সালাফী আকিদা ও মানহাজে - Salafi Forum

Salafi Forum হচ্ছে সালাফী ও সালাফদের আকিদা, মানহাজ শিক্ষায় নিবেদিত একটি সমৃদ্ধ অনলাইন কমিউনিটি ফোরাম। জ্ঞানগর্ভ আলোচনায় নিযুক্ত হউন, সালাফী আলেমদের দিকনির্দেশনা অনুসন্ধান করুন। আপনার ইলম প্রসারিত করুন, আপনার ঈমানকে শক্তিশালী করুন এবং সালাফিদের সাথে দ্বীনি সম্পর্ক গড়ে তুলুন। বিশুদ্ধ আকিদা ও মানহাজের জ্ঞান অর্জন করতে, ও সালাফীদের দৃষ্টিভঙ্গি শেয়ার করতে এবং ঐক্য ও ভ্রাতৃত্বের চেতনাকে আলিঙ্গন করতে আজই আমাদের সাথে যোগ দিন।

প্রশ্নোত্তর কাফের শাসকের হাতে বাইআত করা কি জায়েয?

FORUM BOT

Doing Automated Jobs

Threads
4,135
Comments
4,353
Solutions
1
Reactions
37,496
Credits
24,212
প্রশ্নঃ কোন কাফের শাসকের হাতে বাইআত করা কি জায়েয?


উত্তরঃ আলহামদুলিল্লাহ।


বাইআত হচ্ছে- আনুগত্য করার প্রতিশ্রুতি। এটি বাইআতকারী ও বাইআত গ্রহণকারীর মধ্যে আইনানুগ চুক্তি। বাইআত গ্রহণকারী হচ্ছে- আমীর কিংবা খলিফা।


আহলে হিল্ল ওয়া আকদ কর্তৃক খলিফা মনোনীত করার মাধ্যমেই বাইআত সংঘটিত হয়; আহলে হিল্ল ওয়া আকদ বলা হয় ঐ সমস্ত ব্যক্তিবর্গকে যাদের মধ্যে আমানতদারিতা ও নীতিনির্ধারণের যোগ্যতা রয়েছে।


‘আল-মাওসুআ আল-ফিকহিয়্যা’ গ্রন্থে (৯/২৭৪) এসেছে-


বাইআতের পারিভাষিক সংজ্ঞায় ইবনে খালদুন তাঁর ‘মুকাদ্দিমা’ গ্রন্থে বলেন: আনুগত্যের প্রতিশ্রুতি গ্রহণ; যেন বাইআতকারী আমীরের সাথে এ মর্মে চুক্তিবদ্ধ হচ্ছেন যে, তার নিজের ব্যাপারে ও মুসলমানদের ব্যাপারে সিদ্ধান্ত দেয়ার অধিকার আমীরকে প্রদান করা হল। এ ব্যাপারে তার সাথে দ্বন্দ করবে না। এমনকি সুখ-দুঃখ সর্বাবস্থায় আমীর কর্তৃক যে দায়িত্ব প্রদান করা হয় সেক্ষেত্রে তার আনুগত্য করবে। লোকেরা যখন আমীরের হাতে বাইআত করত: তখন তারা আমীরের হাতে হাত রাখত। তাই এটি যেন বিক্রেতা ও ক্রেতার চুক্তির মত। হাতে হাত রেখে মুসাফাহা এর মাধ্যমে বাইআত সংঘটিত হয়।[সমাপ্ত]


উল্লেখিত গ্রন্থে (৯/২৭৮) আরও এসেছে:


আহলে হিল্ল ওয়া আকদ কর্তৃক ইমাম (রাষ্ট্রপ্রধান) মনোনীত করা ও তাদের বাইআতের মাধ্যমেই তাঁর ইমামত ও খিলাফতের বাইআত সংঘটিত হয়। আহলে হিল্ল ওয়া আকদ হচ্ছে- আলেম শ্রেণী ও নীতিনির্ধারক শ্রেণী। যাদের মাঝে ইলমের সাথে আমানতদারিতা, ন্যায়পরায়নতা ও সিদ্ধান্ত দেয়ার যোগ্যতা রয়েছে।[সমাপ্ত]


