সালাফী আকিদা ও মানহাজে - Salafi Forum

Salafi Forum হচ্ছে সালাফী ও সালাফদের আকিদা, মানহাজ শিক্ষায় নিবেদিত একটি সমৃদ্ধ অনলাইন কমিউনিটি ফোরাম। জ্ঞানগর্ভ আলোচনায় নিযুক্ত হউন, সালাফী আলেমদের দিকনির্দেশনা অনুসন্ধান করুন। আপনার ইলম প্রসারিত করুন, আপনার ঈমানকে শক্তিশালী করুন এবং সালাফিদের সাথে দ্বীনি সম্পর্ক গড়ে তুলুন। বিশুদ্ধ আকিদা ও মানহাজের জ্ঞান অর্জন করতে, ও সালাফীদের দৃষ্টিভঙ্গি শেয়ার করতে এবং ঐক্য ও ভ্রাতৃত্বের চেতনাকে আলিঙ্গন করতে আজই আমাদের সাথে যোগ দিন।

জাহমিয়্যাহ (জাহমী) কারা ?

Joynal Bin Tofajjal

Student Of Knowledge

Forum Staff
Moderator
Uploader
Exposer
HistoryLover
Salafi User
LV
16
 
Awards
30
Credit
4,233
জাহমিয়্যাহ (জাহমী) কারা ?
━━━━━━━━━━━━━​

জাহমিয়া শব্দটি জাহম ইবন সাফওয়ান নামক একজন পথভ্রষ্ট লোকের দিকে সম্পৃক্ত। হিজরী ২য় শতাব্দীতে খুরাসানে তার উদ্ভব। তার সমস্যা ছিল সে কালাম শাস্ত্রে পারদর্শী ছিল, কুরআন জানতো, কিন্তু হাদীস সম্পর্কে অজ্ঞ ছিল। সর্বপ্রথম সে বাদানুবাদের ইতিহাস চালু করে। অপরদিকে সে সৎকাজের আদেশ ও অসৎকাজে নিষেধও করতো। এতে করে তার ব্যাপারে অনেকেই ধোঁকাগ্রস্ত হতো। কারণ তার কাজের দোষ ধরা যেতো না, অথচ আকীদাকে সম্পূর্ণ বরবাদ করে দিয়েছে।

হিজরী ১৩২ সালে সিলম ইবন আহওয়ায আল-কিরমানী তাকে হত্যা করে তখনকার সময়ে মানুষদেরকে ফিতনা থেকে বাঁচানোর চেষ্টা করেছিল।
বস্তুত জাহমিয়া একটি গোষ্ঠির নাম, যারা মুসলিমদের অন্তর্ভুক্ত ফির্কাসমূহের বাইরের গোষ্ঠী হিসাবেই বেশি পরিচিত। কারণ তারা এমন সব আকীদা বিশ্বাস পোষণ করতো যা সরাসরি কুরআন ও হাদীসে আকীদার বিরোধী।

যেমন,
❑- তাওহীদে তার মতবাদ ছিল, আল্লাহর সকল নাম ও গুণাবলী অস্বীকার করা। আল্লাহর নামগুলোকে রূপক বলত।

❑- আল্লাহ তা‘আলা সর্বোচ্চ সত্তা হওয়া অস্বীকার করতো। অর্থাৎ আল্লাহ তা‘আলার ‘উলু’ বা উপরে থাকা সাব্যস্ত করতো না।

❑- কুরআনকে আল্লাহর কালাম স্বীকার করতো না। কুরআনকে সৃষ্ট বলত।

❑- আল্লাহ কথা বলেন এটা সে স্বীকার করতো না।

❑- সে মনে করতো আল্লাহ সত্তাগতভাবে সকল সৃষ্টির সাথে রয়েছে। পরবর্তীতে তার এ মতবাদটি সর্বেশ্বরবাদী ও হুলুলী লোকদের উপজীব্যে পরিণত হয়।

❑- তার কাছে ঈমান হচ্ছেে শুধু আল্লাহকে চেনার নাম।

❑- তাকদীরের উপর ঈমানের অধ্যায়ে সে মনে করত মানুষ সব মাজবূর বা বাধ্য। এ জন্য সে এ অধ্যায়ে জাবরিয়া।

❑- আখেরাতের ওপর ঈমান অধ্যায়ে অনেক কিছু সে অস্বীকার করত: যেমন,
↳. কবরের আযাব।​
↳. মীযান।​
↳. সীরাত।​
↳. আল্লাহকে দেখা।​
↳. সে বিশ্বাস করতো যে, জান্নাত ও জাহান্নাম ধ্বংস হয়ে যাবে।​

