প্রচলন : ঈদায়নের সালাত ২য় হিজরীতে রামাযানের ছিয়াম ফরয হওয়ার সাথে সাথে চালু হয়। এটি সুন্নাতে মুওয়াক্কাদাহ। রাসূলুল্লাহ (ﷺ) নিয়মিতভাবে এটি আদায় করেছেন এবং ছোট-বড়, নারী-পুরুষ সকল মুসলমানকে ঈদের জামা‘আতে হাযির হওয়ার নির্দেশ দিয়েছেন। (ক) তিনি এদিন সর্বোত্তম পোষাক পরিধান করতেন ও নিজ স্ত্রী-কন্যাদের নিয়ে ঈদগাহে যেতেন। (খ) তিনি একপথে যেতেন ও অন্যপথে ফিরতেন। পায়ে হেঁটে যাওয়া এবং চলার পথে অধিকহারে সরবে তাকবীর দেওয়া সুন্নাত। (গ) মুক্বীম-মুসাফির সবাই ঈদের দু’রাক‘আত সালাত আদায় করবেন। (ঘ) এ দিন সকালে মিসওয়াক সহ ওযূ-গোসল করে তৈল-সুগন্ধি মেখে উত্তম পোষাকে ঈদগাহের উদ্দেশ্যে তাকবীর দিতে দিতে রওয়ানা হওয়া মুস্তাহাব। (ঙ) জামা‘আত ছুটে গেলে একাকী বা জামা‘আত সহকারে ঈদের তাকবীর সহ দু’রাক‘আত সালাত পড়বে। (চ) ঈদগাহে আসতে না পারলে বাড়ীতে মেয়েরা সহ বাড়ীর সকলকে নিয়ে তাকবীর সহকারে জামা‘আতের সাথে দু’রাক‘আত সালাত আদায় করবে।
ঈদায়নের সময়কাল : ঈদুল আযহায় সূর্য এক ‘নেযা’ পরিমাণ ও ঈদুল ফিৎরে দুই ‘নেযা’ পরিমাণ উঠার পরে রাসূলুল্লাহ (ﷺ) ঈদের সালাত আদায় করতেন। এক ‘নেযা’ বা বর্শার দৈর্ঘ্য হ’ল তিন মিটার বা সাড়ে ছয় হাত।[1] অতএব ঈদুল আযহার সালাত সূর্যোদয়ের পরপরই যথাসম্ভব দ্রুত শুরু করা উচিত।
তাকবীর ধ্বনি : আরাফার দিন ফজর থেকে মিনার শেষ দিন পর্যন্ত অর্থাৎ ৯ই যিলহাজ্জ ফজর থেকে ১৩ই যিলহাজ্জ ‘আইয়ামে তাশরীক্ব’-এর শেষ দিন আছর পর্যন্ত ২৩ ওয়াক্ত সালাত শেষে ও অন্যান্য সময়ে দুই বা তিনবার করে এবং ঈদুল ফিৎরের দিন সকালে ঈদগাহের উদ্দেশ্যে বের হওয়া থেকে খুৎবা শুরুর আগ পর্যন্ত উচ্চকণ্ঠে ঈদায়নের তাকবীর ধ্বনি করা সুন্নাত। এটি হ’ল ‘ঈদের নিদর্শন’ (شعار العيد)। এ সময় আলা-হু আকবার, আল্লা-হু আকবার, লা ইলা-হা ইল্লাল্লা-হু, ওয়াল্লা-হু আকবার, আল্লা-হু আকবার, ওয়া লিল্লা-হিল হাম্দ’। অনেক বিদ্বান পড়েছেন, ‘আল্লা-হু আকবার কাবীরা, ওয়াল হামদু লিল্লা-হি কাছীরা, ওয়া সুবহানাল্লা-হি বুকরাতাঁও ওয়া আছীলা’। ইমাম শাফেঈ (রহঃ) এটাকে ‘সুন্দর’ বলেছেন’।[2]
ঈদায়নের সালাত ও অতিরিক্ত তাকবীর সমূহ : প্রথম রাক‘আতে তাকবীরে তাহরীমা ও ছানা পাঠের পর ক্বিরাআতের পূর্বে সাত ও দ্বিতীয় রাক‘আতে ক্বিরাআতের পূর্বে পাঁচ মোট বার তাকবীর দেওয়া সুন্নাত।[3] ১ম রাক‘আতে ‘আঊযুবিল্লাহ’-‘বিসমিল্লাহ’ পাঠ অন্তে ক্বিরাআত পড়বে। ২য় রাক‘আতে ক্বিরাআতের পূর্বে স্রেফ ‘বিসমিল্লাহ’ বলবে। প্রতি তাকবীরে দু’হাত উঠাবে ও বাম হাতের উপর ডান হাত বুকে বাঁধবে।