Doing Automated Jobs
❐ উত্তর: 'তালিম' হচ্ছে আরবি শব্দ। যার বাংলা অর্থ হলো : উপদেশ /শিক্ষা/ শিষ্টাচার। ইসলামিক দৃষ্টি কোন থেকে তালিম দেওয়া বলতে বুঝায়, কাউকে ইসলামিক শিষ্টাচার শিক্ষা দেওয়া। আর যদি মহিলারা এই কাজ করে থাকে তাদের বলা হয় 'মহিলা তালিম'। যা বর্তমানে উপমহাদেশ গুলোতে ছড়িয়ে পড়ছে ব্যাপকভাবে। মহিলা তালীমকে আবার মহিলা তাবলীগি ও বলা হয়। তালিম বা তাবলীগের মূল উদ্দেশ্য হলো 'ইসলাম প্রচার।' ইসলামিক দৃষ্টিকোন থেকে তালীম/তাবলীগ: ❐ আল্লাহ_বলেন: এবং তোমাদের মধ্যে এরূপ এক সম্প্রদায় হওয়া উচিত যারা কল্যাণের দিকে আহবান করে এবং সৎ কাজে আদেশ করে ও অসৎ কাজে নিষেধ করে, আর তারাই সুফল প্রাপ্ত হবে। (আলি ‘ইমরান : ১০৪) ইসলামের যারা তালিম করে থাকে তারা মূলত ইসলাম প্রচারের মাধ্যমেই তালিম করে থাকে। প্রিয় রাসূল (সাঃ) বলেছেন: "প্রচার কর একটি আয়াত হলেও" (বুখারী :৩৪৬১)। আনাস বিন মালিক (রাঃ) বর্ণনা করেন: রসূলুল্লাহ (স:) বলেছেন : "জ্ঞান অর্জন করা প্রত্যেক মুসলিমের (নর-নারী) উপর ফরয।" (সুনানে ইবনে মাজাহ, হাদিস নং ২২৪) ✿ সুতরাং প্রত্যেক মুসলমানেরই দ্বীন (ইসলাম) শিক্ষা ও প্রচার করা জরুরী। এবার আসুন দেখি, ইসলামিক দৃষ্টিকোন থেকে মহিলাদের তাবলীগ/তালীম কতটুকু জায়েজ? ■ আমরা পবিত্র কুরআনের আয়াত গুলোর দিকে লক্ষ করি তাহলে দেখবো আল্লাহ্ তাঁর বান্দাদের পৃথিবীতে পথ-প্রদর্শণ করানোর জন্য অনেক নবী~রাসূল দুনিয়াতে পাঠিয়েছেন। কিন্তু তাঁদের মধ্যে কোন নবী , রাসূল ই মহিলা ছিলনা। এবং নবী অর্থ যদি নবুওয়াত প্রাপ্তি হিসেবে নেন, তাহলে দেখবেন ইসলামে কোন মহিলা নবী ই নেই। ■ অথচ আল্লাহর দ্বীন প্রচারে নবী-রাসূলরাই বিশেষ ভূমিকা রাখেন, রেখেছেন। ■ রাসূল (সঃ) এর যুগে যারা দ্বীন প্রচার করতেন তারা সবাই পুরুষ সাহাবী ছিলেন। কখনো রাসূল (সঃ) নিজেও দ্বীন প্রচারের জন্য কোন স্ত্রীকে নিয়ে বেরিয়ে যাননি, কখনো তিনি আয়েশা (রা:) কে বলেননি যে, আয়েশা (রা:) তুমি আজ অমুকের বাড়ীতে ইসলাম বুঝাতে যাবে, আর আমি অন্য পাড়াতে প্রচার করবো। এবং রাসূল (সঃ) পূর্ণ জীবনে এমন কোন সহীহ হাদিস ও নেই যে, যেখানে বলা আছে মহিলাদের বাইরে বেরিয়ে গিয়ে দ্বীন প্রচার করতে হবে। এটা মহিলাদের জন্য ফরয নয়। তবে বুখারী ও মুসলিমের