প্রশ্ন: আল্লাহ তা‘আলা সূরা আলে ইমরানে বলেছেন—
অপর আয়াতে আল্লাহ তা‘আলা বলেন,
আয়াত দু’টির অর্থ কি? কীভাবে আয়াত দু’টির বিরোধ নিষ্পত্তি করব? প্রথম আয়াতের অর্থ কি এই যে, কতক গুনাহ এমন রয়েছে যখনই কোন ব্যক্তি এ ধরনের গুনাহ করবে তার তাওবা কবুল করা হবে না, নাকি একটি আয়াত অপরটির জন্য রহিত কারী অথবা কি নিষ্পত্তি?
উত্তর: আয়াত দু’টির মধ্যে কোন বিরোধ নেই। কারণ, প্রথম আয়াত মুরতাদ সম্পর্কে যে তাওবা করা ছাড়া মুরতাদ অবস্থায় মারা গেছে। মৃত্যুর সময় যদি সে তাওবা করে তার তাওবা কবুল করা হবে না। কারণ, আল্লাহ তা‘আলা বলেন,
আল্লাহ তা‘আলা আরো বলেন,
মোট কথা প্রথম আয়াত যারা দীন থেকে মুরতাদ হয়ে গেছে এবং মৃত্যুর আগ পর্যন্ত মুরতাদ অবস্থায় ছিল তাওবা করেনি। কিন্তু যখন মৃত্যু যন্ত্রণা শুরু হয় তখন সে তাওবা করে। তখন তার তাওবা কবুল করা হবে না।
যেমন, হাদীসে এসেছে—
কোন কোন আলেম বলেন, প্রথম আয়াতটি ঐ সব মুরতাদ সম্পর্কে যারা বার বার মুরতাদ হয়। তাদের তাওবা কবুল করা হবে না। বরং তাদের ওপর সর্বাবস্থায় মুরতাদের যে শাস্তি তা বাস্তবায়ন করা হবে।
আর দ্বিতীয় আয়াতটি অর্থাৎ
ঐ সব লোকদের সম্পর্কে যারা তাদের মৃত্যু যন্ত্রণা আসার পূর্বে তাওবা করে। আল্লাহ তা‘আলা তাদের তাওবা অবশ্যই কবুল করবেন। এ দ্বারা এ কথা স্পষ্ট হয় যে, আয়াত দু’টির মধ্যে কোন বিরোধ নেই। আল্লাহই তাওফীক দাতা।
﴿إِنَّ ٱلَّذِينَ كَفَرُواْ بَعۡدَ إِيمَٰنِهِمۡ ثُمَّ ٱزۡدَادُواْ كُفۡرٗا لَّن تُقۡبَلَ تَوۡبَتُهُمۡ وَأُوْلَٰٓئِكَ هُمُ ٱلضَّآلُّونَ ٩٠﴾ [ال عمران: ٩٠]
“নিশ্চয় যারা কুফরী করেছে ঈমান আনার পর, তারপর তারা কুফরীতে বেড়ে গিয়েছে, তাদের তাওবা কখনো কবুল করা হবে না। আর তারাই পথভ্রষ্ট।” [সূরা আলে ইমরান, আয়াত: ৯০]অপর আয়াতে আল্লাহ তা‘আলা বলেন,
﴿قُلۡ يَٰعِبَادِيَ ٱلَّذِينَ أَسۡرَفُواْ عَلَىٰٓ أَنفُسِهِمۡ لَا تَقۡنَطُواْ مِن رَّحۡمَةِ ٱللَّهِۚ إِنَّ ٱللَّهَ يَغۡفِرُ ٱلذُّنُوبَ جَمِيعًاۚ إِنَّهُۥ هُوَ ٱلۡغَفُورُ ٱلرَّحِيمُ ٥٣﴾ [الزمر: ٥٢]
“বল, ‘হে আমার বান্দাগণ, যারা নিজদের উপর বাড়াবাড়ি করেছ তোমরা আল্লাহর রহমত থেকে নিরাশ হয়ো না। অবশ্যই আল্লাহ সকল পাপ ক্ষমা করে দেবেন। নিশ্চয় তিনি ক্ষমাশীল, পরম দয়ালু’’। [সূরা আয-যুমার, আয়াত: ৫২]আয়াত দু’টির অর্থ কি? কীভাবে আয়াত দু’টির বিরোধ নিষ্পত্তি করব? প্রথম আয়াতের অর্থ কি এই যে, কতক গুনাহ এমন রয়েছে যখনই কোন ব্যক্তি এ ধরনের গুনাহ করবে তার তাওবা কবুল করা হবে না, নাকি একটি আয়াত অপরটির জন্য রহিত কারী অথবা কি নিষ্পত্তি?
