Abdul Qayyoom
Active member
- Joined
- Mar 4, 2023
- Threads
- 26
- Comments
- 42
- Reactions
- 246
- Thread Author
- #1
- নিজে যবাই না করে অন্যের মাধ্যমে যবাই করা; অথচ কুরবানী একটি ইবাদত আর ইবাদত নিজে করা বেশী ভাল। যেমন নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম নিজে কুরবানী করতেন। তবে কেউ যদি যবাই করতে ভয় পায় বা ছুরি চালাতে না জনে তাহলে তার বিধান ভিন্ন।
- অযু ছাড়া যবাই না করা; অথচ যবাই করার জন্য অযু না তো জরুরি আর না মুস্তাহাব। তাই যবাইয়ের উদ্দেশ্যে অযু জরুরি বা মুস্তাহাব মনে করা বিদআহ। [সউদী স্থায়ী ফতোয়া কমিটি, ১১/৪৩৩-৪৩৫]
- কুরবানীর পশুর সামনে ছুরি-চাকু ধার দেওয়া, পশুর সামনে উন্মুক্ত ভাবে তা ধারণ করা, এক অপরের সামনে যবাই করা, যবাই করার পর নিস্তেজ না হতেই চামড়া ছাড়ানো শুরু করা এবং নির্মম ভাবে যবাই করা মারূহ। [হাকেম, ত্বাবারানী, আহমদ, ইবনু মাজাহ (৩১৭২)]
- অন্যের কুরবানী যবাই করার সময় তাঁদের নাম লেখা ও তা কুরবানীর পশু যবাই করার পূর্বে পড়া জরুরি মনে করা। যেমন, বলা যে এই গরুতে ৭ জনের নাম দেন। মনে রাখা উচিৎ, যে বা যারা কুরবানীর উদ্দেশ্যে পশুটি ক্রয় করেছে এবং যত ভাগ কুরবানী দেয়ার নিয়ত করেছে, তার সেই নিয়ত অনুযায়ী সে বদলা পাবে এবং তার নিয়ত আল্লাহ অবশ্যই জানেন। এখন অন্য কোনো ব্যক্তি যদি তাদের কুরবানীটা যবাই করে দেয়, তাহলে সে শুধু কুরবানীদাতার পক্ষ থেকে যবাই করার কাজের প্রতিনিধি মাত্র। বিদায় হজ্জে নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম এই রকম ষাটাধিক সাহাবীর কুরবানী করেছিলেন, তাতে তিনি সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তাদের নাম জিজ্ঞেস করেন নি যে, এটা কার কার পক্ষ থেকে, এই উটে তোমরা কতজন শরীক রয়েছো, নাম উল্লেখ কর, ইত্যাদি। বরং তিনি সাধারণ ভাবে যবাই করে গেছেন। তবে এটাও প্রমাণিত যে, তিনি অনেক ক্ষেত্রে যবাই করার পর বলতেনঃ “এটা আমার পক্ষ থেকে এবং আমার উম্মতের মধ্যে তাদের পক্ষ থেকে যারা কুরবানী দেয় নি”। [আহমদ, আবু দাঊদ, তিরমিযী] তাই যার কুরবানী অন্য যবাই করছে, সে যবাই দেয়ার সময় বিসমিল্লাহ আল্লাহু আকবারের পর তার নাম বলতে পারে যে এটা অমুক বা অমুক অমুকের পক্ষ থেকে। কিন্তু যবাই করার পূর্বে তা বলার নিয়ম নেই।
- কুরবানী দাতা সে একটি পূর্ণ পশু কুরবানী দিক বা ভাগা কুরবানী দিক কুরবানী দেওয়ার সময় সে তা নিজ ও পরিবারের সকলের পক্ষ থেকে নিয়ত করবে। অর্থাৎ সেই কুরবানীর সওয়াব সকলে পাক, তা নিয়ত করবে। যেমন নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম ছাগল কুরবানী দেওয়ার পর বলেনঃ “হে আল্লাহ! এটা মুহাম্মদ, মুহাম্মদের পরিবার এবং মুহাম্মদের উম্মতের পক্ষ থেকে কবূল কর”। [আহমদ, মুসলিম] এখন যারা প্রতি ভাগে একটা করে নাম নেয়, তারা বুঝাতে চায় যে, এটি এক জনের পক্ষ থেকেই হচ্ছে অন্যরা এর সওয়াব পাবে না; অথচ কুরবানীদাতা তার কুরবানীতে নিজ ও নিজ পরিবার সকলের সওয়াব কামনা করবে, যেমন নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম করতেন।
- কুরবানীর পশু যবাই করার জন্য বিশেষ কোনো দুআ আছে মনে করা। অথচ সাধারণ পশু যবাই করার সময় যেমন আল্লাহর নাম নেওয়া জরুরি তেমন কুরবানীতেও তাই জরুরি। তাই ‘বিসমিল্লাহ আল্লাহু আকবার’ বলে যবাই করলেই হয়ে গেল। যবাই করার পূর্বে (ইন্নী ওয়াজ্জাহতু ওয়াজহিয়া…) বলা ও যবাই শেষে (আল্লাহুম্মা তাকাব্বাল…) বলা মুস্তাব, জরুরি নয়।
- ‘বিসমিল্লাহ আল্লাহু আকবার’ বলে পশুর গলার চামড়া কেটে দিয়ে কশাইকে বাকি যবাই সম্পন্ন করতে দেওয়া। এটি আসলে কশাইর মাধ্যমে যবাই করা গণ্য হবে। কারণ শারঈ যবাই তখন হবে যখন, পশুর শ্বাসনালী, খাদ্যনালী ও এর দুই পাশের মোটা রগ দুটি কর্তন করা হবে। আর এখানে যবাইকারী ব্যক্তি শুধু চামড়া কাটে আর প্রকৃতপক্ষে যবাইর কাজ কশাই করে। অন্য দিকে এই সময় কশাই সাধারণতঃ আল্লাহর নাম নেয় না।
- কশাইকে কুরবানীর গোশত দেওয়া নিষেধ বলতে কশাইকে কাজের মজুরি স্বরূপ দেওয়া নিষেধ বুঝায়। সে তার মজুরি হিসাবে টাকা কিংবা অন্য কিছু নিতে পারে। কিন্তু কুরবানীর গোশত যেমন অন্যকে দান হিসেবে দেয়া মুস্তাহাব তেমন তাকেও দেওয়া মুস্তাহাব।
- কুরবানী যবাই করার পর পশুর রক্ত, গোবর, হাড়, চামড়া প্রভৃতি মাটির উপর যেখানে সেখানে ফেলে রাখা যাতে দুর্গন্ধ ছড়ায় এবং মানুষের কষ্ট হয় এমনকি পশুদেরও কষ্ট হয়।
লেখক: আব্দুর রাকীব মাদানী