আহলে হিল্ল ওয়া আকদ এর সদস্যদের মধ্যে যেমন কিছু গুণাবলি থাকা শর্ত ঠিক তেমনি বাইআত গ্রহণকারী খলিফার মধ্যেও কিছু গুণাবলি থাকা শর্ত। এর মধ্যে কিছু গুণাবলি নিয়ে মতভেদ আছে; আর কিছু গুণাবলি সর্বসম্মত। খলিফা মুসলিম হতে হবে এ ব্যাপারে আলেমদের কারো মাঝে কোন দ্বিমত নেই। কারণ বাইআত গ্রহণ করার দাবী হচ্ছে- আল্লাহর আইন বাস্তবায়ন করা, দণ্ডবিধি কায়েম করা, রাষ্ট্রের সীমান্ত সংরক্ষণ করা। তাই একজন কাফের কিভাবে আল্লাহর আইন কায়েম করবে এবং এ কাজগুলো বাস্তবায়ন করবে?! বরঞ্চ যে খলিফা মুসলিম ছিল; কিন্তু সে কাফের হয়ে গেছে তাহলে তার কুফরীর কারণে তাকে পদচ্যুত করা হবে।


ইবনে হাজম (রহঃ) খলিফা হওয়ার শর্তগুলো উল্লেখ করতে গিয়ে বলেন:


মুসলিম হওয়া। কারণ আল্লাহ তাআলা বলেন: “আল্লাহ কখনই মুসলিমদের বিরুদ্ধে কাফেরদের জন্য কোন পথ রাখবেননা।”।[সূরা নিসা, আয়াত: ১৪১] খিলাফত হচ্ছে- সবচেয়ে বড় পথ। এছাড়াও আল্লাহ আহলে কিতাবদেরকে ছোট করে রাখার এবং তাদের নিকট থেকে জিযিয়া আদায় করার নির্দেশ দিয়েছেন।[সমাপ্ত; আল-ফাসলু ফিল মিলাল ওয়াল আহওয়া ওয়ান নিহাল (৪/১২৮)]


ইমাম নববী বলেন:


কাযী বলেন: আলেমগণের ইজমা অনুযায়ী কোন কাফেরের ইমামত ও খিলাফত সংঘটিত হবে না। যদি খলিফার মধ্যে নতুনভাবে কুফরী প্রবেশ করে তাহলে তাকে পদচ্যুত করা হবে।[সমাপ্ত; শারহু মুসলিম (১২/২২৯)]


আল-মাওসুআ আল-ফিকহিয়্যা (৬/২১৮) তে এসেছে:


ফিকাহবিদগণ খলিফা হওয়ার জন্য কতগুলো শর্ত করে থাকেন। এর মধ্যে কিছু শর্ত আছে সর্বসম্মত; আর কিছু শর্ত নিয়ে মতভেদ আছে। খলিফা হওয়ার জন্য সর্বসম্মত শর্তের মধ্যে রয়েছে:


১. ইসলাম। এটি সাক্ষ্য গ্রহণ করা ও কারো অভিভাবকত্ব গ্রহণ করার ক্ষেত্রেও শর্ত। যে কাজগুলো খিলাফতের চেয়ে অনেক কম গুরুত্বপূর্ণ। আল্লাহ তাআলা বলেন: “আল্লাহ কখনইমুসলিমদের বিরুদ্ধে কাফেরদের জন্য কোন পথ রাখবেননা।”।[সূরা নিসা, আয়াত: ১৪১] যেমনটি ইবনে হাজম বলেছেন: ইমামত বা খিলাফত হচ্ছে- সবচেয়ে বড় পথ এবং যাতে করে মুসলিম খলিফা মুসলমানদের সুবিধাগুলোকে অগ্রাধিকার দিতে পারে।[সমাপ্ত]


উপরোক্ত আলোচনার ভিত্তিতে: কাফের শাসকের হাতে বাইআত করা নাজায়েয।


আল্লাহই ভাল জানেন।


সূত্রঃ Islamqa.info
 
Top