عن أنس بن مالك عن النبي في قصة الإسراء أنه قال: «ثم انطلق بي جبريل حتى انتهى بي إلى سدرة المنتهى، فغشيها ألوانٌ لا أدري ما هي، قال: ثم دخلت الجنة، فإذا فيها جنابذ([1]) اللؤلؤ، وإذا ترابها المسك ».
“তারপর জিবরীল আলাইহিস সালাম আমাকে নিয়ে চলতে থাকে। সিদরাতুল মুনতাহা পর্যন্ত পৌঁছলে তাকে কতক রঙ এসে ডেকে ফেলে। আমি বুঝতে পারিনি এটি কি? তিনি বলেন, ‘তারপর আমি জান্নাতে প্রবেশ করলাম’। জান্নাতকে আমি দেখতে পেলাম, মণি-মুক্তার গম্বুজ। আরো দেখতে পেলাম, জান্নাতের মাটি হল, মিসক।” [2]
عن أَبِي هُرَيْرَةَ، عَنْ رَسُولِ اللَّهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ قَالَ: «لَمَّا خَلَقَ اللَّهُ الجَنَّةَ وَالنَّارَ أَرْسَلَ جِبْرِيلَ إِلَى الجَنَّةِ فَقَالَ: انْظُرْ إِلَيْهَا وَإِلَى مَا أَعْدَدْتُ لِأَهْلِهَا فِيهَا... "، ثم قَالَ: اذْهَبْ إِلَى النَّارِ فَانْظُرْ إِلَيْهَا وَإِلَى مَا أَعْدَدْتُ لِأَهْلِهَا فِيهَا، فَإِذَا هِيَ يَرْكَبُ بَعْضُهَا بَعْضًا.. »
আবু হুরাইরা রাদিয়াল্লাহু ‘আনহু’ হতে বর্ণিত, রাসূল সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লাম’ বলেন, “আল্লাহ জান্নাত ও জাহান্নাম সৃষ্টি করার পর জিবরীল আলাইহিস সালামকে জান্নাতে পাঠান এবং বলেন, তুমি জান্নাতের দিকে তাকাও এবং দেখ আমি জান্নাতে জান্নাতিদের জন্য কি কি তৈরি করে রেখেছি। তারপর সে জান্নাতে প্রবেশ করে এবং আল্লাহ জান্নাতিদের জন্য যা কিছু তৈরি করে রেখেছেন তা দেখেন। তারপর আল্লাহ বলেন, তুমি এখন জাহান্নামে প্রবেশ কর, তারপর সে জাহান্নামে প্রবেশ করল, আল্লাহ বললেন, দেখ আমি জাহান্নামীদের জন্য কি কি তৈরি করে রেখেছি। তারপর সে জাহান্নামের দিকে তাকিয়ে দেখে জাহান্নামের এক অংশ অপর অংশের উপর দাপাদাপি করছে।” [3]
وعن ابن عمر رضي الله عنهما أن رسول الله قال: « إن أحدكم إذا مات عرض عليه مقعده بالغداة والعشي، إن كان من أهل الجنة فمن أهل الجنة، وإن كان من أهل النار فمن أهل النار، يقال: هذا مقعدك حتى يبعثك الله إليه يوم القيامة »
“যখন তোমাদের কেউ মারা যায় তখন সকাল বিকাল তার অবস্থান কোথায় হবে তা তুলে ধরা হয়। যদি লোকটি জান্নাতী হয়, তার জান্নাতের অবস্থান তাকে দেখানো হয়, আর যদি লোকটি জাহান্নামী হয়, তবে তাকে জাহান্নামের অবস্থান দেখানো হয়। তাকে বলা হয়, এ তোমার অবস্থান আল্লাহ রাব্বুল আলামীন কিয়ামতের দিন তোমাকে এখানে প্রেরণ করবেন।” [4]
কা’ব ইবন মালেক রাদিয়াল্লাহু ‘আনহু’ হতে বর্ণিত, তিনি বলেন, রাসূল সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লাম’ বলেন,
«إِنَّمَا نَسَمَةُ الْمُؤْمِنِ طَائِرٌ يَعْلُقُ فِي شَجَرِ الْجَنَّةِ حَتَّى يُرْجِعَهُ اللهُ إِلَى جَسَدِهِ يَوْمَ يَبْعَثُهُ»
“মুমিনের আত্মা জান্নাতে পাখির মত, জান্নাতের গাছের সাথে কিয়ামতের দিন পর্যন্ত ঝুলতে থাকবে। তারপর যখন কিয়ামতের দিন সমগ্র মানুষকে পুনরায় জীবন দান করা হবে, তখন আল্লাহ রাব্বুল আলামীন তাদের রুহকে তাদের দেহে আবার ফেরত দেবেন।” [5]
عن عَبْدِ اللهِ بْنِ مُرَّةَ، عَنْ مَسْرُوقٍ، قَالَ: سَأَلْنَا عَبْدَ اللهِ عَنْ هَذِهِ الْآيَةِ: ﴿ وَلَا تَحۡسَبَنَّ ٱلَّذِينَ قُتِلُواْ فِي سَبِيلِ ٱللَّهِ أَمۡوَٰتَۢاۚ بَلۡ أَحۡيَآءٌ عِندَ رَبِّهِمۡ يُرۡزَقُونَ ١٦٩ ﴾ [ال عمران: ١٦٩] قَالَ: أَمَا إِنَّا قَدْ سَأَلْنَا عَنْ ذَلِكَ، فَقَالَ: «أَرْوَاحُهُمْ فِي جَوْفِ طَيْرٍ خُضْرٍ، لَهَا قَنَادِيلُ مُعَلَّقَةٌ بِالْعَرْشِ، تَسْرَحُ مِنَ الْجَنَّةِ حَيْثُ شَاءَتْ، ثُمَّ تَأْوِي إِلَى تِلْكَ الْقَنَادِيلِ، فَاطَّلَعَ إِلَيْهِمْ رَبُّهُمُ اطِّلَاعَةً»، فَقَالَ: " هَلْ تَشْتَهُونَ شَيْئًا؟ قَالُوا: أَيَّ شَيْءٍ نَشْتَهِي وَنَحْنُ نَسْرَحُ مِنَ الْجَنَّةِ حَيْثُ شِئْنَا، فَفَعَلَ ذَلِكَ بِهِمْ ثَلَاثَ مَرَّاتٍ، فَلَمَّا رَأَوْا أَنَّهُمْ لَنْ يُتْرَكُوا مِنْ أَنْ يُسْأَلُوا، قَالُوا: يَا رَبِّ، نُرِيدُ أَنْ تَرُدَّ أَرْوَاحَنَا فِي أَجْسَادِنَا حَتَّى نُقْتَلَ فِي سَبِيلِكَ مَرَّةً أُخْرَى..."
