ওয়ালাইকুম আসসালাম ওয়া রাহমাতুল্লাহ,
চার ইমাম (ইমাম আবু হানিফা, ইমাম মালিক, ইমাম শাফিঈ, ইমাম আহমদ রহ.) কুরআন-সুন্নাহ থেকে দ্বীনের বিধান সহজভাবে বুঝতে ও প্রয়োগ করতে সাহায্য করার জন্য ফিকহের পদ্ধতি সাজিয়েছেন। মানে, তারা শরিয়তের বিকল্প নন; বরং কুরআন ও হাদিস বোঝার মাধ্যম।
তাঁরা কেউ বলেননি—"আমাকে কুরআন-হাদিসের বাইরে অনুসরণ করো।" বরং সবাই বলেছেন— "যদি আমার মত কুরআন-হাদিসের বিপরীতে যায়, তবে আমার কথা ছেড়ে কুরআন-হাদিস নাও।"
আপনি বলছেন যে, "১/আমি চারজনকেই মানি। ২/আমার মাজহাব উম্মাতে মুহাম্মদ সাল্লাল্লাহু আলায়হি ওয়াসাল্লাম। এটা কি সঠিক?"
নাহ, এটা সঠিক নয়।
- “চারজনকেই মানি” কথাটার মানে? যদি আপনার মানে হয় যে, আপনি অন্ধভাবে কোনো এক মাজহাবে আবদ্ধ নন, বরং কুরআন-সুন্নাহকে আসল মানেন এবং চার ইমামের ব্যাখ্যা থেকে উপকৃত হন তাহলে এটা সঠিক ও সুন্দর জবাব। তবে যদি বলা হয়, চার মাজহাবকে একসাথে মিশিয়ে যেভাবে খুশি নেব—এটা সঠিক নয়। এতে গোলমাল ও বিরোধ তৈরি হয়। এজন্য আলেমরা বলেন, সাধারন মানুষকে একটি মাজহাবের মধ্যে থাকতে হবে সহজতার জন্য, কিন্তু এর মানে এই নয় যে অন্য মাজহাব ভুল।
- “আমার মাজহাব উম্মতে মুহাম্মদ (সা:)” কথাটা কেমন? এই কথায় সুন্দর আবেগ আছে, কারণ আমরা সত্যিই মুহাম্মদ (সা:) এর উম্মত। তবে ব্যবহারিক দিক থেকে বিষয়টি পরিষ্কার নয়। যখন কেউ জিজ্ঞেস করে “আপনার মাজহাব কী?”—সেটা আসলে ফিকহী অনুসরণের ব্যাপার। তখন শুধু “আমি উম্মতে মুহাম্মদ (সা:)” বললে তারা বিষয়টা অস্পষ্ট মনে করতে পারে।
তাই উত্তম জবাব হতে পারে: “আমি কুরআন ও সুন্নাহকে মানি, আর ফিকহে ইমামদের ব্যাখ্যা অনুসরণ করি। আমি অন্য মাজহাবকেও সম্মান করি।”
রাসূলুল্লাহ (সা:) বলেছেন: "আমি তোমাদের মাঝে এমন দুইটি জিনিস রেখে যাচ্ছি, যতক্ষণ তোমরা এ দু'টির সাথে দৃঢ়ভাবে সম্পৃক্ত থাকবে, কখনো পথভ্রষ্ট হবে না— আল্লাহর কিতাব (কুরআন) ও আমার সুন্নাহ।" তাছাড়া তারা (চার ইমাম) সবাই বলেছেন— "যদি আমার মত কুরআন-হাদিসের বিপরীতে যায়, তবে আমার কথা ছেড়ে কুরআন-হাদিস নাও।"
-জাহির