‼️ পোস্টটি সুন্দরভাবে দেখতে এখানে ক্লিক করুন।‼️

প্রবন্ধ দ্বীনী বিষয় জানতে লজ্জা না করা

Habib Bin Tofajjal

If you're in doubt ask الله.

Forum Staff
Moderator
Generous
ilm Seeker
Uploader
Exposer
HistoryLover
Q&A Master
Salafi User
Threads
689
Comments
1,225
Solutions
17
Reactions
6,668
Credits
5,528
ওহে মুসলিম নারী! জেনে রাখুন, লজ্জা ইসলামের অন্যতম একটি নৈতিকতা। ইসলাম লজ্জা অবলম্বনে অনুপ্রাণিত করে। শুধু তাই নয়, লজ্জা হচ্ছে ঈমানের অন্যতম একটি শাখা। নবী সল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেন,
وَالْحَيَاءُ شُعْبَةٌ مِنَ الإِيمَانِ
লজ্জা ঈমানের একটি শাখা।[1]

তবে লজ্জা যেন মুসলিম নারীর জন্য এমন বিষয় জানতে প্রতিবন্ধক না-হয়, যা শরীআত কর্তৃক তার ওপর ওয়াজিব এবং যা বর্জন করার কোনো সুযোগ নেই, বর্জন করলে গুনাহ হবে। যেমন: স্বপ্নদোষ কিংবা নাপাকি হতে গোসল করা এবং পবিত্র হওয়া পদ্ধতি সম্পর্কে জিজ্ঞেস করা। এ মাসআলাগুলো জিজ্ঞেস করতে যদিও একটু ইতস্ততবোধ জাগবে, তাই বলে তারা যদি এসব বিষয়ে জিজ্ঞেস না করে, তাহলে তারা তাদের ওপর আরোপিত ওয়াজিব বিধান পালন করতে সক্ষম হবে না। আর স্বীকৃত একটি মূলনীতি হচ্ছে,
مَا لَا يَتِمُّ بِهِ الْوَاجِبُ فَهُوِ وَاجِبٌ
যা ব্যতিরেকে ওয়াজিব বাস্তবায়ন করা যায় না, সেটাও ওয়াজিব।

অতএব, শরয়ী বিধিবিধান ও দায়দায়িত্ব জানার জন্য প্রশ্ন করা ওয়াজিব। কেননা শরয়ী বিধিবিধান ও দায়দায়িত্ব প্রত্যেকের ওপর ওয়াজিব। আর এসব ওয়াজিব বিধিবিধান ও দায়দায়িত্ব ততক্ষণ সুচারুরূপে ও নির্ভুলভাবে পালন করা সম্ভব নয়, যতক্ষণ না এসবের হুকুম-আহকাম ও শর্তসমূহ সম্পর্কে সম্যক জ্ঞান থাকে।

উম্মুল মুমিনীন আয়েশা রাযিয়াল্লাহু আনহা আনসারী মহিলাদের ব্যাপক প্রশংসা করেছেন। কারণ, তারা ধর্মীয় সকল প্রয়োজনীয় বিষয় সম্পর্কে জিজ্ঞেস করত। এতে তারা কোনো প্রকার লজ্জাবোধ করত না। তিনি বলেন, ‘মহিলাদের মাঝে আনসারী মহিলারা কতই-না উত্তম! ধর্মীয় ব্যাপারে জানতে লজ্জাবোধ তাদের প্রতিবন্ধক হতে পারে না।’[2]

উম্মুল মুমিনীন আয়েশা রাযিয়াল্লাহু আনহা-র এই বক্তব্য উম্মুল মুমিনীন উম্মু সালামা রাযিয়াল্লাহু আনহা-র নিম্নোক্ত বক্তব্যকে আরো শক্তিশালী ও জোরদার করে। উম্মু সালামা রাযিয়াল্লাহু আনহা বলেন, উম্মু সুলাইম রাযিয়াল্লাহু আনহা রাসূলুল্লাহ সল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম-এর নিকট এসে বলে, ‘আল্লাহ তাআলা সত্য বলতে লজ্জাবোধ করেন না। মহিলাদের স্বপ্নদোষ হলে কি গোসল করতে হবে?’ নবী সল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বললেন, ‘হ্যাঁ। যখন সে বীর্য দেখতে পাবে।’[3]

অতএব, উল্লিখিত হাদীস প্রমাণ করে, তাদের কথা ভুল যারা বলে বেড়ায় যে, ‘ধর্মে লজ্জার কোনো ছিটেফোঁটোও নেই!’ বরঞ্চ লজ্জা দ্বীনের অন্তর্ভুক্ত। ঈমানের অন্যতম একটি শাখাও বটে। তবে হ্যাঁ, দ্বীনের ব্যাপারে জিজ্ঞেস করতে কোনো লজ্জা নেই।
  • প্রশ্ন করার ক্ষেত্রে কিছু আদবকেতা
তবে মুসলিম রমণীদেরকে নিম্নের কিছু গুরুত্বপূর্ণ বিষয়ে সতর্ক থাকা উচিত। সেগুলো হলো,

* তারা যখন সহবাস বা পবিত্রতা অর্জন বা স্বপ্নদোষ কিংবা এ জাতীয় কোনো প্রশ্ন করবে তখন প্রশ্নটি মৌখিকভাবে না করে লিখিত আকারে করবে।

* প্রশ্ন করার সময় কারো নাম উল্লেখ করবে না। কেননা এই জাতীয় প্রশ্ন মৌখিকভাবে করা অথবা কারো নাম উল্লেখ করা কখনো ফিতনা ও কামনা-বাসনার কারণ হতে পারে; বিশেষ করে আমাদের বর্তমান যুগে।

* প্রশ্ন করার ক্ষেত্রে আল্লাহকে ভয় করবে।

* বর্তমান অবস্থায় যতটুকু প্রয়োজন ততটুকু জানার জন্য প্রশ্ন করবে। অতিরিক্ত প্রশ্ন করা থেকে এবং তর্ক-বিতর্কের উদ্দেশ্যে প্রশ্ন করা থেকে বিরত থাকবে।

মুসলিম নারীর পূর্ণাঙ্গ মাসাইল
• মূল: আল্লামা মুহাদ্দিস আমর আবদুল মুনঈম সালিম
• অনুবাদ ও সম্পাদনা : উস্তায আব্দুল্লাহ মাহমুদ

[1] সহীহুল বুখারী, ৯; সহীহ মুসলিম, ৩৫
[2] সহীহ মুসলিম, ১/২৬১; সুনানু আবী দাউদ, ৩১৬৫; সুনানু ইবন মাজাহ, ৬৪২
[3] সহীহুল বুখারী, ১৩০; সহীহ মুসলিম, ৫৯৯; সুনানুত তিরমিযী, ১২২; সুনানু ইবনি মাজাহ, ৬০০
 

Share this page