এ হচ্ছে আসল জাহমিয়াদের আকীদা-বিশ্বাস। ইসলামের ইতিহাসে ইসলামের সহীহ আকীদার ওপর তাদের মত এত বড় আঘাত আর কেউ করেনি। এজন্য ইমাম আবু সাঈদ উসমান ইবন সা‘ঈদ আদ-দারেমী তাঁর ‘আর-রাদ্দু আলাল জাহমিয়্যাহ গ্রন্থে তাদেরকে কাফের বলেছেন এবং কাফের হওয়ার পক্ষে দলীল পেশ করেছেন।
এরা হচ্ছে প্রথম জাহমিয়্যাহ। তাদের কুফরীর বিষয়টি সুস্পষ্ট।

পরবর্তীতে তাদের এসব আকীদা বিশ্বাস বিভিন্ন ফির্কার মধ্যে হুবহু অথবা কিছু পরিবর্তনসহ প্রবেশ করতে থাকে। আর যেহেতু জাহমিয়াদের এসব আকীদা বিশ্বাসের সারাংশ করলে বুঝা যায় যে, তাদের মূল সমস্যা ছিল আল্লাহর সত্তা, নাম, গুণ ও অধিকার নিয়ে।

তাই পরবর্তীতে ‘জাহমিয়্যাহ’ শব্দটি কখনও কখনও তাদের জন্য প্রয়োগ করা হতে থাকে, যারা আল্লাহর নাম বা গুণাবলী নিষ্ক্রীয় করে অথবা সেগুলোর কিছু কিছুকে নিষ্ক্রীয় করে। সে হিসাবে মু‘তাযিলাদেরকে জাহমিয়্যাহ বলা হয়, কারণ তারা আল্লাহর প্রায় সকল গুণকেই অস্বীকার করে। এরা হচ্ছে দ্বিতীয় পর্যায়ের জাহমিয়া।

অনুরূপভাবে তা দ্বারা আশা‘য়েরা ও মাতুরিদিয়্যাহদেরকেও বুঝানো হয়, কারণ সামান্য কিছু সিফাত বাদে সকল সিফাতকে অস্বীকার করে থাকে।
এরা হচ্ছে তৃতীয় পর্যায়ের জাহমিয়া।

তবে সাধারণভাবে যখন ‘জাহমিয়্যাহ’ ফির্কা হিসাবে বর্ণনা করা হয়, তখন যারা আল্লাহর সকল নাম ও গুণ অস্বীকার করে তাদেরকে বুঝানো হয়। বিশেষ করে যখন জাহমিয়া বলার পরে ভিন্ন করে মু‘তাযিলা, আশা‘য়েরা ও মাতুরিদিয়্যাহ বলা হয়, তখন প্রত্যেক গোষ্ঠীকে আলাদা বুঝানো হবে। যেমন কেউ বললো, জাহমিয়্যা, আশা‘য়েরা ও মাতুরিদিয়্যাহ সম্প্রদায় আহলুস সুন্নাত এর আকীদা বিরোধী।

এখন প্রশ্ন হচ্ছে পরবর্তী দ্বিতীয় ও তৃতীয় পর্যায়ের জাহমী যারা আছে তাদরেকে কি কাফের বলা যাবে?
না, তাদের মধ্যে যাদের ওপর প্রমাণ প্রতিষ্ঠা করা যায়নি ও যাদের সন্দেহ দূর করার চেষ্টা করা হয়নি, তাদেরকে কেউ কাফের বলে না। বরং সকল আহলুস সুন্নাহ এর মত অনুযায়ী সাধারণভাবে তারা সে বাহাত্তর ফের্কার অন্তর্ভুক্ত, যারা জাহান্নামে যাবে বলে রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহ আলাইহি ওয়াসাল্লাম ঘোষণা করেছেন। কিন্তু তারা জাহান্নামে চিরস্থায়ী হবে না।

তবে মনে রাখতে হবে যে, সাধারণ নীতির বিপরীতে গিয়ে কোনো ব্যক্তি বিশেষকে নির্ধারণ করে বাহাত্তর ফের্কার অন্তর্ভুক্ত বলা সঠিক নয়।
সুতরাং যদি প্রশ্ন করা হয় যে, জাহমী বললে কি তাকফীর করা হয়? তখন তার উত্তরে বলা হবে, সেটা নির্ধারিত হবে কোন জাহমীকে সে উদ্দেশ্য নিয়েছে সেটা নির্ধারণের পরে। আর তাকে কাফের বলার শর্ত ও বাঁধা দূরীকরণ হয়েছে কী না তা নিশ্চিত হওয়ার পরে।

