‼️ পোস্টটি সুন্দরভাবে দেখতে এখানে ক্লিক করুন।‼️

করোনা ভাইরাস Coronaviruses (CoV): বিশ্বমানবতার সামনে করণীয় এবং আত্মরক্ষার ৬টি দুআ

Status
Not open for further replies.

FORUM BOT

Doing Automated Jobs

Threads
4,135
Comments
4,353
Solutions
1
Reactions
34,838
Credits
24,212
করোনা ভাইরাস Coronaviruses (CoV): বিশ্বমানবতার সামনে করণীয় এবং আত্মরক্ষার ৬টি দুআ
▬▬▬◄❖►▬▬▬
এ পৃথিবীতে যত বিপদ ও বিপর্যয় সৃষ্টি হয় তার মূল কারণ মানুষের সীমালঙ্ঘন এবং অন্যায় কৃতকর্ম। তাই আল্লাহ তাআলা মাঝেমধ্যে সৃষ্টির মধ্যে তার শিক্তমত্তার প্রকাশ ঘটান যেন, আল্লাহর অবাধ্য ও সীমালঙ্ঘণকারী মানুষ সচেতন হয় এবং তাঁর পথে ফিরে আসে। আল্লাহ তাআলা বলেন:
ظَهَرَ الْفَسَادُ فِي الْبَرِّ وَالْبَحْرِ بِمَا كَسَبَتْ أَيْدِي النَّاسِ لِيُذِيقَهُم بَعْضَ الَّذِي عَمِلُوا لَعَلَّهُمْ يَرْجِعُونَ
“স্থলে ও জলে মানুষের কৃতকর্মের দরুন বিপর্যয় ছড়িয়ে পড়েছে। আল্লাহ তাদেরকে তাদের কর্মের শাস্তি আস্বাদন করাতে চান, যাতে তারা ফিরে আসে।” (সূরা রুম: ৪১)
রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেন:
لَمْ تَظْهَرِ الْفَاحِشَةُ فِي قَوْمٍ قَطُّ حَتَّى يُعْلِنُوا بِهَا إِلاَّ فَشَا فِيهِمُ الطَّاعُونُ وَالأَوْجَاعُ الَّتِي لَمْ تَكُنْ مَضَتْ فِي أَسْلاَفِهِمُ الَّذِينَ مَضَوْا
“যখন কোন জাতির মধ্যে প্রকাশ্যে অশ্লীলতা ছড়িয়ে পড়ে তখন সেখানে মহামারী এবং এমন সব রোগ-ব্যাধির ছড়িয়ে পড়ে যা পূর্বেকার লোকেদের মধ্যে কখনো দেখা যায়নি।” (সুনানে ইবনে মাজাহ, অধ্যায়ঃ ৩০/ কলহ-বিপর্যয় (كتاب الفتن) হা/৪০১৯, সনদ হাসান)

যাহোক, বর্তমানে কারো অজানা নেই যে, চীন থেকে উৎপত্তি আল্লাহর এক অদৃশ্য সেনাবাহিনী তথা ‘করোনা’ নামক ভাইরাস আক্রমণে সমগ্র বিশ্ব ভয়ে থরথর করে কাঁপছে। এতে আবারও প্রমাণিত হল, সত্যি মানুষ আল্লাহর অতিশয় দুর্বল সৃষ্টি। যারা কারণে তারা আল্লাহর খুব সামান্য এক ভাইরাস (যা খালি চোখে দেখা যায় না) এর কাছে আজ পর্যদুস্ত ও অসহায়। অথচ তারা মনে করে, তারা বিজ্ঞান, টেকনলোজি, আবিষ্কার ও শক্তিমত্তায় বহুদূর পৌঁছে গেছে! যথার্থই আল্লাহর ভাষায় মানুষ “অতীব অবিচারী এবং মূর্খ।” (সূরা আহযাব: ৭২)
আল্লাহ আমাদেরকে ক্ষমা করুন। আমীন।

এখন এ ভয়াবহ পরিস্থিতি থেকে মুক্তির জন্য মানব জাতির সামনে কী করণীয় রয়েছে তা সংক্ষেপে জানার চেষ্টা করব ইনশাআল্লাহ।

