সালাফী আকিদা ও মানহাজে - Salafi Forum

Salafi Forum হচ্ছে সালাফী ও সালাফদের আকিদা, মানহাজ শিক্ষায় নিবেদিত একটি সমৃদ্ধ অনলাইন কমিউনিটি ফোরাম। জ্ঞানগর্ভ আলোচনায় নিযুক্ত হউন, সালাফী আলেমদের দিকনির্দেশনা অনুসন্ধান করুন। আপনার ইলম প্রসারিত করুন, আপনার ঈমানকে শক্তিশালী করুন এবং সালাফিদের সাথে দ্বীনি সম্পর্ক গড়ে তুলুন। বিশুদ্ধ আকিদা ও মানহাজের জ্ঞান অর্জন করতে, ও সালাফীদের দৃষ্টিভঙ্গি শেয়ার করতে এবং ঐক্য ও ভ্রাতৃত্বের চেতনাকে আলিঙ্গন করতে আজই আমাদের সাথে যোগ দিন।

তাওহীদ ঈমান বিধ্বংসী দশটি কারণ - পর্ব: ২

Joynal Bin Tofajjal

Student Of Knowledge

Forum Staff
Moderator
Uploader
Exposer
HistoryLover
Salafi User
Threads
344
Comments
479
Reactions
4,880
Credits
3,328

২. যে ব্যক্তি আল্লাহ এবং বান্দার মাঝে কাউকে মাধ্যম তৈরী করে তাদেরকে ডাকে এবং তাদের নিকট শাফা‘আত কামনা করে

যে ব্যক্তি আল্লাহ এবং বান্দার মাঝে কাউকে মাধ্যম তৈরী করে তাদেরকে ডাকে এবং তাদের নিকট শাফা‘আত কামনা করে, সে মুরতাদ হয়ে যাবে। কারণ শাফা‘আতের একমাত্র মালিক আল্লাহ। তিনি বলেন, قُلْ لِلَّهِ الشَّفَاعَةُ جَمِيْعًا لَهُ مُلْكُ السَّمَاوَاتِ وَالْأَرْضِ ‘বলুন, সমস্ত সুফারিশ আল্লাহরই আয়াত্ত্বাধীন, আসমান ও যমীনে তাঁরই সাম্রাজ্য’ (যুমার ৪৪)।

এক শ্রেণীর লোক আল্লাহকে ছেড়ে অন্যের ইবাদত করে এবং তাদেরকে সুফারিশকারী হিসাবে গ্রহণ করে। অথচ তাদের সুফারিশ করার কোন ক্ষমতা নেই। আল্লাহ বলেন, وَيَعْبُدُوْنَ مِنْ دُوْنِ اللهِ مَا لاَ يَضُرُّهُمْ وَلَا يَنْفَعُهُمْ وَيَقُوْلُوْنَ هَؤُلَاءِ شُفَعَاؤُنَا عِنْدَ اللهِ قُلْ أَتُنَبِّئُوْنَ اللهَ بِمَا لاَ يَعْلَمُ فِي السَّمَاوَاتِ وَلاَ فِي الْأَرْضِ ‘তারা উপাসনা করে আল্লাহকে বাদ দিয়ে এমন বস্ত্তর, যা না তাদের কোন ক্ষতিসাধন করতে পারে, না পারে উপকার করতে এবং তারা বলে, এরা তো আল্লাহর কাছে আমাদের সুফারিশকারী। তুমি বল, তোমরা কি আল্লাহকে এমন বিষয়ে অবহিত করছ, যে বিষয়ে তিনি অবহিত নন আসমান ও যমীনের মাঝে’ (ইউনুস ১৮)।

