জবাব: কেউ যদি দুই বা ততোধিক সালাত ভুলে যায়, তবে তা ধারাবাহিকভাবে আদায় করার পর উপস্থিত সালাত আদায় করবে। খন্দক যুদ্ধে রাসূলুল্লাহ (সা:) এমনটি করেছেন। যুদ্ধের ব্যস্ততার কারণে সেদিন তিনি সময়মতো সালাত আদায় করতে পারেননি।
আবু সাঈদ খুদরী থেকে বর্ণিত, খন্দকের দিন আমরা ব্যস্ত হয়ে পড়ি, এমনকী রাতের একটা অংশ কেটে যায় এরপর আমাদের জন্য যথেষ্ট হয়। এ ব্যাপারে আল্লাহ তাআলা বলেন, "যুদ্ধে মুমিনদের জন্য আল্লাহই যথেষ্ট। আল্লাহ হলেন মহাশক্তিধর ও মহাপরাক্রমশালী"। (সূরা আহযাব, ৩৩:২৫) এরপর রাসূলুল্লাহ (সা:) বিলালকে ডাকেন। তিনি বিলালকে আদেশ দিলে বিলাল ইকামত দেন। নবী (সা:) খুব উত্তমভাবে যোহরের সালাত আদায় করেন, যেভাবে নির্ধারিত সময়ে আদায় করতেন। এরপর আসরের সালাতের জন্য ইকামতের আদেশ দেন। তিনি আসর সালাতও যোহরের মতো উত্তমভাবে আদায় করেন। এরপর মাগরিবের সালাতের জন্য ইকামতের আদেশ দেন। তিনি মাগরিবের সালাতও অনুরূপভাবে আদায় করেন। এরপর ঈশার সালাতের জন্য ইকামতের আদেশ দেন। তিনি ঈশার সালাতও একইভাবে আদায় করেন। আর এটা ছিল ভীতিকালীন সালাত আদায়ের আয়াত অবতীর্ণ হওয়ার পূর্বের ঘটনা;
"যদি তোমরা ভয় করো তবে হেঁটে বা আরোহণ করে... '। (সূরা বাকারাহ, ২: ২৩৯)। হাদীসটি সহীহ। (নাসায়ী, হা. ৬৬২) ছুটে যাওয়া সালাত ধারাবাহিকভাবে আদায় করা ওয়াজিব কি না-এটা নিয়ে আলেমদের মাঝে মতবিরোধ রয়েছে। শাফিয়ী মাযহাব ওয়াজিব হওয়াকে নাকচ করেছে। তাদের মতে তা মুস্তাহাব। এটি তাউস, হাসান বাসরী, মুহাম্মাদ ইবন হাসান, আবু সাওর এবং দাউদ যাহিরীর মত।
আবু হানীফাহ ও মালিক বলেন, একদিন ও একরাতের বেশি সালাত না ছুটলে ধারাবাহিকতা রক্ষা করা ওয়াজিব। তারা আরও বলেন, কেউ যদি উপস্থিত সালাতরত থাকে আর সেই সময় ছুটে যাওয়া সালাতের কথা স্মরণ হয়, তবে উপস্থিত সালাত বাতিল হয়ে যাবে। প্রথমে ছুটে যাওয়া সালাত আদায় করবে এরপর উপস্থিত সালাত আদায় করবে। যুফার ও আহমাদ ইবন হাম্বাল (রহ:) বলেন, ছুটে যাওয়া সালাত কম হোক বা বেশি হোক, ধারাবাহিকতা রক্ষা করা ওয়াজিব। আহমাদ ইবন হাম্বাল বলেন, যদি ছুটে যাওয়া সালাতের কথা বিস্তৃত হয়ে যায়, তবে পরবর্তীকালে যেসব সালাত আদায় করেছেন তা সঠিক হবে। আহমাদ ইবন হাম্বাল ও ইসহাক বলেন, উপস্থিত সালাত আদায় করার সময় যদি কারো ছুটে যাওয়া সালাতের কথা স্মরণ হয়, তবে চলতি সালাত আদায় করে নেবে, এরপর ছুটে যাওয়া সালাত আদায় করবে। এরপর আবার উপস্থিত সালাত দোহরানো ওয়াজিব। তাদের দলিল হচ্ছে, ইবন উমার (রা:) থেকে বর্ণিত হাদীস।