আরো একটি বিষয় এখানে জানিয়ে রাখা দরকার, তা হচ্ছে অনেক প্রসিদ্ধ ইমাম ছিলেন, যারা দীনের অপরিসীম খেদমত করেছেন। উস্তাদ বা পরিবেশ বা অবস্থার পরিপ্রেক্ষিতে তারা কোনো কোনো সময় পরবর্তী জাহমিয়াদের কোনো কোনো মত গ্রহণ করেছেন বলে দেখা যায়। তাদেরকে জাহমী যেমন বলা যাবে না, তেমনি তাদেরকে এসব ভুলের কারণে আহলুস সুন্নাত ওয়াল জামা‘আতের বাইরেও বলা যাবে না। বরং বলা হবে, তারা আহলুস সুন্নাত ওয়াল জামা‘আতের ইমাম, যদিও তারা অমুক অমুক মাসআলায় ভুল করেছেন। তাদের ভুলগুলো তুলে ধরে সাবধান করতে হবে যাতে কেউ তা গ্রহণ না করে। সাথে সাথে তাদের সম্মানের বিষয়টি খেয়াল রাখতে হবে। যেমন ইমাম নাওয়াওয়ী, ইমাম ইবন হাজার। তারা আসলে আশ‘আরী বা মাতুরিদী মতবাদের লোক নন, যদিও তাদের মধ্যে কিছু কিছু মাসআলায় আশআারী ও মাতুরিদীদের মতবাদ দেখা গেছে। তাদের ব্যাপারে খারাপ কোনো কথা বলা কোনোভাবেই সমীচিন হবে না।

তবে যারা এসব ভ্রান্ত জাহমী আকীদা প্রতিষ্ঠার জন্য চেষ্টা চালিয়ে গেছেন তাদেরকে আশ‘আরী ও মাতুরিদীই বলতে হবে, তারা কখনো আহলুস সুন্নাত এর ইমাম নন। যেমন ইবন ফুওরাক, ফখরুদ্দীন রাযী, ইবনুস সুবুকী, প্রমুখ।

আল্লাহ আমাদেরকে বুঝার তাওফীক দান করুন, আমাদেরকে কুরআন, সুন্নাহ ও সালাফে সালেহীনের আকীদা বিশ্বাসের ওপর দৃঢ়পদ রাখুন। আমীন। সুম্মা আমীন।

▃▃▃▃▃▃▃▃▃▃▃▃▃▃▃▃▃▃▃▃‎‎▃▃▃

— [ শাইখ প্রফেসর ড. আবু বকর মুহাম্মাদ যাকারিয়া ╏ أ.د. أبو بكر محمد زكريا ] •
 

nuhel

New member

LV
0
 
Awards
5
Credit
17
সুন্দর
জাহমিয়্যাহ (জাহমী) কারা ?
━━━━━━━━━━━━━​

জাহমিয়া শব্দটি জাহম ইবন সাফওয়ান নামক একজন পথভ্রষ্ট লোকের দিকে সম্পৃক্ত। হিজরী ২য় শতাব্দীতে খুরাসানে তার উদ্ভব। তার সমস্যা ছিল সে কালাম শাস্ত্রে পারদর্শী ছিল, কুরআন জানতো, কিন্তু হাদীস সম্পর্কে অজ্ঞ ছিল। সর্বপ্রথম সে বাদানুবাদের ইতিহাস চালু করে। অপরদিকে সে সৎকাজের আদেশ ও অসৎকাজে নিষেধও করতো। এতে করে তার ব্যাপারে অনেকেই ধোঁকাগ্রস্ত হতো। কারণ তার কাজের দোষ ধরা যেতো না, অথচ আকীদাকে সম্পূর্ণ বরবাদ করে দিয়েছে।

হিজরী ১৩২ সালে সিলম ইবন আহওয়ায আল-কিরমানী তাকে হত্যা করে তখনকার সময়ে মানুষদেরকে ফিতনা থেকে বাঁচানোর চেষ্টা করেছিল।
বস্তুত জাহমিয়া একটি গোষ্ঠির নাম, যারা মুসলিমদের অন্তর্ভুক্ত ফির্কাসমূহের বাইরের গোষ্ঠী হিসাবেই বেশি পরিচিত। কারণ তারা এমন সব আকীদা বিশ্বাস পোষণ করতো যা সরাসরি কুরআন ও হাদীসে আকীদার বিরোধী।

যেমন,
❑- তাওহীদে তার মতবাদ ছিল, আল্লাহর সকল নাম ও গুণাবলী অস্বীকার করা। আল্লাহর নামগুলোকে রূপক বলত।