[4] চার খলীফা ও মদীনার শ্রেষ্ঠ সাত জন তাবেঈ ফক্বীহ সহ প্রায় সকল সাহাবী, তাবেঈ, তিন ইমাম ও অন্যান্য শ্রেষ্ঠ মুহাদ্দিছ ও মুজতাহিদ ইমামগণ এবং ইমাম আবু হানীফা (রহঃ)-এর দুই প্রধান শিষ্য ইমাম আবু ইউসুফ ও মুহাম্মাদ (রহঃ) বারো তাকবীরের উপরে আমল করতেন। ভারতের দু’জন খ্যাতনামা হানাফী বিদ্বান আব্দুল হাই লাক্ষ্ণৌবী ও আনোয়ার শাহ কাশ্মীরী বারো তাকবীরকে সমর্থন করেছেন।[5] তাকবীর বলতে ভুলে গেলে বা গণনায় ভুল হ’লে তা পুনরায় বলতে হয় না বা ‘সিজদায়ে সহো’ লাগে না।[6]
ছয় তাকবীরের তাবীল : ‘জানাযার চার তাকবীরের ন্যায়’।[7] বলে ১ম রাক‘আতে তাকবীরে তাহরীমা সহ ক্বিরাআতের পূর্বে চার তাকবীর এবং ২য় রাক‘আতে রুকূর তাকবীর সহ ক্বিরাআতের পরে চার তাকবীর বলে ‘তাবীল’ (تأويل) করা হয়েছে। এর মধ্যে তাকবীরে তাহরীমা ও রুকূর ফরয তাকবীর দু’টি বাদ দিলে অতিরিক্ত (৩+৩) ছয়টি তাকবীর হয়। অথচ উক্ত যঈফ হাদীসে কোন তাকবীর বাদ দেওয়ার কথা নেই কিংবা ক্বিরাআতের আগে বা পরে বলে কোন বক্তব্য নেই। অনুরূপভাবে মুছান্নাফ ইবনু আবী শায়বাহ (বোম্বাই ১৯৭৯, ২/১৭৩)-তে বর্ণিত ‘নয় তাকবীর’ থেকে তাকবীরে তাহরীমা এবং ১ম ও ২য় রাক‘আতের রুকূর তাকবীর দু’টিসহ মোট তিনটি ফরয তাকবীর বাদ দিলে অতিরিক্ত ছয়টি তাকবীর হয়। এভাবেই তাবীল করে ছয় তাকবীর করা হয়েছে, যার অনুমতি আল্লাহ বা তাঁর রাসূল (ﷺ) কাউকে দেননি।
ইবনু হাযম আন্দালুসী (রহঃ) বলেন, ‘জানাযার চার তাকবীরের ন্যায়’ মর্মের বর্ণনাটি যদি ‘সহীহ’ বলে ধরে নেওয়া হয়।[8] তথাপি এর মধ্যে ছয় তাকবীরের পক্ষে কোন দলীল নেই। কারণ তাকবীরে তাহরীমা সহ ১ম রাক‘আতে চার ও রুকূর তাকবীর সহ ২য় রাক‘আতে চার তাকবীর এবং ১ম রাক‘আতে ক্বিরাআতের পূর্বে ও ২য় রাক‘আতে ক্বিরাআতের পরে তাকবীর দিতে হবে বলে কোন কথা সেখানে নেই। বরং এটাই স্পষ্ট যে, দুই রাক‘আতেই জানাযার সালাতের ন্যায় চারটি করে (অতিরিক্ত) তাকবীর দিতে হবে’। অথচ এ বিষয়ে ১২ তাকবীরের স্পষ্ট সহীহ হাদীসের উপরে সকলে আমল করলে সুন্নী মুসলমানেরা অন্ততঃ বৎসরে দু’টি ঈদের খুশীর দিনে ঐক্যবদ্ধ হয়ে সালাত ও ইবাদত করতে পারত।[9]
ঈদায়নের সালাত সকল নফল সালাতের মধ্যে সর্বাধিক ফযীলতপূর্ণ।[10] এটি ইসলামের বাহ্যিক নিদর্শন সমূহের অন্যতম। হজ্জ ও ওমরাহর তালবিয়াহ পাঠ ব্যতীত কোন ইবাদতের জন্য নিয়ত মুখে বলতে হয় না। বরং হৃদয়ে সংকল্প করতে হয়।[11] ঈদায়নের সালাতে সূরায়ে আ‘লা ও গা-শিয়াহ অথবা ক্বাফ ও ক্বামার পড়া সুন্নাত। না জানলে যেকোন সূরা পড়বে। জামা‘আতে পড়লে ইমাম সরবে এবং মুক্তাদীগণ নীরবে কেবল সূরায়ে ফাতিহা পড়বেন। একাকী পড়লে দু’টিই পড়বেন’।
