সালাফী আকিদা ও মানহাজে - Salafi Forum

Salafi Forum হচ্ছে সালাফী ও সালাফদের আকিদা, মানহাজ শিক্ষায় নিবেদিত একটি সমৃদ্ধ অনলাইন কমিউনিটি ফোরাম। জ্ঞানগর্ভ আলোচনায় নিযুক্ত হউন, সালাফী আলেমদের দিকনির্দেশনা অনুসন্ধান করুন। আপনার ইলম প্রসারিত করুন, আপনার ঈমানকে শক্তিশালী করুন এবং সালাফিদের সাথে দ্বীনি সম্পর্ক গড়ে তুলুন। বিশুদ্ধ আকিদা ও মানহাজের জ্ঞান অর্জন করতে, ও সালাফীদের দৃষ্টিভঙ্গি শেয়ার করতে এবং ঐক্য ও ভ্রাতৃত্বের চেতনাকে আলিঙ্গন করতে আজই আমাদের সাথে যোগ দিন।
Shams uz-zaman

Asking জানাজার নামাজের নিয়ম

Solution

জানাজার নামাজের নিয়ত​

প্রত্যেক ইবাদাতের জন্য নিয়ত করা ফরজ। নিয়ত মানে হচ্ছে মনের সংকল্প। আর তার স্থান হল অন্তর; মুখ নয়। মহানবী সঃ ও তার সাহাবীদের কেউই কোন নির্দিষ্ট শব্দ মুখে উচ্চারণ করতেন না; তাই তা মুখে উচ্চারণ করা বিদআত; তাছাড়া নিয়তের জন্য কোন বাধা-ধরা শব্দাবলীও নেই; যেকোন ইবাদাতের জন্য মনে মনে সংকল্প করলেই নিয়ত হয়ে যাবে; মুখে কিছু উচ্চারণের প্রয়োজন নেই।

আলক্বামাহ ইবনে ওয়াক্কাস আল-লায়সী (রহঃ) থেকে বর্ণিতঃ তিনি বলেন,

আমি উমর ইব্নুল খাত্তাব (রাঃ)-কে মিম্বারের উপর দাঁড়িয়ে বলতে শুনেছিঃ আমি আল্লাহর রাসূল (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-কে বলতে শুনেছিঃ কাজ (এর প্রাপ্য হবে) নিয়ত অনুযায়ী। আর মানুষ তার নিয়ত অনুযায়ী প্রতিফল পাবে।

ChatGPT

Ask me anything!

Threads
0
Comments
223
Solutions
10
Reactions
43
Credits
123
জানাজা নামাজ আল্লাহর রাহমতের জন্য মৃত ব্যক্তির জন্য আদায় করা হয়। জানাজা নামাজের নিয়ম নিম্নলিখিত ধাপে বিবর্ণ করা হলো:

১. ব্যক্তি সাফ সাফির মাঝে প্রতিষ্ঠিত হবে। জানাজা নামাজ আদান-ইকামার ছাড়া আদায় করা হয়। তাই রাস্তা উপরে নিচে কেউ বসা থাকবেন না।

২. ব্যক্তি ঘোষণা করবেন 'আল্লাহু আকবর' শব্দ ব্যবহার করে।

৩. প্রথমে চারটি তাকবীর উচ্চারণ করবেন। আসল নিলামির জন্য হাত গড়ে সইলভাবে থাকবেন। বায়েসেলে থাকবেন না।

৪. তারপর দু’টি হাত নিয়ে কানগুলো ধরবেন এবং একটি বাধক কাকক[a নাকে দম দিবেন। এই পদার্থ দিয়ে গঠিত ছাপ থাকার জন্য।

৫. আরও একটি তাকবীর উচ্চারণ করে সমাধান গ্রহণ করবেন। এই পদার্থ ছাড়া মাথা নিঝুমিয়ে রখবেন না।

৬. তারপর ভুঁইতে পাওয়া একদিনের জন্য আদায় করবেন।

৭. তারপরে একটি পদার্থ তুলে আসবেন বা উঠিয়ে আসবেন না। একই নিয়মে চোখ আদায় করবেন।

৮. তারপর আল্লাহকে আমানত থাকবেন এবং রাসূল পাঠিয়ে দেয়া শব্দটি সুনির্দিষ্ট সংখ্যক বার উচ্চারণ করবেন।

৯. তারপরে বদনামে গোড়াল কিরীটটি উঠিয়ে তাকবীর উচ্চারণ করবেন।

১০. এবং শেষে দুইটি শস ও এক সালাম আদায় করে আপনি শেষ হওয়ার পর তাকবীর উচ্চারণ করে ক্ষুদ্রতম তাকবীর আদায় করবেন এবং একটি পদার্থ তেল দেয়া বন্ধ করবেন।

এছাড়াও হারাম কাজ থেকে দূর থাকতে হবে এবং জানাজা নামাজের নিয়ম এক্ষেত্রে আমল বা শিরোনমসা করতে হবে।
 

Abu Abdullah

Knowledge Sharer

ilm Seeker
Uploader
Salafi User
Threads
745
Comments
997
Solutions
19
Reactions
9,813
Credits
5,992