আল্লাহ ছাড়া অন্যের উপর ভরসা করা কুফরী। যেমন কোন পীর, অলী-আউলিয়া, জীবিত বা মৃত কোন বুযুর্গ বা বিশেষ কোন ব্যক্তির উপর ভরসা করে কোন কাজ শুরু করা। কেউ যদি গুরু সহায়, খাজা ভরসা, ফাতেমা সহায়, রাসূল ভরসা ইত্যাদি বলে তাহ’লে শিরক হবে। একমাত্র আল্লাহর উপরই ভরসা রাখতে হবে, অন্যথা ঈমান বিনষ্ট হবে। কারণ আল্লাহ তা‘আলা কুরআনুল কারীমে ঈমানদারদের বিশেষ গুণ হিসাবে তাঁর উপর ভরসা রাখার কথা বর্ণনা করেছেন। মহান আল্লাহ বলেন, وَعَلَى اللهِ فَتَوَكَّلُوْا إِنْ كُنْتُمْ مُؤْمِنِيْنَ ‘যদি তোমরা মুমিন হয়ে থাক তবে আল্লাহর উপর ভরসা কর’ (মায়েদাহ ২৩)। তিনি আরও বলেন, إِنْ كُنْتُمْ آمَنْتُمْ بِاللهِ فَعَلَيْهِ تَوَكَّلُوْا إِنْ كُنْتُمْ مُسْلِمِيْنَ ‘যদি তোমরা আল্লাহর উপর ঈমান এনেই থাক এবং যদি মুসলিম হয়ে থাক, তবে আল্লাহর উপর ভরসা কর’ (ইউনুস ৮৪)। মহান আল্লাহ নবী করীম (সাঃ)-কে শিখিয়ে দিয়েছেন, قُلْ حَسْبِيَ اللهُ عَلَيْهِ يَتَوَكَّلُ الْمُتَوَكِّلُوْنَ ‘বলুন, (হে নবী!) আমার পক্ষে আল্লাহই যথেষ্ট। নির্ভরকারীরা তাঁরই উপর নির্ভর করে’ (যুমার ৩৮)।



৩. যদি কোন মুসলিম ব্যক্তি মুশরিকদেরকে কাফির মনে না করে অথবা তাদের কুফরীর ব্যাপারে সন্দেহ পোষণ করে অথবা তাদের মতবাদসমূহ সঠিক মনে করে

যদি কোন মুসলিম ব্যক্তি মুশরিকদেরকে কাফির মনে না করে অথবা তাদের কুফরীর ব্যাপারে সন্দেহ পোষণ করে অথবা তাদের মতবাদসমূহ সঠিক মনে করে। মহান আল্লাহ বলেন, إِنَّمَا الْمُشْرِكُوْنَ نَجَسٌ ‘নিশ্চয়ই মুশরিকরা অপবিত্র’ (তওবা ২৮)। মুশরিক সম্প্রদায় অপবিত্র হওয়ার পর কি করে তাদের মতবাদ গ্রহণীয় হ’তে পারে? তিনি আরও বলেন, أَنَّ اللهَ بَرِيْءٌ مِنَ الْمُشْرِكِيْنَ وَرَسُوْلُهُ ‘আল্লাহ এবং তাঁর রাসূল (ছাঃ) মুশরিকদের থেকে মুক্ত’ (তওবা ৩)। অর্থাৎ মুশরিকদের ব্যাপারে আল্লাহর কোন দায়দায়িত্ব নেই। মহান আল্লাহ বলেন, إِنَّ الَّذِيْنَ كَفَرُوْا مِنْ أَهْلِ الْكِتَابِ وَالْمُشْرِكِيْنَ فِيْ نَارِ جَهَنَّمَ خَالِدِيْنَ فِيْهَا أُوْلَئِكَ هُمْ شَرُّ الْبَرِيَّةِ ‘নিশ্চয়ই আহলে কিতাবদের মধ্যে যারা কুফরী করেছে এবং শিরক করে তারা চিরস্থায়ী জাহান্নামী এবং এরাই সৃষ্টির মধ্যে নিকৃষ্ট সৃষ্টি’ (বায়্যিনাহ ৬)। যার কারণেই আল্লাহ এদের সাথে বিবাহ পর্যন্ত হারাম ঘোষণা করেছেন। মহান আল্লাহ বলেন,

وَلاَ تَنْكِحُوا الْمُشْرِكَاتِ حَتَّى يُؤْمِنَّ وَلَأَمَةٌ مُؤْمِنَةٌ خَيْرٌ مِنْ مُشْرِكَةٍ وَلَوْ أَعْجَبَتْكُمْ وَلاَ تُنْكِحُوا الْمُشْرِكِيْنَ حَتَّى يُؤْمِنُوْا وَلَعَبْدٌ مُؤْمِنٌ خَيْرٌ مِنْ مُشْرِكٍ وَلَوْ أَعْجَبَكُمْ أُوْلَئِكَ يَدْعُوْنَ إِلَى النَّارِ-