ঈদায়নের জন্য প্রথমে সালাত ও পরে খুৎবা প্রদান করতে হয়। ঈদের সালাতের আগে পিছে কোন সালাত নেই, আযান বা এক্বামত নেই। ঈদগাহে বের হবার সময় উচ্চকণ্ঠে তাকবীর এবং পৌঁছার পরেও তাকবীরধ্বনি করবে। এ সময় কাউকে জলদি আসার জন্য আহবান করা ঠিক নয়। ঈদগাহে ইমাম পৌঁছে যাওয়ার পরে সালাতের পূর্বে বিভিন্ন জনে বক্তৃতা করা সুন্নাত বিরোধী কাজ।
ঈদায়নের খুৎবা একটি হওয়াই সহীহ হাদীস সম্মত। মাঝখানে বসে দু’টি খুৎবা প্রদান সম্পর্কে কয়েকটি ‘যঈফ’ হাদীস রয়েছে। ইমাম নববী (রহঃ) বলেন, এটিই প্রমাণিত সুন্নাত যে, আল্লাহর রাসূল (ﷺ) ঈদায়নের সালাত শেষে দাঁড়িয়ে কেবলমাত্র একটি খুৎবা দিয়েছেন- যার মধ্যে আদেশ, নিষেধ, উপদেশ, দো‘আ সবই ছিল’।[12]
মুসলমানদের জাতীয় আনন্দ-উৎসব মাত্র দু’টি- ঈদুল ফিৎর ও ঈদুল আযহা।[13] এক্ষণে ‘ঈদে মীলাদুন্নবী’ ‘ঈদে মি‘রাজুন্নবী’ প্রভৃতি নামে নানাবিধ ঈদ-এর প্রচলন ঘটানো নিঃসনেদহে বিদ‘আত- যা অবশ্যই পরিত্যাজ্য।
মহিলাদের অংশগ্রহণ : ঈদায়নের জামা‘আতে পুরুষদের পিছনে পর্দার মধ্যে মহিলাগণ প্রত্যেকে বড় চাদরে আবৃত হয়ে যোগদান করবেন। প্রয়োজনে একজনের চাদরে দু’জন আসবেন। খত্বীব ছাহেব নারী-পুরুষ সকলকে লক্ষ্য করে মাতৃভাষায় পবিত্র কুরআন ও সহীহ হাদীসের ভিত্তিতে খুৎবা প্রদান করবেন। খুৎবার মাঝেও ইমামের তাকবীরের সাথে মুছল্লীগণ তাকবীর বলবেন। ঋতুবতী মহিলারা কেবল তাকবীর বলবেন ও খুৎবা শ্রবণ করবেন।[14] ছাহেবে মির‘আত বলেন যে, উক্ত হাদীসের শেষে বর্ণিত دَعْوَةُ الْمُسْلِمِيْنَ কথাটি ‘আম’। এর দ্বারা খুৎবার বক্তব্য সমূহ এবং ওয়ায-নছীহত বুঝানো হয়েছে। কেননা ঈদায়নের সালাতের পরে (সম্মিলিত) দো‘আর প্রমাণে রাসূলুল্লাহ (ﷺ) থেকে কোন হাদীস বর্ণিত হয়নি’।[15]
বিবিধ : (১) ঈদায়নের সালাত ময়দানে হওয়াটাই সুন্নাত। রাসূলুল্লাহ (ﷺ) মসজিদে নববীর পূর্ব দরজার বাইরে ৫০০ গজ দূরে ‘বাত্বহান’ (بَطْحَان) প্রান্তরে ঈদায়নের সালাত আদায় করতেন এবং একবার মাত্র বৃষ্টির কারণে মসজিদে সালাত আদায় করেছিলেন। কিন্তু বিনা কারণে বড় মসজিদের দোহাই দিয়ে ময়দান ছেড়ে মসজিদে ঈদের জামা‘আত করা সুন্নাত বিরোধী কাজ। (২) জামা‘আত ছুটে গেলে একাকী বা জামা‘আত সহকারে ঈদের অতিরিক্ত তাকবীর সহ দু’রাক‘আত সালাত আদায় করে নিবে। (৩) ঈদগাহে