জানাজার নামাজের নিয়ত​

প্রত্যেক ইবাদাতের জন্য নিয়ত করা ফরজ। নিয়ত মানে হচ্ছে মনের সংকল্প। আর তার স্থান হল অন্তর; মুখ নয়। মহানবী সঃ ও তার সাহাবীদের কেউই কোন নির্দিষ্ট শব্দ মুখে উচ্চারণ করতেন না; তাই তা মুখে উচ্চারণ করা বিদআত; তাছাড়া নিয়তের জন্য কোন বাধা-ধরা শব্দাবলীও নেই; যেকোন ইবাদাতের জন্য মনে মনে সংকল্প করলেই নিয়ত হয়ে যাবে; মুখে কিছু উচ্চারণের প্রয়োজন নেই।

আলক্বামাহ ইবনে ওয়াক্কাস আল-লায়সী (রহঃ) থেকে বর্ণিতঃ তিনি বলেন,

আমি উমর ইব্নুল খাত্তাব (রাঃ)-কে মিম্বারের উপর দাঁড়িয়ে বলতে শুনেছিঃ আমি আল্লাহর রাসূল (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-কে বলতে শুনেছিঃ কাজ (এর প্রাপ্য হবে) নিয়ত অনুযায়ী। আর মানুষ তার নিয়ত অনুযায়ী প্রতিফল পাবে।
 
Solution

Shams uz-zaman

Active member

Threads
26
Comments
32
Reactions
258
Credits
333

জানাজা শব্দের অর্থ কি​

আরবি জানাজা শব্দটি একবচন; এর বহু বচন হচ্ছে জানায়েজ। জানাজা শব্দের অর্থ হচ্ছে মৃত ব্যক্তি যতক্ষণ না তাকে কবরস্থ করা হয়। আরবিতে জানাজা সম্পর্কিত আরেকটি শব্দ রয়েছে যার সঙ্গে আমরা খুব একটা পরিচিত নই; আর সেটি হচ্ছে জিনাজা। অনেকের মতে জানাজা ও জিনাজা এই দুইটি শব্দের অর্থ একই অর্থাৎ মৃত ব্যক্তি। আবার অনেকের মতে জানাজা শব্দের অর্থ মৃত ব্যক্তি এবং জিনাজা শব্দের অর্থ মৃত ব্যক্তিকে বহন করার খাটিয়া। জানাজার সালাত বা জানাজার নামাজ হচ্ছে মৃত ব্যক্তির উপর যে সালাত আদায় করা হয় অর্থাৎ মৃত ব্যক্তির জন্য দোয়া করতে যে সালাত আদায় করা হয় সেটাই হচ্ছে জানাজার সালাত।

জানাজার নামাজের বিধান কি​

প্রত্যেক মুসলিম আহলে কিবলার উপর জানাযার সালাত ফরজে কেফায়া।


ইবনু মাজাহ হা/১৫২৬ জানায়েয’ অধ্যায়-৬, আহলে কিবলার উপর সালাত’ অনুচ্ছেদ ৩১; ফিক্বহুস সুন্নাহ ১/২৭১, ২৭৯-৮০।

অর্থাৎ মুসলমানদের কেউ জানাযা পড়লে উক্ত ফরজ আদায় হয়ে যাবে। না পড়লে সবাই দায়ী হবে। ছালাত হিসাবে অন্যান্য সালাতের ন্যায় ওযু, কিবলা, সতর ঢাকা ইত্যাদি সালাতে জানাজার শর্তাবলীর অন্তর্ভুক্ত। তবে পার্থক্য এই যে, জানাযার সালাতে কোন রুকু-সিজদা বা বৈঠক নেই এবং এ সালাতের জন্য নির্দিষ্ট কোন ওয়াক্ত নেই। বরং দিনে-রাতে সকল সময় এমনকি নিষিদ্ধ তিন সময়েও পড়া যায়।

ইবনু মাজাহ হা/১৫১৯; ফিক্বহুস সুন্নাহ ১/৮২-৮৩, ২৭১।


অবশ্য দুই প্রকার মাইয়্যেতের জানাযা এ নির্দেশের আওতাভুক্ত নয়। অর্থাৎ তাদের জানাযা পড়া ওয়াজিব নয়; তবে বিধেয় বটে।

প্রথম হল, নাবালক শিশু। কারণ, নবী সঃ তার শিশু পুত্র ইব্রাহীম রাঃ এর জানাযা পড়েননি। মা আয়েশা রাঃ বলেন, নবী সঃ এর পুত্র ১৮ মাস বয়সে মারা যায়। তিনি তার জানাজা পড়েন নি।


আবু দাউদ ২৭৭২, সহীহ আবু দাউদ ২৭২৯

আর দ্বিতীয় হল শহীদ। কেননা, নবী সাঃ উহুদ প্রভৃতি যুদ্ধের শহীদদের জানাযা পড়েননি বলে বর্ণনা পাওয়া যায়। অবশ্য তার নামায না পড়াটা উক্ত ধরনের মাইয়্যেতের অবিধেয় হওয়ার নির্দেশ দেয় না।

জানাজার নামাজের ফজিলত​

রাসূলুল্লাহ (ছাঃ) এরশাদ করেন যে ব্যক্তি ঈমানের সাথে ও সওয়াবের আশায় কোন জানাযায় শরীক হল এবং দাফন শেষে ফিরে এলো, সে ব্যক্তি দুই কীরাত সমপরিমাণ নেকি পেল। প্রতি কিরাত ওহােদ পাহাড় সমতুল্য। আর যে ব্যক্তি কেবলমাত্র জানাযা পড়ে ফিরে এলো, সে এক কিরাত পরিমাণ নেকী পেল।

