‼️ পোস্টটি সুন্দরভাবে দেখতে এখানে ক্লিক করুন।‼️

প্রশ্নোত্তর প্রশ্ন: (৪০৫) সাওম অবস্থায় মুসাফির যদি মক্কায় পৌঁছে তবে ওমরা আদায় করতে শক্তি পাওয়ার জন্য সাওম ভঙ্গ করা জায়েয হবে কী?

FORUM BOT

Doing Automated Jobs

Threads
4,134
Comments
4,353
Solutions
1
Reactions
34,836
Credits
24,212
উত্তর: নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম মক্কা বিজয়ের সময় রামাযান মাসের বিশ তারিখে মক্কায় প্রবেশ করেন। সে সময় তিনি সাওম ভঙ্গ অবস্থায় ছিলেন। সেখানে দু দু রাকাত করে সালাত কসর আদায় করেছেন। আর মক্কাবাসীদের বলেছেন, “হে মক্কাবাসীগণ! তোমরা সালাত পূর্ণ করে নাও। কেননা আমরা মুসাফির।”[1] সহীহ বুখারীতে একথাও প্রমাণিত হয়েছে, তিনি (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম) মাসের অবশিষ্ট দিনগুলো সাওম ভঙ্গ অবস্থাতেই অতিবাহিত করেছেন। কেননা তিনি ছিলেন মুসাফির।

তাই উমরাকারী মক্কা পৌঁছলেই তার সফর শেষ হয়ে যায় না। যদি সাওম ভঙ্গ অবস্থায় মক্কা পৌঁছে থাকে, তবে দিনের বাকী অংশ পানাহার ত্যাগ করা আবশ্যক নয়। কিন্তু বর্তমান যুগে যেহেতু সফর আরামদায়ক তাই সাওম রাখাও তেমন কষ্টকর নয়। সেহেতু কেউ যদি সাওম রেখে মক্কায় পৌঁছে অত্যধিক ক্লান্তি অনুভব করে, তখন চিন্তা করে আমি কি সাওম পূর্ণ করে ইফতারের পর ওমরার কাজ শুরু করবো? নাকি সাওম ভঙ্গ করব এবং সর্বপ্রথম ওমরা আদায় করে নিব?

এ অবস্থায় আমরা তাকে বলব, আপনার জন্য উত্তম হচ্ছে, সুস্থাবস্থায় ওমরা পালন করার জন্য সাওম ভঙ্গ করা। কেননা হজ-ওমরা আদায়কারীর জন্য সুন্নাত হচ্ছে, উক্ত উদ্দেশ্যে মক্কা আগমণ করলে, সেখানে পৌঁছার সাথে সাথেই হজ-ওমরার কাজে আত্মনিয়োগ করা। নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম ইহরাম অবস্থায় মক্কা আগমণ করলে দ্রুত মসজিদে হারামে গমণ করতেন। এমনকি আরোহীকে মসজিদের নিকটবর্তী স্থানে বসাতেন।

অতএব, উমরাকারীর জন্য উত্তম হচ্ছে, দিনের বেলায় কর্মশক্তি পাওয়ার উদ্দেশ্যে সাওম ভঙ্গ করে ওমরা পালন করা। রাত পর্যন্ত অপেক্ষা না করা।

সহীহ সূত্রে প্রমাণিত হয়েছে, নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম মক্কা বিজয়ের জন্য যখন সফরে ছিলেন এবং তিনি সাওম অবস্থায় ছিলেন, তখন কতিপয় লোক এসে অভিযোগ করল, সাওম রাখতে তাদের খুব কষ্ট হচ্ছে। আপনি কি করছেন এটা দেখার অপেক্ষায় আছে তারা। তখন সময়টি ছিল আছরের পর। নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম পানি চাইলেন এবং পান করলেন। লোকেরা সবাই দেখল।[2] অতএব, নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম সফর অবস্থায় দিনের শেষ প্রহরে সাওম ভঙ্গ করলেন। একাজ যে জায়েয একথা প্রমাণ করার উদ্দেশ্যে তিনি এরূপ করেছেন। উল্লেখ্য যে, সফরে কষ্ট স্বীকার করে কিছু লোক যে সিয়াম পালন করতেই থাকে নিঃসন্দেহে তা সুন্নাহ্ বিরোধী কাজ। তার ব্যাপারেই নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন, لَيْسَ مِنَ الْبِرِّ الصَّوْمُ فِي السَّفَر “সফর অবস্থায় সিয়াম পালন করা কোনো পূণ্যের কাজ নয়।”[3]



[1] সহীহ বুখারী, অধ্যায়: মাগাযী, অনুচ্ছেদ: রামাযান মাসে মক্কা বিজয়ের যুদ্ধ।
[2] সহীহ মুসলিম, অধ্যায়: সিয়াম, অনুচ্ছেদ: পাপের সফর না হলে রামাযান মাসে মুসাফিরের সিয়াম রাখা ও ভঙ্গ করা উভয়টিই বৈধ।

[3] সহীহ বুখারী, অধ্যায়: সিয়াম, অনুচ্ছেদ: কঠিন গরমে যাকে ছাঁয়া দেওয়া হচ্ছিল তার সম্পর্কে নবী সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লামের বাণী: “সফর অবস্থায় সিয়াম পালন করা কোন পূণ্যের কাজ নয়।”; মুসলিম, অধ্যায়: সিয়াম, অনুচ্ছেদ: পাপের সফর না হলে রামাযান মাসে মুসাফিরের সিয়াম রাখা ও ভঙ্গ করা উভয়টিই বাধা।

সূত্র: ফাতাওয়া আরকানুল ইসলাম। লেখক: শাইখ মুহাম্মাদ বিন সালিহ আল-উসাইমীন (রহঃ)।
 

Share this page