসব প্রশ্নের উত্তর তারা দেননি।

ভবিষ্যতের মানুষ :

আমাদের প্রশ্ন বানর কিভাবে রূপান্তরিত হয়ে মানুষ হ’ল? যদি বলা হয়, এক সময় বানর-হনুমান সর্বদা গাছে থাকত। তাই চার হাত-পা ও লেজের ব্যবহার অপরিহার্য ছিল। পরবর্তীতে সুযোগ-সুবিধা বৃদ্ধি পাওয়ায় এগুলির ব্যবহার কমে যায়। ফলে লেজ খসে পড়ে। এরপর হাতের ব্যবহার কমে যাওয়ায় তা ক্রমে সরু হয়ে বর্তমান রূপ ধারণ করেছে। এভাবে বানর থেকে আমরা মানুষ হয়েছি। একথা যদি সত্য হয়, তাহ’লে তো ভবিষ্যৎ মানুষের ছবি ড. মুহাম্মাদ শহীদুল্লাহ (১৮৮৫-১৯৬৯) যেভাবে এঁকেছেন সেটাই সত্য হবে। আর তা হ’ল, মানুষের হাত-পায়ের ব্যবহার কমতে কমতে এক সময় সেগুলি দেহের চারটি ক্ষুদ্র অঙ্গ হিসাবে ঝুলতে থাকবে। চিন্তাশক্তি ক্রমে বৃদ্ধি পেতে থাকায় মাথা বড় হয়ে যাবে। ফলে পুরা মানবদেহ একটি ফুটবলের আকার ধারণ করবে। অতঃপর তখন বেগুন গাছের নীচে হাট বসবে’। হ্যাঁ ক্রমবিকাশ তত্ত্ব সঠিক হ’লে সেটা হওয়াটা অপরিহার্য। অথচ বিগত হাযার বছরেও এমনটি দেখা যায়নি। অতএব এ তত্ত্ব অবাস্তব কল্পনা মাত্র।

১৯৬৫ সালের Primates জার্নালে একথা বড় বড় শিরোনামে এসেছে, From Ape toward man ‘বানর থেকে মানুষের দিকে’। সত্যি কথা, ফসিল এবং মানুষের ক্রমবিকাশ পুনর্গঠনের উদ্দেশ্যে পেশ করা আনুসংগিক প্রমাণাদি বিজ্ঞানের একটা মিথ্যা ছলনা মাত্র। নিছক আন্দাজ-অনুমান ও আজগুবি ধরনের জোর প্রয়োগের ভিত্তিতে এটাকে গড়ে তোলা হয়েছে (১৩৩)।

ক্রমবিকাশবাদীরা মানুষের ক্রমবিকাশ প্রমাণের উদ্দেশ্যে দাবী করেছেন যে, মানবদেহ অদৃশ্যপ্রায় প্রাণীর চিহ্নসূচক। তাঁদের ভাষায় 'Vestigial organ'। তাঁরা বলেন, দেহের এককালে একটা ব্যবহার ছিল; কিন্তু বর্তমানে ক্রমবিকাশ
প্রক্রিয়ার অগ্রবর্তিতার কারণে তার কোন প্রয়োজন নেই। তারই শেষ পদচিহ্ন হ’ল এই মানব দেহ। কিন্তু Reader`s Digest পত্রিকায় ১৯৬৬ সালের নভেম্বর সংখ্যায় The Useless Gland that Guards our Health শিরোনামে প্রকাশিত প্রবন্ধে বলা হয়েছে, ‘ঘাড়ের একেবারে নীচে, পাঁজর হাড়ের পিছনে অবস্থিত ফ্যাকাশে লাল-রূপালী বর্ণের সূক্ষ্ম বস্ত্রবৎ গ্রথিত কোষ সমূহের প্রকৃত কাজ যে কি, তা নিয়ে চিকিৎসাবিদরা অন্তত ২০০০ বছর ধরে রীতিমত দিশেহারা হয়ে আছেন। এটার নাম ‘থাইমাস গ্লাণ্ড’ (Thymus gland)। আধুনিক দেহতত্ত্ববিদরা এটাকে একটা অতিরিক্ত জিনিস মনে করেছেন, যেন ওটার কোন কাজ বা ব্যবহারই নেই। ওটা বুঝি অপ্রয়োজনীয়। অদৃশ্যপ্রায় প্রাণীর চিহ্ন-অঙ্গ, সূচনা পর্বে তার মূল উদ্দেশ্য বলে বাস্তবিকই কিছু থেকে থাকলেও বর্তমানে তা হারিয়ে ফেলেছে’... (১৩৩-৩৪)।

কিন্তু বর্তমানে বিজ্ঞানীরা প্রমাণ করেছেন যে, অপ্রয়োজনীয় হওয়া তো দূরের কথা ‘থাইমাস গ্লাণ্ড’ প্রকৃতপক্ষে অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ লালাগ্রন্থি। তা জটিল অনাক্রম্য ব্যবস্থা নিয়ন্ত্রিত করে ও সংক্রামক ব্যাধি থেকে আমাদের রক্ষা করে’। একইভাবে তলপেটের ‘এপেণ্ডিক্স’ (Appendix) নামক স্বল্প দৈর্ঘ্যরে নলাকার অঙ্গটিকে অপ্রয়োজনীয় মনে করে অনেক চিকিৎসক ওটাকে কেটে ফেলার পরামর্শ দেন। অথচ সৃষ্টিকর্তা আল্লাহ মানবদেহের কোন কিছুই অপ্রয়োজনীয় সৃষ্টি করেননি (আলে ইমরান ৩/১৯১)।

বস্তুতঃ প্রকৃত বৈজ্ঞানিক তত্ত্ব ও তথ্য পশু থেকে মানুষে ক্রমবিকশিত হয়ে আসা প্রমাণ করে না। বরং মানুষ সম্পূর্ণ ভিন্ন ও স্বতন্ত্রভাবে অন্যান্য জীব ও প্রাণীকূল থেকে ভিন্নতর অস্তিত্ব ও উদ্দেশ্য নিয়ে সৃষ্ট হওয়ার কথাই অকাট্যভাবে প্রমাণ করে। সে শুরুতে যেমন ছিল, আজও ঠিক তেমনি রয়েছে অপরিবর্তিতভাবে। কোন জন্তু বা প্রাণী-জীবন সোজাসুজি অতিক্রম করে আসেনি কোনদিনই। কেননা তার উঘঅ এটা কখনো হ’তে দিতে পারে না। মানুষ তার সৃষ্টিগত প্রজাতীয় পরিমণ্ডলেই রয়ে গেছে। চিরকাল তাই ছিল এবং ভবিষ্যতেও চিরদিন তাইই থাকবে। এর ব্যতিক্রম কখনই ঘটবে না, ঘটতে পারে না’। আল্লাহ বলেন, ‘বস্তুতঃ তুমি কখনো আল্লাহর রীতির পরিবর্তন পাবে না এবং তুমি কখনো আল্লাহর রীতির কোন ব্যতিক্রম পাবে না’ (ফাত্বির ৩৫/৪৩)।

চলবে...


 

Share this page