একসাথে একাধিক পরিবার বসবাসের মূলনীতি

Joined
Jan 12, 2023
Threads
864
Comments
1,113
Solutions
20
Reactions
13,043
প্রশ্ন: কোনো কোনো অঞ্চলে একসাথে একাধিক পরিবার বসবাসের রীতি চালু আছে। যেমন: দুই বা ততোধিক ভাই তাদের পরিবারসহ এক বাড়িতেই বসবাস করে। এমতাবস্থায় মেয়েরা তাদের দেবর বা ভাশুরদের সামনে মুখ খোলা রাখে। এ বিষয়ে আপনার মতামত জানিয়ে বাধিত করবেন।

উত্তর: একসাথে একাধিক পরিবার বসবাস করলেও গায়রে মাহরাম পুরুষদের সামনে মেয়েদেরকে পর্দা করতে হবে। স্বামীর ভাইদের সামনেও মুখ খোলা রাখা যাবে না। কেননা পর্দার ক্ষেত্রে স্বামীর ভাই এবং রাস্তার লোকজনের জন্য একই হুকুম প্রযোজ্য হবে। স্বামী কাজের জন্য বাইরে চলে গেলে তার ভাইয়ের সাথে একাকী বাসায় থাকা যাবে না। এ সমস্যা অনেক পরিবারেই দেখা যায়। যেমন:

দুই ভাই একই বাসায় থাকে। তাদের একজন বিবাহিত, আরেকজন অবিবাহিত। এ অবস্থায় অবিবাহিত ভাইয়ের কাছে স্ত্রীকে রেখে কাজের বা পড়াশুনার জন্য বাইরে যাওয়া বৈধ হবে না। কেননা রাসূল (ﷺ) বলেছেন, 'কোনো পুরুষ যেন অন্য নারীর সঙ্গে নিভৃতে অবস্থান না করে'। তিনি আরও বলেন, 'মহিলাদের নিকট একাকী যাওয়া থেকে বিরত থাকো'। ছাহাবীগণ জিজ্ঞেস করলেন, হে আল্লাহর রাসূল! দেবরের ব্যাপারে কী হুকুম? তিনি বললেন, 'দেবর হচ্ছে মৃত্যুতুল্য'।

এভাবে একত্রে বসবাসের ফলে প্রায় যেনা-ব্যভিচার ঘটার খবর পাওয়া যায়। দেখা যায়, স্বামী তার স্ত্রী এবং ভাইকে বাসায় রেখে কাজে চলে যায়। এদিকে শয়তান তাদের দুজনকে অশ্লীলতার প্রতি উৎসাহ দিতে থাকে। তখন ঐ ব্যক্তি তার ভাবির সাথে অপকর্মে লিপ্ত হয়। প্রতিবেশীর স্ত্রীর সাথে অপকর্মের থেকে এটি বেশি মারাত্মক এবং নোংরামি।

যাহোক, আমি আবারও আপনাদেরকে বলব, ভাই যতই পরহেযগার এবং বিশ্বস্ত হোক না কেন, তার সাথে স্ত্রীকে বাসায় রেখে কাজে চলে যাওয়া কোনো অবস্থাতেই গ্রহণযোগ্য নয়। মনে রাখবেন! শয়তান মানুষের রগে রগে চলাচল করে এবং মানুষের জৈবিক চাহিদার নির্দিষ্ট কোনো সীমা নেই, বিশেষ করে যুবকদের।

প্রশ্ন: কিন্তু এভাবে দুই ভাই যদি একত্রে বসবাস করে, তাহলে কি আমরা বিবাহিত ভাইকে বলব, তুমি যখন কাজে বের হবে, তখন স্ত্রীকে সাথে নিয়ে বের হবে?

উত্তর:
না; বরং বাড়িটিকে দুই ভাগে ভাগ করে দেওয়া যায়। দুই দিকে দুই ভাই আলাদা আলাদাভাবে থাকবে। প্রত্যেকের ভিন্ন ভিন্ন প্রবেশদ্বার থাকবে। স্বামী যখন কাজের জন্য বের হবে, তখন দরজায় তালা দিয়ে তার সাথে চাবি নিয়ে চলে যাবে। ফলে স্ত্রী বাড়ির একদিকে থাকবে, ভাই আলাদাভাবে অন্য দিকে থাকবে।

প্রশ্ন: কিন্তু তার অবিবাহিত ভাই যদি তাকে বলে, ভাই! তুমি এমন করছ কেন? তুমি কি আমাকে বিশ্বাস করো না?

উত্তর: তাকে বলবে, আমি তোমার ভালোর জন্যই এটি করেছি। কারণ, শয়তান মানুষের রগে রগে চলাচল করে। সে তোমাকে বিভ্রান্ত করতে পারে। তাছাড়া তোমার কুপ্রবৃত্তিও তোমার উপর প্রভাব বিস্তার করতে পারে। যার ফলে তোমার বিবেক-বুদ্ধি লোপ পাবে এবং জৈবিক চাহিদা মিটাতে অপকর্মে লিপ্ত হতে পারো। আমি তোমার হেফাযতের জন্যই বাড়ি আলাদা করেছি। এটি তোমার-আমার উভয়ের জন্যই কল্যাণকর। একথা বলার পর তোমার ভাই যদি ক্ষিপ্ত হয়, তাহলে সে ক্ষিপ্ত হোক। এতে তোমার কোনো কিছু করার নেই। আমি আল্লাহর নিকট দায়মুক্ত হওয়ার জন্য তোমাদেরকে এ কথাগুলো বললাম। তোমরা আল্লাহর নিকট তোমাদের কর্মের জন্য জবাবদিহিতা করবে।

কোনো নারীর জন্য তার দেবরের সামনে মুখ খোলা রাখা বৈধ নয়। কারণ দেবর মাহরাম পুরুষদের অন্তর্ভুক্ত নয়; বরং এক্ষেত্রে সে রাস্তার অন্য পুরুষদের মতোই।

মুসলিম পরিবার সম্পর্কিত গুরুত্বপূর্ণ প্রশ্নোত্তর
মূল : শায়খ মুহাম্মাদ ইবনে ছলেহ আল-উছায়মীন
-অনুবাদ : ড. আব্দুল্লাহিল কাফী মাদানী​

 
Last edited:
Back
Top