সালাফী আকিদা ও মানহাজে - Salafi Forum

Salafi Forum হচ্ছে সালাফী ও সালাফদের আকিদা, মানহাজ শিক্ষায় নিবেদিত একটি সমৃদ্ধ অনলাইন কমিউনিটি ফোরাম। জ্ঞানগর্ভ আলোচনায় নিযুক্ত হউন, সালাফী আলেমদের দিকনির্দেশনা অনুসন্ধান করুন। আপনার ইলম প্রসারিত করুন, আপনার ঈমানকে শক্তিশালী করুন এবং সালাফিদের সাথে দ্বীনি সম্পর্ক গড়ে তুলুন। বিশুদ্ধ আকিদা ও মানহাজের জ্ঞান অর্জন করতে, ও সালাফীদের দৃষ্টিভঙ্গি শেয়ার করতে এবং ঐক্য ও ভ্রাতৃত্বের চেতনাকে আলিঙ্গন করতে আজই আমাদের সাথে যোগ দিন।
Habib Bin Tofajjal

যাকাত ও ফিতরা ঋণগ্রস্ত ব্যক্তির সাদকা করা কি ঠিক হবে? ঋণগ্রস্ত ব্যক্তি কোন ধরণের শরী‘আতের দাবী থেকে মুক্তি পাবে?

Habib Bin Tofajjal

If you're in doubt ask الله.

Forum Staff
Moderator
Generous
ilm Seeker
Uploader
Exposer
Q&A Master
Salafi User
LV
17
 
Awards
33
Credit
16,721
শরী‘আত নির্দেশিত একটি খরচ হচ্ছে দান-সাদকা। সাদকা জায়গা মত দেওয়া হলে তা হবে আল্লাহর বান্দাদের উপর অনুগ্রহ। সাদকাকারী ছাওয়াব পাবে, কিয়ামত দিবসে সদকার ছায়ার নিচে অবস্থান করবে। সাদকা কবূল হওয়ার শর্ত পূর্ণ করে যাকেই দান করা হোক তার দান গ্রহণ করা হবে। চাই দানকারী ঋণগ্রস্ত হোক বা না হোক। ইখলাস বা একনিষ্ঠতার সাথে, হালাল উপার্জন থেকে জায়গা মত দান করলেই শরী‘আতের দলীল অনুযায়ী তার দান কবূল হবে। দানকারী ঋণমুক্ত হতে হবে এমন কোনো শর্ত নেই। কিন্তু কোনো ব্যক্তি যদি এমন ঋণে ডুবে থাকে যা পরিশোধ করার জন্য তার সমস্ত সম্পত্তি দরকার, তবে এটা কোনো যুক্তিসংগত ও বিবেকসম্মত কথা নয় যে, জরুরি ও আবশ্যক ঋণ পরিশোধ না করে সে নফল দান-সাদকা করবে! অতএব, তার উপর আবশ্যক হচ্ছে, প্রথমে ফরয কাজ করা তারপর নফল কাজ করা। তারপরও ঐ অবস্থায় দান করলে তার ব্যাপারে আলিমগণ মতভেদ করেছেন। কেউ বলেন, এরূপ করা জায়েয নয়। কেননা এতে পাওনাদারের ক্ষতি করা হয় এবং নিজের জিম্মায় আবশ্যিক ঋণের বোঝা বহন করে রাখা হয়। আবার কেউ বলেন, দান করা জায়েয আছে কিন্তু উত্তমতার বিপরীত।

মোটকথা, যে ব্যক্তির আপাদমস্তক ঋণে জর্জরিত আর পরিশোধ করার জন্য নিজের সমস্ত সম্পত্তি দরকার, তার পক্ষে দান-সাদকা করা উচিৎ নয়। কেননা নফল কাজের চাইতে ওয়াজিব কাজের গুরুত্ব বেশি এবং তা অগ্রগণ্য।

আর ঋণগ্রস্ত ব্যক্তি ঋণ মুক্ত হওয়া পর্যন্ত কোন ধরণের শরী‘আতের দাবী থেকে মুক্তি পাবে?

তার মধ্যে একটি হচ্ছে হজ। ঋণ পরিশোধ করা পর্যন্ত ঋণগ্রস্ত ব্যক্তির ওপর হজের দায়িত্ব নেই বা হজ ফরয নয়।

কিন্তু যাকাতের ব্যাপারে বিদ্বানগণ মতভেদ করেছেন। ঋণগ্রস্তের উপর থেকে যাকাতের আবশ্যকতা রহিত হবে কি হবে না?