মুত্তাফাক্ব ‘আলাইহ, মিশকাত হা/১৬৫১, ছালাত অধ্যায়-৪, জানাযার সালাত’ অনুচ্ছেদ-৫।

জানাজার নামাজের ফরজ কয়টি​

জানাজার নামাজের ফরজ ছয়টি। যথা

(১) দাঁড়িয়ে সালাত আদায় করা

(২) চার তাকবীর দেওয়া

(৩) সূরায়ে ফাতিহা পাঠ করা

(৪) দরুদ পাঠ করা

(৫) মাইয়েতের জন্য খালেস অন্তরে দুআ করা

(৬) সালাম ফিরানো।

জানাজার নামাজের সুন্নত কয়টি​

জানাজার নামাজের সুন্নত পাঁচটি। যথা

(১) জামাত সহকারে সালাত আদায় করা

(২) কমপক্ষে তিনটি কাতার হওয়া

(৩) ইমাম বা একাকী মুসল্লির জন্য পুরুষের মাথা ও মেয়েদের কোমর বরাবর দাঁড়ানো

(৪) ফাতিহা ব্যতীত অন্য একটি সূরা এবং হাদীসে বর্ণিত দোয়া সমূহ পাঠ করা

(৫) সালাত শেষে জানাজা উঠানাে পর্যন্ত দাঁড়িয়ে থাকা।

ইবনুন নাজ্জার আল-ফুতুহ, শারহুল মুনতাহা (বৈরূত : দার খিযর ১৪১৯/১৯৯৮) ৩/৫৫-৬৭; নাসাঈ হা/১৯৮৭, ৮৯।

বাকী সবই মুস্তাহাব। যদি ভুলক্রমে তিন তাকবীর হয়ে যায়, তবে পুনরায় ইমাম চতুর্থ তাকবীর দিবেন। যদি মুক্তাদীর কোন তাকবীর ছুটে যায়, তবে শেষে তাকবীর দিয়ে সালাম ফিরাবে। আর যদি না দেয় তাতেও দোষ নেই।

ফিক্বহুস সুন্নাহ ১/২৭৭।

জানাযার ইমামতি​

মাইয়েত কোন ন্যায়নিষ্ঠ ও পরহেজগার ব্যক্তিকে অসিয়ত করে গেলে তিনিই জানাজা পড়াবেন। নইলে ‘আমীর’ বা তার প্রতিনিধি অথবা মাইয়েতের কোন যোগ্য নিকটাত্মীয়, নতুবা স্থানীয় মসজিদের ইমাম বা অন্য কোন মুত্তাক্বী আলেম জানাযায় ইমামতি করবেন। মৃত ব্যক্তি দুজন ব্যক্তির নামেও অসিয়ত করে যেতে পারেন।

শারহুল মুনতাহা ৩/৫৬-৫৭; বায়হাকী ৪/২৮-২৯।

জানাজার নামাজের কাতার​

১. ইমামের পিছনে কাঁধে কাঁধ ও পায়ে পা মিলিয়ে কাতার দিবে।

মুত্তাফাক্ব আলাইহ, মিশকাত হা/১৬৫২, ৫৭, ৫৮; আবুদাঊদ হা/৬৬২।

উল্লেখ্য যে, রাসূলুল্লাহ (ছাঃ)-এর লাশ তার শয়ন কক্ষেই রাখা হয়েছিল। সম্ভবত: তার প্রতি সম্মান প্রদর্শন হেতু কেউ ইমাম হননি। বরং সেখানেই পৃথক পৃথক ভাবে সকলে জানাজা পড়েছিলেন। প্রথমে পুরুষগণ, পরে মহিলাগণ এবং শেষে বালকেরা। (শারহুল মুনতাহা ৩/৫৫; সীরাতে ইবনে হিশাম ২/৬৬৪ পৃঃ; ইবনু মাজাহ হা/১৬২৮, ‘জানায়েয অধ্যায় ৬, অনুচ্ছেদ-৬৫)।

২. এ সময় জামার হাতাগুলাে খুলে দিবে ও টাখনুর উপরে কাপড় রাখবে।

বুখারী, মিশকাত হা/৪৩১৪, ‘পোষাক’ অধ্যায়-২২।

৩. জুতা-স্যান্ডেল খোলার প্রয়োজন নেই। যদি তাতে নাপাকী থাকে, তবে তা মাটিতে ঘষে নিলেই যথেষ্ট হবে।

আবু দাউদ হা/৩৮৫-৮৭, তিরমিযী হা/৪০০, মিশকাত হা/৫০৩, ‘পবিত্রতা অধ্যায়-৩, অনুচ্ছেদ-৮।

৪. এ সময় জুতা-স্যান্ডেল থেকে পা বের করে তার উপর দাঁড়ানো স্রেফ বোকামি। মাইয়েতকে উত্তর মাথা করে কিবলার দিকে সামনে রাখবে।

আলবানী, তালখীছুল আহকামুল জানায়েয (কুয়েত: দার সালাফিইয়াহ, ১ম সংস্করণ, ১৪০২/১৯৮২), ৬৪ পৃঃ।

৫. যদি মাইয়েত পুরুষ হন, তবে ইমাম মাইয়্যেতের মাথা বরাবর দাঁড়াবেন। আর যদি মহিলা হন, তবে মাইয়েতের কোমর বরাবর দাঁড়াবেন।​

