সালাফী আকিদা ও মানহাজে - Salafi Forum

Salafi Forum হচ্ছে সালাফী ও সালাফদের আকিদা, মানহাজ শিক্ষায় নিবেদিত একটি সমৃদ্ধ অনলাইন কমিউনিটি ফোরাম। জ্ঞানগর্ভ আলোচনায় নিযুক্ত হউন, সালাফী আলেমদের দিকনির্দেশনা অনুসন্ধান করুন। আপনার ইলম প্রসারিত করুন, আপনার ঈমানকে শক্তিশালী করুন এবং সালাফিদের সাথে দ্বীনি সম্পর্ক গড়ে তুলুন। বিশুদ্ধ আকিদা ও মানহাজের জ্ঞান অর্জন করতে, ও সালাফীদের দৃষ্টিভঙ্গি শেয়ার করতে এবং ঐক্য ও ভ্রাতৃত্বের চেতনাকে আলিঙ্গন করতে আজই আমাদের সাথে যোগ দিন।

প্রশ্নোত্তর চামড়ার মোজা বা কাপড়ের মোজার উপর মাসেহ করার পদ্ধতি

FORUM BOT

Doing Automated Jobs

Threads
4,147
Comments
4,353
Solutions
1
Reactions
37,483
Credits
24,212
প্রশ্ন: আমার প্রশ্ন পবিত্র অবস্থায় পরিহিত কাপড়ের মোজার ওপর মাসেহ করা বিষয়ক হাদিস সম্পর্কে। ইবনে খুজাইমা বলেন, সাফওয়ান বিন আসসাল এর হাদিসে যা উদ্ধৃত হয়েছে সে অনুযায়ী- নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম আমাদেরকে চামড়ার মোজার ওপর মাসেহ করার নির্দেশ দিয়েছেন; যদি আমরা পবিত্র অবস্থায় মোজাদ্বয় পরিধান করি; মুসাফিরের জন্য তিনদিন এবং মুকীম এর জন্য একদিন, একরাত।
আমার প্রশ্ন হচ্ছে- আমি কি ধরে নিতে পারি যে, হাদিসে উল্লেখিত একদিন একরাত বলতে ২৪ ঘণ্টা? সেটা হলে, আমি যে কোন সময় পবিত্র অবস্থায় কাপড়ের মোজা পরিধান করতে পারি এবং ২৪ ঘণ্টার ভিতরে যখনই আমি ওযু করব তখন শুধু মোজার উপর মাসেহ করব? উদাহরণতঃ আমি যদি কোনদিন রাত ১১টায় মোজা পরিধান করি পরেরদিন রাত ১১ টা পর্যন্ত ওযুকালীন সময়ে উক্ত মোজার ওপর মাসেহ করা আমার জন্য জায়েয?
আমি আরও আশা করব, আপনারা আমাকে অবহিত করবেন যে, মোজার কোন অংশের উপর মাসেহ করতে হবে? আমি জানি যে, মোজার নীচের অংশের ওপর মাসেহ করা জায়েয নয়। কিন্তু, মোজার পার্শ্বদ্বয়, সামনে ও পিছনের অংশ কি মাসেহ করা ফরয? আশা করি আপনারা জবাব দিবেন। কারণ এর ফলে আমার জীবন ধারণ অনেক সহজ হয়ে যাবে। যেহেতু আমার ত্বক অনেক বেশি সংবেদনশীল। এ ক্ষেত্রে অবহেলা করলে আমি অনেক কুমন্ত্রণা ও অসন্তুষ্টির শিকার হই।


উত্তর: আলহামদুলিল্লাহ।


চামড়ার মোজা কিংবা কাপড়ের মোজার ওপর মাসেহ করার সময়কাল শুরু হয় প্রথমবার ওযু ভাঙ্গার পর প্রথমবার মাসেহ করা থেকে। প্রথমবার মোজা পরিধানের সময় থেকে নয়। এ বিষয়টি জানার জন্য 9640 নং প্রশ্নোত্তর দেখা যেতে পারে।


