প্রশ্ন: আমি আমার বাবা-মার সাথে প্রয়োজন ছাড়া কথাবার্তা বলি না। কারণ তারা আমাকে ভুল বুঝে। আমি সহীহ সুন্নাহ ভিত্তিক নামায পড়ি। সেটা তাদের পছন্দনীয় নয়। আমার মাসআলাগুলো তাদের পছন্দনীয় নয়। আমার ভাই নামায না পড়ে ঘুমিয়ে থাকলেও তাকে নামাযের জন্য উঠায় না। ইত্যাদি কারণে আমি তাদের প্রতি অত্যন্ত রাগন্বিত হয়ে কথাবর্তা বলি না একান্ত দরকার ছাড়া। এতে আমি কি গুনাহগার হবো? কারণ, আল্লাহর ইবাদতের পরই তো সন্তানের দায়িত্ব পিতামাতার সেবা ও সদাচরণ করা। আমি তাদের সেবা করি কিন্তু তাদের সাথে কথাবার্তা বলি না। এতে আমার গুনাহ হবে কি না?
উত্তর: প্রথমত: আপনাকে সহীহ সুন্নাহ ভিত্তিক আমল করার জন্য অভিনন্দন জানাই আর দুআ করি, আল্লাহ তাআলা যেন আপনাকে আমরণ এ পথে টিকে থাকার তাওফিক দান করেন। আমীন।
অত:পর, আপনার অজানা নেই যে, ইসলামে পিতামাতার বিশাল হক রয়েছে। তাদের সেবা করা, আনুগত্য করা এবং তাদেরকে খুশি রাখা নি:সন্দেহে বিরাট ফযীলতপূর্ণ কাজ এবং জান্নাতে প্রবেশের মাধ্যমে। এ বিষয়ে কুরআন-সুন্নাহয় অনেক বক্তব্য এসেছে।
তাই তাদের সেবা, আনুগত্য ইত্যাদি অব্যহত রাখতে হবে। কিন্তু তারা অন্যায় কাজের আদেশ দিলে তা মান্য করা যাবে না। কিন্তু বাহ্যিক সদ্ব্যবহার অব্যাহত রাখতে হবে।
কিন্তু তাদের মধ্যে পাপাচার, অন্যায়-অপকর্ম দেখলে কী করণীয়?
হ্যাঁ, এ ক্ষেত্রে করণীয় হল, তাদেরকে নরম ভাষায় সুন্দরভাবে বুঝানোর চেষ্টা করতে হবে। তাদের প্রতি সম্মান-শ্রদ্ধা বজায় রাখতে হবে, তাদের খেদমত ও সাহায্য-সহযোগিতা অব্যাহত রাখতে হবে। যেমন ইবরাহীম আলাইহিস সালাম তার মূর্তি পূজক ও মূর্তি নির্মাতা পিতাকে অত্যন্ত চমৎকার নম্র ও ভদ্র ভাষায় শিরকের মত ভয়াবহ গুনাহ থেকে বাঁচানোর চেষ্টা করেছিলেন। [ আল্লাহর রাসূল ইবরাহীম আ. ও তার মূর্তি পূজক পিতার মাঝের কথোপকথনটি দেখুন সূরা মারয়াম এর ৪১ থেকে ৪৭ নং আয়াতগুলো]
আরেকটি বিষয় হল, দাওয়াতী ক্ষেত্রে হতাশ হওয়া যাবে না। কেননা আজকে তারা আপনার দ্বীনদারী ও সহীহ সুন্নাহ ভিত্তিক আমলকে অপছন্দ করছেন। কিন্তু আপনি জানেন না, হয়ত আপনার সদাচরণ, দলীল-প্রমাণ ও যুক্তি নির্ভর কথায় কোন একদিন তারা তাদের ভুল বুঝতে পারবে। যেমন ঘটেছে সাহাবীদের জীবনে। সাহাবী আমর ইবনুল জামুহ রা. এর সন্তানগণ ইসলাম গ্রহণ করেছেন। কিন্তু তিনি তাদের বিরোধিতা করেই গেছেন। শেষ পর্যন্ত ১০ বছর পর তার চোখ খুলেছে। তারপর সত্যকে উপলব্ধি করে তা মেনে নিয়ে ইসলামে দীক্ষিত হয়েছেন। এমন আরও বহু ঘটনা আছে।