‘তোমরা মুশরিক নারীদেরকে বিবাহ কর না, যতক্ষণ না তারা ঈমান গ্রহণ করে। অবশ্য মুসলিম ক্রীতদাসী মুশরিক নারী অপেক্ষা উত্তম, যদিও তাদেরকে তোমাদের কাছে ভাল লাগে। তোমরা কোন মুশরিক পুরুষের সঙ্গে বিবাহ বন্ধনে আবদ্ধ হয়ো না, যে পর্যন্ত না সে ঈমান আনে। একজন মুসলমান ক্রীতদাসও একজন মুশরিকের তুলনায় অনেক ভাল, যদিও তোমরা তাদের দেখে মোহিত হও। তারা জাহান্নামের দিকে আহবান করে’ (বাক্বারাহ ২২১)।

৪. যদি কোন মুসলিম নবী করীম (ছাঃ)-এর দেখানো পথ ব্যতীত অন্য কোন পথ পরিপূর্ণ অথবা ইসলামী হুকুমাত বা বিধান ব্যতীত অন্য কারো তৈরী হুকুমাত উত্তম মনে করে, তবে সে ইসলাম থেকে খারিজ হয়ে যাবে

যদি কোন মুসলিম নবী করীম (ছাঃ)-এর দেখানো পথ ব্যতীত অন্য কোন পথ পরিপূর্ণ অথবা ইসলামী হুকুমাত বা বিধান ব্যতীত অন্য কারো তৈরী হুকুমাত উত্তম মনে করে, তবে সে ইসলাম থেকে খারিজ হয়ে যাবে। অর্থাৎ যে ব্যক্তি এই বিশ্বাস করে যে, মানুষের তৈরী আইন ও বিধান ইসলামী শরী‘আত থেকে উত্তম বা ইসলামের সমান, মানব সৃষ্ট বিধান দিয়ে বিচার-ফায়ছালা জায়েয, ইসলামী হুকুমাত বিংশ শতাব্দীর জন্য প্রযোজ্য নয়, ইসলামই মুসলমানদের পিছিয়ে পড়ার কারণ, ইসলামের সাথে পরকালীন সম্পর্ক, দুনিয়াবী কোন সম্পর্ক নেই- ওলামায়ে কেরামের ঐক্যমতে উক্ত বিষয়গুলো কুফরীর শামিল। কারণ এটা হালালকে হারাম ও হারামকে হালাল করার হীন প্রচেষ্টা মাত্র।[1] আল্লাহ বলেন, اتَّخَذُوْا أَحْبَارَهُمْ وَرُهْبَانَهُمْ أَرْبَابًا مِنْ دُوْنِ اللهِ ‘তারা (ইহুদী-খ্রীষ্টানরা) তাদের পন্ডিত ও সংসার-বিরাগীদেরকে তাদের প্রভুরূপে গ্রহণ করেছে আল্লাহ ব্যতিরেকে’ (তওবা ৩১)।

ইহুদী-খৃষ্টান পন্ডিত ও ধর্ম জাযকদের মা‘বূদ (প্রভু) সাব্যস্ত করা অর্থ তাদেরকে প্রভু হিসাবে গ্রহণ করা নয়, বরং তারা সর্বাবস্থায় যাজক শ্রেণীর আনুগত্য করে থাকে। যদিও তারা আল্লাহ প্রদত্ত হালালকে হারাম এবং হারামকে হালাল করে দেয়। এধরনের আনুগত্য তাদেরকে প্রভু সাব্যস্ত করারই নামান্তর। আর এটা হ’ল প্রকাশ্য কুফরী।[2]

আল্লাহ ও তাঁর রাসূলের ফায়ছালা পরিত্যাগ করা কোন মুমিনের জন্য জায়েয হ’তে পারে না। মহান আল্লাহ বলেন, وَمَا كَانَ لِمُؤْمِنٍ وَلاَ مُؤْمِنَةٍ إِذَا قَضَى اللهُ وَرَسُوْلُهُ أَمْرًا أَنْ يَكُوْنَ لَهُمُ الْخِيَرَةُ مِنْ أَمْرِهِمْ وَمَنْ يَعْصِ اللهَ وَرَسُوْلَهُ فَقَدْ ضَلَّ ضَلاَلاً مُبِيْنًا- ‘আল্লাহ ও তাঁর রাসূল কোন কাজের আদেশ করলে কোন ঈমানদার নারী-পুরুষের সে বিষয়ে ভিন্ন সিদ্ধান্তের অধিকার নেই। যে আল্লাহ ও তাঁর রাসূলের আদেশ অমান্য করে সে প্রকাশ্য পথভ্রষ্টতায় পতিত হবে’ (আহযাব ৩৬)। সুতরাং আল্লাহ কর্তৃক কোন বিষয় নির্ধারিত হ’লে তা পরিবর্তন করার এখতিয়ার কারও নেই।