তিরমিযী, আবুদাঊদ, মিশকাত হা/১৬৭৯।

৬. মাইয়েত একত্রে একাধিক হলে এবং পুরুষ ও নারী হলে পুরুষের লাশ ইমামের কাছাকাছি সম্মুখে রাখবে। অতঃপর মহিলার লাশ থাকবে। যদি শিশু ও মহিলা হয়, তাহলে শিশুর লাশ প্রথমে ও মহিলার লাশ পরে থাকবে। ইমামের পিছনে তিনটি কাতার দেওয়া মুস্তাহাব।

আবু দাউদ হা/৩১৬৬, মওকুফ হাসান’; ঐ, মিশকাত হা/১৬৮৭, ‘জানায়েয’ অধ্যায়-৫, অনুচ্ছেদ-৫; তালখিছ, মাসআলা-৬৫, পৃ ৫০।

৭. ১ম কাতারে ইমামের কাছাকাছি মাইয়েতের উত্তরাধিকারীগণ ও দ্বীনদার গণ্যমান্য ব্যক্তিগণ দাঁড়াবেন। চারজন হলে ইমামের পিছনে দুজন দুজন করে দাঁড়াবে।

মুসলিম, মিশকাত হা/১০৮৮ ছালাত অধ্যায়-৪, অনুচ্ছেদ-২৪; শারহুল মুনতাহা ৩/৫৫-৫৯।

৮. ইমাম ব্যতীত একজন পুরুষ ও একজন মহিলা মুক্তাদী হলে ইমামের পিছনে পুরুষ ও তার পিছনে মহিলা দাঁড়াবেন। মুক্তাদী একজন হলে তিনি ইমামের পিছনে দাঁড়াবেন। কোন লোক না পেলে একাকী জানাযা পড়বেন।

হাকেম ১/৩৬৫, বায়হাকী ৪/৩০-৩১; তালখিছ ৫০-৫১ পৃঃ।

তবে শিরক ও বিদ’আতী আক্বীদা ও আমল মুক্ত দ্বীনদার মুসল্লির সংখ্যা জানাযায় যত বেশি হবে, মাইয়েতের জন্য তা তত বেশি উপকারী হবে এবং তাদের দুআ কবুল করা হবে।

মুসলিম, মিশকাত হা/১৬৬০-৬১ ‘জানায়েয’ অধ্যায়-৫, অনুচ্ছেদ-৫।

জানাজার নামাজের নিয়ত​

প্রত্যেক ইবাদাতের জন্য নিয়ত করা ফরজ। নিয়ত মানে হচ্ছে মনের সংকল্প। আর তার স্থান হল অন্তর; মুখ নয়। মহানবী সঃ ও তার সাহাবীদের কেউই কোন নির্দিষ্ট শব্দ মুখে উচ্চারণ করতেন না; তাই তা মুখে উচ্চারণ করা বিদআত; তাছাড়া নিয়তের জন্য কোন বাধা-ধরা শব্দাবলীও নেই; যেকোন ইবাদাতের জন্য মনে মনে সংকল্প করলেই নিয়ত হয়ে যাবে; মুখে কিছু উচ্চারণের প্রয়োজন নেই।

আলক্বামাহ ইবনে ওয়াক্কাস আল-লায়সী (রহঃ) থেকে বর্ণিতঃ তিনি বলেন,

আমি উমর ইব্নুল খাত্তাব (রাঃ)-কে মিম্বারের উপর দাঁড়িয়ে বলতে শুনেছিঃ আমি আল্লাহর রাসূল (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-কে বলতে শুনেছিঃ কাজ (এর প্রাপ্য হবে) নিয়ত অনুযায়ী। আর মানুষ তার নিয়ত অনুযায়ী প্রতিফল পাবে।

সহীহ বুখারী হাদিস নং ১

জানাজার নামাজের সঠিক নিয়ম​

জানাযার সালাতে চার তাকবীর দিবে। পাঁচ থেকে নয় তাকবীর পর্যন্ত প্রমাণিত আছে। তবে চার তাকবীরের হাদীস সমূহ অধিকতর সহীহ ও সংখ্যায় অধিক। মুক্তাদী ইমামের পিছে পিছে তাকবীর বলবে।

মুত্তাফাক্ব আলাইহ, মিশকাত হা/১৬৫২; তালখিছ ৫৪ পৃঃ।

১. প্রথমে মনে মনে জানাযার নিয়ত করে সরবে ‘আল্লাহু আকবর’ বলে দুই হাত কাঁধ পর্যন্ত উঠিয়ে বাম হাতের উপর ডান হাত বুকে বাধবে। এ সময় ছানা’ পড়বে না।

শারহুল মুনতাহা ৩/৬০; তালখিছ পৃ ১০১।

নাভির নীচে হাত বাঁধার হাদীস সর্বসম্মতভাবে যঈফ।

তালখিছ ৫৪ পৃঃ; ছিফাতু ছালাতিন নাবী পৃঃ ৬৯ টীকা দ্রষ্টব্য।

আনাস, ইবনে ওমর, ইবনে আব্বাস (রাঃ) প্রমুখ সাহাবীগণ সকল তাকবীরেই হাত উঠাতেন।

নায়লুল আওত্বার ৫/৭০-৭১।

২. অতঃপর আউযুবিল্লাহ-বিসমিল্লাহ সহ সূরায়ে ফাতিহা ও অন্য একটি সূরা পড়বে।

বুখারী ১/১৭৮, হা/১৩৩৫, ‘জানায়েয’ অধ্যায়-২৩, অনুচ্ছেদ-৬৫; মিশকাত হা/১৬৫৪; নাসাঈ হা/১৯৮৭, ৮৯; তালখিছ, ৫৪ পৃঃ।