◯◯ ‘করোনা’ নামক ধেয়ে আসা এক মহা বিপর্যের কবল থেকে রক্ষা পাওয়ার জন্য মানবজাতির করণীয় হল:

◉ ১. সব ধরণের কুফরি, শিরক, নাস্তিকতা, অশ্লীলতা, হারাম ও অন্যায়-অপকর্ম পরিত্যাগ করে মহান স্রষ্টার একমাত্র মনোনীত জীবনাদর্শ ইসলামের পথে ফিরে আসা।
◉ ২. নিজেদের পাপাচার ও সীমালঙ্ঘনের জন্য আল্লাহর কাছে ক্ষমা প্রার্থনা করা।
◉ ৩. বিপদ-বিপর্যয় থেকে রক্ষার জন্য মহাশক্তিধর আল্লাহ কাছে দুআ ও আরোধনা করা।
◉ ৪. মহামারি আক্রান্ত এলাকায় গমন না করা এবং সেখানকার অধিবাসীগণ সেখান থেকে বের না হওয়া।

রাসূল সল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেনঃ “যখন তোমরা কোনো অঞ্চলে মহামারী বিস্তারের সংবাদ শোন, তখন সে এলাকায় প্রবেশ করো না। আর তোমরা যেখানে অবস্থান কর, সেখানে মহামারী বিস্তার ঘটলে সেখান থেকে বেরিয়ে যেও না”। (সহীহ বুখারী, অধ্যায়ঃ ৭৬/ চিকিৎসা, হাদিস নম্বরঃ ৫৭২৮)

◉ ৫. এ বিশ্বাস রাখা যে, মহামারি মুমিনদের জন্য আল্লাহর বিশেষ রহমত। সে যদি এতে মারা যায় তাহলে সে শহিদের সমপরিমাণ সওয়াব লাভ করবে। যেমন: হাাদিসে বর্ণিত হয়েছে:

عَنْ عَائِشَةَ رَضِيَ اللّهُ عَنْهَا قَالَتْ: سَأَلَتْ رَسُولَ اللّهِ ﷺ عَنِ الطَّاعُونِ فَأَخْبَرَنِي: أَنَّه عَذَابٌ يَبْعَثُهُ اللّهُ عَلى مَنْ يَشَاءُ وَأَنَّ اللّهَ جَعَلَه رَحْمَةً لِلْمُؤْمِنِيْنَ لَيْسَ مِنْ أَحَدٍ يَقَعُ الطَّاعُونُ فَيَمْكُثُ فِي بَلَدِه صَابِرًا مُحْتَسِبًا يَعْلَمُ أَنَّه لَا يُصِيْبُه إِلَّا مَا كَتَبَ اللّهُ لَه إِلَّا كَانَ لَه مِثْلُ أَجْرِ شَهِيْدٍ . رَوَاهُ الْبُخَارِيُّ

আয়িশা রা. থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, আমি একবার রসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-কে মহামারীর ব্যাপারে জিজ্ঞেস করলাম। জবাবে তিনি আমাকে বললেন, এটা একটি আজাব (শাস্তি)। তিনি যার উপর চান পাঠান। কিন্তু মু’মিনদের জন্য তা তিনি রহমত গণ্য করেছেন। তোমাদের যে কোন লোক মহামারী কবলিত এলাকায় সাওয়াবের আশায় সবরের সাথে অবস্থান করে এবং আস্থা রাখে যে, আল্লাহ তার জন্য যা নির্ধারণ করে রেখেছেন তাই হবে, তাছাড়া আর কিছু হবে না, তার জন্য রয়েছে শাহীদের সাওয়াব। (সহিহ বুখারী)

মুসনাদে আহমদে আবূ আসীব থেকে হাদিস বর্ণিত হয়েছে, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন:
فَالطَّاعُوْنُ شَهَادَةٌ لِلْمُؤْمِنِيْنَ وَرَحْمَةٌ لَهُمْ وَرِجْسٌ عَلَى الْكَافِرِ.
“মহামারি হল মু’মিনদের জন্য শাহাদাত এবং রহমত স্বরূপ আর কাফিরদের জন্য শাস্তি স্বরূপ।” (সহিহ তারগিব, হা/১৪০১)

