Active member
হুযায়ফা ইবনুল ইয়ামান রাদিয়াল্লাহু ‘আনহু থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ্ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম আমাদের কাছে দু’টি হাদীস বর্ণনা করেছেন। একটি তো আমি প্রত্যক্ষ করেছি এবং দ্বিতীয়টির জন্য অপেক্ষা করছি। রাসূলুল্লাহ্ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের আমাদের কাছে বর্ণনা করেছেন যে, “আমানত মানুষের অন্তর্মূলে নাযিল করা হয়েছিল। তারপর তারা কুরআন থেকে জ্ঞান অর্জন করেছে, এরপর তারা নবীর সুন্নাহ থেকে জ্ঞান অর্জন করেছে”।আবার রাসূলুল্লাহ্ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বর্ণনা করেছেন আমানত তুলে নেওয়া সম্পর্কে, “ব্যক্তিটি (ঈমানদার) এক পর্যায়ে ঘুমানোর পর তার অন্তর থেকে আমানত তুলে নেওয়া হবে, তখন তার সামান্যতম চিহ্ন অবশিষ্ট থাকবে। পুনরায় ঘুমাবে, তখন আবার উঠিয়ে নেওয়া হবে। অতঃপর তার চিহ্ন ফোস্কার মত অবশিষ্ট থাকবে। তা তখন তেমন হবে যেমন কোনো অঙ্গার যাকে তুমি পা দিয়ে মাড়িয়ে মিইয়ে দিলে, যেটিকে তুমি ফোলা মনে করবে, অথচ তার মধ্যে আদৌ কিছু নেই। ফলে মানুষ কারবার করবে বটে, কেউ আমানত আদায় করবে না। অতঃপর লোকেরা বলাবলি করবে যে, অমুক বংশে একজন আমানতদার লোক রয়েছে। আবার কোনো ব্যক্তি সম্পর্কে মন্তব্য করা হবে যে, সে কতোই না বুদ্ধিমান, কতই না বিচক্ষণ, কতই না বাহাদুর? অথচ তার অন্তরে সরিষার দানা পরিমান ঈমানও থাকবে না।
(হুযাইফা রাদিয়াল্লাহু আনহু বলেন) আমার ওপর এমন এক কাল অতিবাহিত হয়েছে যে, আমি তোমাদের কার সাথে বেচা-কেনা করলাম, সেদিকে ভ্রুক্ষেপ করতাম না। কারণ সে মুসলমান হলে ইসলামই আমার হক ফিরিয়ে দেবে। আর সে খৃস্টান হলে তার শাসকই আমার হক ফিরিয়ে দিবে; অথচ বর্তমানে আমি অমুক অমুককে ছাড়া অন্য কারও সাথে বেচা-কেনা করি না”।
عن حُذَيْفَة بن اليمان، قَالَ: حَدَّثَنَا رَسُولُ اللَّهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ حَدِيثَيْنِ، رَأَيْتُ أَحَدَهُمَا وَأَنَا أَنْتَظِرُ الآخَرَ: حَدَّثَنَا: «أَنَّ الأَمَانَةَ نَزَلَتْ فِي جَذْرِ قُلُوبِ الرِّجَالِ، ثُمَّ عَلِمُوا مِنَ القُرْآنِ، ثُمَّ عَلِمُوا مِنَ السُّنَّةِ»
وَحَدَّثَنَا عَنْ رَفْعِهَا قَالَ: «يَنَامُ الرَّجُلُ النَّوْمَةَ، فَتُقْبَضُ الأَمَانَةُ مِنْ قَلْبِهِ، فَيَظَلُّ أَثَرُهَا مِثْلَ أَثَرِ الوَكْتِ، ثُمَّ يَنَامُ النَّوْمَةَ فَتُقْبَضُ فَيَبْقَى أَثَرُهَا مِثْلَ المَجْلِ، كَجَمْرٍ دَحْرَجْتَهُ عَلَى رِجْلِكَ فَنَفِطَ، فَتَرَاهُ مُنْتَبِرًا وَلَيْسَ فِيهِ شَيْءٌ، فَيُصْبِحُ النَّاسُ يَتَبَايَعُونَ، فَلاَ يَكَادُ أَحَدٌ يُؤَدِّي الأَمَانَةَ، فَيُقَالُ: إِنَّ فِي بَنِي فُلاَنٍ رَجُلًا أَمِينًا، وَيُقَالُ لِلرَّجُلِ: مَا أَعْقَلَهُ وَمَا أَظْرَفَهُ وَمَا أَجْلَدَهُ، وَمَا فِي قَلْبِهِ مِثْقَالُ حَبَّةِ خَرْدَلٍ مِنْ إِيمَانٍ».
«وَلَقَدْ أَتَى عَلَيَّ زَمَانٌ وَمَا أُبَالِي أَيَّكُمْ بَايَعْتُ، لَئِنْ كَانَ مُسْلِمًا رَدَّهُ عَلَيَّ الإِسْلاَمُ، وَإِنْ كَانَ نَصْرَانِيًّا رَدَّهُ عَلَيَّ سَاعِيهِ، فَأَمَّا اليَوْمَ: فَمَا كُنْتُ أُبَايِعُ إِلَّا فُلاَنًا وَفُلاَنًا».