আসতে না পারলে বাড়ীতে মেয়েরা সহ সকলকে নিয়ে ঈদগাহের ন্যায় তাকবীর সহকারে জামা‘আতের সাথে দু’রাক‘আত সালাত আদায় করবে। (৪) জুম‘আ ও ঈদ একই দিনে হ’লে রাসূলুল্লাহ (ﷺ) ইমাম হিসাবে দু’টিই পড়েছেন। অন্যদের মধ্যে যারা ঈদ পড়েছেন, তাদের জন্য জুম‘আ অপরিহার্য করেননি। অবশ্য দু’টিই আদায় করা যে অধিক ছওয়াবের কারণ, এতে কোন সন্দেহ নেই। (৫) চাঁদ ওঠার খবর পরদিন পূর্বাহ্নে পেলে সঙ্গে সঙ্গে ইফতার করে ঈদের ময়দানে গিয়ে জামা‘আতের সাথে সালাত আদায় করবে। নইলে পরদিন ঈদ পড়বে।
(৬) মক্কার সাথে মিলিয়ে পৃথিবীর সর্বত্র একই দিনে ছিয়াম ও ঈদ পালনের দাবী শরী‘আতের প্রকাশ্য বিরোধিতা এবং স্রেফ হঠকারিতা মাত্র। আল্লাহ বলেন, ‘তোমাদের মধ্যে যে ব্যক্তি (রামাযান) মাস পাবে, সে যেন এ মাসের ছিয়াম রাখে’ (বাক্বারাহ ২/১৮৫)। রাসূলুল্লাহ (ﷺ) বলেন, ‘তোমরা চাঁদ দেখে ছিয়াম রাখো ও চাঁদ দেখে ছিয়াম ছাড়ো’।[16] এতে প্রমাণিত হয় যে, সারা দুনিয়ার মানুষ একই দিনে রামাযান পায় না এবং একই সময়ে চাঁদ দেখতে পায় না। আর এটাই স্বাভাবিক। কেননা মক্কায় যখন সন্ধ্যায় চাঁদ দেখা যায়, ঢাকায় তখন ৩ ঘণ্টা ২০ মিনিট রাত হয়। তখন ঢাকার লোকদের কিভাবে বলা যাবে যে, তোমরা চাঁদ না দেখেও ছিয়াম রাখ বা ঈদ করো? ফলে স্বাভাবিকভাবেই ঢাকার ছিয়াম ও ঈদ মক্কার একদিন পরে চাঁদ দেখে হবে’।[17] (৭) কুরবানী ও আক্বীক্বা একই দিনে হ’লে এবং দু’টিই করা সাধ্যে না কুলালে আক্বীক্বা অগ্রাধিকার পাবে। কেননা সাত দিনে আক্বীক্বা করাই সহীহ হাদীস সম্মত।[18] (৮) দুই ঈদের দিন ছিয়াম পালন নিষিদ্ধ।[19] আর আইয়ামে তাশরীক্বের তিনদিন ১১, ১২ ও ১৩ই যিলহাজ্জ খানা-পিনার দিন।[20]
(৯) ঈদের দিন সাহাবায়ে কেরাম পরস্পরে সাক্ষাৎ হ’লে বলতেন ‘আল্লাহুম্মা তাক্বাববাল মিন্না ওয়া মিনকা’ (আল্লাহ আমাদের ও আপনার পক্ষ হ’তে কবুল করুন!)।[21] অতএব পরস্পরে ‘ঈদ মুবারক’ বললেও উক্ত দো‘আটি পাঠ করা সুন্নাত। এদিন নির্দোষ খেলাধুলা করা যাবে।[22] কিন্তু তাই বলে পটকাবাজি, মাইকবাজি, ক্যাসেটবাজি, চরিত্র বিধ্বংসী ভিডিও প্রদর্শন, বাজে সিনেমা দেখা, খেলাধুলার নামে নারী-পুরুষের অবাধ সমাবেশ ও মেলামেশা সম্পূর্ণরূপে নিষিদ্ধ।
[1]. ফিক্বহুস সুন্নাহ ১/২৩৮ পৃঃ।
[2]. দ্রঃ মাসায়েলে কুরবানী ২৬-২৮ পৃঃ।
[3]. আবূদাঊদ হা/১১৪৯; দারাকুৎনী (বৈরূত : ১৪১৭/১৯৯৬) হা/১৭০৪; বিস্তারিত দ্রঃ ‘মাসায়েলে কুরবানী’ বই ‘ঈদায়নের সালাতে অতিরিক্ত তাকবীর’ অধ্যায়, ৫ম সংস্করণ ২০০৯, ৩৩-৪২ পৃঃ।
