সালাফী আকিদা ও মানহাজে - Salafi Forum

Salafi Forum হচ্ছে সালাফী ও সালাফদের আকিদা, মানহাজ শিক্ষায় নিবেদিত একটি সমৃদ্ধ অনলাইন কমিউনিটি ফোরাম। জ্ঞানগর্ভ আলোচনায় নিযুক্ত হউন, সালাফী আলেমদের দিকনির্দেশনা অনুসন্ধান করুন। আপনার ইলম প্রসারিত করুন, আপনার ঈমানকে শক্তিশালী করুন এবং সালাফিদের সাথে দ্বীনি সম্পর্ক গড়ে তুলুন। বিশুদ্ধ আকিদা ও মানহাজের জ্ঞান অর্জন করতে, ও সালাফীদের দৃষ্টিভঙ্গি শেয়ার করতে এবং ঐক্য ও ভ্রাতৃত্বের চেতনাকে আলিঙ্গন করতে আজই আমাদের সাথে যোগ দিন।

প্রশ্নোত্তর নিজ থেকে যেচে অথবা দরখাস্ত লিখে দ্বীনী পদ প্রার্থনা করা বৈধ কি?

FORUM BOT

Doing Automated Jobs

Threads
4,143
Comments
4,353
Solutions
1
Reactions
37,562
Credits
24,212
দ্বীনী পদসমুহ থেকে উপযুক্ত উলামাগন দুরে সরতে চাইলে সে স্থলে জাহেলগণ বহাল হয়ে যাবে। আর তখন তারা নিজের ভ্রষ্ট হবে এবং অপরকেও ভ্রষ্ট করবে। সুতরাং নিজেকে সত্যই সে পদের যোগ্য অধিকারী মনে করলে নিজে থেকে সে পদ চেয়ে নেওয়া দূষণীয় নয়। যেমন ইউসুফ (আঃ) চেয়ে নিয়েছিলেন। তিনি বলেছিলেন,

সে বলল, ‘আমাকে দেশের কোষাধ্যক্ষ নিযুক্ত করুন। নিশ্চয় আমি সুসংরক্ষন কারী, সুবিজ্ঞ।’ (ইউসুফঃ ৫৫)

যখন তিনি আল্লাহর পক্ষ থেকে জানতে পেরেছিলে যে, তাঁর তুলনায় সংকট মুহূর্তে কৃষি ও খাদ্য মন্ত্রণালয় বেশি ভাল অন্য কেউ চালাতে পারবে না। অনুরূপ যদি কোন যোগ্য আলেম নিজেকে কোন জামায়াত বা জমঈয়তের যোগ্য আমির মনে করেন, তাহলে তা চেয়ে নিতে দোষ নেই। তবে তা যেন কেবল দ্বীনী স্বার্থে লিল্লাহিভাবে হয়। তাতে উদ্দেশ্য যেন খ্যাতি বা অর্থলাভ না হয়। বিশেষ করে তিনি যদি নিশ্চিত হন যে, এ পদে তিনি অধিষ্ঠিত না হলে অন্য কোন জাহেল তা দখল করে মানুষকে ভ্রষ্ট করে ছাড়বে।

অনুরূপ উসমান বিন আবিল আস ইমামতি প্রার্থনা করে বলেছেন , ‘হে আল্লাহর রাসুল! আমাকে আমার কওমের ইমাম বানিয়ে দিন।’ মহানবী (সঃ) বললেন, “তুমি তাদের ইমাম। তুমি জামায়াতের সবচেয়ে দুর্বল ব্যক্তির খেয়াল করে নামায পড়াবে। আর এমন মুয়াজ্জিন রাখবে, যে আযানের জন্য পারিশ্রমিক নেয় না।” (আবু দাউদ ৫৩১, তিরমিজি ২০৯, নাসাঈ ২/২৩, ইবনে মাজাহ ৯৮৭ নং, ত্বাবারানী, সহিহুল জামে ৩৭৭৩ নং)

সুতরাং তিনি শরয়ী স্বার্থ রক্ষার উদ্দেশ্যে ইমামতি চেয়ে নিয়েছিলেন। কিন্তু যেখানে মানুষ দুর্বল, যেখানে উদ্দেশ্য থাকে দুনিয়া, যেখানে থাকে পার্থিব লোভ, সেখানে পদ চেয়ে নেওয়া বৈধ নয়। (ইবনে বাজ)

আর যার (রঃ) বলেন, একদা আমি বললাম, ‘হে আল্লাহর রাসুল! আপনি আমাকে (কোন স্থানের সরকারী) কর্মচারী কেন নিযুক্ত করছেন না?’ তিনি নিজ হাত আমার কাঁধে মেরে বললেন, “হে আবু যার! তুমি দুর্বল এবং (এ পদ ) আমানত। এটা কিয়ামতের দিন অপমান ও অনুতাপের কারণ হবে। কিন্তু যে ব্যক্তি তা হকের সাথে (যোগ্যতার ভিত্তিতে) গ্রহণ করল এবং নিজ দায়িত্ব (যথাযথভাবে) পালন করল (তাঁর জন্য এ পদ লজ্জা ও অনুতাপের কারণ নয়)।” (মুসলিম)

আল্লাহর রাসুল (সঃ) বলেছেন, “তোমরা অতি সত্বর নেতৃত্বের লোভ করবে। (কিন্তু স্মরণ রাখো) এটি কিয়ামতের দিন অনুতাপের কারণ হবে।” (বুখারি)

আবু মুসা আশআরী (রঃ) বলেন, আমি আর আমার চাচাতো দু ভাই নবী (সঃ) এর নিকট গেলাম। সে দুজনের মধ্যে একজন বলল, ‘হে আল্লাহর রাসুল! মহান আল্লাহ আপনাকে যে সব শাসন ক্ষমতা দান করেছেন, তাঁর মধ্যে কিছু (এলাকার) শাসনভার আমাকে প্রদান করুন।’ দ্বিতীয়জনেও একই কথা বলল। উত্তরে তিনি বললেন, “আল্লাহর কসম! যে সরকারী পদ চেয়ে নেয় অথবা তাঁর প্রতি লোভ রাখে, তাকে অবশ্যই আমরা এ কাজ দিই না।” (বুখারি ও মুসলিম)


সূত্র: দ্বীনী প্রশ্নোত্তর।
লেখক: শাইখ আব্দুল হামীদ আল-ফাইযী আল-মাদানী​
 
Top