قَالَ الْفِرَبْرِيُّ قَالَ أَبُو جَعْفَرٍ حَدَّثْتُ أَبَا عَبْدِ اللَّهِ فَقَالَ سَمِعْتُ أَحْمَدَ بْنَ عَاصِمٍ يَقُولُ سَمِعْتُ أَبَا عُبَيْدٍ يَقُولُ قَالَ الأَصْمَعِيُّ وَأَبُو عَمْرٍو وَغَيْرُهُمَا جَذْرُ قُلُوبِ الرِّجَالِ الْجَذْرُ الأَصْلُ مِنْ كُلِّ شَىْءٍ، وَالْوَكْتُ أَثَرُ الشَّىْءِ الْيَسِيرُ مِنْهُ، وَالْمَجْلُ أَثَرُ الْعَمَلِ فِي الْكَفِّ إِذَا غَلُظَ.
وَحَدَّثَنَا عَنْ رَفْعِهَا قَالَ: «يَنَامُ الرَّجُلُ النَّوْمَةَ، فَتُقْبَضُ الأَمَانَةُ مِنْ قَلْبِهِ، فَيَظَلُّ أَثَرُهَا مِثْلَ أَثَرِ الوَكْتِ، ثُمَّ يَنَامُ النَّوْمَةَ فَتُقْبَضُ فَيَبْقَى أَثَرُهَا مِثْلَ المَجْلِ، كَجَمْرٍ دَحْرَجْتَهُ عَلَى رِجْلِكَ فَنَفِطَ، فَتَرَاهُ مُنْتَبِرًا وَلَيْسَ فِيهِ شَيْءٌ، فَيُصْبِحُ النَّاسُ يَتَبَايَعُونَ، فَلاَ يَكَادُ أَحَدٌ يُؤَدِّي الأَمَانَةَ، فَيُقَالُ: إِنَّ فِي بَنِي فُلاَنٍ رَجُلًا أَمِينًا، وَيُقَالُ لِلرَّجُلِ: مَا أَعْقَلَهُ وَمَا أَظْرَفَهُ وَمَا أَجْلَدَهُ، وَمَا فِي قَلْبِهِ مِثْقَالُ حَبَّةِ خَرْدَلٍ مِنْ إِيمَانٍ».
«وَلَقَدْ أَتَى عَلَيَّ زَمَانٌ وَمَا أُبَالِي أَيَّكُمْ بَايَعْتُ، لَئِنْ كَانَ مُسْلِمًا رَدَّهُ عَلَيَّ الإِسْلاَمُ، وَإِنْ كَانَ نَصْرَانِيًّا رَدَّهُ عَلَيَّ سَاعِيهِ، فَأَمَّا اليَوْمَ: فَمَا كُنْتُ أُبَايِعُ إِلَّا فُلاَنًا وَفُلاَنًا».
قَالَ الْفِرَبْرِيُّ قَالَ أَبُو جَعْفَرٍ حَدَّثْتُ أَبَا عَبْدِ اللَّهِ فَقَالَ سَمِعْتُ أَحْمَدَ بْنَ عَاصِمٍ يَقُولُ سَمِعْتُ أَبَا عُبَيْدٍ يَقُولُ قَالَ الأَصْمَعِيُّ وَأَبُو عَمْرٍو وَغَيْرُهُمَا جَذْرُ قُلُوبِ الرِّجَالِ الْجَذْرُ الأَصْلُ مِنْ كُلِّ شَىْءٍ، وَالْوَكْتُ أَثَرُ الشَّىْءِ الْيَسِيرُ مِنْهُ، وَالْمَجْلُ أَثَرُ الْعَمَلِ فِي الْكَفِّ إِذَا غَلُظَ.
মুত্তাফাকুন ‘আলাইহি, সহীহ বুখারী, হাদীস নং ৬৪৯৭; সহীহ মুসলিম, হাদীস নং ১৪৩, হাদীসের শব্দ বুখারীর চয়নকৃত।
ফেরাবরী বলেন, আবু জাফর রহ. বলেছেন, আমি এ হাদীস আবু আব্দুল্লাহর কাছে বর্ণনা করি। তিনি বলেন, আমি আবু আহমদ ইবন আসেম থেকে শুনেছি, তিনি বলেছেন, আমি আবু উবাইদ থেকে শুনেছি, তিনি বলেছেন, আসমা‘ঈ, আবু ‘আমর ও অন্যরা বলেছেন, «جَذْرِ قُلُوبِ الرِّجَالِ» এখানে الجذر অর্থ কোনো কিছুর মূল। «الوكتُ» কোনো কিছুর সামান্যতম চিহ্ন আর «المجل» অর্থ ফোস্কার মতো চিহ্ন।
«بايعت» বেচা-কেনা করা। এখানে খিলাফতের ওপর বায়‘আত গ্রহণ করা নয়। « مُنْتَبِرًا» উচু স্থান। যেমন মিম্বার, এটি উচু হওয়ার কারণে এবং খতীব এতে আরোহণ করার কারণে মিম্বার বলে। «فنفط» দুর্বল হওয়া, যেমন বলা হয়, চামড়া ও মাংসের মাঝখানে পানি জমে গেছে, অর্থাৎ দুর্বল হয়ে গেছে।