[4]. মির‘আত ৫/৫৪ পৃঃ; আল-মুগনী, মাসআলা ১৪১৫, ২/২৮৩ পৃঃ; বুখারী হা/৭৪০; মিশকাত হা/৭৯৮ ‘সালাতের বিবরণ’ অনুচ্ছেদ।
[5]. মির‘আত ৫/৪৬, ৫১, ৫২ পৃঃ।
[6]. মির‘আত হা/১৪৫৫-এর আলোচনা ৫/৫৩ পৃঃ।
[7]. আবূদাঊদ হা/১১৫৩।
[8]. সহীহাহ হা/২৯৯৭।
[9]. দ্রঃ ‘সালাতুর রাসূল (ﷺ)’ ২১১-১২ পৃঃ।
[10]. কুরতুবী, তাফসীর সূরা ছাফফাত ১০২-১১৩ আয়াত।
[11]. বুখারী হা/১।
[12]. মাসায়েলে কুরবানী ২৯-৩২ পৃঃ।
[13]. আবূদাঊদ হা/১১৩৪; মিশকাত হা/১৪৩৯।
[14]. বুখারী হা/৯৮০; মিশকাত হা/১৪৩১।
[15]. মির‘আত ৫/৩১।
[16]. বুখারী, মুসলিম, মিশকাত হা/১৯৭০।
[17]. সালাতুর রাসূল (ﷺ) ২০৫-০৬ পৃঃ।
[18]. তিরমিযী হা/১৫২২; আবূদাঊদ হা/২৮৩৭; মিশকাত হা/৪১৫৩।
[19]. বুখারী হা/১৯৯১; মুসলিম হা/১১৩৮; মিশকাত হা/২০৪৮।
[20]. মুসলিম হা/১১৪১; মিশকাত হা/২০৫০।
[21]. ফিক্ব্হুস সুন্নাহ ১/২৪২।
[22]. ফিক্ব্হুস সুন্নাহ ১/২৪১।
ঈদায়নের সময়কাল : ঈদুল আযহায় সূর্য এক ‘নেযা’ পরিমাণ ও ঈদুল ফিৎরে দুই ‘নেযা’ পরিমাণ উঠার পরে রাসূলুল্লাহ (ﷺ) ঈদের সালাত আদায় করতেন। এক ‘নেযা’ বা বর্শার দৈর্ঘ্য হ’ল তিন মিটার বা সাড়ে ছয় হাত।[1] অতএব ঈদুল আযহার সালাত সূর্যোদয়ের পরপরই যথাসম্ভব দ্রুত শুরু করা উচিত।
তাকবীর ধ্বনি : আরাফার দিন ফজর থেকে মিনার শেষ দিন পর্যন্ত অর্থাৎ ৯ই যিলহাজ্জ ফজর থেকে ১৩ই যিলহাজ্জ ‘আইয়ামে তাশরীক্ব’-এর শেষ দিন আছর পর্যন্ত ২৩ ওয়াক্ত সালাত শেষে ও অন্যান্য সময়ে দুই বা তিনবার করে এবং ঈদুল ফিৎরের দিন সকালে ঈদগাহের উদ্দেশ্যে বের হওয়া থেকে খুৎবা শুরুর আগ পর্যন্ত উচ্চকণ্ঠে ঈদায়নের তাকবীর ধ্বনি করা সুন্নাত। এটি হ’ল ‘ঈদের নিদর্শন’ (شعار العيد)। এ সময় আলা-হু আকবার, আল্লা-হু আকবার, লা ইলা-হা ইল্লাল্লা-হু, ওয়াল্লা-হু আকবার, আল্লা-হু আকবার, ওয়া লিল্লা-হিল হাম্দ’। অনেক বিদ্বান পড়েছেন, ‘আল্লা-হু আকবার কাবীরা, ওয়াল হামদু লিল্লা-হি কাছীরা, ওয়া সুবহানাল্লা-হি বুকরাতাঁও ওয়া আছীলা’। ইমাম শাফেঈ (রহঃ) এটাকে ‘সুন্দর’ বলেছেন’।[2]
ঈদায়নের সালাত ও অতিরিক্ত তাকবীর সমূহ : প্রথম রাক‘আতে তাকবীরে তাহরীমা ও ছানা পাঠের পর ক্বিরাআতের পূর্বে সাত ও দ্বিতীয় রাক‘আতে ক্বিরাআতের পূর্বে পাঁচ মোট বার তাকবীর দেওয়া সুন্নাত।[3] ১ম রাক‘আতে ‘আঊযুবিল্লাহ’-‘বিসমিল্লাহ’ পাঠ অন্তে ক্বিরাআত পড়বে। ২য় রাক‘আতে ক্বিরাআতের পূর্বে স্রেফ ‘বিসমিল্লাহ’ বলবে। প্রতি তাকবীরে দু’হাত উঠাবে ও বাম হাতের উপর ডান হাত বুকে বাঁধবে।