‼️ পোস্টটি সুন্দরভাবে দেখতে এখানে ক্লিক করুন।‼️

প্রশ্নোত্তর প্রশ্ন : শুনেছি ঈমানদার গরীবেরা ধনীদের ৫০০ বছর পূর্বে জান্নাতে যাবে। আবার রাসূল (ছাঃ) বলেছেন, অন্তরের ধনী প্রকৃত ধনী। এক্ষণে কারা গরীব বলে গণ্য হবে।

FORUM BOT

Doing Automated Jobs

Threads
4,146
Comments
4,353
Solutions
1
Reactions
37,583
Credits
24,212
উত্তর : হাদীছ দু’টি ভিন্ন ভিন্ন দৃষ্টিভঙ্গিতে বর্ণিত হয়েছে। প্রথম হাদীছে রাসূল (ছাঃ) বলেন, ‘দরিদ্র মুসলমানগণ জান্নাতে যাবে সম্পদশালীদের চেয়ে অর্ধদিন পূর্বে। এই অর্ধদিন হ’ল পাঁচ শত বছরের সমান’ (তিরমিযী হা/২৩৫৪; মুসলিম হা/২৭৩৬)। ঈমানদারীর দিক থেকে সমান হ’লে দরিদ্রদের জন্য জান্নাতে যাওয়া সহজ হবে, তাদের হিসাব-নিকাশ অল্প হওয়ার কারণে। অন্যদিকে হিসাব বেশী হওয়ায় ধনীদের দেরী হবে। তবে ধনীর পুণ্য যদি দরিদ্রের চেয়ে বেশী হয়, সেক্ষেত্রে প্রবেশে দেরী হ’লেও ধনী জান্নাতে অধিক মর্যাদার অধিকারী হবেন (ইবনু তায়মিয়াহ, মাজমূ‘ ফাতাওয়া ১১/১২১)। উছায়মীন বলেন, যেহেতু ধনী ব্যক্তি দুনিয়াতে যেখানে আল্লাহর নে‘মতরাজি ভোগ করতে পারে দরিদ্র ব্যক্তি তা পারে না। সেকারণ দরিদ্রদের জন্য এই পুরস্কার (লিকাউল বাবিল মাফতূহ, অডিও ক্লিপ নং- ২৮)। অপরদিকে দ্বিতীয় হাদীছে রাসূল (ছাঃ) বলেন, ‘ধনের আধিক্য হ’লে ধনী হয় না, অন্তরের ধনীই প্রকৃত ধনী’ (বুখারী হা/৬৪৪৬; মুসলিম হা/১০৫১; মিশকাত হা/৫১৭০)। এর দ্বারা প্রাপ্ত সম্পদে পরিতুষ্ট হৃদয়ের প্রতি ইঙ্গিত করা হয়েছে। কেননা মানুষের অভাব অসীম। সেকারণ রাসূল (ছাঃ) বলেন, আদম সন্তানকে ধন-সম্পদে পরিপূর্ণ দু’টি উপত্যকাও যদি দেওয়া হয়, সে তৃতীয়টির আকাঙ্ক্ষা করবে। আদম সন্তানের পেট মাটি ব্যতীত অন্য কিছু পূর্ণ করতে পারবে না’ (বুখারী, মুসলিম, মিশকাত হা/৫২৭৩)। এর মধ্যে একদল মানুষ রয়েছে, যারা প্রাপ্ত সম্পদে সন্তুষ্ট থাকে। যেমন রাসূল (ছাঃ) বলেন, ঐ ব্যক্তি সফলকাম, যে ইসলাম গ্রহণ করেছে, তাকে পরিমিত রূযী দেওয়া হয়েছে এবং আল্লাহ তাকে যা দিয়েছেন, তাতে সে পরিতুষ্ট হয়েছে (মুসলিম হা/১০৫৪, মিশকাত হা/৫১৬৫)। অতএব মূল বিষয় হ’ল তাক্বওয়া। তাক্বওয়াশীলদের জন্য সম্পদ কম হওয়া বা বেশী হওয়ার মাঝে কোন পার্থক্য নেই। যেমন এক বর্ণনায় এসেছে, ছাহাবীগণ বলেন, রাসূল (ছাঃ) তাদের কাছে বের হয়ে এলেন, তাঁর দেহে ছিল গোসলের আলামত এবং তিনি ছিলেন প্রফুল্লচিত্ত। আমরা বললাম, হে আল্লাহর রাসূল! আমরা আপনাকে প্রসন্ন হৃদয় দেখছি। তিনি বলেন, হ্যাঁ, আলহামদুলিল্লাহ। তারপর লোকেরা প্রাচুর্যের প্রসঙ্গে ঢুকে গেল। এসময় রাসূল (ছাঃ) বললেন, আল্লাহভীরুর জন্য প্রাচুর্য ক্ষতিকর নয়। তবে আল্লাহভীরুর জন্য প্রাচুর্যের চেয়ে সুস্বাস্থ্য অধিক উপকারী। মানসিক প্রফুল্লতা অন্যতম নে‘মত (ইবনু মাজাহ হা/২১৪১; মিশকাত হা/৫২৯০; ছহীহাহ হা/১৭৪)। সেকারণ রাসূল (ছাঃ) বলেন, যে ব্যক্তির একমাত্র চিন্তার বিষয় হবে পরকাল, আল্লাহ তা‘আলা সেই ব্যক্তির অন্তরকে অভাবমুক্ত করে দিবেন এবং তার যাবতীয় বিচ্ছিন্ন কাজ একত্রিত করে সুসংহত করে দিবেন, তখন তার নিকট দুনিয়াটা নগণ্য হয়ে দেখা দিবে। আর যে ব্যক্তির একমাত্র চিন্তার বিষয় হবে দুনিয়া, আল্লাহ তা‘আলা সেই ব্যক্তির দু’চোখের সামনে অভাব-অনটন লাগিয়ে রাখবেন এবং তার কাজগুলো এলোমেলো ও ছিন্নভিন্ন করে দিবেন। তার জন্য যা নির্দিষ্ট রয়েছে, দুনিয়াতে সে এর চাইতে বেশী পাবে না’ (তিরমিযী হা/২৪৬৫; মিশকাত হা/৫৩২০; ছহীহাহ হা/৯৪৯)
সূত্র: মাসিক আত-তাহরীক।
 

Share this page