৩. তারপর ২য় তাকবীর দিবে ও দরুদে ইবরাহীমী পাঠ করবে, যা আত্তাহিয়াতুর পরে পড়া হয়। তারপর ৩য় তাকবীর দিবে ও হাদিসে বর্ণিত দু’আ সমূহ পড়বে। দোয়া পাঠ শেষে ৪র্থ তাকবীর দিয়ে প্রথমে ডাইনে ও পরে বামে সালাম ফিরাবে। ডাইনে একবার মাত্র সালাম ফিরানােও জায়েজ আছে।

তালখিছ, ৪৪-৫৭ পৃ; মুছান্নাফ ইবনু আবী শায়বা, ইরওয়া হা/৭৩৪, ৩/১৮১।

জানাযার সালাত সরবে ও নীরবে পড়া যায়।

বুখারী, মুসলিম, মিশকাত হা/১৬৫৪-৫৫; নাসাঈ হা/১৯৮৯, ১৯৯১।

ইমাম সরবে পড়লে মুক্তাদীগণ আউযুবিল্লাহ-বিসমিল্লাহ সহ কেবল সূরায়ে ফাতিহা চুপে চুপে পড়বে এবং পরে দরূদ ও অন্যান্য দো’আ সমূহ পড়বে। তবে ইমাম নীরবে পড়লে মুক্তাদীগণ সুরা ফাতিহা ও অন্য একটি সূরা এবং অন্যান্য দো’আ সমূহ পড়বে।

জানাযার পূর্বে করণীয়​

জানাযার পূর্বে মৃতের জন্য প্রথম করণীয় হল তার ঋণ পরিশোধের ব্যবস্থা করা। এজন্য তার সকল সম্পদ বিক্রি করে হলেও তা করতে হবে। যদি তার কিছুই না থাকে, তাহলে তার নিকটাত্মীয়, সমাজ বা সরকার সে দায়িত্ব বহন করবে।

মুত্তাফাক্ব আলাইহ, মিশকাত হা/২৯১৩, ক্রয়-বিক্রয়’ অধ্যায়-১১, ‘দেউলিয়া হওয়া এবং ঋণগ্রস্ত ব্যক্তিকে অবকাশ দান’ অনুচ্ছেদ-৯।

জানাজার নামাজ বিষয়ে সতর্কতা​

মহাপাপী কোন মুসলিম যেমন কোন ব্যভিচারী, মদ্যপায়ী, চোর-দস্যু-সন্ত্রাসী, আত্মঘাতি, জারজ সন্তান, কবর ও মূর্তি পূজারী, মুশরিক ও বিদআতী (যতক্ষণ না সে প্রকাশ্যে কুফরী ঘোষণা করে), আমানতের খেয়ানতকারী প্রভৃতি লােকদের জানাযা কোন নেতৃস্থানীয় ব্যক্তি ও পরহেজগার আলেমগণ পড়বেন না। তবে সাধারণ লোকেরা পড়বেন।

বুলুগুল মারাম হা/৫৪২-এর ব্যাখ্যা দ্রষ্টব্য।

ঋণগ্রস্ত, আত্মহত্যাকারী ও বায়তুল মাল বা অন্যের সম্পদ আত্মসাৎ কারীর জানাজা রাসূলুল্লাহ (ছাঃ) নিজে পড়েননি, বরং অন্যকে পড়তে বলেন।

বুখারী, মিশকাত হা/২৯০৯; মুসলিম হা/২৩০৯, বুলুগুল মারাম হা/৫৪২; মুয়াত্তা, মিশকাত হা/৪০১১ ‘জিহাদ’ অধ্যায়, ‘গণীমত বণ্টন ও তাতে আত্মসাতের পরিণাম অনুচ্ছেদ-৭।

এটি ছিল তার পক্ষ থেকে অন্যকে আদব শেখানোর জন্য।

ইবনু মাজাহ হা/১৫২৬, ‘জানায়েয’ অধ্যায়-৬, আহলে কিবলার উপর সালাত’ অনুচ্ছেদ-৩১।

(১) খায়বার কিংবা হুনাইন-এর যুদ্ধে রাসূলুল্লাহ (ছাঃ)-এর জনৈক সাথী বীরত্বের সঙ্গে লড়াই করে। লোকেরা তার উচ্চ প্রশংসা করলে রাসূল (ছাঃ) বললেন, ঐ ব্যক্তি জাহান্নামের অধিবাসী। তখন একজন গােপনে তার পিছু নিল। দেখা গেল যে, ঐ ব্যক্তি যুদ্ধের এক পর্যায়ে আহত হল। অতঃপর যন্ত্রণা সহ্য করতে না পেরে নিজের অস্ত্র দিয়ে আত্মহত্যা করল। তখন। লোকটি ছুটে এসে বলল, আমি সাক্ষ্য দিচ্ছি যে, আপনি আল্লাহর রাসূল। তখন রাসূলুল্লাহ (ছাঃ) সবাইকে ডেকে বললেন, সত্যিকারের মুমিন ব্যতীত কেউ জান্নাতে প্রবেশ করবে না। মনে রেখো অনেক লোক জান্নাতি আমল করে। কিন্তু মৃত্যুকালে জাহান্নামী হয়ে যায়। আবার অনেকে জাহান্নামের আমল করে, কিন্তু মৃত্যুকালে জান্নাতী হয়ে যায়। অতঃপর তিনি বলেন, নিশ্চয়ই আল্লাহ এই দ্বীনকে সাহায্য করেন অনেক পাপী লোকের মাধ্যমে।

