সালাফী আকিদা ও মানহাজে - Salafi Forum

Salafi Forum হচ্ছে সালাফী ও সালাফদের আকিদা, মানহাজ শিক্ষায় নিবেদিত একটি সমৃদ্ধ অনলাইন কমিউনিটি ফোরাম। জ্ঞানগর্ভ আলোচনায় নিযুক্ত হউন, সালাফী আলেমদের দিকনির্দেশনা অনুসন্ধান করুন। আপনার ইলম প্রসারিত করুন, আপনার ঈমানকে শক্তিশালী করুন এবং সালাফিদের সাথে দ্বীনি সম্পর্ক গড়ে তুলুন। বিশুদ্ধ আকিদা ও মানহাজের জ্ঞান অর্জন করতে, ও সালাফীদের দৃষ্টিভঙ্গি শেয়ার করতে এবং ঐক্য ও ভ্রাতৃত্বের চেতনাকে আলিঙ্গন করতে আজই আমাদের সাথে যোগ দিন।
rasikulindia

প্রবন্ধ জ্বীন কয় প্রকার? নাম ও কাজ অনুযায়ী

rasikulindia

Salafi

Salafi User
Threads
37
Comments
48
Reactions
555
Credits
190
জ্বীনের তিন প্রকার: রাসূলুল্লাহ(ﷺ)-এ সম্পর্কে বলেছেন, জ্বীন তিন প্রকার-

১। যারা শূন্যে উড়ে বেড়ায়।
২। কিছু সাপ ও কুকুর ইত্যাদি রুপ পরিবর্তন করে।
৩। মানুষের কাছে আসে ও চলে যায়।

(সূত্র: তাবারানী। প্রখ্যাত হাদীস বিশারদ শায়খ আলবানী হাদীসটিকে সহীহ বলেছেন। দেখুন, সহীহ আল জামে আস সাগীর, হাদীস নং ৩১১৪, আবু সালাবা আল খাশানী(রাঃ) থেকে বর্ণিত। (মুজামু আলফাজ আল-আকীদাহ)

❑ জ্বীন বিভিন্ন প্রাণীর রূপ ধারণ করতে পারে। কিন্তু তাদের একটি গ্রুপ সর্বদা সাপ ও কুকুরের বেশ ধারণ করে চলাফেরা করে মানব সমাজে। এটা তাদের স্থায়ী রূপ।

আবূ সা’লাবাহ্ আল খুশানী (রাঃ) হতে বর্ণিত। তিনি মারফূ’ সূত্রে(রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম হতে)বর্ণনা করেছেন:
জীন জাতি তিন প্রকার। একপ্রকার জিনের ডানা আছে, তারা শূন্যে উড়ে বেড়ায়।

দ্বিতীয় প্রকারের জীন সাপ ও কুকুরের আকৃতি ধারণ করে ও বসবাস করে।আর তৃতীয় প্রকারের জীন কোন এক নির্দিষ্ট স্থানে অবস্থান করে এবং তথা হতে অন্যত্র চলেও যায়। (শারহুস্ সুন্নাহ্)। [সহীহ : শারহুস্ সুন্নাহ্ ৩২৬৪, সহীহ ইবনু হিব্বান ৬১৬৫, সহীহুল জামি‘ ৩১১৪, সহীহ ওয়া য‘ঈফ আল জামি‘ আস্ সগীর ৫৪২৫, আল মু‘জামুল কাবীর লিত্ব ত্ববারানী ১৮০২০; হাদীস সম্ভারঃ ৮৯, (ত্বাবারানীর কাবীর ১৮০২০, হাকেম ৩৭০২, বাইহাক্বীর আসমা অসসিফাত, সহীহুল জামে' ৩১১৪)]

❑ জ্বীন জাতি মানুষের মত পুরুষ ও স্ত্রী জাতিতে বিভক্ত। একটি হাদিসে উল্লেখ করা হয়েছে-

“যে এই আয়াত(আয়াতুল কুরসী) পড়বে, আল্লাহ তা’আলা তার জন্য একজন প্রহরী নিযুক্ত করে দিবেন এবং কোন পুরুষ এবং নারী জ্বীন-শয়তান তার কাছে আসতে পারবে না।” [সহিহ বুখারী, ৫০১০]

