‼️ পোস্টটি সুন্দরভাবে দেখতে এখানে ক্লিক করুন।‼️

প্রশ্নোত্তর প্রশ্ন : জনৈক আলেম বলেন, কুরবানী দিতে অক্ষম ব্যক্তিগণ কুরবানীর খালেছ নিয়তে যিলহজ্জ মাসের চাঁদ ওঠার পর নখ ও চুল না কাটলে সে আল্লাহর নিকটে তা পূর্ণাঙ্গ

FORUM BOT

Doing Automated Jobs

Threads
4,137
Comments
4,353
Solutions
1
Reactions
34,842
Credits
24,212
উত্তর : উক্ত হাদীছের সনদে ঈসা ইবনু হিলাল আছ-ছাদাফী নামের রাবী থাকার কারণে আলবানী (রাহিমাহুল্লাহ) হাদীছটিকে যঈফ বলেছেন। তার নিকটে উক্ত রাবী মাজহূল পর্যায়ের। তিনি আরো বলেন, এর মতনও ইযতিরাব। যদিও ইমাম হাকেম ও ইবনু হিব্বান তাকে ছহীহ বলেছেন। কিন্তু তারা উভয়ে হাদীছ যাচাইয়ের ক্ষেত্রে মুহাদ্দিছগণের নিকটে শৈথিল্য প্রদর্শনকারী হিসাবে খুবই প্রসিদ্ধ (তাহক্বীক্ব মিশকাত, হা/১৪৭৯-এর টীকা দ্রঃ; যঈফ আবূ দাঊদ, হা/২৭৮৯-আলোচনা দ্র ঃ; যঈফ নাসাঈ, হা/৪৩৬৫)। তাই তাদের মন্তব্য অনেক সময় গ্রহণযোগ্য নয়। আর শায়খ শু‘আইব আরনাঊত্ব (রাহিমাহুল্লাহ) সহ অন্য যারা হাসান বা ছহীহ বলেছেন, তারা ইবনু হিব্বানের মন্তব্যের আলোকেই বলেছেন (তাহক্বীক্ব আহমাদ, হা/৬৫৭৫)। অন্যদিকে মুহাদ্দিছ আব্দুল মুহসিন আল-আব্বাদ আবূ দাঊদের ভাষ্যের মধ্যে আলবানীর মন্তব্যটা উল্লেখ করেছেন। অনুরূপ দারাকুৎনীর তাহক্বীক্বেও মুহাদ্দিছ সাইয়েদ ইবরাহীম হাদীছটিকে যঈফ বলেছেন (দারাকুৎনী, হা/৪৭৪৯)। এছাড়া তিরমিযীর ভাষ্যকার ইবনুল আরাবী আল-মালেকী (৪৬৯-৫৪৩ হি.) বলেন, لَيْسَ فِي فَضْلِ الْأُضْحِيَّةِ حَدِيْثٌ صَحِيْحٌ ‘কুরবানীর ফযীলত সংক্রান্ত কোন ছহীহ হাদীছ নেই। উক্ত বক্তব্যকে তুহফাতুল আহওয়াযী প্রণেতা আব্দুর রহমান মুবারকপুরী সমর্থন করেছেন’ (তুহফাতুল আহওয়াযী ৫ম খণ্ড, পৃ. ৬৩)।
আর নখ-চুল কাটার ব্যাপারে ছহীহ হাদীছে যে বক্তব্য এসেছে, তা হল- যারা কুরবানী করবে কেবল তারাই নখ-চুল কাটা থেকে বিরত থাকবে। উম্মে সালামা (রাযিয়াল্লাহু আনহা) বলেন, নবী করীম (ছাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেছেন, ‘তোমাদের মধ্যে যারা কুরবানী দেয়ার ইচ্ছা রাখে, তারা যেন যিলহজ্জ মাসের চাঁদ ওঠার পর হতে কুরবানী সম্পন্ন করা পর্যন্ত স্ব স্ব চুল ও নখ কর্তন করা হতে বিরত থাকে’ (ছহীহ মুসলিম, হা/১৯৭৭; মিশকাত, হা/১৪৫৯)। উক্ত হাদীছ দ্বারা মাসআলাটা পরিষ্কার হয়ে গেছে। তাছাড়া শায়খ উছাইমীন (রাহিমাহুল্লাহ) বলেন, নখ-চুল কাটা থেকে বিরত থাকার বিধানটি শুধু কুরবানী দাতার জন্য খাছ। তিনি যাদের পক্ষ থেকে কুরবানী আদায় করবেন তাদের জন্য এ বিধান প্রযোজ্য নয়। অর্থাৎ কোন ব্যক্তি যদি নিজের ও তার পরিবারের পক্ষ থেকে কুরবানী করেন, তাহলে নখ-চুল কাটা থেকে বিরত থাকার হুকুমটি শুধু কুরবানী দাতার উপর বর্তাবে। পরিবারের বাকী সদস্যদের নখ-চুল কাটাতে কোন সমস্যা নেই। পক্ষান্তরে যে সকল আলেম বলেন, পরিবারের বাকী সদস্যদেরও নখ-চুল কাটা থেকে বিরত থাকা যরূরী, তাদের এই মতটি দুর্বল। কেননা এখানে হাদীছের ভাষ্য স্পষ্ট, হাদীছের মধ্যে বলা হয়েছে ‘তোমাদের মধ্যে যারা কুরবানী দেয়ার ইচ্ছা রাখে’। রাসূলুল্লাহ (ছাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম) একথা বলেননি যে, ‘অথবা যার পক্ষ থেকে কুরবানী দেয়া হয়’। এছাড়া রাসূলুল্লাহ (ছাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম) নিজ ও তাঁর পরিবারের পক্ষ থেকে কুরবানী করেছেন, কিন্তু তাদেরকে নখ-চুল কাটা থেকে বিরত থাকার নির্দেশ দেননি (ফাতাওয়া উছায়মীন, ২৫তম খণ্ড, পৃ. ১৮৮; ইসলাম, সাওয়াল ওয়া জাওয়াব, ৫ম খণ্ড, ৪৫৪০ পৃ.)। তাই এক্ষেত্রে শায়খ আলবানী (রাহিমাহুল্লাহ)-এর তাহক্বীক্ব অগ্রাধিকার পাওয়ার যোগ্য। মহান আল্লাহই সর্বাধিক অবগত।
সূত্র: মাসিক আল-ইখলাছ।
 

Share this page