সালাফী আকিদা ও মানহাজে - Salafi Forum

Salafi Forum হচ্ছে সালাফী ও সালাফদের আকিদা, মানহাজ শিক্ষায় নিবেদিত একটি সমৃদ্ধ অনলাইন কমিউনিটি ফোরাম। জ্ঞানগর্ভ আলোচনায় নিযুক্ত হউন, সালাফী আলেমদের দিকনির্দেশনা অনুসন্ধান করুন। আপনার ইলম প্রসারিত করুন, আপনার ঈমানকে শক্তিশালী করুন এবং সালাফিদের সাথে দ্বীনি সম্পর্ক গড়ে তুলুন। বিশুদ্ধ আকিদা ও মানহাজের জ্ঞান অর্জন করতে, ও সালাফীদের দৃষ্টিভঙ্গি শেয়ার করতে এবং ঐক্য ও ভ্রাতৃত্বের চেতনাকে আলিঙ্গন করতে আজই আমাদের সাথে যোগ দিন।

যাকাত ও ফিতরা চাউল দ্বারা ফিতরা আদায় করা

Habib Bin Tofajjal

If you're in doubt ask الله.

Forum Staff
Moderator
Generous
ilm Seeker
Uploader
Exposer
HistoryLover
Q&A Master
Salafi User
Threads
690
Comments
1,222
Solutions
17
Reactions
7,059
Credits
5,691
প্রশ্ন: কতিপয় বিদ্বান মনে করেন, যে সমস্ত বস্তু দ্বারা ফিতরা দেওয়ার কথা হাদীসে বর্ণিত হয়েছে, তা যেহেতু বর্তমানে পাওয়া যায়, তাই চাউল দ্বারা ফিতরা দেওয়া বিধিসম্মত নয়। এ সম্পর্কে আপনার মতামত জানতে চাই?

উত্তর: একদল আলিম বলেন, হাদীসে উল্লিখিত পাঁচ প্রকার বস্তু: গম, খেজুর, যব, কিসমিস এবং পনীর- এগুলো যদি থাকে, তবে অন্য বস্তু দ্বারা ফিতরা আদায় করা জায়েয হবে না।

অন্য একটি মত হচ্ছে উল্লিখিত বস্তু এবং অন্য যে কোনো বস্তু এমনকি টাকা-পয়সা দ্বারাও ফিতরা আদায় করা বৈধ। এ হচ্ছে পরস্পর বিরোধী দু’টি মত।

বিশুদ্ধ কথা হচ্ছে:- মানুষের সাধারণ খাদ্য থেকে ফিতরা আদায় করা বৈধ। কেননা সহীহ বুখারীতে আবু সাঈদ খুদরী রাদিয়াল্লাহু ‘আনহু থেকে বর্ণিত হয়েছে। তিনি বলেন,
«كُنَّا نُخْرِجُ فِي عَهْدِ رَسُولِ اللَّهِ صَلَّى اللَّه عَلَيْهِ وَسَلَّمَ زكاة الْفِطْرِ صَاعًا مِنْ طَعَامٍ أَوْ صَاعًا مِنْ شَعِيرٍ أَوْ صَاعًا مِنْ تَمْرٍ أَوْ صَاعًا مِنْ أَقِطٍ أَوْ صَاعًا مِنْ زَبِيبٍ»
“আমরা রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের যুগে এক সা‘ পরিমাণ খাদ্য ফিতরা হিসেবে বের করতাম, এক সা‘ খেজুর, এক সা‘ যব, এক সা‘ কিসমিস বা এক সা‘ পনীর।”[1] এ হাদীসে গমের কথা উল্লেখ নেই। তাছাড়া যাকাতুল ফিতরে গম দেওয়া যাবে এরকম সুস্পষ্ট ও বিশুদ্ধ কোনো হাদীস আমার জানা নেই। কিন্তু তারপরও নিঃসন্দেহে গম দ্বারা ফিতরা আদায় বৈধ।

আবদুল্লাহ্ ইবন আব্বাস রাদিয়াল্লাহু ‘আনহু থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন:
«فَرَضَ رَسُولُ اللَّهِ صَلَّى اللَّه عَلَيْهِ وَسَلَّمَ زَكَاةَ الْفِطْرِ طُهْرَةً لِلصَّائِمِ مِنَ اللَّغْوِ وَالرَّفَثِ وَطُعْمَةً لِلْمَسَاكِينِ»
“রাসূলুল্লাহ্ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম যাকাতুল ফিতর ফরয করেছেন রোযাদ্বারকে অনর্থক কথা ও অশ্লীলতা থেকে পবিত্র করার জন্য ও মিসকীনদের জন্য খাদ্যস্বরূপ।”[2] অতএব, মানুষের প্রচলিত খাদ্য থেকে ফিতরা বের করাই যথেষ্ট; যদিও তা ফিকাহবিদদের উক্তিতে উল্লিখিত পাঁচ প্রকারের অন্তর্ভুক্ত না হয়। কেননা এ প্রকারসমূহ -যেমন পূর্বে উল্লেখ করা হয়েছে- চারটি ছিল। যা নবী সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লামের যুগে মানুষের সাধারণ খাদ্য হিসেবে প্রচলিত ছিল। অতএব, চাউল দ্বারা ফিতরা আদায় করা জায়েয; বরং আমি মনে করি বর্তমান যুগে ফিতরা হিসেবে চাউল-ই উত্তম। কেননা তা সহজলভ্য ও মানুষের অধিক পছন্দনীয় বস্তু। তাছাড়া বিষয়টি স্থানভেদে বিভিন্ন রকম হতে পারে। হতে পারে গ্রামাঞ্চলে কোনো কোনো গোষ্ঠির নিকট খেজুর অধিক প্রিয় খাদ্য। তারা খেজুর দ্বারা ফিতরা আদায় করবে। কোনো এলাকায় কিসমিস, কোনো এলাকায় পনীর প্রিয় খাদ্য হতে পারে তারা তা দিয়েই ফিতরা আদায় করবে। প্রত্যেক এলাকা ও সম্প্রদায়ের জন্য সেটাই উত্তম যেটাতে রয়েছে তাদের জন্য অধিক উপকার।


[1] সহীহ বুখারী, অধ্যায়: যাকাত, অনুচ্ছেদ: ফিতরা হচ্ছে এক সা‘ পরিমাণ খাদ্য।
[2] আবু দাউদ, অধ্যায়: যাকাত, অনুচ্ছেদ: যাকাতুল ফিতর, ইবন মাজাহ, অধ্যায়: যাকাত, অনুচ্ছেদ: সাদাকাতুল ফিতর।
 
Top