❑ নাম ও কাজ অনুযায়ী

ইবলিস: এই জ্বীন আদম (আঃ)কে সিজদা/সালাম করতে অস্বীকার করেছিল বলে কুরআনে বর্ণিত হয়েছে। মুসলিমরা বিশ্বাস করে, এই জ্বীন জান্নাতে থাকাকালে আদম (আঃ)কে আল্লাহর আদেশ অমান্য করতে প্ররোচিত করেছিল এবং পৃথিবীতেও সে মানুষদেরকে পথভ্রষ্ট করে।

খানজাব: এই জ্বীন সালাতরত মানুষের মনে নানারকম চিন্তা ঢুকিয়ে নামাজ থেকে অমনোযোগী ও উদাসীন করে তুলে।
ওলহান:এরা হচ্ছে একপ্রকার শয়তান জ্বীন যারা মানুষকে ওযুর সময় ওয়াসওয়াসা দেয়।

ক্বারীন: ক্বারিন অর্থ হচ্ছে সংগী, প্রত্যেক মানুষের সাথেই শয়তান জ্বীন লেগে থাকে, সংগী হিসেবে। এরা সবসময় বান্দার অন্তরে খারাপ চিন্তা ঢুকিয়ে দিয়ে পাপ কাজ করতে উৎসাহিত করে।

আরবদের ভাষায় জ্বিনদের নাম ও প্রকারভেদ

ইবনে আব্দিল বার্র বলেছেন, আহলে কালাম ও ভাষাবিদদের নিকট জ্বিন জাতির বিভিন্ন প্রকারভেদ আছে। যেমন -

১। কেবল জ্বিনকে উল্লেখ করলে বলে, জিন্নী।
২। যে জ্বিন মাষদের সাথে বসবাস করে, তার কথা বললে বলে, আমের, বহুবচনে উম্মার।
৩। যে শিশুকে উত্যক্ত করে, তার কথা বললে বলে, আরওয়াহ।
৪ । খবীস আকারে উত্যক্ত করলে তাকে বলে, শয়তান।
৫। এর চাইতে বেশি ক্ষতি করলে বলে, মারেদ।
৬। এর চাইতেও বেশি দুর্ধর্ষ হলে বলে, ইফরীত; বহুবচনে আফারীত। আর নবী সাল্লাল্লাহু 'আলাইহি ওয়াসাল্লাম

বলেছেন,

الحِنُّ ثَلاثَةُ أَصْنافِ فَصِنف لَهُمْ أَجْنِحَةٌ يَطِيرُونَ بِها في الهَوَاءِ وَصِنْفٌ حَيَّاتٌ وَكِلابٌ وَصِنْفٌ يَحِلُّونَ وَيَظْعَنُونَ​

অর্থাৎ, জ্বিন তিন শ্রেণীর। এক শ্রেণীর ডানা আছে, তারা তার সাহায্যে বাতাসে উড়ে বেড়ায়, এক শ্রেণী সাপ-কুকুর আকারে বসবাস করে, আর এক শ্রেণী স্থায়ীভাবে বসবাস করে ও ভ্রমণ করে ।

জ্ঞাতব্য যে, দৈত্য, দানব, অসুর, রাক্ষস, দেও-পরী, ভুত-প্রেত- প্রেতিনী, প্রেতাত্মা, পিশাচ---এসব কিছু জ্বিনেরই বিভিন্ন ভাষায় অথবা বিভিন্ন গুণের উপর এক একটা নাম । [ত্বাবারানীর কাবীর, মাশা. হা/৫৭৩, হাকেম, মাশা. হা/৩৭০২, বাইহাক্বীর আসমা অসিফাত, সহীহুল জামে' লিল আলবানী, মাশা. হা/৩১১৪]

এই গুলি নেওয়া হয়েছেঃ বইঃ জ্বিন ও শয়তান জগৎ, শায়খ আব্দুল হামিদ ফাইযী আল মাদানী, আব্দুল্লাহ শহীদ আব্দুর রহমান ইত্যাদি বই থেকে।
 
COMMENTS ARE BELOW
Top