[1]. ফাতাওয়া আল-মারআতুল মুসলিমা ১/১৩৭ পৃঃ।
[2]. তাফসীরে মা‘রেফুল কোরআন ৫৬৭ পৃঃ

 
COMMENTS ARE BELOW

shipa

Inquisitive

Q&A Master
Salafi User
Threads
347
Comments
400
Reactions
1,815
Credits
2,167

২. যে ব্যক্তি আল্লাহ এবং বান্দার মাঝে কাউকে মাধ্যম তৈরী করে তাদেরকে ডাকে এবং তাদের নিকট শাফা‘আত কামনা করে

যে ব্যক্তি আল্লাহ এবং বান্দার মাঝে কাউকে মাধ্যম তৈরী করে তাদেরকে ডাকে এবং তাদের নিকট শাফা‘আত কামনা করে, সে মুরতাদ হয়ে যাবে। কারণ শাফা‘আতের একমাত্র মালিক আল্লাহ। তিনি বলেন, قُلْ لِلَّهِ الشَّفَاعَةُ جَمِيْعًا لَهُ مُلْكُ السَّمَاوَاتِ وَالْأَرْضِ ‘বলুন, সমস্ত সুফারিশ আল্লাহরই আয়াত্ত্বাধীন, আসমান ও যমীনে তাঁরই সাম্রাজ্য’ (যুমার ৪৪)।

এক শ্রেণীর লোক আল্লাহকে ছেড়ে অন্যের ইবাদত করে এবং তাদেরকে সুফারিশকারী হিসাবে গ্রহণ করে। অথচ তাদের সুফারিশ করার কোন ক্ষমতা নেই। আল্লাহ বলেন, وَيَعْبُدُوْنَ مِنْ دُوْنِ اللهِ مَا لاَ يَضُرُّهُمْ وَلَا يَنْفَعُهُمْ وَيَقُوْلُوْنَ هَؤُلَاءِ شُفَعَاؤُنَا عِنْدَ اللهِ قُلْ أَتُنَبِّئُوْنَ اللهَ بِمَا لاَ يَعْلَمُ فِي السَّمَاوَاتِ وَلاَ فِي الْأَرْضِ ‘তারা উপাসনা করে আল্লাহকে বাদ দিয়ে এমন বস্ত্তর, যা না তাদের কোন ক্ষতিসাধন করতে পারে, না পারে উপকার করতে এবং তারা বলে, এরা তো আল্লাহর কাছে আমাদের সুফারিশকারী। তুমি বল, তোমরা কি আল্লাহকে এমন বিষয়ে অবহিত করছ, যে বিষয়ে তিনি অবহিত নন আসমান ও যমীনের মাঝে’ (ইউনুস ১৮)।

আল্লাহ ছাড়া অন্যের উপর ভরসা করা কুফরী। যেমন কোন পীর, অলী-আউলিয়া, জীবিত বা মৃত কোন বুযুর্গ বা বিশেষ কোন ব্যক্তির উপর ভরসা করে কোন কাজ শুরু করা। কেউ যদি গুরু সহায়, খাজা ভরসা, ফাতেমা সহায়, রাসূল ভরসা ইত্যাদি বলে তাহ’লে শিরক হবে। একমাত্র আল্লাহর উপরই ভরসা রাখতে হবে, অন্যথা ঈমান বিনষ্ট হবে। কারণ আল্লাহ তা‘আলা কুরআনুল কারীমে ঈমানদারদের বিশেষ গুণ হিসাবে তাঁর উপর ভরসা রাখার কথা বর্ণনা করেছেন। মহান আল্লাহ বলেন, وَعَلَى اللهِ فَتَوَكَّلُوْا إِنْ كُنْتُمْ مُؤْمِنِيْنَ ‘যদি তোমরা মুমিন হয়ে থাক তবে আল্লাহর উপর ভরসা কর’ (মায়েদাহ ২৩)। তিনি আরও বলেন, إِنْ كُنْتُمْ آمَنْتُمْ بِاللهِ فَعَلَيْهِ تَوَكَّلُوْا إِنْ كُنْتُمْ مُسْلِمِيْنَ ‘যদি তোমরা আল্লাহর উপর ঈমান এনেই থাক এবং যদি মুসলিম হয়ে থাক, তবে আল্লাহর উপর ভরসা কর’ (ইউনুস ৮৪)। মহান আল্লাহ নবী করীম (সাঃ)-কে শিখিয়ে দিয়েছেন, قُلْ حَسْبِيَ اللهُ عَلَيْهِ يَتَوَكَّلُ الْمُتَوَكِّلُوْنَ ‘বলুন, (হে নবী!) আমার পক্ষে আল্লাহই যথেষ্ট। নির্ভরকারীরা তাঁরই উপর নির্ভর করে’ (যুমার ৩৮)।