❑- আল্লাহ তা‘আলা সর্বোচ্চ সত্তা হওয়া অস্বীকার করতো। অর্থাৎ আল্লাহ তা‘আলার ‘উলু’ বা উপরে থাকা সাব্যস্ত করতো না।

❑- কুরআনকে আল্লাহর কালাম স্বীকার করতো না। কুরআনকে সৃষ্ট বলত।

❑- আল্লাহ কথা বলেন এটা সে স্বীকার করতো না।

❑- সে মনে করতো আল্লাহ সত্তাগতভাবে সকল সৃষ্টির সাথে রয়েছে। পরবর্তীতে তার এ মতবাদটি সর্বেশ্বরবাদী ও হুলুলী লোকদের উপজীব্যে পরিণত হয়।

❑- তার কাছে ঈমান হচ্ছেে শুধু আল্লাহকে চেনার নাম।

❑- তাকদীরের উপর ঈমানের অধ্যায়ে সে মনে করত মানুষ সব মাজবূর বা বাধ্য। এ জন্য সে এ অধ্যায়ে জাবরিয়া।

❑- আখেরাতের ওপর ঈমান অধ্যায়ে অনেক কিছু সে অস্বীকার করত: যেমন,
↳. কবরের আযাব।​
↳. মীযান।​
↳. সীরাত।​
↳. আল্লাহকে দেখা।​
↳. সে বিশ্বাস করতো যে, জান্নাত ও জাহান্নাম ধ্বংস হয়ে যাবে।​

এ হচ্ছে আসল জাহমিয়াদের আকীদা-বিশ্বাস। ইসলামের ইতিহাসে ইসলামের সহীহ আকীদার ওপর তাদের মত এত বড় আঘাত আর কেউ করেনি। এজন্য ইমাম আবু সাঈদ উসমান ইবন সা‘ঈদ আদ-দারেমী তাঁর ‘আর-রাদ্দু আলাল জাহমিয়্যাহ গ্রন্থে তাদেরকে কাফের বলেছেন এবং কাফের হওয়ার পক্ষে দলীল পেশ করেছেন।
এরা হচ্ছে প্রথম জাহমিয়্যাহ। তাদের কুফরীর বিষয়টি সুস্পষ্ট।

পরবর্তীতে তাদের এসব আকীদা বিশ্বাস বিভিন্ন ফির্কার মধ্যে হুবহু অথবা কিছু পরিবর্তনসহ প্রবেশ করতে থাকে। আর যেহেতু জাহমিয়াদের এসব আকীদা বিশ্বাসের সারাংশ করলে বুঝা যায় যে, তাদের মূল সমস্যা ছিল আল্লাহর সত্তা, নাম, গুণ ও অধিকার নিয়ে।

তাই পরবর্তীতে ‘জাহমিয়্যাহ’ শব্দটি কখনও কখনও তাদের জন্য প্রয়োগ করা হতে থাকে, যারা আল্লাহর নাম বা গুণাবলী নিষ্ক্রীয় করে অথবা সেগুলোর কিছু কিছুকে নিষ্ক্রীয় করে। সে হিসাবে মু‘তাযিলাদেরকে জাহমিয়্যাহ বলা হয়, কারণ তারা আল্লাহর প্রায় সকল গুণকেই অস্বীকার করে। এরা হচ্ছে দ্বিতীয় পর্যায়ের জাহমিয়া।

অনুরূপভাবে তা দ্বারা আশা‘য়েরা ও মাতুরিদিয়্যাহদেরকেও বুঝানো হয়, কারণ সামান্য কিছু সিফাত বাদে সকল সিফাতকে অস্বীকার করে থাকে।
এরা হচ্ছে তৃতীয় পর্যায়ের জাহমিয়া।

তবে সাধারণভাবে যখন ‘জাহমিয়্যাহ’ ফির্কা হিসাবে বর্ণনা করা হয়, তখন যারা আল্লাহর সকল নাম ও গুণ অস্বীকার করে তাদেরকে বুঝানো হয়। বিশেষ করে যখন জাহমিয়া বলার পরে ভিন্ন করে মু‘তাযিলা, আশা‘য়েরা ও মাতুরিদিয়্যাহ বলা হয়, তখন প্রত্যেক গোষ্ঠীকে আলাদা বুঝানো হবে। যেমন কেউ বললো, জাহমিয়্যা, আশা‘য়েরা ও মাতুরিদিয়্যাহ সম্প্রদায় আহলুস সুন্নাত এর আকীদা বিরোধী।