মাসেহ করার পদ্ধতি:


দুই হাতের ভেজা আঙ্গুলগুলো দুই পায়ের আঙ্গুলের ওপর রাখবে। এরপর হাত দুইটি পায়ের গোছার দিকে টেনে আনবে। ডান পা ডান হাত দিয়ে মাসেহ করবে; বাম পা বাম হাত দিয়ে মাসেহ করবে। মাসেহ করার সময় হাতের আঙ্গুলগুলো ফাঁকা ফাঁকা করে রাখবে। একাধিকবার মাসেহ করবে না।[দেখুন: শাইখ ফাউযানের ‘আল-মুলাখ্‌খাস আল-ফিকহি ১/৪৩]


শাইখ উছাইমীন (রহঃ) বলেন: অর্থাৎ মোজার যে অংশ মাসেহ করা হবে সেটা উপরের অংশ। শুধু পায়ের আঙ্গুলের দিক থেকে পায়ের গোছার দিকে হাত টেনে আনবে। একত্রে দুই হাত দিয়ে দুই পা মাসেহ করবে। অর্থাৎ ডান হাত দিয়ে ডান পা মাসেহ করবে এবং একই সময়ে বাম হাত দিয়ে বাম পা মাসেহ করবে। যেমনটি দুই কান মাসেহ করার ক্ষেত্রেও করা হয়। কেননা সুন্নাহ থেকে বাহ্যিকভাবে এটাই জানা যায়। দলিল হল মুগিরা বিন শুবা (রাঃ) এর উক্তি: “তিনি দুই পায়ের ওপর মাসেহ করেছেন”।তিনি এ কথা বলেননি যে, ডান পা দিয়ে শুরু করেছেন। বরং বলেছেন: “দুই পায়ের ওপর মাসেহ করেছেন”। এ কারণে সুন্নাহ থেকে বাহ্যিকভাবে এটাই জানা যায়। হ্যাঁ, যদি এমন হয় যে, তার এক হাত কাজ করে না সেক্ষেত্রে সে বাম পায়ের আগে ডান পা মাসেহ করে তাহলে ঠিক আছে। অনেক মানুষ দুই হাত দিয়ে ডান পা মাসেহ করে এবং দুই হাত দিয়ে বাম পা মাসেহ করে— এর কোন ভিত্তি নেই। তবে ব্যক্তি মোজার উপরের অংশ যেভাবেই মাসেহ করুক না কেন সেটা জায়েয হবে। আমরা এখানে যেটা আলোচনা করেছি সেটা হচ্ছে উত্তম পদ্ধতি কোনটি সে সম্পর্কে।[সমাপ্ত]


[দেখুন: ফাতাওয়াল মারআ আল-মুসলিম ১/২৫০]


মোজার দুই পার্শ্ব কিংবা পেছনের অংশ মাসেহ করবে না। যেহেতু এ বিষয়ে কোন দলিল নেই। শাইখ উছাইমীন বলেন: “কেউ হয়ত বলতে পারে যে, বাহ্যিক দৃষ্টিতে মোজার ওপরের অংশ মাসেহ করার চেয়ে নীচের অংশ মাসেহ করা অধিক যুক্তিযুক্ত। কারণ নীচের অংশে মাটি ও ময়লা লাগে। কিন্তু, আমরা চিন্তাভাবনা করে পেয়েছি মোজার ওপরের অংশ মাসেহ করা অধিক যুক্তিযুক্ত এবং বিবেক-বুদ্ধিসম্মত। কারণ এ মাসেহ দ্বারা পরিষ্কার করা বা নির্মল করা উদ্দেশ্য নয়। এর দ্বারা উদ্দেশ্য হচ্ছে একটি ইবাদত পালন করা। যদি আমরা মোজার নীচের অংশ মাসেহ করতাম তাহলে তো মোজা আরও বেশি ময়লা হয়ে যেত। আল্লাহই ভাল জানেন।


[দেখুন ‘আল-শারহুল মুমতি ১/২১৩]


সুত্র: Islamqa.info
 
Top