[4] চার খলীফা ও মদীনার শ্রেষ্ঠ সাত জন তাবেঈ ফক্বীহ সহ প্রায় সকল সাহাবী, তাবেঈ, তিন ইমাম ও অন্যান্য শ্রেষ্ঠ মুহাদ্দিছ ও মুজতাহিদ ইমামগণ এবং ইমাম আবু হানীফা (রহঃ)-এর দুই প্রধান শিষ্য ইমাম আবু ইউসুফ ও মুহাম্মাদ (রহঃ) বারো তাকবীরের উপরে আমল করতেন। ভারতের দু’জন খ্যাতনামা হানাফী বিদ্বান আব্দুল হাই লাক্ষ্ণৌবী ও আনোয়ার শাহ কাশ্মীরী বারো তাকবীরকে সমর্থন করেছেন।[5] তাকবীর বলতে ভুলে গেলে বা গণনায় ভুল হ’লে তা পুনরায় বলতে হয় না বা ‘সিজদায়ে সহো’ লাগে না।[6]
ছয় তাকবীরের তাবীল : ‘জানাযার চার তাকবীরের ন্যায়’।[7] বলে ১ম রাক‘আতে তাকবীরে তাহরীমা সহ ক্বিরাআতের পূর্বে চার তাকবীর এবং ২য় রাক‘আতে রুকূর তাকবীর সহ ক্বিরাআতের পরে চার তাকবীর বলে ‘তাবীল’ (تأويل) করা হয়েছে। এর মধ্যে তাকবীরে তাহরীমা ও রুকূর ফরয তাকবীর দু’টি বাদ দিলে অতিরিক্ত (৩+৩) ছয়টি তাকবীর হয়। অথচ উক্ত যঈফ হাদীসে কোন তাকবীর বাদ দেওয়ার কথা নেই কিংবা ক্বিরাআতের আগে বা পরে বলে কোন বক্তব্য নেই। অনুরূপভাবে মুছান্নাফ ইবনু আবী শায়বাহ (বোম্বাই ১৯৭৯, ২/১৭৩)-তে বর্ণিত ‘নয় তাকবীর’ থেকে তাকবীরে তাহরীমা এবং ১ম ও ২য় রাক‘আতের রুকূর তাকবীর দু’টিসহ মোট তিনটি ফরয তাকবীর বাদ দিলে অতিরিক্ত ছয়টি তাকবীর হয়। এভাবেই তাবীল করে ছয় তাকবীর করা হয়েছে, যার অনুমতি আল্লাহ বা তাঁর রাসূল (ﷺ) কাউকে দেননি।
ইবনু হাযম আন্দালুসী (রহঃ) বলেন, ‘জানাযার চার তাকবীরের ন্যায়’ মর্মের বর্ণনাটি যদি ‘সহীহ’ বলে ধরে নেওয়া হয়।[8] তথাপি এর মধ্যে ছয় তাকবীরের পক্ষে কোন দলীল নেই। কারণ তাকবীরে তাহরীমা সহ ১ম রাক‘আতে চার ও রুকূর তাকবীর সহ ২য় রাক‘আতে চার তাকবীর এবং ১ম রাক‘আতে ক্বিরাআতের পূর্বে ও ২য় রাক‘আতে ক্বিরাআতের পরে তাকবীর দিতে হবে বলে কোন কথা সেখানে নেই। বরং এটাই স্পষ্ট যে, দুই রাক‘আতেই জানাযার সালাতের ন্যায় চারটি করে (অতিরিক্ত) তাকবীর দিতে হবে’। অথচ এ বিষয়ে ১২ তাকবীরের স্পষ্ট সহীহ হাদীসের উপরে সকলে আমল করলে সুন্নী মুসলমানেরা অন্ততঃ বৎসরে দু’টি ঈদের খুশীর দিনে ঐক্যবদ্ধ হয়ে সালাত ও ইবাদত করতে পারত।[9]
ঈদায়নের সালাত সকল নফল সালাতের মধ্যে সর্বাধিক ফযীলতপূর্ণ।[10] এটি ইসলামের বাহ্যিক নিদর্শন সমূহের অন্যতম। হজ্জ ও ওমরাহর তালবিয়াহ পাঠ ব্যতীত কোন ইবাদতের জন্য নিয়ত মুখে বলতে হয় না। বরং হৃদয়ে সংকল্প করতে হয়।[11] ঈদায়নের সালাতে সূরায়ে আ‘লা ও গা-শিয়াহ অথবা ক্বাফ ও ক্বামার পড়া সুন্নাত। না জানলে যেকোন সূরা পড়বে। জামা‘আতে পড়লে ইমাম সরবে এবং মুক্তাদীগণ নীরবে কেবল সূরায়ে ফাতিহা পড়বেন। একাকী পড়লে দু’টিই পড়বেন’।