৩. যদি কোন মুসলিম ব্যক্তি মুশরিকদেরকে কাফির মনে না করে অথবা তাদের কুফরীর ব্যাপারে সন্দেহ পোষণ করে অথবা তাদের মতবাদসমূহ সঠিক মনে করে
যদি কোন মুসলিম ব্যক্তি মুশরিকদেরকে কাফির মনে না করে অথবা তাদের কুফরীর ব্যাপারে সন্দেহ পোষণ করে অথবা তাদের মতবাদসমূহ সঠিক মনে করে। মহান আল্লাহ বলেন, إِنَّمَا الْمُشْرِكُوْنَ نَجَسٌ ‘নিশ্চয়ই মুশরিকরা অপবিত্র’ (তওবা ২৮)। মুশরিক সম্প্রদায় অপবিত্র হওয়ার পর কি করে তাদের মতবাদ গ্রহণীয় হ’তে পারে? তিনি আরও বলেন, أَنَّ اللهَ بَرِيْءٌ مِنَ الْمُشْرِكِيْنَ وَرَسُوْلُهُ ‘আল্লাহ এবং তাঁর রাসূল (ছাঃ) মুশরিকদের থেকে মুক্ত’ (তওবা ৩)। অর্থাৎ মুশরিকদের ব্যাপারে আল্লাহর কোন দায়দায়িত্ব নেই। মহান আল্লাহ বলেন, إِنَّ الَّذِيْنَ كَفَرُوْا مِنْ أَهْلِ الْكِتَابِ وَالْمُشْرِكِيْنَ فِيْ نَارِ جَهَنَّمَ خَالِدِيْنَ فِيْهَا أُوْلَئِكَ هُمْ شَرُّ الْبَرِيَّةِ ‘নিশ্চয়ই আহলে কিতাবদের মধ্যে যারা কুফরী করেছে এবং শিরক করে তারা চিরস্থায়ী জাহান্নামী এবং এরাই সৃষ্টির মধ্যে নিকৃষ্ট সৃষ্টি’ (বায়্যিনাহ ৬)। যার কারণেই আল্লাহ এদের সাথে বিবাহ পর্যন্ত হারাম ঘোষণা করেছেন। মহান আল্লাহ বলেন,

وَلاَ تَنْكِحُوا الْمُشْرِكَاتِ حَتَّى يُؤْمِنَّ وَلَأَمَةٌ مُؤْمِنَةٌ خَيْرٌ مِنْ مُشْرِكَةٍ وَلَوْ أَعْجَبَتْكُمْ وَلاَ تُنْكِحُوا الْمُشْرِكِيْنَ حَتَّى يُؤْمِنُوْا وَلَعَبْدٌ مُؤْمِنٌ خَيْرٌ مِنْ مُشْرِكٍ وَلَوْ أَعْجَبَكُمْ أُوْلَئِكَ يَدْعُوْنَ إِلَى النَّارِ-

‘তোমরা মুশরিক নারীদেরকে বিবাহ কর না, যতক্ষণ না তারা ঈমান গ্রহণ করে। অবশ্য মুসলিম ক্রীতদাসী মুশরিক নারী অপেক্ষা উত্তম, যদিও তাদেরকে তোমাদের কাছে ভাল লাগে। তোমরা কোন মুশরিক পুরুষের সঙ্গে বিবাহ বন্ধনে আবদ্ধ হয়ো না, যে পর্যন্ত না সে ঈমান আনে। একজন মুসলমান ক্রীতদাসও একজন মুশরিকের তুলনায় অনেক ভাল, যদিও তোমরা তাদের দেখে মোহিত হও। তারা জাহান্নামের দিকে আহবান করে’ (বাক্বারাহ ২২১)।