হাদিসে আসছে : কারোর (নারীর) যদি দ্বীনি বিষয়ে ভাল জানা থাকে তবে তাঁর কাছ থেকে আত্মীয়স্বজন ও প্রতিবেশিরা দ্বীন শিক্ষার জন্য যাবে। এ থেকে বুঝা যায় , কোন নারী দ্বীন প্রচারের জন্য বাইরে বেরিয়ে যাবেনা। বরং তার কাছ থেকে অন্যরা জেনে নিবে। ● তবে কোন কোন আলেম বলেছেন, মহিলাদের যদি গভীর বিশুদ্ধ জ্ঞান থাকে দ্বীন বিষয়ে তাহলে তারা নিজেদের বাড়িতে দ্বীনি প্রতিষ্ঠান গড়ে তুলতে পারে নারীদের জন্য। তবে এতে 'স্বামীর' অনুমতি থাকতে হবে। মহিলা তালীমে কুরআন হাদিসের নামে মিথ্যা ,জয়ীফ ও মনগড়া কিচ্ছা কাহিনী প্রচার করার ব্যাপারে:⤵ ■ অধিকাংশ মহিলারাই কুরআন হাদিস সমন্ধে সহীহ জ্ঞান রাখে না। বর্তমানে যারা তালীম দিচ্ছে তার ৯৮% ওর বেশি মহিলারা মিথ্যা গল্প গুজুব দিয়ে উপদেশ দিচ্ছে। ■ তারা যেসব বই পড়ে, তারমধ্যে রয়েছে,ফাযায়েলে নামায, ফাযায়েলে হজ্জ্ব, ফাযায়েলে যাকাত, ফাযায়েলে রোযা, উজীফা শরীফ ও নিয়ামুল কোরআনসহ অন্যান্য বই। ■ যাতে শির্ক আর কুফরি'তে ভরপুর। ফলে তারা সহীহ জ্ঞান রাখেও না প্রচারও করতে পারে না। যার দরুন, অধিকাংশই মহিলারা ভুল পথে ধাবিত হচ্ছে ! যা পরকাল ক্ষতির দিকেই ধাবিত ! : পরিনাম : ✒ মহিলাদের তালীম দিতে গিয়ে দেখা যায়, অনেক মহিলারাই অল্প জেনে বেশি বলে, এতে করে ইসলামে নতুন কিছু তৈরী হয়। যাকে বলা হয়'বিদআত'। যার পরিনাম জাহান্নাম। ✒ এছাড়া ও অপ্রীতিকর হলে ও কথাটি বলতে হয় যে, তালীম দিতে গিয়ে কিছু কিছু মহিলারা পরকিয়ায়ও জড়িয়ে যায়। যার শাস্তি ইসলামে ,পাথর মেরে মেরে হত্যা করা। ✒ কখনো কখনো তাদের বাইরেও রাত যাপন করতে হয়। যা দ্বীন প্রচারের নামে দ্বীন লঙ্ঘনেরই অন্তর্ভুক্ত ! ✒ স্বামীর অনুমতি ছাড়া কোন মহিলা নফল রোযা ও রাখতে পারবে না। অথচ আল্লাহর কাছে নফল রোযার গুরুত্ব কত যে বেশি, সেটা নফল রোযার গুরুত্বের অধ্যায়ে আলোচনা করবো ইনশা-আল্লাহ্ । ✒ আর কোন স্বামী যদি অনুমতি দেয় তার স্ত্রীকে নিজের অবর্তমানে অপরিচিত নতুন কোন স্থানে থাকার (মাহরাম ব্যতীত),তাহলে সে স্বামী "দাইউসের"অন্তর্ভুক্ত হবে। ✒ মহিলারা তালীমের কাছ করতে গিয়ে স্ত্রী হিসেবে স্বামীর সেবা / কামনা যথাযথভাবে পূরণ করতে অক্ষম। কারণ তারা অনেক সময়ই দূরে দূরে অবস্থান করে ও দীর্ঘ সময় পার করে। ফলে স্বামীর হক্ক