আব্দুল্লাহ বিন মাসউদ রাদিয়াল্লাহু ‘আনহুকে যখন নিন্মোক্ত আয়াত সম্পর্কে জিজ্ঞাসা করা হল,
﴿ وَلَا تَحۡسَبَنَّ ٱلَّذِينَ قُتِلُواْ فِي سَبِيلِ ٱللَّهِ أَمۡوَٰتَۢاۚ بَلۡ أَحۡيَآءٌ عِندَ رَبِّهِمۡ يُرۡزَقُونَ ١٦٩ ﴾ [ال عمران: ١٦٩]
“যারা আল্লাহর পথে নিহত হয়েছে তাদেরকে কখনো তোমরা মৃত মনে করোনা বরং তাঁরা জীবিত তাঁদের প্রতিপালকের কাছ থেকে তারা জীবিকা প্রাপ্ত।” [সূরা আলে-ইমরান: ১৬৯] তখন তিনি বললেন, আমরাও এ ব্যাপারে রাসূল সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লামকে জিজ্ঞাসা করেছিলাম। তিনি বলেছেন, “শহীদদের রুহসমূহ সবুজ পাখির অভ্যন্তরে, তাদের রয়েছে আরশের সাথে ঝুলানো প্রজ্জলিত বাতি, তারা তাদের ইচ্ছা মত যেখানে ইচ্ছা সেখানে ভ্রমণ করতে থাকে তারপর তারা আবার ঐ সব বাতির নিকট চলে আসে। একবার তাদের প্রভূ তাদের দিকে তাকালেন এবং জিজ্ঞাসা করলেন, তোমাদের কি কোন আকাংখা আছে? জবাবে তারা বললো, আমাদের আর কি আকাংখা থাকতে পারে আমরা তো যথেচ্ছভাবে জান্নাতে বিচরণ করছি। আল্লাহ তা‘আলা তাদের সাথে এরূপ তিন তিনবার করলেন। যখন তারা দেখলো, জবাব না দিয়ে প্রশ্ন থেকে রেহাই পাচ্ছে না তখন তারা বললোঃ হে আমাদের রব! আমাদের আকাংখা হয় যদি আমাদের রুহ গুলোকে আমাদের দেহসমূহে ফিরিয়ে দিতেন আর পুনরায় আমরা আপনার পথে নিহত হতে পারতাম।” [6]
লেখক : সা‘ঈদ ইবন আলী ইবন ওয়াহাফ আল-ক্বাহত্বানী
অনুবাদ: আব্দুল্লাহ আল-মামুন আল-আযহারী
সম্পাদনা: মোহাম্মদ মানজুরে ইলাহী
অনুবাদ: আব্দুল্লাহ আল-মামুন আল-আযহারী
সম্পাদনা: মোহাম্মদ মানজুরে ইলাহী
[1]. এ শব্দটির অর্থ গব্মুজ এটি বহু বচন, এর এক বচন جنبذة বুখারি নবীদের আলোচনা অধ্যায়ে শব্দটি উল্লেখ করা হয়েছে। এ হাদীসটি আহলে সুন্নাত ওয়াল জামাতের পক্ষে প্রমাণস্বরূপ। তারা বলেন, জান্নাত ও জাহান্নাম বর্তমানে সৃজিত এবং জান্নাত আসমানে। দেখুন: ইমাম মুসলিম, শরহে নাওয়াওয়ী, পৃ: ৫৭৯/৩।
[2] মুত্তাফাকুন আলাইহ : বুখারী: হাদিস নং: ৩৪৯, মুসলিম, হাদীস নং: ১৬২।
[3]. তিরমিযি, হাদীস নং ২৫৬০। নাসায়ী, হাদীস নং: ৩৭৭২।
[4] বুখারী, হাদীস নং ১৩৭৯, মুসলিম, হাদীস নং ২৮৬৬।
[5] মুসনাদে আহমদ: ৩/৪৫৫, নাসায়ী: হাদীস নং ২০৭১।
[6] মুসলিম, হাদীস নং: ১৮৮৭।