নবী (সা:) বলেন, যে ব্যক্তি সালাতের কথা ভুলে গেছে অতঃপর ইমামের সাথে সালাত অবস্থায় স্মরণ হয়েছে তাহলে সে চলতি সালাত শেষ করার পর ভুলে যাওয়া সালাত আদায় করবে। এরপর যে সালাত ইমামের সাথে আদায় করেছে সে সালাত আবার আদায় করবে। এ হাদীসটি দুর্বল। হাফিয আসকালানী মূসা ইবন হারূন আল-হাম্মালকে দুর্বল বলেছেন। আবু যুরআ রাযী ও বাইহাকী বলেছেন, সঠিক কথা হচ্ছে, এটি মাওকুফ তথা ইবন উমারের বক্তব্য। এমনটি ‘আল-মাজমূ' (৩/৭০-৭১) গ্রন্থে রয়েছে। এরপর ইমাম নববী বলেন, আমাদের মাযহাবের অনুসারীরাও দুর্বল হাদীস দলিল হিসেবে পেশ করেন। স্পষ্ট দলিল ছাড়া ধারাবাহিকতা রক্ষা করা ওয়াজিব প্রমাণিত হবে না। আর তাদের কাছে কোনো স্পষ্ট দলিলও নেই। যে ব্যক্তি ধারাবাহিকতা রক্ষা করা ছাড়াই সালাত আদায় করেছে, সে সেই সালাত আদায় করে নিয়েছে, যে সালাত আদায় করার তাকে আদেশ দেওয়া হয়েছে। এর অতিরিক্ত কোনো কিছু স্পষ্ট দলিল ছাড়া আবশ্যক নয়। আল্লাহু আলাম। অতএব, কারো দুই বা ততধিক সালাত কাযা হয়ে গেলে, সেই সালাত ধারাবাহিকভাবে আদায় করা ওয়াজিব নয়। (আস-সামারুল মুস্তাতাব, ১/১০৮)
- ফাতাওয়ায়ে আলবানী, প্রশ্ন নং ২৩২; বিলিভার্স ভিশন পাবলিকেশন্স
আবু সাঈদ খুদরী থেকে বর্ণিত, খন্দকের দিন আমরা ব্যস্ত হয়ে পড়ি, এমনকী রাতের একটা অংশ কেটে যায় এরপর আমাদের জন্য যথেষ্ট হয়। এ ব্যাপারে আল্লাহ তাআলা বলেন, "যুদ্ধে মুমিনদের জন্য আল্লাহই যথেষ্ট। আল্লাহ হলেন মহাশক্তিধর ও মহাপরাক্রমশালী"। (সূরা আহযাব, ৩৩:২৫) এরপর রাসূলুল্লাহ (সা:) বিলালকে ডাকেন। তিনি বিলালকে আদেশ দিলে বিলাল ইকামত দেন। নবী (সা:) খুব উত্তমভাবে যোহরের সালাত আদায় করেন, যেভাবে নির্ধারিত সময়ে আদায় করতেন। এরপর আসরের সালাতের জন্য ইকামতের আদেশ দেন। তিনি আসর সালাতও যোহরের মতো উত্তমভাবে আদায় করেন। এরপর মাগরিবের সালাতের জন্য ইকামতের আদেশ দেন। তিনি মাগরিবের সালাতও অনুরূপভাবে আদায় করেন। এরপর ঈশার সালাতের জন্য ইকামতের আদেশ দেন। তিনি ঈশার সালাতও একইভাবে আদায় করেন। আর এটা ছিল ভীতিকালীন সালাত আদায়ের আয়াত অবতীর্ণ হওয়ার পূর্বের ঘটনা;
