সালাফী আকিদা ও মানহাজে - Salafi Forum

Salafi Forum হচ্ছে সালাফী ও সালাফদের আকিদা, মানহাজ শিক্ষায় নিবেদিত একটি সমৃদ্ধ অনলাইন কমিউনিটি ফোরাম। জ্ঞানগর্ভ আলোচনায় নিযুক্ত হউন, সালাফী আলেমদের দিকনির্দেশনা অনুসন্ধান করুন। আপনার ইলম প্রসারিত করুন, আপনার ঈমানকে শক্তিশালী করুন এবং সালাফিদের সাথে দ্বীনি সম্পর্ক গড়ে তুলুন। বিশুদ্ধ আকিদা ও মানহাজের জ্ঞান অর্জন করতে, ও সালাফীদের দৃষ্টিভঙ্গি শেয়ার করতে এবং ঐক্য ও ভ্রাতৃত্বের চেতনাকে আলিঙ্গন করতে আজই আমাদের সাথে যোগ দিন।

প্রশ্নোত্তর জুমার রাত যদি বেজোড় তারিখে পড়ে- তাহলে কি সেটা কদরের রাত?

FORUM BOT

Doing Automated Jobs

Threads
4,140
Comments
4,353
Solutions
1
Reactions
37,605
Credits
24,212
প্রশ্ন: এ বছরের সাতাশে রমযান জুমাবারে হবে। ইবনে তাইমিয়া (রহঃ) বলেন: “রমযানের শেষ দশকের বেজোড় কোন রাত যদি জুমাবারে পড়ে তাহলে সে রাত্রি লাইলাতুল ক্বদর হওয়ার সম্ভাবনা অধিক”— এ কথা কি সঠিক?


উত্তর: আলহামদুলিল্লাহ।


উল্লেখিত উক্তিটি শাইখুল ইসলাম ইবনে তাইমিয়া (রহঃ) এর উক্তি হিসেবে আমরা পাইনি। বরং ইবনে রজব আল-হাম্বলি (রহঃ) এ উক্তিটি ইবনে হুবাইরা (রহঃ) থেকে বর্ণনা করেছেন; তিনি বলেন: “যদি রমযানের শেষ দশকের কোন এক বেজোড় রাত শুক্রবারের রাত হয় তাহলে সেটি লাইলাতুল ক্বদর হওয়ার সম্ভাবনা অধিক”।[ইবনে রজব লিখিত ‘লাতায়েফুলা মাআরিফ’ পৃষ্ঠা-২০৩]


এ উক্তিটির প্রবক্তা এ ভিত্তিতে কথাটি বলেছেন যে, শুক্রবারের রাত হচ্ছে- সপ্তাহের সবচেয়ে উত্তম রাত। তাই রমযানের শেষ দশকের বেজোড় কোন রাত যদি শুক্রবার রাতে পড়ে তাহলে সেটি লাইলাতুল ক্বদর হওয়ার সম্ভাবনা বেশি থাকে। তবে, এ অভিমতটির পক্ষে আমরা কোন হাদিস কিংবা সাহাবীদের কোন বক্তব্য পাইনি। হাদিস থেকে যে প্রমাণ পাওয়া যায় তা থেকে জানা যায় যে, লাইলাতুল ক্বদর রমযানের শেষ দশদিনের মধ্যে ঘুরতে থাকে। শেষ দশদিনের বেজোড় রাতগুলো লাইলাতুল ক্বদর হওয়ার সম্ভাবনা বেশি থাকে। আর এ রাতগুলোর মধ্যে সবচেয়ে বেশি সম্ভাবনাময় রাত হচ্ছে- সাতাশে রমযান; তবে সুনিশ্চিত করার সুযোগ নেই যে, এটাই লাইলাতুল ক্বদর।


মুসলমানের কর্তব্য হচ্ছে- রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামের অনুসরণে শেষ দশদিনের প্রতিরাতে লাইলাতুল ক্বদর অন্বেষণে সচেষ্ট হওয়া।


শাইখ সুলাইমান আল-মাজেদ (হাফিযাহুল্লাহ) বলেন: “শরিয়তের এমন কোন দলিল আমাদের জানা নেই যে, শুক্রবার রাত বেজোড় রাত হলে সেটি লাইলাতুল ক্বদর হবে।অতএব, এ ধরণের কোন নিশ্চয়তা দেয়া কিংবা এ অভিমতের শুদ্ধতায় বিশ্বাস করা— ঠিক হবে না। বরং শরিয়তের বিধান হচ্ছে— শেষ দশরাত্রিতে লাইলাতুল ক্বদর অন্বেষণে সচেষ্ট থাকা। যে ব্যক্তি শেষ দশরাতের প্রতিটি রাতে আমল করবে এটা নিশ্চিত যে, সে লাইলাতুল ক্বদর পাবে। আল্লাহই ভাল জানেন।”[সমাপ্ত]


হাফেয ইবনে হাজার (রহঃ) বলেন: “লাইলাতুল ক্বদর রমযানের মধ্যে সীমাবদ্ধ। এরপর রমযানের শেষ দশদিনের মধ্যে সীমাবদ্ধ। আবার শেষ দশদিনের বেজোড় রাতগুলোর মধ্যে সীমাবদ্ধ; সুনির্দিষ্ট কোন রাতের মধ্যে নয়। এ বিষয়ে বর্ণিত হাদিসগুলো সম্মিলিতভাবে এ অর্থই প্রমাণ করে।”[ফাতহুল বারী (৪/২৬০) থেকে সমাপ্ত]


ইমাম নববী (রহঃ) বলেন: “উবাই বিন কাব (রাঃ) এর হাদিসে এসেছে যে, তিনি হলফ করে বলতেন: লাইলাতুল ক্বদর হচ্ছে— সাতাশে রমযান”। এ মাসয়ালার অনেক অভিমতের মধ্যে এটিও একটি। তবে, অধিকাংশ আলেমের অভিমত হচ্ছে— এটি রমযানের শেষ দশরাতের অজ্ঞাত কোন এক রাত। এ দশরাতের মধ্যে সবচেয়ে আশাব্যঞ্জক হচ্ছে— বেজোড় রাতগুলো। বেজোড় রাতগুলোর মধ্যে অধিক আশাব্যঞ্জক হচ্ছে— ২৭ রমযান, ২৩ রমযান ও ২১ রমযান। অধিকাংশ আলেমের মতে, এটি নির্দিষ্ট কোন একটি রাত; আবর্তিত হয় না। কিন্তু, সুক্ষ্মদর্শী আলেমদের মতে, লাইলাতুল ক্বদর আবর্তিত হয়। কোন বছর ২৭ শে রমযান, কোন বছর ২৩ রমযান এবং কোন বছর ২১ শে রমযান কিংবা অন্য কোন রাত। এ মতটির মাধ্যমে বিপরীতমুখী সবগুলো হাদিসের মাঝে সমন্বয় করা যায়।”


[ইমাম নববীর ‘শারহু সহিহ মুসলিম’ (৬/৪৫) থেকে সমাপ্ত


আরও জানতে নং 50693 প্রশ্নোত্তর দেখা যেতে পারে।


আল্লাহই ভাল জানেন।


সুত্র: Islamqa.info
 
Top