‼️ পোস্টটি সুন্দরভাবে দেখতে এখানে ক্লিক করুন।‼️

প্রশ্নোত্তর প্রত্যেক ব্যক্তি যে দেশে অবস্থান করছেন সে দেশের স্থানীয়দের সাথে রোযা রাখা ও ঈদ করা তার উপর আবশ্যক

FORUM BOT

Doing Automated Jobs

Threads
4,135
Comments
4,353
Solutions
1
Reactions
37,502
Credits
24,212
প্রশ্নঃ আমরা হারামাইন শরিফাইনের দেশের নাগরিক। বর্তমানে এশিয়ার একটি মুসলিম দেশ (পাকিস্তান)-এ দূতাবাসে চাকুরী করছি। আমরা কি সৌদি আরবের সাথে রোযা রাখব ও ঈদ করব; নাকি যে দেশে আমরা অবস্থান করছি সে দেশের সাথে করব?


উত্তরঃ আলহামদু লিল্লাহ।


শরিয়তের দলিল-প্রমাণের প্রত্যক্ষ নির্দেশনা হচ্ছে— প্রত্যেক ব্যক্তি যে দেশে অবস্থান করছেন সে দেশের স্থানীয়দের সাথে রোযা রাখা তার উপর আবশ্যক।


যেহেতু নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেছেন: "রোযা হচ্ছে যে দিন তোমরা রোযা রাখ; ঈদুল ফিতর হচ্ছে যে দিন তোমরা রোযা ভঙ্গ কর এবং ঈদুল আযহা হচ্ছে যে দিন তোমরা কোরবানী কর।" এবং যেহেতু শরিয়ত থেকে একতাবদ্ধ থাকার নির্দেশ এবং বিচ্ছিন্ন হওয়া ও মতভেদ করা থেকে সাবধানকরণ জানা যায়। এবং যেহেতু সংশ্লিষ্ট ক্ষেত্রে অভিজ্ঞদের ঐক্যমতের ভিত্তিতে স্থানভেদে চন্দ্রের উদয়স্থল ভিন্ন ভিন্ন; যেমনটি বলেছেন শাইখুল ইসলাম ইবনে তাইমিয়া।


পূর্বোক্ত আলোচনার প্রেক্ষিতে পাকিস্তানে অবস্থিত দূতাবাসের যে কর্মকর্তারা পাকিস্তানের সাথে রোযা রাখে তাদের আমল অন্য যারা সৌদি আরবের সাথে রোযা রাখে তাদের আমলের চেয়ে সত্যের অধিক নিকটবর্তী— দুই দেশের মাঝে দূরত্বের কারণে এবং উদয়স্থল ভিন্ন ভিন্ন হওয়ার কারণে। নিঃসন্দেহে পৃথিবীর যে কোন মুসলিম দেশে চাঁদ দেখা কিংবা ত্রিশদিন পূর্ণ করার মাধ্যমে সমস্ত মুসলমানের রোযা রাখা সাব্যস্ত হয়ে থাকে। শরিয়তের দলিলের বাহ্যিক মর্মের সাথে এটাই সামঞ্জস্যপূর্ণ। তবে, তা যদি সম্ভবপর না হয়; তাহলে আগে আমরা যা উল্লেখ করেছি সেটাই অপেক্ষাকৃত নিকটবর্তী অভিমত। আল্লাহ্‌ই তাওফিকদাতা।"[সমাপ্ত]


ফাযিলাতুশ শাইখ আব্দুল আযিয বিন বায (রহঃ) এর মাজমুউ ফাতাওয়া ওয়া মাক্বালাত মুতানাওয়িয়্যা (১৫/৯৮, ৯৯)


শাইখ বিন বায (রহঃ) কে আরও জিজ্ঞেস করা হয়েছিল: "পাকিস্তানে রমযান ও শাওয়ালের চাঁদ কখনও সৌদি আরবের দুইদিন পরে দেখা যায়; সেক্ষেত্রে তারা কি সৌদি আরবের সাথে রোযা রাখবে; নাকি পাকিস্তানের সাথে?


জবাবে তিনি বলেন:


আমাদের কাছে পবিত্র শরিয়তের যে বিধান অগ্রগণ্য প্রতীয়মান হয় তা হল: আপনাদের উপর ওয়াজিব হচ্ছে সেখানকার মুসলমানদের সাথে রোযা রাখা; দুটো কারণে:


এক. নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামের হাদিস: "রোযা হচ্ছে যে দিন তোমরা রোযা রাখ; ঈদুল ফিতর হচ্ছে যে দিন তোমরা রোযা ভঙ্গ কর এবং ঈদুল আযহা হচ্ছে যে দিন তোমরা কোরবানী কর।" হাদিসটি আবু দাউদ ও অন্যান্য গ্রন্থাকারগণ 'হাসান' সনদে সংকলন করেছেন। তাই আপনি এবং আপনার ভাইগণ পাকিস্তানে থাকলে আপনাদের উচিত হবে তাদের সাথে রোযা রাখা এবং তারা যখন ঈদ করে তখন তাদের সাথে ঈদ করা। কেননা এ হাদিসের নির্দেশনার মধ্যে আপনারাও অন্তর্ভুক্ত। এবং যেহেতু উদয়স্থল আলাদা আলাদা হওয়ার প্রেক্ষিতে চাঁদ দেখাও আলাদা আলাদা সময়ে ঘটে। একদল আলেমের অভিমত হল তাদের মধ্যে ইবনে আব্বাস (রাঃ)ও আছেন: প্রত্যেক দেশের লোকদেরকে আলাদা আলাদাভাবে চাঁদ দেখতে হবে।


দুই. সেখানকার মুসলমানদের থেকে বিচ্ছিন্ন হয়ে রোযা রাখা ও ঈদ করলে বিশৃঙ্খলা হবে; জিজ্ঞাসাবাদের জন্য ডাকা হবে, সমালোচনা করা হবে, ঝগড়াবিবাদের উদ্রেক ঘটবে। পরিপূর্ণ ইসলামী শরিয়ত ঐক্যবদ্ধ থাকা, নেকী ও তাকওয়ার ক্ষেত্রে একে অপরকে সহযোগিতা করা এবং মতভেদ ও বিবাদ বর্জন করার প্রতি আহ্বান করে। তাই তো আল্লাহ তাআলা বলেন: "তোমরা আল্লাহ্‌র রজ্জুকে সম্মিলিতভাবে আঁকড়ে ধর এবং পরস্পর বিচ্ছিন্ন হয়ো না।[সূরা আলে ইমরান ৩:১০৩]


নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম যখন মুয়ায (রাঃ) ও আবু মুসা (রাঃ) কে ইয়ামেনে পাঠান তখন তিনি বলেন: "তোমরা দুইজন সুসংবাদ দিবে; বীতশ্রদ্ধ করবে না, একে অপরকে মেনে চলবে, মতভেদ করবে না।"[সমাপ্ত]


[মাজমুউ ফাতাওয়া ওয়া মাকালাত মুতানাওয়ায়িয়া (১৫/১০৩, ১০৪)


সুত্রঃ islamqa
 

Share this page