বুখারী, ফাতহুল বারী হা/৪২০২-০৩; আবু নাঈম ইছফাহানী, দালায়েলুন নবুওয়াত হা/২৫৯।

আল্লাহ বলেন, তোমরা নিজেদেরকে হত্যা করো না। নিশ্চয় আল্লাহ তোমাদের প্রতি অতিশয় দয়াবান।​

নিসা ৪/২৯

(২) খায়বার যুদ্ধে রাসূলুল্লাহ (ছাঃ)-এর সাথীদের মধ্যে একজন নিহত হলে তিনি বলেন, তোমরা তোমাদের সাথীর জানাজা পড়। এতে তাদের মন খারাপ হলে রাসূলুল্লাহ (ছাঃ) তাদের বললেন, তোমাদের সাথীটি আল্লাহর রাস্তায় খেয়ানত করেছে। পরে অনুসন্ধানে তার থলিতে ইহুদিদের কণ্ঠহারের একটি ছিদ্র যুক্ত ছোট পাথরের লকেট পাওয়া গেল (যা গণীমতের মাল ছিল)। যার মূল্য দুই দিরহামেরও কম।

মুয়াত্তা, আবু দাউদ, নাসাঈ, মিশকাত হা/৪০১১; ইবনু মাজাহ হা/২৮৪৮, সনদ ছহীহ।

(৩) রাসূলুল্লাহ (ছাঃ)-কে হাদিয়া হিসাবে পাঠানো গোলাম মিদ‘আম খায়বার যুদ্ধে নিহত হলে লোকেরা তার জান্নাতের সুসংবাদ বলতে থাকলে রাসূলুল্লাহ (ছাঃ) রাগতস্বরে বলেন, কখনোই না। আল্লাহর কসম! গণিমতের মাল থেকে যে চাদরটি সে চুরি করেছে, তা তাকে আগুনে পোড়াবে।

মুত্তাফাক্ব আলাইহ, মিশকাত হা/৩৯৯৭, ‘জিহাদ’ অধ্যায়-১৯, অনুচ্ছেদ-৭।

(৪) অন্য হাদীসে এসেছে, ‘মুমিনের নক্স তার ঋণের সাথে লটকানো থাকে এবং সে জান্নাতে প্রবেশ করবে না, যতক্ষণ না তার ঋণ পরিশোধ করা হয়।

তিরমিযী, ইবনে মাজাহ, দারেমী, আহমাদ, মিশকাত হা/২৯১৫, ২৯২৯।

(৫) যারা শরীক ফাঁকি দেয় কিংবা শক্তির জোরে বা ছল-চাতুরী করে অন্যের জমি ও সম্পদ আত্মসাৎ করে, তাদের জানাযা কোন পরহেজগার আলেমের পড়া উচিত নয়। কেননা রাসূলুল্লাহ (ছাঃ) বলেন, যে ব্যক্তি অন্যায়ভাবে কারো জমি দখল করে, কিয়ামতের দিন সাত তবক জমিন তার গলায় বেড়ী রূপে পরিয়ে দেওয়া হবে।

মুত্তাফাক্ব ‘আলাইহ, মিশকাত হা/২৯৩৮, ‘ক্রয়-বিক্রয়’ অধ্যায়-১১, অনুচ্ছেদ-১১।

অন্য বর্ণনায় এসেছে, তাকে কিয়ামতের দিন ঐ মাটির বোঝা মাথায় বহন করে চলতে বাধ্য করা হবে।

আহমাদ, মিশকাত হা/২৯৫৯, ক্রয়-বিক্রয়’ অধ্যায়-১১, অনুচ্ছেদ-১১; ছহীহাহ হা/২৪২।

উপরোক্ত ব্যক্তিগণ কবীরা গোনাহগার। কিন্তু ইচ্ছাকৃতভাবে সালাত তরককারী ব্যক্তিকে হাদিসে ‘কাফের’ বলে আখ্যায়িত করা হয়েছে।

মুসলিম, মিশকাত হা/৫৬৯; তিরমিযী, নাসাঈ, ইবনে মাজাহ, মিশকাত হা/৫৭৪।

তাহলে কিভাবে তার জানাযা পড়া যেতে পারে? আল্লাহ আমাদের হেদায়েত করুন- আমীন।

জানাযার দোয়া আরবিতে বাংলা অর্থ সহ​

১. অনেকগুলো দুআর মধ্যে নিম্নের দোয়াটি সুপরিচিত​

اَللّهُمَّ اغْفِرْ لِحَيِّنَا وَمَيِّتِنَا وَشَاهِدِنَا وَغَائِبِنَا وَصَغِيْرِنَا وَكَبِيْرِنَا وَذَكَرِنَا وَأُنْثَانَا. اَللّهُمَّ مَنْ أَحْيَيْتَه مِنَّا فَأَحْيِه عَلَى الْإِسْلَامِ وَمَنْ تَوَفَّيْتَه مِنَّا فَتَوَفَّه عَلَى الْإِيْمَانِ, اَللّهُمَّ لَا تَحْرِمْنَا أَجْرَه وَلَا تَفْتِنَّا بَعْدَه

