‼️ পোস্টটি সুন্দরভাবে দেখতে এখানে ক্লিক করুন।‼️

প্রশ্নোত্তর চামড়ার মোজার উপর মাসেহ করার শর্তাবলি

FORUM BOT

Doing Automated Jobs

Threads
4,133
Comments
4,353
Solutions
1
Reactions
37,491
Credits
24,212
প্রশ্ন: চামড়ার মোজার উপর মাসেহ করার শর্তগুলো কি কি? দলিলসহ?


উত্তর: আলহামদুলিল্লাহ।


চামড়ার মোজার উপর মাসেহ করার জন্য শর্ত চারটি:


প্রথম শর্ত: পবিত্র অবস্থায় মোজাদ্বয় পরিধান করা। দলিল হচ্ছে মুগিরা বিন শু’বা (রাঃ)কে উদ্দেশ্য করে নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামের বাণী: “মোজাদ্বয়কে রেখে দাও; কারণ আমি সে দুটো পবিত্র অবস্থায় পরিধান করেছি।”


দ্বিতীয় শর্ত: মোজাদ্বয় সেটা চামড়ার হোক কিংবা কাপড়ের হোক পবিত্র হতে হবে। নাপাক মোজার উপর মাসেহ করা জায়েয নেই। দলিল হচ্ছে- একদিন রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তাঁর সাহাবীদেরকে নিয়ে জুতা পায়ে দিয়ে নামায আদায় করছিলেন। নামায আদায়কালে তিনি জুতাজোড়া খুলে ফেলেন এবং জানালেন যে, জিব্রাইল (আঃ) তাঁকে অবহিত করেছেন যে, জুতাদ্বয়ে নাপাকি আছে।[ইমাম আহমাদ তার মুসনাদ গ্রন্থে আবু সাঈদ খুদরি থেকে হাদিসটি বর্ণনা করেছেন। এর থেকে প্রমাণ পাওয়া যায় যে, নাপাক জিনিস নিয়ে নামায পড়া নাজায়েয। আর নাপাক জিনিস মাসেহ করতে গেলে যেটা দিয়ে মাসেহ করা হবে সেটাতে নাপাকি লেগে সেটাও নাপাক হয়ে যাবে। তাই সেটা নাপাক জিনিসকে পবিত্র করবে না।


তৃতীয় শর্ত: মোজাদ্বয় মাসেহ করা যায় ছোট অপবিত্রতা থেকে পবিত্রতা অর্জন করার ক্ষেত্রে। জানাবাত বা যে কারণে গোসল ফরয হয় সে অপবিত্রতা থেকে পবিত্রতা অর্জনের ক্ষেত্রে মাসেহ করা যায় না। দলিল হচ্ছে সাফওয়ান বিন আস্‌সালের (রাঃ) হাদিস: “রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম আমাদের নির্দেশ দিয়েছেন আমরা যখন সফরে থাকি তখন আমরা যেন তিনদিন তিনরাত জানাবাত ব্যতীত আমাদের মোজা না খুলি। অর্থাৎ পায়খানা, পেশাব বা ঘুমের কারণে যেন মোজা না খুলি।”[মুসনাদে আহমাদ গ্রন্থে সাফওয়ান বিন আস্‌সাল (রাঃ) থেকে বর্ণিত হয়েছে] এ হাদিসের দলিল থেকে জানা গেল ছোট অপবিত্রতার ক্ষেত্রে মাসেহ চলে; বড় অপবিত্রতার ক্ষেত্রে নয়।


চতুর্থ শর্ত: শরিয়ত নির্ধারিত সময়সীমার মধ্যে মাসেহ করতে হবে। সে সময়সীমা মুকীমের জন্য একদিন এক রাত। আর মুসাফিরের জন্য তিনদিন তিনরাত। দলিল হচ্ছে আলী বিন আবু তালেব (রাঃ) এর হাদিস তিনি বলেন: “নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম মুকীমের জন্য একদিন একরাত ও মুসাফিরের জন্য তিনদিন তিনরাত নির্ধারণ করেছেন; অর্থাৎ মোজার উপর মাসেহ করার সময়কাল”[সহিহ মুসলিম] এ সময়কাল শুরু হবে ওযু ভঙ্গ হওয়ার পর প্রথমবার মাসেহ করা থেকে এবং শেষ হবে মুকীমের ক্ষেত্রে ২৪ ঘণ্টা পর। আর মুসাফিরের ক্ষেত্রে ৭২ ঘণ্টা পর। যদি আমরা ধরে নিই যে, এক লোক মঙ্গলবার ফজরের সময় ওযু করে ঐ দিন এশার নামায আদায় করা পর্যন্ত এ ওযুর উপর ছিল। রাতে ঘুমিয়েছে। বুধবার ভোরে ফজরের নামাযের জন্য উঠে ঠিক ভোর পাঁচটায় মোজার উপর মাসেহ করেছে। এক্ষেত্রে তার মোজা মাসেহ করার সময়কাল শুরু হবে বুধবার ভোর পাঁচটা এবং শেষ হবে বৃহস্পতিবার ভোর পাঁচটা। যদি ধরা হয় যে, বৃহস্পতিবার ভোর পাঁচটার আগে সে ব্যক্তি মোজার উপর মাসেহ করেছে তাহলে সে ব্যক্তি যতক্ষণ পর্যন্ত পবিত্রতার উপর থাকবে ততক্ষণ পর্যন্ত এ ওযু দিয়ে ফজরের নামায ও অন্যান্য নামায পড়া তার জন্য জায়েয। কেননা আলেমদের অগ্রগণ্য মতানুযায়ী, মাসেহ করার সময় পূর্ণ হয়ে গেলেও তার ওযু ভাঙ্গবে না। কারণ রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম পবিত্রতার জন্য কোন সময় নির্ধারণ করেননি। তিনি মাসেহ করার সময় নির্ধারণ করেছেন। মাসেহ করার সময় পূর্ণ হয়ে গেলে আর মাসেহ করা যাবে না। কিন্তু কেউ যদি মাসেহ এর সময়কাল পূর্ণ হওয়ার সময় ওযু অবস্থায় থাকে তাহলে তার এ পবিত্রতা অব্যাহত থাকবে; নষ্ট হবে না। কারণ এ পবিত্রতা একটি শরয়ি দলিলের ভিত্তিতে সাব্যস্ত হয়েছে। আর যা শরয়ি দলিলের মাধ্যমে সাব্যস্ত হয় সেটা অন্য কোন শরয়ি দলিল ছাড়া রহিত হবে না। অথচ মোজার উপর মাসেহ করার সময়কাল পূর্ণ হয়ে গেলে ওযু ভেঙ্গে যাওয়ার পক্ষে কোন দলিল নেই। যে কোন কিছু এর মূল বিধানের উপর অটুট থাকে যতক্ষণ না মূল বিধান দূর হয়ে যাওয়ার পক্ষে কোন দলিল পাওয়া যায়।


এগুলো হচ্ছে চামড়ার মোজার উপর মাসেহ করার শর্ত। কোন কোন আলেম আরও কিছু শর্ত উল্লেখ করে থাকেন। তবে, সেসব শর্তের কোন কোনটি আপত্তিকর।


সুত্র: Islamqa.info
 

Share this page