৪. যদি কোন মুসলিম নবী করীম (ছাঃ)-এর দেখানো পথ ব্যতীত অন্য কোন পথ পরিপূর্ণ অথবা ইসলামী হুকুমাত বা বিধান ব্যতীত অন্য কারো তৈরী হুকুমাত উত্তম মনে করে, তবে সে ইসলাম থেকে খারিজ হয়ে যাবে

যদি কোন মুসলিম নবী করীম (ছাঃ)-এর দেখানো পথ ব্যতীত অন্য কোন পথ পরিপূর্ণ অথবা ইসলামী হুকুমাত বা বিধান ব্যতীত অন্য কারো তৈরী হুকুমাত উত্তম মনে করে, তবে সে ইসলাম থেকে খারিজ হয়ে যাবে। অর্থাৎ যে ব্যক্তি এই বিশ্বাস করে যে, মানুষের তৈরী আইন ও বিধান ইসলামী শরী‘আত থেকে উত্তম বা ইসলামের সমান, মানব সৃষ্ট বিধান দিয়ে বিচার-ফায়ছালা জায়েয, ইসলামী হুকুমাত বিংশ শতাব্দীর জন্য প্রযোজ্য নয়, ইসলামই মুসলমানদের পিছিয়ে পড়ার কারণ, ইসলামের সাথে পরকালীন সম্পর্ক, দুনিয়াবী কোন সম্পর্ক নেই- ওলামায়ে কেরামের ঐক্যমতে উক্ত বিষয়গুলো কুফরীর শামিল। কারণ এটা হালালকে হারাম ও হারামকে হালাল করার হীন প্রচেষ্টা মাত্র।[1] আল্লাহ বলেন, اتَّخَذُوْا أَحْبَارَهُمْ وَرُهْبَانَهُمْ أَرْبَابًا مِنْ دُوْنِ اللهِ ‘তারা (ইহুদী-খ্রীষ্টানরা) তাদের পন্ডিত ও সংসার-বিরাগীদেরকে তাদের প্রভুরূপে গ্রহণ করেছে আল্লাহ ব্যতিরেকে’ (তওবা ৩১)।

ইহুদী-খৃষ্টান পন্ডিত ও ধর্ম জাযকদের মা‘বূদ (প্রভু) সাব্যস্ত করা অর্থ তাদেরকে প্রভু হিসাবে গ্রহণ করা নয়, বরং তারা সর্বাবস্থায় যাজক শ্রেণীর আনুগত্য করে থাকে। যদিও তারা আল্লাহ প্রদত্ত হালালকে হারাম এবং হারামকে হালাল করে দেয়। এধরনের আনুগত্য তাদেরকে প্রভু সাব্যস্ত করারই নামান্তর। আর এটা হ’ল প্রকাশ্য কুফরী।[2]

আল্লাহ ও তাঁর রাসূলের ফায়ছালা পরিত্যাগ করা কোন মুমিনের জন্য জায়েয হ’তে পারে না। মহান আল্লাহ বলেন, وَمَا كَانَ لِمُؤْمِنٍ وَلاَ مُؤْمِنَةٍ إِذَا قَضَى اللهُ وَرَسُوْلُهُ أَمْرًا أَنْ يَكُوْنَ لَهُمُ الْخِيَرَةُ مِنْ أَمْرِهِمْ وَمَنْ يَعْصِ اللهَ وَرَسُوْلَهُ فَقَدْ ضَلَّ ضَلاَلاً مُبِيْنًا- ‘আল্লাহ ও তাঁর রাসূল কোন কাজের আদেশ করলে কোন ঈমানদার নারী-পুরুষের সে বিষয়ে ভিন্ন সিদ্ধান্তের অধিকার নেই। যে আল্লাহ ও তাঁর রাসূলের আদেশ অমান্য করে সে প্রকাশ্য পথভ্রষ্টতায় পতিত হবে’ (আহযাব ৩৬)। সুতরাং আল্লাহ কর্তৃক কোন বিষয় নির্ধারিত হ’লে তা পরিবর্তন করার এখতিয়ার কারও নেই।


[1]. ফাতাওয়া আল-মারআতুল মুসলিমা ১/১৩৭ পৃঃ।

[2]. তাফসীরে মা‘রেফুল কোরআন ৫৬৭ পৃঃ

জাযাকাল্লাহু খাইরান
 
Top