উচ্চারণ : আল্লা-হুম্মাগফির লী হাইয়েনা ওয়া মাইয়েতেনা ওয়া শাহিদিনা ওয়া গায়িবিনা ওয়া ছাগীরেনা ওয়া কাবিরিনা ওয়া যাকারিনা ওয়া উনছানা, আল্লাহুম্মা মান আইয়াইতাহু মিন্না ফাআহয়িহী ‘আলাল ইসলাম, ওয়া মান তাওয়াফায়তাহু মিন্না ফাতাও ফাহু আলাল ঈমান। আল্লা-হুম্মা লা তাহরিমনা আজরাহু ওয়া লা তান্নিা বা’দাহ।

অনুবাদ : হে আল্লাহ! আমাদের জীবিত ও মৃত এবং (এই জানাযায়) উপস্থিত-অনুপস্থিত আমাদের ছোট ও বড়, পুরুষ ও নারী সকলকে আপনি ক্ষমা করুন। যাকে আপনি বাঁচিয়ে রাখবেন, তাকে ইসলামের উপরে বাঁচিয়ে রাখুন এবং যাকে মারতে চান, তাকে ঈমানের হালতে মৃত্যু দান করুন। হে আল্লাহ! এই মাইয়েতের (জন্য দো’আ করার) উত্তম প্রতিদান হ’তে আপনি আমাদেরকে বঞ্চিত করবেন না এবং তারপরে আমাদেরকে পরীক্ষায় ফেলবেন না।

আহমাদ, আবু দাউদ, তিরমিযী, মিশকাত হা/১৬৭৫ ‘জানায়েয’ অধ্যায়-৫, অনুচ্ছেদ-৫।

২. আরেকটি গুরুত্বপূর্ণ দো’আ যা প্রথমটির সাথে যোগ করে পড়া যায় বিশেষভাবে মাইয়াতের উদ্দেশ্যে​

اللّهُمَّ اغْفِرْ لَه وَارْحَمْهُ وَعَافِه وَاعْفُ عَنْهُ وَأَكْرِمْ نُزُلَه وَوَسِّعْ مُدْخَلَه وَاغْسِلْهُ بِالْمَاءِ وَالثَّلْجِ وَالْبَرَدِ وَنَقِّه مِنَ الْخَطَايَا كَمَا نَقَّيْتَ الثَّوْبَ الْأَبْيَضَ مِنَ الدَّنَسِ وَأَبْدِلْهُ دَارًا خَيْرًا مِّنْ دَارِه وَأهْلًا خَيْرًا مِّنْ أَهْلِه وَزَوْجًا خَيْرًا مِّنْ زَوْجِه وَأدْخِلْهُ الْجنَّةَ وَأعِذْهُ مِنْ عَذَابِ الْقَبْرِ وَمِنْ عَذَابِ النَّارِ

উচ্চারণ : আল্লা-হুম্মাগফির লাহু ওয়ারহামহু ওয়া আফিহি ওয়া ফু আনহু ওয়া আকরিম নুযুলাহু ওয়া ওয়াসি মাদখালাহু, ওয়াগসিলহু বিলমা-এ ওয়াচ্ছালজে ওয়াল বারাদি; ওয়া নাকৃদ্ধৃিহি মিনাল খাত্বা-ইয়া কামা ইউনাকুকৃাছ সাওবুল আবইয়ায়ু মিনাদ দানাসি, ওয়া আবদিলহু দা-রান খাইরান মিন দারিহী ওয়া আহলান খায়রাম মিন আহলিহি ওয়া যাওজান খাইরাম মিন যাওজিহী; ওয়া আদখিহুল জান্নাতা ওয়া আইযহু মিন ‘আযাবিল কৃাবরে ওয়া মিন ‘আযা-বিন না-রে।

অনুবাদ : হে আল্লাহ! আপনি এই মাইয়েতকে ক্ষমা করুন। তাকে অনুগ্রহ করুন। তাকে নিরাপদে রাখুন এবং তার গুনাহ মাফ করুন। আপনি তাকে সম্মানজনক আতিথেয়তা প্রদান করুন। তার বাসস্থান প্রশস্ত করুন। আপনি তাকে পানি দ্বারা, বরফ দ্বারা ও শিশির দ্বারা ধৌত করুন এবং তাকে পাপ হ’তে এমনভাবে মুক্ত করুন, যেমনভাবে সাদা কাপড় ময়লা হতে সাফ করা হয়। আপনি তাকে দুনিয়ার গৃহের বদলে উত্তম গৃহ দান করুন। তার দুনিয়ার পরিবারের চাইতে উত্তম পরিবার এবং দুনিয়ার জোড়ার চাইতে উত্তম জোড়া দান করুন। তাকে আপনি জান্নাতে দাখিল করুন এবং তাকে কবরের আযাব হতে ও জাহান্নামের আযাব হতে রক্ষা করুন।

মুসলিম হা/২২৩৪, মিশকাত হা/১৬৫৫।

৩. জানাযার আরেকটি বিশেষ দোয়া​

اللّهُمَّ إِنَّ فُلَانَ بْنَ فُلَانٍ فِي ذِمَّتِكَ وَحَبْلِ جَوَارِكَ فَقِه مِنْ فِتْنَةِ الْقَبْرِ وَعَذَابِ النَّارِ وَأَنْتَ أَهْلُ الْوَفَاءِ وَالْحَقِّ اللّهُمَّ اغْفِرْ لَه وَارْحَمْهُ إِنَّكَ أَنْتَ الْغَفُورُ الرَّحِيْمُ

