‼️ পোস্টটি সুন্দরভাবে দেখতে এখানে ক্লিক করুন।‼️

প্রশ্নোত্তর প্রশ্ন: কবরের মাধ্যমে বরকত হাসিল করা বা উদ্দেশ্য হাসিল করার জন্য কিংবা নৈকট্য হাসিলের জন্য কবরের চার পার্শ্বে তাওয়াফ করা এবং আল্লাহ ছাড়া অন্যের নামে শ

FORUM BOT

Doing Automated Jobs

Threads
4,137
Comments
4,353
Solutions
1
Reactions
34,842
Credits
24,212
উত্তর: কবর থেকে বরকত কামনা করা হারাম এবং উহা শির্কের পর্যায়ে। কেননা এটা এমন এক বিশ্বাস, যার পক্ষে আল্লাহ তা‘আলা কোনো দলীল-প্রমাণ অবতীর্ণ করেন নি। সালাফে সালেহীন থেকে কবরের বরকত গ্রহণ করার কথা প্রমাণিত নয়। এ দৃষ্টিকোন থেকে এটি বিদ‘আতও বটে। যদি কেউ বিশ্বাস করে যে, কবরবাসী অকল্যাণ প্রতিহত করা এবং কল্যাণ আনয়নের ক্ষমতা রাখে, তাহলে এটি বড় শির্কের অন্তর্ভুক্ত হবে। এমনিভাবে রুকু, সাজদাহ, নৈকট্য লাভ বা সম্মানের নিয়তে যদি কবরবাসীর জন্য কুরবানী করে তাও শির্কে পরিণত হবে। আল্লাহ বলেন,
﴿وَمَن يَدۡعُ مَعَ ٱللَّهِ إِلَٰهًا ءَاخَرَ لَا بُرۡهَٰنَ لَهُۥ بِهِۦ فَإِنَّمَا حِسَابُهُۥ عِندَ رَبِّهِۦٓۚ إِنَّهُۥ لَا يُفۡلِحُ ٱلۡكَٰفِرُونَ ١١٧﴾ [المؤمنون: ١١٧]

“যে কেউ বিনা দলীলে আল্লাহর সাথে অন্য কাউকে ডাকে, তার হিসাব তার রবর কাছে। নিশ্চয় কাফেরেরা সফলকাম হবে না।” [সূরা আল-মুমিনূন, আয়াত: ১১৭] আল্লাহ আরো বলেন,
﴿فَمَن كَانَ يَرۡجُواْ لِقَآءَ رَبِّهِۦ فَلۡيَعۡمَلۡ عَمَلٗا صَٰلِحٗا وَلَا يُشۡرِكۡ بِعِبَادَةِ رَبِّهِۦٓ أَحَدَۢا﴾ [الكهف: ١١٠]

“যে ব্যক্তি তার রবের সাক্ষাত কামনা করে, সে যেন সৎকর্ম করে এবং তার রবর ইবাদাতে কাউকে শরীরক না করে।” [সূরা আল-কাহাফ, আয়াত: ১১০] যে ব্যক্তি বড় শির্কে লিপ্ত হবে সে কাফির হয়ে যাবে এবং চিরকাল জাহান্নামে থাকবে। তার জন্য জান্নাত হারাম হয়ে যাবে। আল্লাহ বলেন,
﴿إِنَّهُۥ مَن يُشۡرِكۡ بِٱللَّهِ فَقَدۡ حَرَّمَ ٱللَّهُ عَلَيۡهِ ٱلۡجَنَّةَ وَمَأۡوَىٰهُ ٱلنَّارُۖ وَمَا لِلظَّٰلِمِينَ مِنۡ أَنصَارٖ﴾ [المائ‍دة: ٧٢]

“নিশ্চয় যে ব্যক্তি শির্কে লিপ্ত হবে, আল্লাহ তার ওপর জান্নাত হারাম করে দিয়েছেন। তার ঠিকানা জাহান্নাম। আর যালেমদের জন্য কোনো সাহায্যকারী নেই।” [সূরা আল-মায়েদা, আয়াত: ৭২] আল্লাহ ছাড়া যার নামে শপথ করা হলো, তাকে যদি আল্লাহর সম পর্যায়ের সম্মানিত মনে করে, তাহলে বড় শির্কে পরিণত হবে। আর যদি শপথকারীর অন্তরে শপথকৃত বস্তুর প্রতি সম্মান থাকে, কিন্তু সেই সম্মান আল্লাহর সম্মানের পর্যায়ে মনে না করে, তাহলে ছোট শির্কে পরিণত হবে। নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন,
«مَنْ حَلَفَ بِغَيْرِ اللَّهِ فَقَدْ كَفَرَ أَوْ أَشْرَكَ»