ঈদায়নের জন্য প্রথমে সালাত ও পরে খুৎবা প্রদান করতে হয়। ঈদের সালাতের আগে পিছে কোন সালাত নেই, আযান বা এক্বামত নেই। ঈদগাহে বের হবার সময় উচ্চকণ্ঠে তাকবীর এবং পৌঁছার পরেও তাকবীরধ্বনি করবে। এ সময় কাউকে জলদি আসার জন্য আহবান করা ঠিক নয়। ঈদগাহে ইমাম পৌঁছে যাওয়ার পরে সালাতের পূর্বে বিভিন্ন জনে বক্তৃতা করা সুন্নাত বিরোধী কাজ।
ঈদায়নের খুৎবা একটি হওয়াই সহীহ হাদীস সম্মত। মাঝখানে বসে দু’টি খুৎবা প্রদান সম্পর্কে কয়েকটি ‘যঈফ’ হাদীস রয়েছে। ইমাম নববী (রহঃ) বলেন, এটিই প্রমাণিত সুন্নাত যে, আল্লাহর রাসূল (ﷺ) ঈদায়নের সালাত শেষে দাঁড়িয়ে কেবলমাত্র একটি খুৎবা দিয়েছেন- যার মধ্যে আদেশ, নিষেধ, উপদেশ, দো‘আ সবই ছিল’।[12]
মুসলমানদের জাতীয় আনন্দ-উৎসব মাত্র দু’টি- ঈদুল ফিৎর ও ঈদুল আযহা।[13] এক্ষণে ‘ঈদে মীলাদুন্নবী’ ‘ঈদে মি‘রাজুন্নবী’ প্রভৃতি নামে নানাবিধ ঈদ-এর প্রচলন ঘটানো নিঃসনেদহে বিদ‘আত- যা অবশ্যই পরিত্যাজ্য।
মহিলাদের অংশগ্রহণ : ঈদায়নের জামা‘আতে পুরুষদের পিছনে পর্দার মধ্যে মহিলাগণ প্রত্যেকে বড় চাদরে আবৃত হয়ে যোগদান করবেন। প্রয়োজনে একজনের চাদরে দু’জন আসবেন। খত্বীব ছাহেব নারী-পুরুষ সকলকে লক্ষ্য করে মাতৃভাষায় পবিত্র কুরআন ও সহীহ হাদীসের ভিত্তিতে খুৎবা প্রদান করবেন। খুৎবার মাঝেও ইমামের তাকবীরের সাথে মুছল্লীগণ তাকবীর বলবেন। ঋতুবতী মহিলারা কেবল তাকবীর বলবেন ও খুৎবা শ্রবণ করবেন।[14] ছাহেবে মির‘আত বলেন যে, উক্ত হাদীসের শেষে বর্ণিত دَعْوَةُ الْمُسْلِمِيْنَ কথাটি ‘আম’। এর দ্বারা খুৎবার বক্তব্য সমূহ এবং ওয়ায-নছীহত বুঝানো হয়েছে। কেননা ঈদায়নের সালাতের পরে (সম্মিলিত) দো‘আর প্রমাণে রাসূলুল্লাহ (ﷺ) থেকে কোন হাদীস বর্ণিত হয়নি’।[15]
বিবিধ : (১) ঈদায়নের সালাত ময়দানে হওয়াটাই সুন্নাত। রাসূলুল্লাহ (ﷺ) মসজিদে নববীর পূর্ব দরজার বাইরে ৫০০ গজ দূরে ‘বাত্বহান’ (بَطْحَان) প্রান্তরে ঈদায়নের সালাত আদায় করতেন এবং একবার মাত্র বৃষ্টির কারণে মসজিদে সালাত আদায় করেছিলেন। কিন্তু বিনা কারণে বড় মসজিদের দোহাই দিয়ে ময়দান ছেড়ে মসজিদে ঈদের জামা‘আত করা সুন্নাত বিরোধী কাজ। (২) জামা‘আত ছুটে গেলে একাকী বা জামা‘আত সহকারে ঈদের অতিরিক্ত তাকবীর সহ দু’রাক‘আত সালাত আদায় করে নিবে। (৩) ঈদগাহে আসতে না পারলে বাড়ীতে মেয়েরা সহ সকলকে নিয়ে ঈদগাহের ন্যায় তাকবীর সহকারে