উচ্চারণ : আল্লা-হুম্মা ইন্না ফুলা-নাবনা ফুলা-নিন ফী যিম্মাতিকা ওয়া হাবলি জিওয়া-রিকা; ফাকিহী মিন ফিতনাতিল কাবরি ওয়া ‘আযা-বিন্না-রি; ওয়া আন্তা আহলুল ওয়াফা-ই ওয়াল হাক্কু। আল্লা-হুম্মাগফিরলাহু ওয়ারহামহু, ইন্নাকা আনতাল গাফুরুর রহীম।

অনুবাদ : হে আল্লাহ! অমুকের পুত্র অমুক আপনার জিম্মায় ও আপনার তত্ত্বাবধানে আবদ্ধ। অতএব আপনি তাকে কবরের পরীক্ষা ও জাহান্নামের আযাব হতে রক্ষা করুন। আপনি ওয়াদা ও সত্যের মালিক। হে আল্লাহ! আপনি তাকে ক্ষমা করুন ও তাকে অনুগ্রহ করুন। নিশ্চয়ই আপনি ক্ষমাশীল ও দয়াবান।

আবুদাঊদ, ইবনু মাজাহ, মিশকাত হা/১৬৭৭।

৪. এই দোয়াটিও পড়া যায়​

اللهم عبدك وابن أمتك احتاج إلى رحمتك، وأنت غني عن عذابه، إن كان محسنا فزد في حسناته، وإن كان مسيئا فتجاوز عنه

উচ্চারণ : আল্লাহুম্মা ‘আবদুকা ওয়া ইবনু আমাতিকা, ইহতা-জা ইলা রহমাতিকা ওয়া আনতা গানিয়্যুন ‘আন ‘আযা-বিহী। ইন কা-না মুহসিনান ফাযিদ ফী হাসানা-তিহী; ওয়া ইন কা-না মুসীআন, ফাতাজা-ওয়ায ‘আনহু।

অনুবাদ : হে আল্লাহ! মাইয়েত আপনার বান্দা এবং সে আপনার এক বান্দীর সন্তান। সে আপনার রহমতের ভিখারী। আপনি তাকে শাস্তি দিতে বাধ্য নন। অতএব যদি সে সৎকর্মশীল হয়, তাহলে তার নেকি বাড়িয়ে দিন। আর যদি অন্যায়কারী হয়, তাহলে তাকে আপনি ক্ষমা করে দিন।

হাকেম ১/৩৫৯, সনদ ছহীহ; তালখিছ ৫৬।

৫. মাইয়েত শিশু হলে সূরা ফাতিহা, দরুদ ও জানাযার ১ম দো’আটি পাঠের পর নিম্নোক্ত দোয়া পড়বে​

اَللّهُمَّ اجْعَلْهُ لَنَا سَلَفًا وَفَرَطًا وُذُخُرًا وَأَجْرًا

উচ্চারণ : আল্লা-হুম্মাজ‘আলহু লানা সালাফাওঁ ওয়া ফারাত্বাওঁ ওয়া যুখরাওঁ ওয়া আজরান। লানা’-এর সাথে ‘ওয়া লে আবাওয়াইহে’ (এবং তার পিতা মাতার জন্য) যোগ করে বলা যেতে পারে।

ফিক্বহুস সুন্নাহ ১/২৭৪।

অনুবাদ : হে আল্লাহ! আপনি এই শিশুকে আমাদের জন্য (এবং তার পিতা মাতার জন্য) পূর্বগামী, অগ্রগামী এবং আখিরাতের পুঁজি ও পুরস্কার হিসাবে গণ্য করুন।

বুখারী তা’লীক ১/১৭৮, হা/১৩৩৫; মিশকাত হা/১৬৯০; মিরআত ৫/৪২৩।

জানাযার দোয়ার আদব​

রাসূলুল্লাহ (ছাঃ) এরশাদ করেন, যখন তোমরা জানাযার সালাত আদায় করবে, তখন মাইয়াতের জন্য খালেস অন্তরে দুআ করবে।

আবুদাঊদ, ইবনু মাজাহ, মিশকাত হা/১৬৭৪।

অতএব মাইয়েত ভাল-মন্দ যাই-ই হোক না কেন, তার জন্য খোলা মনে দোয়া করতে হবে। কবুল করা বা না করার মালিক আল্লাহ। ছাহেবে ‘আওন বলেন, অত্র হাদীছ দ্বারা প্রমাণিত হয় যে, মৃতের জন্য নির্দিষ্ট কোন দো‘আ নেই। বরং যেকোনো প্রার্থনা করা যেতে পারে। শাওকানীও এ কথা বলেন। তবে তিনি বলেন যে, হাদীছে বর্ণিত দো’আ সমূহ পাঠ করাই উত্তম। এই সময় সর্বনাম সমূহ পরিবর্তনের প্রয়োজন নেই। কেননা মাইয়েত’ এখানে উদ্দেশ্য। মাইয়েত আরবী শব্দ, যা স্ত্রী ও পুরুষ উভয় লিঙ্গে ব্যবহৃত হয়।

আওনুল মাবুদ হা/৩১৮৪-এর ভাষ্য ৮/৪৯৬; নায়ল ৫/৭২, ৭৪।
 
Top