যথাযথ ভাবে স্ত্রী আদায় করতে পারে না। ■|■ মোটকথা: মহান আল্লাহ নিজেই 'দ্বীন প্রচারের' জন্য মহিলাদের সিলেকশন করেন নি। অনুরুপ বহু কারন রয়েছে একজন মহিলার নিজ গৃহ ব্যতিত পুরুষের ন্যায় অন্যত্র তালিম, তাবলিগ বা দ্বীন প্রচারের অন্তরায় স্বরুপ। যে কারনে একজন মহিলা তালিম, তাবলিগ বা দ্বীন প্রচারের জন্য বাড়ি ছেড়ে বাহিরে যেতে পারেনা। يَٰنِسَآءَ ٱلنَّبِىِّ لَسْتُنَّ كَأَحَدٍ مِّنَ ٱلنِّسَآءِۚ إِنِ ٱتَّقَيْتُنَّ فَلَا تَخْضَعْنَ بِٱلْقَوْلِ فَيَطْمَعَ ٱلَّذِى فِى قَلْبِهِۦ مَرَضٌ وَقُلْنَ قَوْلًا مَّعْرُوفًا হে নাবীর পত্নীরা! তোমরা অন্য নারীদের মত নও, যদি তোমরা আল্লাহকে ভয় কর তাহলে পর-পুরুষের সাথে কোমল কন্ঠে এমনভাবে কথা বলনা যাতে অন্তরে যার ব্যাধি রয়েছে সে প্রলুব্ধ হয় এবং তোমরা ন্যায় সঙ্গত কথা বলবে। (আল-আহযাব: ৩২) وَقَرْنَ فِى بُيُوتِكُنَّ وَلَا تَبَرَّجْنَ تَبَرُّجَ ٱلْجَٰهِلِيَّةِ ٱلْأُولَىٰۖ وَأَقِمْنَ ٱلصَّلَوٰةَ وَءَاتِينَ ٱلزَّكَوٰةَ وَأَطِعْنَ ٱللَّهَ وَرَسُولَهُۥٓۚ إِنَّمَا يُرِيدُ ٱللَّهُ لِيُذْهِبَ عَنكُمُ ٱلرِّجْسَ أَهْلَ ٱلْبَيْتِ وَيُطَهِّرَكُمْ تَطْهِيرًا এবং তোমরা স্বগৃহে অবস্থান করবে; প্রাচীন জাহেলী যুগের মত নিজেদেরকে প্রদর্শন করে বেড়াবেনা। তোমরা সালাত কায়েম করবে ও যাকাত প্রদান করবে এবং আল্লাহ ও তাঁর রাসূলের অনুগত থাকবে; হে নাবীর পরিবার! আল্লাহ শুধু চান তোমাদের হতে অপবিত্রতা দূর করতে এবং তোমাদেরকে সম্পূর্ণ রূপে পবিত্র করতে। (আল-আহযাব : ৩৩) وَٱذْكُرْنَ مَا يُتْلَىٰ فِى بُيُوتِكُنَّ مِنْ ءَايَٰتِ ٱللَّهِ وَٱلْحِكْمَةِۚ إِنَّ ٱللَّهَ كَانَ لَطِيفًا خَبِيرًا আল্লাহর আয়াত ও জ্ঞানের কথা, যা তোমাদের গৃহে পঠিত হয়, তা তোমরা স্মরণ রাখবে; আল্লাহ অতি সূক্ষ্মদর্শী, সর্ব বিষয়ে অবহিত। (আল-আহযাব : ৩৪) উপরের আয়াতগুলো থেকে ষ্পষ্ট প্রতীয়মান হয় যে, প্রত্যেক মহিলারা যদি কোরআন পাঠ করে, আবৃত থাকে ও নিজের পরিবারকে সংশোধন করার চেষ্টা করে তাহলে নিজ হাতেই পৃথিবীর ৮০% এর বেশি ঘর সংশোধন হয়ে যাবে (ইনশা'আল্লাহ)। এর চেয়ে উত্তম আর কি হতে পারে !! মহান আল্লাহ! সকলকে সঠিক বুঝ দান করুন! সঠিক পথ-প্রদর্শন করুন! ভুল-ভ্রান্তি ক্ষমা করে আমাদের সকলকে কবুল করুন আমীন !!