উত্তর: আয়াত দু’টির মধ্যে কোন বিরোধ নেই। কারণ, প্রথম আয়াত মুরতাদ সম্পর্কে যে তাওবা করা ছাড়া মুরতাদ অবস্থায় মারা গেছে। মৃত্যুর সময় যদি সে তাওবা করে তার তাওবা কবুল করা হবে না। কারণ, আল্লাহ তা‘আলা বলেন,
﴿وَلَيۡسَتِ ٱلتَّوۡبَةُ لِلَّذِينَ يَعۡمَلُونَ ٱلسَّئَِّاتِ حَتَّىٰٓ إِذَا حَضَرَ أَحَدَهُمُ ٱلۡمَوۡتُ قَالَ إِنِّي تُبۡتُ ٱلۡـَٰٔنَ وَلَا ٱلَّذِينَ يَمُوتُونَ وَهُمۡ كُفَّارٌۚ أُوْلَٰٓئِكَ أَعۡتَدۡنَا لَهُمۡ عَذَابًا أَلِيمٗا ١٨﴾ [النساء : ١٨]
“আর তাওবা নাই তাদের, যারা অন্যায় কাজ করতে থাকে, অবশেষে যখন তাদের কারো মৃত্যু এসে যায়, তখন বলে, আমি এখন তাওবা করলাম, আর তাওবা তাদের জন্য নয়, যারা কাফির অবস্থায় মারা যায়; আমি এদের জন্যই তৈরী করেছি যন্ত্রণাদায়ক আযাব।” [সূরা নিসা, আয়াত: ১৮]আল্লাহ তা‘আলা আরো বলেন,
﴿وَمَن يَرۡتَدِدۡ مِنكُمۡ عَن دِينِهِۦ فَيَمُتۡ وَهُوَ كَافِرٞ فَأُوْلَٰٓئِكَ حَبِطَتۡ أَعۡمَٰلُهُمۡ فِي ٱلدُّنۡيَا وَٱلۡأٓخِرَةِۖ وَأُوْلَٰٓئِكَ أَصۡحَٰبُ ٱلنَّارِۖ هُمۡ فِيهَا خَٰلِدُونَ ٢١٧﴾ [البقرة: ٢١٧]
“আর যে তোমাদের মধ্য থেকে তাঁর দীন থেকে ফিরে যাবে, অতঃপর কাফির অবস্থায় মৃত্যু বরণ করবে, বস্তুত এদের আমলসমূহ দুনিয়া ও আখিরাতে বিনষ্ট হয়ে যাবে এবং তারাই আগুনের অধিবাসী। তারা সেখানে স্থায়ী হবে।” [সূরা বাকারাহ, আয়াত: ২১৮]মোট কথা প্রথম আয়াত যারা দীন থেকে মুরতাদ হয়ে গেছে এবং মৃত্যুর আগ পর্যন্ত মুরতাদ অবস্থায় ছিল তাওবা করেনি। কিন্তু যখন মৃত্যু যন্ত্রণা শুরু হয় তখন সে তাওবা করে। তখন তার তাওবা কবুল করা হবে না।
যেমন, হাদীসে এসেছে—
إِنَّ اللَّهَ يَقْبَلُ تَوْبَةَ الْعَبْدِ مَا لَمْ يُغَرْغِرْ
“মৃত্যু গড়গড়া আসার আগ পর্যন্ত কবুল করা হবে।”[1]কোন কোন আলেম বলেন, প্রথম আয়াতটি ঐ সব মুরতাদ সম্পর্কে যারা বার বার মুরতাদ হয়। তাদের তাওবা কবুল করা হবে না। বরং তাদের ওপর সর্বাবস্থায় মুরতাদের যে শাস্তি তা বাস্তবায়ন করা হবে।
আর দ্বিতীয় আয়াতটি অর্থাৎ
﴿قُلۡ يَٰعِبَادِيَ ٱلَّذِينَ أَسۡرَفُواْ عَلَىٰٓ أَنفُسِهِمۡ لَا تَقۡنَطُواْ مِن رَّحۡمَةِ ٱللَّهِۚ إِنَّ ٱللَّهَ يَغۡفِرُ ٱلذُّنُوبَ جَمِيعًاۚ إِنَّهُۥ هُوَ ٱلۡغَفُورُ ٱلرَّحِيمُ ٥٣﴾ [الزمر: ٥٢]
“বল, ‘হে আমার বান্দাগণ, যারা নিজদের উপর বাড়াবাড়ি করেছ তোমরা আল্লাহর রহমত থেকে নিরাশ হয়ো না। অবশ্যই আল্লাহ সকল পাপ ক্ষমা করে দেবেন। নিশ্চয় তিনি ক্ষমাশীল, পরম দয়ালু’।” [সূরা আয-যুমার, আয়াত: ৫২]ঐ সব লোকদের সম্পর্কে যারা তাদের মৃত্যু যন্ত্রণা আসার পূর্বে তাওবা করে। আল্লাহ তা‘আলা তাদের তাওবা অবশ্যই কবুল করবেন। এ দ্বারা এ কথা স্পষ্ট হয় যে, আয়াত দু’টির মধ্যে কোন বিরোধ নেই। আল্লাহই তাওফীক দাতা।
[1] মুসনাদে আহমদ, হাদীস নং ৬১৬০
শাইখ সালেহ আল-ফাওযান
জানতে আরও ডাউনলোড করুন - কুরআন ও সুন্নাহের ওপর আরোপিত বিভিন্ন প্রশ্নের জাওয়াব