যাহোক, পরম ধৈর্য ও দীর্ঘ মেয়াদি চিন্তা রেখেে সওয়াবের নিয়তে আপনি তাদেরকে দাওয়াত দিবেন আর নিজে আমল করবেন। তারা না শুনলেও আপনি আপনার দায়িত্ব পালনের কারণে আখিরাতে মুক্তি লাভ করবেন ইনশাআল্লাহ। কিন্তু তারা ভুল পথে থাকলে পরকালে আল্লাহর বিচারের কাঠগড়ায় জবাবদাহি করবে।
সুতরাং আপনার দায়িত্ব, কেবল সত্যের দাওয়াত পৌঁছিয়ে দেয়া। গ্রহণ করা বা না করা আল্লাহর ইচ্ছা এবং তাদের স্বাধীনতা। গ্রহণ করানোর ক্ষেত্রে আপনার কোনই দায়িত্ব নেই।
তাই বলব, তাদের প্রতি রাগ করে কথাবার্তা বন্ধ করবেন না। বরং তাদের সাথে সুসম্পর্ক বজায় রেখে পরম ধৈর্য্য ও দরদ মাখা হৃদয়ে তাদেরকে বুঝাবেন এবং নিজে হকের উপর অবিচল থাকবেন। কোনভাবেই তাদের সাথে খারাপ আচরণ করা যাবে না বা তাদের সাথে কথাবার্তা বন্ধ করা যাবে না।
তবে আলেমগণ বলেন, এক শর্তে তাদের সাথে সময়িকভাবে কথা বন্ধ রাখা জায়েয হবে। তা হল, যদি মনে করেন, আপনার কথাবার্তা বন্ধ রাখা তাদের উপর প্রভাব ফেলবে এবং তাদেরকে হক পথে ফিরিয়ে আনতে সাহায্য করবে। এমন সম্ভাবনা থাকলে সময়িকভাব কথাবার্তা বন্ধ রাখা যাবে। আর এমন সম্ভাবনা না থাকলে তা জায়েয হবে না। আল্লাহু আলাম।
আল্লাহু আলাম।
উত্তর: প্রথমত: আপনাকে সহীহ সুন্নাহ ভিত্তিক আমল করার জন্য অভিনন্দন জানাই আর দুআ করি, আল্লাহ তাআলা যেন আপনাকে আমরণ এ পথে টিকে থাকার তাওফিক দান করেন। আমীন।
অত:পর, আপনার অজানা নেই যে, ইসলামে পিতামাতার বিশাল হক রয়েছে। তাদের সেবা করা, আনুগত্য করা এবং তাদেরকে খুশি রাখা নি:সন্দেহে বিরাট ফযীলতপূর্ণ কাজ এবং জান্নাতে প্রবেশের মাধ্যমে। এ বিষয়ে কুরআন-সুন্নাহয় অনেক বক্তব্য এসেছে।
তাই তাদের সেবা, আনুগত্য ইত্যাদি অব্যহত রাখতে হবে। কিন্তু তারা অন্যায় কাজের আদেশ দিলে তা মান্য করা যাবে না। কিন্তু বাহ্যিক সদ্ব্যবহার অব্যাহত রাখতে হবে।
কিন্তু তাদের মধ্যে পাপাচার, অন্যায়-অপকর্ম দেখলে কী করণীয়?