একদল আলিম বলেছেন, ঋণ পরিমাণ সম্পদে যাকাতের আবশ্যকতা রহিত হবে। চাই উক্ত সম্পদ প্রকাশ্য হোক বা অপ্রকাশ্য।

আরেক দল আলিম বলেন, তার উপর কোনো সময় যাকাতের আবশ্যকতা রহিত হবে না। হাতে যে সম্পদই থাক না কেন হিসেব করে তার যাকাত বের করতে হবে। যদিও তার উপর এমন ঋণ থাকে যা পরিশোধ করে দিলে অবশিষ্ট সম্পদ নিসাব পরিমাণ হয় না।

অন্যদল আলিম বলেন, বিষয়টি ব্যাখ্যা সাপেক্ষ। তার সম্পদ যদি অপ্রকাশ্য ধরণের হয় যা প্রত্যক্ষ নয় গোপন থাকে। যেমন, টাকা-পয়সা এবং ব্যবসায়িক পণ্য, তবে তাতে ঋণ পরিমাণ সম্পদে যাকাত রহিত হবে। আর সম্পদ যদি প্রকাশ্য ধরণের হয়। যেমন, পশু, যমীন থেকে উৎপাদিত ফসল ইত্যাদি, তবে তাতে যাকাত রহিত হবে না।

আমার মতে বিশুদ্ধ কথা হচ্ছে: কোনো সময়ই যাকাত রহিত হবে না। চাই সম্পদ প্রকাশ্য হোক বা অপ্রকাশ্য। তার হাতে যে সম্পদ আছে তা যদি যাকাতের অন্তর্ভুক্ত হয় এবং নিসাব পরিমাণ হয়, তবে তার যাকাত দিতে হবে। যদিও তার উপর ঋণ থাকে। কেননা যাকাত হচ্ছে সম্পদের অধিকার। আল্লাহ তা‘আলা বলেন,
﴿خُذۡ مِنۡ أَمۡوَٰلِهِمۡ صَدَقَةٗ تُطَهِّرُهُمۡ وَتُزَكِّيهِم بِهَا وَصَلِّ عَلَيۡهِمۡۖ إِنَّ صَلَوٰتَكَ سَكَنٞ لَّهُمۡۗ وَٱللَّهُ سَمِيعٌ عَلِيمٌ ١٠٣ ﴾ [التوبة: ١٠٣]
“(হে নবী) আপনি তাদের ধন-সম্পদ থেকে যাকাত গ্রহণ করুন, যা দ্বারা আপনি তাদেরকে পবিত্র ও পরিশুদ্ধ করবেন, আর তাদের জন্য দো‘আ করুন। নিঃসন্দেহে আপনার দো‘আ হচ্ছে তাদের জন্য শান্তির কারণ। আর আল্লাহ খুব শোনেন, খুব জানেন।” [সূরা আত-তাওবাহ, আয়াত: ১০৩] তাছাড়া মু‘আয ইবন জাবাল রাদিয়াল্লাহু ‘আনহুকে নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম ইয়ামান প্রেরণ করে বলেছিলেন,
«أَعْلِمْهُمْ أَنَّ اللَّهَ افْتَرَضَ عَلَيْهِمْ صَدَقَةً فِي أَمْوَالِهِمْ تُؤْخَذُ مِنْ أَغْنِيَائِهِمْ وَتُرَدُّ عَلَى فُقَرَائِهِمْ»
“তাদেরকে জানিয়ে দিবে আল্লাহ তাদের সম্পদে যাকাত ফরয করেছেন। ধনীদের থেকে যাকাত গ্রহণ করে তাদের মধ্যে অভাবীদের মাঝে বিতরণ করা হবে।”[1] কুরআন-সুন্নাহর এ দলীলের ভিত্তিতে বিষয় দু’টি আলাদা হয়ে গেল। অতএব, যাকাত ও ঋণের মাঝে কোনো দ্বন্দ্ব থাকল না। কেননা ঋণ হচ্ছে ব্যক্তির যিম্মায় আবশ্যক। আর যাকাত সম্পদে আবশ্যক। প্রত্যেকটি বিষয় তার নির্দিষ্ট স্থানে আবশ্যক হবে। কেউ কারো স্থলাভিষিক্ত হবে না। অতএব, ঋণ ব্যক্তির যিম্মায় বাকী থাকবে। আর সময় হলে শর্ত পূর্ণ হলে অবশ্যই যাকাত বের করে দিবে।


[1] সহীহ বুখারী, অধ্যায়: যাকাত, অনুচ্ছেদ: যাকাত আবশ্যক হওয়া সহীহ মুসলিম, অধ্যায়: ঈমান, অনুচ্ছেদ: কালেমায়ে শাহাদাত ও ইসলামী শরী‘আতের প্রতি আহ্বান করা।
 

Monjurul

Well-known member

LV
1
 
Awards
9
Credit
86
শরী‘আত নির্দেশিত একটি খরচ হচ্ছে দান-সাদকা
 

Create an account or login to comment

You must be a member in order to leave a comment

Create account

Create an account on our community. It's easy!

Log in

Already have an account? Log in here.

Total Threads
13,421Threads
Total Messages
17,370Comments
Total Members
3,728Members
Top