সালাফী আকিদা ও মানহাজে - Salafi Forum

Salafi Forum হচ্ছে সালাফী ও সালাফদের আকিদা, মানহাজ শিক্ষায় নিবেদিত একটি সমৃদ্ধ অনলাইন কমিউনিটি ফোরাম। জ্ঞানগর্ভ আলোচনায় নিযুক্ত হউন, সালাফী আলেমদের দিকনির্দেশনা অনুসন্ধান করুন। আপনার ইলম প্রসারিত করুন, আপনার ঈমানকে শক্তিশালী করুন এবং সালাফিদের সাথে দ্বীনি সম্পর্ক গড়ে তুলুন। বিশুদ্ধ আকিদা ও মানহাজের জ্ঞান অর্জন করতে, ও সালাফীদের দৃষ্টিভঙ্গি শেয়ার করতে এবং ঐক্য ও ভ্রাতৃত্বের চেতনাকে আলিঙ্গন করতে আজই আমাদের সাথে যোগ দিন।
FORUM BOT

প্রশ্নোত্তর প্রশ্ন: মুযদালিফায় সাধারণতঃ কী কী সমস্যা হয়ে থাকে এবং এ থেকে সমাধানের উপায় কী?

FORUM BOT

Doing Automated Jobs

Threads
4,134
Comments
4,353
Solutions
1
Reactions
34,836
Credits
24,212
আরাফার ময়দান থেকে মুযদালিফায় ফিরে আসার মুহুর্তটি বেশ কঠিন। সূর্যাস্তের পর পরই ত্রিশ/চল্লিশ লক্ষ লোক এক সময়ে একযোগে আরাফা থেকে মুযদালিফায় রওয়ানা দেয়। বাসের ব্যবস্থা পর্যাপ্ত থাকলেও রাস্তাতো সীমিত। পাহাড়ী উপত্যকা বেয়ে তিন/চার মিলিয়ন মানুষের লক্ষাধিক বাস গাড়ী একসাথে চললে ট্রাফিকজ্যাম কতটা কঠিন হতে পারে তা সহজেই অনুমেয়। মাঝে মধ্যে গাড়ীগুলো এমনভাবে থেমে থাকে মনে হয় যেন আর চলবে না। তাছাড়া বেশির ভাগ ড্রাইভার বিদেশী ও নতুন। রাস্তাঘাট ভাল চেনে না, কথা বলে আরবীতে, আমরা তা বুঝিনা। ‘‘সব রাস্তা বন্ধ, গাড়ী আর চলবে না।’’ -এ কথা বলে কখনো কখনো আবার গাড়ী থেকে হাজী সাহেবদেরকে নামিয়ে দেয়। আরাফা থেকে মুযদালিফার দূরত্ব মাত্র ৬/৭ কিলোমিটার হলেও কিছু গাড়ী ফজরের আগে মুযদালিফায় পৌঁছতেই পারে না। তাছাড়া মুযদালিফা এসে গেছে ধারণা করে কিছু লোক দেখাদেখি মাঝপথে মাগরিব এশা পড়ে ও রাত্রি যাপন করে। অবশেষে ফজর বাদ মুযদালিফার সীমানায় এসে সাইনবোর্ড দেখে তাদের ভুল বুঝতে পেরে আক্ষেপ করে। এভাবে হজ্জের একটি গুরুত্বপূর্ণ ওয়াজিব ক্ষতিগ্রস্ত হয়ে যায় অনেক হাজীর। অতি বৃদ্ধ, দুর্বল ও রোগী না হলে এ জন্য সহজ হল আরাফা থেকে পায়ে হেঁটে মুযদালিফায় আসা। সেজন্য মাদুর ও ছোট এক/দুটা হালকা বিছানা পত্র ছাড়া ভারী কোন লাগেজ আরাফায় না নেয়াই ভাল। শুধু হাঁটার জন্য আলাদা পথ রয়েছে, যা সমতল ও পীচ ঢালা। এ পথে কোন যানবাহন ঢুকেনা। তাই হাঁটতে বেশ আরাম। রাস্তায় পর্যাপ্ত বাতি থাকে। মেঘবৃষ্টি সাধারণতঃ হয় না। আবহাওয়া থাকে ভাল। সকলেই একযোগে একমুখী চলা। সবার মুখে একই তালবিয়া ‘‘লাববাইক আল্লাহুম্মা লাববাইক...’’ প্রয়োজনে রাস্তার পাশে কিছুক্ষণ বিশ্রাম নিয়ে আবার হাঁটতে পারেন। দলবদ্ধ হয়ে পথ চললে ভাল হয়। ভীড়ের কারণে এ সময় কিছু লোক হারিয়েও যায়। সে জন্য খুব সতর্ক থাকবেন। সাথে শিশু ও নারী থাকলে আরো সাবধান থাকবেন।’’ নতুবা নারী-শিশুদেরকে বাসেই আনবেন। মুযদালিফার সীমানায় পৌঁছলে সাইনবোর্ড দেখতে পাবেন। যেখানে লেখা আছে- (অর্থাৎ মুযদালিফা এখান থেকে শুরু) আর এ এলাকা শেষ হলে দেখতে পাবেন সীমানা চি‎‎হ্নত আরেকটি সাইনবোর্ড যেখানে লেখা পাবেন, (অর্থাৎ মুযদালিফা এখানে শেষ) দিন দিন হাজীদের সংখ্যা বেড়ে যাওয়ায় এখানে শোয়ার যায়গা পর্যাপ্ত পাওয়া যায় না। সমতল বা ঢালু যাই পান একটা সুবিধাজনক স্থান বাছাই করে কয়েকজনে মিলে জামায়াতের সাথে মাগরিব-এশার সালাত আদায় করে নেবেন। সারা রাত প্রতিটি টয়লেটের সামনে ১০/১২ জনের দীর্ঘ লাইন লেগেই থাকে। এজন্য পানি কম খাওয়া ভাল। শোয়ার জন্য এটা কোন আরাম দায়ক স্থান নয়। এটা ইবাদতের স্থান। গুনাহ মাফ করিয়ে নেয়ার স্থান। বালু কণা আর পাথরের টুকরা যাই থাকুক এরই উপর একটি মাদুর বিছিয়ে খোলা আকাশের নীচে শুয়ে পড়বেন। ভুলে যাবেন নিজের অর্থবিত্ত ও পদমর্যাদার গৌরব। ধনী গরীব মিলে মিশে সকলেই একসাথে একাকার হয়ে যাবেন। আপনার নিবেদন শুধু একটাই ‘‘হে আল্লাহ আমাকে তুমি মাফ করে দাও।’’ ভোরে মুযদালিফা থেকে পায়ে হেঁটে মিনায় পৌঁছতে হবে। গাড়ীতে যাওয়ার সুযোগ হয় না বললেই চলে। কারণ মানুষের ঢলের কারণে গাড়ী চলা দুরূহ হয়ে পড়ে। সেদিনের দীর্ঘ হাঁটা, ক্লান্তি ও সঙ্গী সাথী থেকে বিচ্ছিন্ন হয়ে হারিয়ে যাওয়ার সম্ভাব্য সমস্যা, ইত্যকার যাবতীয় কষ্ট বরণ করে নেয়ার জন্য মানসিকভাবে প্রস্ত্তত থাকুন। কত নম্বর খুঁটির নিকটে মিনায় আপনার তাঁবু তা আগে থেকেই জেনে রাখুন। কারণ এখান থেকে হারিয়ে গেলে জনরাশির মহাস্রোতে আপনাকে খুঁজে বের করা খুব কঠিন। মিনায় তাঁবুতে পৌঁছে নাস্তা খেয়ে একটু বিশ্রাম করে কয়েকজনকে সাথে নিয়ে পরে কংকর নিক্ষেপ করতে যেতে পারেন। এর পূর্বে কংকর নিক্ষেপের মাসআলাগুলো আবার একটু পড়ে নিন।
সূত্র: প্রশ্নোত্তরে হজ্জ ও উমরা। লেখক: অধ্যাপক মোঃ নূরুল ইসলাম।
 
Top