"যদি তোমরা ভয় করো তবে হেঁটে বা আরোহণ করে... '। (সূরা বাকারাহ, ২: ২৩৯)। হাদীসটি সহীহ। (নাসায়ী, হা. ৬৬২) ছুটে যাওয়া সালাত ধারাবাহিকভাবে আদায় করা ওয়াজিব কি না-এটা নিয়ে আলেমদের মাঝে মতবিরোধ রয়েছে। শাফিয়ী মাযহাব ওয়াজিব হওয়াকে নাকচ করেছে। তাদের মতে তা মুস্তাহাব। এটি তাউস, হাসান বাসরী, মুহাম্মাদ ইবন হাসান, আবু সাওর এবং দাউদ যাহিরীর মত।
আবু হানীফাহ ও মালিক বলেন, একদিন ও একরাতের বেশি সালাত না ছুটলে ধারাবাহিকতা রক্ষা করা ওয়াজিব। তারা আরও বলেন, কেউ যদি উপস্থিত সালাতরত থাকে আর সেই সময় ছুটে যাওয়া সালাতের কথা স্মরণ হয়, তবে উপস্থিত সালাত বাতিল হয়ে যাবে। প্রথমে ছুটে যাওয়া সালাত আদায় করবে এরপর উপস্থিত সালাত আদায় করবে। যুফার ও আহমাদ ইবন হাম্বাল (রহ:) বলেন, ছুটে যাওয়া সালাত কম হোক বা বেশি হোক, ধারাবাহিকতা রক্ষা করা ওয়াজিব। আহমাদ ইবন হাম্বাল বলেন, যদি ছুটে যাওয়া সালাতের কথা বিস্তৃত হয়ে যায়, তবে পরবর্তীকালে যেসব সালাত আদায় করেছেন তা সঠিক হবে। আহমাদ ইবন হাম্বাল ও ইসহাক বলেন, উপস্থিত সালাত আদায় করার সময় যদি কারো ছুটে যাওয়া সালাতের কথা স্মরণ হয়, তবে চলতি সালাত আদায় করে নেবে, এরপর ছুটে যাওয়া সালাত আদায় করবে। এরপর আবার উপস্থিত সালাত দোহরানো ওয়াজিব। তাদের দলিল হচ্ছে, ইবন উমার (রা:) থেকে বর্ণিত হাদীস।
নবী (সা:) বলেন, যে ব্যক্তি সালাতের কথা ভুলে গেছে অতঃপর ইমামের সাথে সালাত অবস্থায় স্মরণ হয়েছে তাহলে সে চলতি সালাত শেষ করার পর ভুলে যাওয়া সালাত আদায় করবে। এরপর যে সালাত ইমামের সাথে আদায় করেছে সে সালাত আবার আদায় করবে। এ হাদীসটি দুর্বল। হাফিয আসকালানী মূসা ইবন হারূন আল-হাম্মালকে দুর্বল বলেছেন। আবু যুরআ রাযী ও বাইহাকী বলেছেন, সঠিক কথা হচ্ছে, এটি মাওকুফ তথা ইবন উমারের বক্তব্য। এমনটি ‘আল-মাজমূ' (৩/৭০-৭১) গ্রন্থে রয়েছে। এরপর ইমাম নববী বলেন, আমাদের মাযহাবের অনুসারীরাও দুর্বল হাদীস দলিল হিসেবে পেশ করেন। স্পষ্ট দলিল ছাড়া ধারাবাহিকতা রক্ষা করা ওয়াজিব প্রমাণিত হবে না। আর তাদের কাছে কোনো স্পষ্ট দলিলও নেই। যে ব্যক্তি ধারাবাহিকতা রক্ষা করা ছাড়াই সালাত আদায় করেছে, সে সেই সালাত আদায় করে নিয়েছে, যে সালাত আদায় করার তাকে আদেশ দেওয়া হয়েছে। এর অতিরিক্ত কোনো কিছু স্পষ্ট দলিল ছাড়া আবশ্যক নয়। আল্লাহু আলাম। অতএব, কারো দুই বা ততধিক সালাত কাযা হয়ে গেলে, সেই সালাত ধারাবাহিকভাবে আদায় করা ওয়াজিব নয়। (আস-সামারুল মুস্তাতাব, ১/১০৮)
- ফাতাওয়ায়ে আলবানী, প্রশ্ন নং ২৩২; বিলিভার্স ভিশন পাবলিকেশন্স