◉ ৬. যত বালা-মুসিবত এবং বিপদ-বিপর্যয় যা কিছু আসুক না কেন ইমানদারের আতঙ্কিত ও হতাশ হওয়ার কোন কারণ নাই। বরং আত্মরক্ষার জন্য যথাসাধ্য দুনিয়াবি উপায়-উপকরণ গ্রহণের পাশাপাশি আল্লাহর উপর ভরসা রাখতে হবে এবং ধৈর্য ধারণ করতে হবে। তৎসঙ্গে আশা করতে হবে যে, এই বালা-মুসিবত এবং রোগ-ব্যাধীর মাধ্যমে আল্লাহ তাআলা বান্দার গুনাহ মোচন করেন এবং আখিরাতে মর্যাদা বৃদ্ধি করেন।

◉৭. এ বিষয়ে বিভিন্ন স্বাস্থ্য সংস্থা এবং বিশেষজ্ঞ ডাক্তারদের নির্দেশনা মেনে চলা এবং যথাসম্ভব সতর্কতা অবলম্বন করা।

◯◯ করোনা ভাইরাস সহ সব ধরণের জটিল ও দুরারোগ্য রোগ-ব্যাধি থেকে বাঁচার জন্য বিশেষ কয়েকটি দুআ:

এই সংক্রামক ভাইরাস থেকে আত্মরক্ষার উদ্দেশ্যে হাদিসে বর্ণিত নিম্নোক্ত দুআগুলো পাঠ করুন:

◈ ১ নং দুআ:

اللَّهُمَّ إِنِّي أَعُوذُ بِكَ مِنْ جَهْدِ الْبَلاَءِ وَدَرَكِ الشَّقَاءِ وَسُوءِ الْقَضَاءِ وَشَمَاتَةِ الأَعْدَاءِ
“হে আল্লাহ, আমি তোমার নিকট আশ্রয় চাই, কঠিন বালা-মুসিবত, দুর্ভাগ্য ও শত্রুদের বিদ্বেষ থেকে।” [সহিহ বুখারি]

◈ ২ নং দুআ:

اللَّهُمَّ إِنِّي أَعُوذُ بِكَ مِنْ الْبَرَصِ وَالْجُنُونِ وَالْجُذَامِ وَمِنْ سَيِّئْ الأَسْقَامِ
“হে আল্লাহ, আমি তোমার নিকট শ্বেত রোগ, পাগলামি ও কুষ্ঠ রোগসহ সকল জটিল রোগ থেকে আশ্রয় চাই।” [সুনানে আবু দাউদ, হা/ ১৫৫৪]

◈ ৩ নং দুআ:
اللَّهُمَّ إِنِّي أَسْأَلُكَ الْعَافِيَةَ فِي الدُّنْيَا وَالآخِرَةِ
“হে আল্লাহ, তোমার কাছে আমি দুনিয়া ও আখিরাতের নিরাপত্তা ও সুস্থতা কামনা করছি। [সুনানে তিরমিযী, হা/ ৩৫১৪]

◈ ৪ নং দুআ:

بِسْمِ اللّٰهِ الَّذِىْ لَا يَضُرُّ مَعَ اِسْمِه شَىْءٌ فِى الْأَرْضِ وَلَا فِى السَّمَاءِ وَهُوَ السَّمِيعُ الْعَلِيمُ ثَلَاثَ مَرَّاتٍ فَيَضُرَّه شَىْءٌ
‘‘বিসমিল্লা-হিল্লাযী লা- ইয়াযুররু মা‘আইস্‌মিহী শায়উন ফিল আরযি ওয়ালা- ফিস্‌সামা-য়ি, ওয়া হুওয়াস্ সামী‘উল ‘আলিম’’ (অর্থাৎ- আল্লাহর নামে শুরু করছি, যে নামের সাথে আসমান ও জমিনে কোন কিছুই কোন ক্ষতি করতে পারে না। তিনি সব শুনেন ও জানেন।”

