সালাফী আকিদা ও মানহাজে - Salafi Forum

Salafi Forum হচ্ছে সালাফী ও সালাফদের আকিদা, মানহাজ শিক্ষায় নিবেদিত একটি সমৃদ্ধ অনলাইন কমিউনিটি ফোরাম। জ্ঞানগর্ভ আলোচনায় নিযুক্ত হউন, সালাফী আলেমদের দিকনির্দেশনা অনুসন্ধান করুন। আপনার ইলম প্রসারিত করুন, আপনার ঈমানকে শক্তিশালী করুন এবং সালাফিদের সাথে দ্বীনি সম্পর্ক গড়ে তুলুন। বিশুদ্ধ আকিদা ও মানহাজের জ্ঞান অর্জন করতে, ও সালাফীদের দৃষ্টিভঙ্গি শেয়ার করতে এবং ঐক্য ও ভ্রাতৃত্বের চেতনাকে আলিঙ্গন করতে আজই আমাদের সাথে যোগ দিন।
FORUM BOT

প্রশ্নোত্তর প্রশ্ন: অল্প আমল নাজাতের জন্যে যথেষ্ট। কথাটাকি সত্য?

FORUM BOT

Doing Automated Jobs

Threads
4,134
Comments
4,353
Solutions
1
Reactions
34,836
Credits
24,212
উত্তর: ইখলাসের সঙ্গে অল্প আমলও আল্লাহর অধিক পছন্দনীয় মুমিনদের মধ্যে যারা স্বতঃস্ফূর্তভাবে দান-সদকা করে এবং যারা নিজেদের শ্রমলব্ধ অর্থ ছাড়া আর কিছুই দান করতে পারে না, তাদের প্রতি যারা (মুনাফিকরা) দোষারোপ করে এবং বিদ্রূপ করে, আল্লাহও তাদের নিয়ে বিদ্রূপ করেন (তাদের বিদ্রূপের জুতসই জবাব দেন)। তাদের জন্য রয়েছে বেদনাদায়ক শাস্তি। (সুরা তাওবা, আয়াত : ৭৯) তাফসির : মুনাফিকদের প্রসঙ্গে দীর্ঘ আলোচনার ধারাবাহিকতায় আলোচ্য আয়াতে মুমিনদের নিয়ে তাদের ঠাট্টা-বিদ্রূপ বিষয়ে বর্ণনা করা হয়েছে। হজরত ইবনে আব্বাস (রা.) থেকে বর্ণিত, একবার রাসুলুল্লাহ (সা.) দান-সদকার প্রতি উদ্বুদ্ধ করে বক্তৃতা দিয়েছেন। তখন হজরত আবদুর রহমান বিন আউফ (রা.) চার হাজার স্বর্ণমুদ্রা নিয়ে হাজির হয়ে যান। তিনি এসে বলতে লাগলেন, ‘হে আল্লাহর রাসুল, আমার কাছে মোট আট হাজার স্বর্ণমুদ্রা রয়েছে। তার মধ্যে চার হাজার পরিবার-পরিজনের জন্য রেখে অবশিষ্ট স্বর্ণমুদ্রা আপনার দরবারে নিয়ে এসেছি।’ রাসুলুল্লাহ (সা.) তাঁর সদকা গ্রহণ করেছেন এবং তাঁর সম্পদের বরকত হওয়ার জন্য দোয়া করেছেন। অতঃপর আসেম বিন আদি (রা.) ৭০ ওসক খেজুর দান করেছেন (এক ওসক সমান ছয় সা। এক সা সমান ২৭৩ তোলা স্বর্ণমুদ্রা)। হজরত উসমান (রা.) বিপুল পরিমাণ অর্থ নিয়ে এসেছেন। এভাবে একের পর এক সাহাবিরা বিভিন্ন অনুদান দিতে লাগলেন। এরই ধারাবাহিকতায় হজরত আবু উকাইল (রা.) মাত্র এক সা দান করেন। তিনি কায়িক শ্রমে কাজ করতেন। মজুরি বাবদ সেদিন তিনি মাত্র দুই সা খেজুর পেয়েছিলেন। এক সা পরিবারের জন্য রেখে অন্য সা তিনি মহানবী (সা.)-এর হাতে তুলে দেন। এটা দেখে মুনাফিকরা বলতে লাগল, ‘আবদুর রহমান তো মানুষকে দেখানোর জন্য অনেক সম্পদ এনেছে। আর এই আবু উকাইল! সে এটা কী নিয়ে এলো। আল্লাহর রাসুল কি এত অল্প খেজুরের ভুখা নাকি?’ এভাবে মুনাফিকরা দান করার কারণে মুসলমানদের প্রতি উপহাস করতে থাকে। এ প্রসঙ্গে আলোচ্য আয়াত অবতীর্ণ করে আল্লাহ তাআলা মুনাফিকদের সমালোচনা করেছেন। তাদের জন্য বেদনাদায়ক শাস্তির হুঁশিয়ারি উচ্চারণ করেছেন। ইখলাস কী ও কেন? একমাত্র আল্লাহ তাআলার সন্তুষ্টি অর্জনের লক্ষ্যে ইবাদত করা, যাবতীয় কাজ সম্পাদন করার নামই হলো ইখলাস। কে আমাকে দেখছে আর কে দেখছে না, সেটা না ভেবে ‘আল্লাহ সর্বক্ষণ আমাকে দেখছেন’—এই ভয় ও ভাবনা মাথায় রেখে ইবাদত করার নামই হলো ইখলাস। এ বিষয়ে পবিত্র কোরআনে মহান আল্লাহ তাআলা ইরশাদ করেন, ‘তারা মানত পূর্ণ করে এবং সেদিনকে ভয় করে, যেদিনের অনিষ্ট হবে সুদূরপ্রসারী। তারা আল্লাহকে ভালোবেসে অভাবগ্রস্ত, এতিম ও বন্দিদের আহার দেয়। (তারা বলে) শুধু আল্লাহর সন্তুষ্টির জন্য আমরা তোমাদের আহার দান করি। তোমাদের কাছে আমরা কোনো প্রতিদান ও কৃতজ্ঞতা কামনা করি না।’ (সুরা আদ-দাহর, আয়াত : ৭-৯) অন্য আয়াতে আল্লাহ তাআলা বলেন, ‘তাদের এ ছাড়া আর কোনো নির্দেশ দেওয়া হয়নি যে তারা খাঁটি মনে একনিষ্ঠভাবে আল্লাহর ইবাদত করবে।’ (সুরা বাইয়্যিনাহ, আয়াত : ৫) হজরত আবু হুরায়রা (রা.) থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, মহানবী (সা.) ইরশাদ করেছেন, ‘আল্লাহপাক তোমাদের শরীর ও অবয়বের দিকে তাকান না; বরং তিনি তোমাদের অন্তর ও আমলের দিকে লক্ষ করেন।’ (মুসলিম শরিফ, হা. ২৫৬৪) অন্য হাদিসে এসেছে, ‘তোমার ইমান খাঁটি করো, অল্প আমলই নাজাতের জন্য যথেষ্ট।’ (বায়হাকি, শুআবুল ইমান, হা. ৬৪৪৩)
 
Top