“যে ব্যক্তি গাইরুল্লাহর নামে শপথ করল, সে কুফুরী অথবা শির্ক করল।”[1] যারা কবর থেকে বরকত হাসিল করে, কবরবাসীর কাছে দো‘আ করে এবং আল্লাহ ছাড়া অন্যের নামে শপথ করে, তাদের প্রতিবাদ করা ওয়াজিব। তাদের যুক্তি, “আমরা পূর্ব পুরুষদেরকে এ অবস্থায় পেয়েছি”। একথা আল্লাহর আযাব হতে রক্ষা করতে পারবে না। যে সমস্ত কাফির নবী-রাসূলদেরকে মিথ্যা প্রতিপন্ন করেছিল, তাদেরও যুক্তি এটিই ছিল। আল্লাহ তাআলা বলেন,
﴿وَكَذَٰلِكَ مَآ أَرۡسَلۡنَا مِن قَبۡلِكَ فِي قَرۡيَةٖ مِّن نَّذِيرٍ إِلَّا قَالَ مُتۡرَفُوهَآ إِنَّا وَجَدۡنَآ ءَابَآءَنَا عَلَىٰٓ أُمَّةٖ وَإِنَّا عَلَىٰٓ ءَاثَٰرِهِم مُّقۡتَدُونَ ٢٣﴾ [الزخرف: ٢٣]

“এমনিভাবে আপনার পূর্বে আমি যখন কোনো জনপদে সতর্ককারী প্রেরণ করেছি, তখনই তাদের বিত্তশালীরা বলেছে, আমরা আমাদের পূর্ব পুরুষদেরকে এ পথের পথিক পেয়েছি এবং আমরা তাদেরই পদাঙ্ক অনুসরণ করে চলছি।” [সূরা আয-যুখরুফ, আয়াত: ২৩] তাদের কাছে প্রেরিত রাসূল বললেন,
﴿أَوَلَوۡ جِئۡتُكُم بِأَهۡدَىٰ مِمَّا وَجَدتُّمۡ عَلَيۡهِ ءَابَآءَكُمۡۖ قَالُوٓاْ إِنَّا بِمَآ أُرۡسِلۡتُم بِهِۦ كَٰفِرُونَ﴾ [الزخرف: ٢٤]

“তোমরা তোমাদের পূর্ব পুরুষদেরকে যে বিষয়ের ওপর পেয়েছ, আমি যদি তদাপেক্ষা উত্তম বিষয় নিয়ে তোমাদের কাছে এসে থাকি, তবুও কি তোমরা তাই বলবে? তারা বলত তোমরা যে বিষয়সহ প্রেরিত হয়েছ, তা আমরা মানব না।” [সূরা আয-যুখরুফ, আয়াত: ২৪] আল্লাহ তাআলা বলেন,
﴿فَٱنتَقَمۡنَا مِنۡهُمۡۖ فَٱنظُرۡ كَيۡفَ كَانَ عَٰقِبَةُ ٱلۡمُكَذِّبِينَ ٢٥﴾ [الزخرف: ٢٥]

“অতঃপর আমরা তাদের কাছ থেকে প্রতিশোধ নিয়েছি।” [সূরা আয-যুখরুফ, আয়াত: ২৫] অতএব, দেখুন! মিথ্যাবাদীদের পরিণাম কিরূপ ভয়াবহ হয়েছে। ভুলের ওপর থেকে কারও পক্ষে বাপ-দাদাদের অথবা দেশাচলের দোহাই দেওয়া বৈধ নয়। এসব দোহাই তাদের কোনো উপকারে আসবে না। বরং তাদের উচিৎ আল্লাহর কাছে তাওবা করা এবং সত্যের অনুসরণ করা। দেশাচল এবং মানুষের তিরস্কারের ভয় যেন তাদেরকে সত্যের অনুসরণের পথে অন্তরায় না হয়ে দাঁড়ায়। সত্যিকারের মুমিন কোনো প্রকার সমালোচনাকারীর সমালোচনার ভয় করে না এবং আল্লাহর দীন হতে কোনো কিছুই বাঁধা দিতে পারে না।
[1] তিরমিযী, অধ্যায়: কিতাবুল আইমান ওয়ান নুযুর। সূত্র: ফাতাওয়া আরকানুল ইসলাম। লেখক: শাইখ মুহাম্মাদ বিন সালিহ আল-উসাইমীন (রহঃ)।
 

Share this page