[তিরমিযী ৩৩৮৮, আবূ দাঊদ ৫০৮৮, ইবনু মাজাহ ৩৮৬৯, সহিহুল জামে, হা/ ৫৭৪৫]

এ দুআটি সকাল-সন্ধ্যায় তিনবার করে পাঠ করতে হবে।

◈ ৫ নং দুআ:

أَعُوذُ بِكَلِمَاتِ اللهِ التَّامَّاتِ مِنْ شَرِّ مَا خَلَقَ
“আল্লাহর পরিপূর্ণ বাণীসমূহের ওসিলায় তাঁর নিকট আমি তিনি যা সৃষ্টি করেছেন সেগুলোর অনিষ্ট থেকে আশ্রয় চাই।’ (সাহিহ মুসলিম: ৪/২০৮১)

◈ ৬ নং দুআ:
«أَعُوذُ بِكَلِمَاتِ اللَّهِ التَّامَّةِ الَّتِي لَا يُجَاوِزُهُنَّ بَرٌّ وَلَا فَاجِرٌ، مِنْ شَرِّ مَا يَنْزِلُ مِنَ السَّمَاءِ، وَمِنْ شَرِّ مَا يَعْرُجُ فِيهَا، وَمِنْ شَرِّ مَا ذَرَأَ فِي الْأَرْضِ، وَمِنْ شَرِّ مَا يَخْرُجُ مِنْهَا، وَمِنْ شَرِّ فِتَنِ اللَّيْلِ وَالنَّهَارِ، وَمِنْ شَرِّ كُلِّ طَارِقٍ إِلَّا طَارِقًا يَطْرُقُ بِخَيْرٍ يَا رَحْمَنُ»
“আমি আল্লাহর ঐ সকল পরিপূর্ণ বাণীসমূহের সাহায্যে আশ্রয় চাই, যা কোনো সৎব্যক্তি বা অসৎ ব্যক্তি অতিক্রম করতে পারে না, — আল্লাহ যা সৃষ্টি করেছেন, অস্তিত্বে এনেছেন এবং তৈরী করেছেন তার অনিষ্ট থেকে। আসমান থেকে যা নেমে আসে তার অনিষ্ট থেকে এবং যা আকাশে উঠে তার অনিষ্ট থেকে, আর যা পৃথিবীতে তিনি সৃষ্টি করেছেন তার অনিষ্ট থেকে, আর যা পৃথিবী থেকে বেরিয়ে আসে, তার অনিষ্ট থেকে, দিনে রাতে সংঘটিত ফেতনার অনিষ্ট থেকে, আর রাতের বেলায় হঠাৎ করে আগত অনিষ্ট থেকে। তবে রাতে আগত কল্যাণকর আগমনকারী ব্যতীত, হে দয়াময়।” (হিসনুল মুসলিম : ২/১৪১)।

আল্লাহ তাআলা মানবজাতিকে তার মনোনীত একমাত্র জীবনাদর্শ মহান ইসলামের পথে ফিরে আসার তৌফিক দান করুন এবং তাদেরকে সব ধরণের বিপদ-বিপর্যয় থেকে রক্ষা করুন। আমীন।

➧ আরও পড়ুন:
রোগ-ব্যাধিতে ঈমানদারের করণীয়:

https://goo.gl/drLjrM
ইসলামে ছোঁয়াচে রোগকে অস্বীকার করা হয় নি
https://www.facebook.com/Guidance2TheRightPath/posts/452075911878626/
ইসলামের দৃষ্টিতে ভ্যাক্সিন/টিকা গ্রহণ করার বিধান
https://goo.gl/64GQMf
▬▬▬◄❖►▬▬▬
উত্তর প্রদানে:
আব্দুল্লাহিল হাদী বিন আব্দুল জলীল
জুবাইল, সৌদি আরব
fb id: AbdullaahilHadi

শাইখ আব্দুল্লাহিল হাদী বিন আব্দুল জলীল এর নতুন নতুন প্রবন্ধ, ফাতাওয়া, প্রশ্নোত্তর আপডেট পেতে চোখ রাখুন সালাফি ফোরামে।
জাযাকুমুল্লাহু খাইরান।
 
Status
Not open for further replies.

Share this page