এখন প্রশ্ন হচ্ছে পরবর্তী দ্বিতীয় ও তৃতীয় পর্যায়ের জাহমী যারা আছে তাদরেকে কি কাফের বলা যাবে?
না, তাদের মধ্যে যাদের ওপর প্রমাণ প্রতিষ্ঠা করা যায়নি ও যাদের সন্দেহ দূর করার চেষ্টা করা হয়নি, তাদেরকে কেউ কাফের বলে না। বরং সকল আহলুস সুন্নাহ এর মত অনুযায়ী সাধারণভাবে তারা সে বাহাত্তর ফের্কার অন্তর্ভুক্ত, যারা জাহান্নামে যাবে বলে রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহ আলাইহি ওয়াসাল্লাম ঘোষণা করেছেন। কিন্তু তারা জাহান্নামে চিরস্থায়ী হবে না।

তবে মনে রাখতে হবে যে, সাধারণ নীতির বিপরীতে গিয়ে কোনো ব্যক্তি বিশেষকে নির্ধারণ করে বাহাত্তর ফের্কার অন্তর্ভুক্ত বলা সঠিক নয়।
সুতরাং যদি প্রশ্ন করা হয় যে, জাহমী বললে কি তাকফীর করা হয়? তখন তার উত্তরে বলা হবে, সেটা নির্ধারিত হবে কোন জাহমীকে সে উদ্দেশ্য নিয়েছে সেটা নির্ধারণের পরে। আর তাকে কাফের বলার শর্ত ও বাঁধা দূরীকরণ হয়েছে কী না তা নিশ্চিত হওয়ার পরে।

আরো একটি বিষয় এখানে জানিয়ে রাখা দরকার, তা হচ্ছে অনেক প্রসিদ্ধ ইমাম ছিলেন, যারা দীনের অপরিসীম খেদমত করেছেন। উস্তাদ বা পরিবেশ বা অবস্থার পরিপ্রেক্ষিতে তারা কোনো কোনো সময় পরবর্তী জাহমিয়াদের কোনো কোনো মত গ্রহণ করেছেন বলে দেখা যায়। তাদেরকে জাহমী যেমন বলা যাবে না, তেমনি তাদেরকে এসব ভুলের কারণে আহলুস সুন্নাত ওয়াল জামা‘আতের বাইরেও বলা যাবে না। বরং বলা হবে, তারা আহলুস সুন্নাত ওয়াল জামা‘আতের ইমাম, যদিও তারা অমুক অমুক মাসআলায় ভুল করেছেন। তাদের ভুলগুলো তুলে ধরে সাবধান করতে হবে যাতে কেউ তা গ্রহণ না করে। সাথে সাথে তাদের সম্মানের বিষয়টি খেয়াল রাখতে হবে। যেমন ইমাম নাওয়াওয়ী, ইমাম ইবন হাজার। তারা আসলে আশ‘আরী বা মাতুরিদী মতবাদের লোক নন, যদিও তাদের মধ্যে কিছু কিছু মাসআলায় আশআারী ও মাতুরিদীদের মতবাদ দেখা গেছে। তাদের ব্যাপারে খারাপ কোনো কথা বলা কোনোভাবেই সমীচিন হবে না।

তবে যারা এসব ভ্রান্ত জাহমী আকীদা প্রতিষ্ঠার জন্য চেষ্টা চালিয়ে গেছেন তাদেরকে আশ‘আরী ও মাতুরিদীই বলতে হবে, তারা কখনো আহলুস সুন্নাত এর ইমাম নন। যেমন ইবন ফুওরাক, ফখরুদ্দীন রাযী, ইবনুস সুবুকী, প্রমুখ।

আল্লাহ আমাদেরকে বুঝার তাওফীক দান করুন, আমাদেরকে কুরআন, সুন্নাহ ও সালাফে সালেহীনের আকীদা বিশ্বাসের ওপর দৃঢ়পদ রাখুন। আমীন। সুম্মা আমীন।

▃▃▃▃▃▃▃▃▃▃▃▃▃▃▃▃▃▃▃▃‎‎▃▃▃

— [ শাইখ প্রফেসর ড. আবু বকর মুহাম্মাদ যাকারিয়া ╏ أ.د. أبو بكر محمد زكريا ] •

جزاكم الله خيرا واحسن الجزاء
জাজাকাল্লাহ খাইরান
 

Create an account or login to comment

You must be a member in order to leave a comment

Create account

Create an account on our community. It's easy!

Log in

Already have an account? Log in here.

Total Threads
12,653Threads
Total Messages
15,946Comments
Total Members
3,162Members
Latest Messages
mahiLatest member
Top