একজন তালাকপ্রাপ্তা বা বিধবা নারী কোনো ব্যবহৃত গাড়ি নন, তাই তাঁদের প্রতি আচরণের ক্ষেত্রে আল্লাহকে ভয় করুন!

Joined
Aug 6, 2024
Threads
83
Comments
93
Solutions
1
Reactions
1,159
রাসূলুল্লাহ ﷺ-এর যুগে যখন কোনো মুসলিম নারী বিধবা বা তালাকপ্রাপ্তা হতেন, তখন সাহাবায়ে কেরাম (রা.) তাঁর প্রতি সম্মান, মর্যাদা এবং তাঁর দেখাশোনার তাগিদে তাঁকে বিয়ে করার জন্য প্রতিযোগিতা করতেন।

আমরা যদি তাঁদের জীবনী পর্যালোচনা করি, তবে দেখব একজন নারী একাধিক সাহাবীকে বিয়ে করেছেন—কখনও তিনজন, কখনও চারজন—অথচ কেউ তাঁকে নিচু চোখে দেখেনি বা অবজ্ঞা করেনি।

উদাহরণস্বরূপ আতিকা (রা.)-এর কথা ধরুন: তিনি আবু বকর সিদ্দিক (রা.)-এর ছেলের সাথে বিবাহবন্ধনে আবদ্ধ হন এবং তাঁরা একে অপরকে খুব ভালোবাসতেন। তাঁর শাহাদাতের পর উমর ইবনুল খাত্তাব (রা.) দ্রুত তাঁকে বিয়ে করেন। তিনিও শহীদ হওয়ার পর রাসূল ﷺ-এর অন্যতম সাহাবী যুবায়ের (রা.) তাঁকে বিয়ে করেন। তাঁকে নিয়ে কখনও এমন কথা বলা হয়নি যে তিনি "স্বামীদের জন্য অলক্ষুণে"। বরং মানুষ বলত: "যে ব্যক্তি শাহাদাত কামনা করে, সে যেন আতিকাকে বিয়ে করে।"

আবার আসমা বিনতে উমাইস (রা.) এবং তাঁর শেষ স্বামী বীর ও সেনাপতি আলী ইবনে আবি তালিব (রা.)-এর গল্পের কথা ভাবুন। আলী (রা.) আসমার আগের ঘরের সন্তানদের সাথে খেলাধুলা করতেন, সন্তানদের সম্পর্কে আসমার মমতাভরা কথা শুনতেন, হাসতেন এবং কখনও হিংসা বোধ করতেন না। তিনি একবার বলেছিলেন: "তুমি যদি তাদের সম্পর্কে অন্য কিছু বলতে তবে আমি তোমাকে তিরস্কার করতাম—তারা তো আমারই সঙ্গী।"

আমরা কখনও শুনিনি যে, কোনো নারী পুনরায় বিয়ে করার কারণে তাঁর আগের স্বামীর স্মৃতির সাথে বিশ্বাসঘাতকতা করেছেন বলে অভিযুক্ত হয়েছেন।
আমাদের নবী ﷺ নিজে কেবল একজন কুমারী নারীকে বিয়ে করেছিলেন: তিনি হলেন আয়েশা (রা.)। অথচ আজ অনেকে এমন আচরণ করেন যেন আগে বিয়ে হওয়া নারীরা কোনো 'ব্যবহৃত গাড়ি'! আল্লাহর কসম, এটি মুসলিম নারীদের প্রতি এক চরম অবিচার এবং জুলুম।
অনেক পুরুষ নারীর আগের বিয়ে নিয়ে বিচলিত বোধ করেন, যা আসলে তাদের নিজেদের পুরুষত্ব, নেতৃত্ব দেওয়ার ক্ষমতা বা চরিত্রের প্রতি আত্মবিশ্বাসের অভাব ছাড়া আর কিছুই নয়।

একজন মুসলিম নারী যিনি তালাক বা বৈধব্যের সম্মুখীন হয়েছেন তিনি কোনো ব্যর্থ ব্যক্তি নন, তা না হলে কুরআনের তালাক সংক্রান্ত সূরাটির নাম হতো "ব্যর্থতার সূরা"। অথচ মুফাসসিরগণ একে "মুক্তির সূরা" (আল-ফারাজ) বলে অভিহিত করেছেন। আসুন আমরা এই আয়াতটি নিয়ে চিন্তা করি:

{لَا تَدْرِي لَعَلَّ اللَّهَ يُحْدِثُ بَعْدَ ذَلِكَ أَمْراً}
“তুমি জান না, হয়তো আল্লাহ এর পরে কোনো নতুন পথ বের করে দেবেন।” [সূরা আত-তালাক, ৬৫:১]

সেই বোনের প্রতি, যিনি তালাকের কষ্ট সহ্য করেছেন এবং ভবিষ্যতের নানা পরীক্ষা নিয়ে শঙ্কিত, আমরা বলি:
“তুমি জান না, হয়তো আল্লাহ এর পরে কোনো নতুন পথ বের করে দেবেন।”
হয়তো বিচ্ছেদের পরেই আসবে সুখ ও প্রশান্তি। হয়তো পূর্বের স্বামীর চেয়েও উত্তম, নেককার এবং অধিক উপযুক্ত কেউ আপনার জীবনে আসবে।

উৎস: القناة الرسمية للشيخ الباحث المفيد أبي عبد الله فيصل الحاشدي
 
খুবই ভালো লাগলো এই লেখাটা, আলহামদুলিল্লাহ! আমি মেয়ে হয়ে সমাজের কাছ থেকে নারীদের প্রতি হাজারো ত্রুটি পেয়েছি, কিন্তু আল্লাহ আর তাঁর রাসুল সাল্লালাহু আলায়হি ওয়া সাল্লাম-এর কাছ থেকে কখনো নারীদের ব্যাপারে কোনো ত্রুটি পায়নি। আর আল্লাহর রাসুল সাল্লালাহু আলায়হি ওয়া সাল্লাম-এর দেওয়া এই উম্মাহকে শিক্ষার মধ্যেও আমি কোনো ত্রুটি পায়নি। এই জন্যই তো আমি ইসলাম এত ভালোবাসি। কারন আসল ইসলামের বিধানগুলি নারীদের ব্যাপারে কোনো ত্রুটি করেনি, ত্রুটি করে এখনকার স্বার্থলোভী সমাজ, যারা ইসলামের শুধু একদিক মান্য করে (শুধু তাদের স্বার্থের দিকটা) আর অপর দিক অমান্য করে, এমনকি সেগুলোর ব্যাখা পর্যন্ত বদলে ফেলে, নিজেদের স্বার্থসিদ্ধির জন্য কেবলমাত্র!
 
Last edited:
Back
Top