হ্যাঁ, এ ক্ষেত্রে করণীয় হল, তাদেরকে নরম ভাষায় সুন্দরভাবে বুঝানোর চেষ্টা করতে হবে। তাদের প্রতি সম্মান-শ্রদ্ধা বজায় রাখতে হবে, তাদের খেদমত ও সাহায্য-সহযোগিতা অব্যাহত রাখতে হবে। যেমন ইবরাহীম আলাইহিস সালাম তার মূর্তি পূজক ও মূর্তি নির্মাতা পিতাকে অত্যন্ত চমৎকার নম্র ও ভদ্র ভাষায় শিরকের মত ভয়াবহ গুনাহ থেকে বাঁচানোর চেষ্টা করেছিলেন। [ আল্লাহর রাসূল ইবরাহীম আ. ও তার মূর্তি পূজক পিতার মাঝের কথোপকথনটি দেখুন সূরা মারয়াম এর ৪১ থেকে ৪৭ নং আয়াতগুলো]
আরেকটি বিষয় হল, দাওয়াতী ক্ষেত্রে হতাশ হওয়া যাবে না। কেননা আজকে তারা আপনার দ্বীনদারী ও সহীহ সুন্নাহ ভিত্তিক আমলকে অপছন্দ করছেন। কিন্তু আপনি জানেন না, হয়ত আপনার সদাচরণ, দলীল-প্রমাণ ও যুক্তি নির্ভর কথায় কোন একদিন তারা তাদের ভুল বুঝতে পারবে। যেমন ঘটেছে সাহাবীদের জীবনে। সাহাবী আমর ইবনুল জামুহ রা. এর সন্তানগণ ইসলাম গ্রহণ করেছেন। কিন্তু তিনি তাদের বিরোধিতা করেই গেছেন। শেষ পর্যন্ত ১০ বছর পর তার চোখ খুলেছে। তারপর সত্যকে উপলব্ধি করে তা মেনে নিয়ে ইসলামে দীক্ষিত হয়েছেন। এমন আরও বহু ঘটনা আছে।
যাহোক, পরম ধৈর্য ও দীর্ঘ মেয়াদি চিন্তা রেখেে সওয়াবের নিয়তে আপনি তাদেরকে দাওয়াত দিবেন আর নিজে আমল করবেন। তারা না শুনলেও আপনি আপনার দায়িত্ব পালনের কারণে আখিরাতে মুক্তি লাভ করবেন ইনশাআল্লাহ। কিন্তু তারা ভুল পথে থাকলে পরকালে আল্লাহর বিচারের কাঠগড়ায় জবাবদাহি করবে।
সুতরাং আপনার দায়িত্ব, কেবল সত্যের দাওয়াত পৌঁছিয়ে দেয়া। গ্রহণ করা বা না করা আল্লাহর ইচ্ছা এবং তাদের স্বাধীনতা। গ্রহণ করানোর ক্ষেত্রে আপনার কোনই দায়িত্ব নেই।
তাই বলব, তাদের প্রতি রাগ করে কথাবার্তা বন্ধ করবেন না। বরং তাদের সাথে সুসম্পর্ক বজায় রেখে পরম ধৈর্য্য ও দরদ মাখা হৃদয়ে তাদেরকে বুঝাবেন এবং নিজে হকের উপর অবিচল থাকবেন। কোনভাবেই তাদের সাথে খারাপ আচরণ করা যাবে না বা তাদের সাথে কথাবার্তা বন্ধ করা যাবে না।
তবে আলেমগণ বলেন, এক শর্তে তাদের সাথে সময়িকভাবে কথা বন্ধ রাখা জায়েয হবে। তা হল, যদি মনে করেন, আপনার কথাবার্তা বন্ধ রাখা তাদের উপর প্রভাব ফেলবে এবং তাদেরকে হক পথে ফিরিয়ে আনতে সাহায্য করবে। এমন সম্ভাবনা থাকলে সময়িকভাব কথাবার্তা বন্ধ রাখা যাবে। আর এমন সম্ভাবনা না থাকলে তা জায়েয হবে না। আল্লাহু আলাম।
আল্লাহু আলাম।
উত্তর প্রদানে
আব্দুল্লাহিল হাদী বিন আব্দুল জলীল
দাঈ, জুবাইল দাওয়াহ এন্ড গাইডেন্স সেন্টার, সৌদি আরব।
আব্দুল্লাহিল হাদী বিন আব্দুল জলীল
দাঈ, জুবাইল দাওয়াহ এন্ড গাইডেন্স সেন্টার, সৌদি আরব।