জামা‘আতের সাথে দু’রাক‘আত সালাত আদায় করবে। (৪) জুম‘আ ও ঈদ একই দিনে হ’লে রাসূলুল্লাহ (ﷺ) ইমাম হিসাবে দু’টিই পড়েছেন। অন্যদের মধ্যে যারা ঈদ পড়েছেন, তাদের জন্য জুম‘আ অপরিহার্য করেননি। অবশ্য দু’টিই আদায় করা যে অধিক ছওয়াবের কারণ, এতে কোন সন্দেহ নেই। (৫) চাঁদ ওঠার খবর পরদিন পূর্বাহ্নে পেলে সঙ্গে সঙ্গে ইফতার করে ঈদের ময়দানে গিয়ে জামা‘আতের সাথে সালাত আদায় করবে। নইলে পরদিন ঈদ পড়বে।
(৬) মক্কার সাথে মিলিয়ে পৃথিবীর সর্বত্র একই দিনে ছিয়াম ও ঈদ পালনের দাবী শরী‘আতের প্রকাশ্য বিরোধিতা এবং স্রেফ হঠকারিতা মাত্র। আল্লাহ বলেন, ‘তোমাদের মধ্যে যে ব্যক্তি (রামাযান) মাস পাবে, সে যেন এ মাসের ছিয়াম রাখে’ (বাক্বারাহ ২/১৮৫)। রাসূলুল্লাহ (ﷺ) বলেন, ‘তোমরা চাঁদ দেখে ছিয়াম রাখো ও চাঁদ দেখে ছিয়াম ছাড়ো’।[16] এতে প্রমাণিত হয় যে, সারা দুনিয়ার মানুষ একই দিনে রামাযান পায় না এবং একই সময়ে চাঁদ দেখতে পায় না। আর এটাই স্বাভাবিক। কেননা মক্কায় যখন সন্ধ্যায় চাঁদ দেখা যায়, ঢাকায় তখন ৩ ঘণ্টা ২০ মিনিট রাত হয়। তখন ঢাকার লোকদের কিভাবে বলা যাবে যে, তোমরা চাঁদ না দেখেও ছিয়াম রাখ বা ঈদ করো? ফলে স্বাভাবিকভাবেই ঢাকার ছিয়াম ও ঈদ মক্কার একদিন পরে চাঁদ দেখে হবে’।[17] (৭) কুরবানী ও আক্বীক্বা একই দিনে হ’লে এবং দু’টিই করা সাধ্যে না কুলালে আক্বীক্বা অগ্রাধিকার পাবে। কেননা সাত দিনে আক্বীক্বা করাই সহীহ হাদীস সম্মত।[18] (৮) দুই ঈদের দিন ছিয়াম পালন নিষিদ্ধ।[19] আর আইয়ামে তাশরীক্বের তিনদিন ১১, ১২ ও ১৩ই যিলহাজ্জ খানা-পিনার দিন।[20]
(৯) ঈদের দিন সাহাবায়ে কেরাম পরস্পরে সাক্ষাৎ হ’লে বলতেন ‘আল্লাহুম্মা তাক্বাববাল মিন্না ওয়া মিনকা’ (আল্লাহ আমাদের ও আপনার পক্ষ হ’তে কবুল করুন!)।[21] অতএব পরস্পরে ‘ঈদ মুবারক’ বললেও উক্ত দো‘আটি পাঠ করা সুন্নাত। এদিন নির্দোষ খেলাধুলা করা যাবে।[22] কিন্তু তাই বলে পটকাবাজি, মাইকবাজি, ক্যাসেটবাজি, চরিত্র বিধ্বংসী ভিডিও প্রদর্শন, বাজে সিনেমা দেখা, খেলাধুলার নামে নারী-পুরুষের অবাধ সমাবেশ ও মেলামেশা সম্পূর্ণরূপে নিষিদ্ধ।
[1]. ফিক্বহুস সুন্নাহ ১/২৩৮ পৃঃ।
[2]. দ্রঃ মাসায়েলে কুরবানী ২৬-২৮ পৃঃ।
[3]. আবূদাঊদ হা/১১৪৯; দারাকুৎনী (বৈরূত : ১৪১৭/১৯৯৬) হা/১৭০৪; বিস্তারিত দ্রঃ ‘মাসায়েলে কুরবানী’ বই ‘ঈদায়নের সালাতে অতিরিক্ত তাকবীর’ অধ্যায়, ৫ম সংস্করণ ২০০৯, ৩৩-৪২ পৃঃ।
[4]. মির‘আত ৫/৫৪ পৃঃ; আল-মুগনী, মাসআলা ১৪১৫, ২/২৮৩ পৃঃ; বুখারী হা/৭৪০; মিশকাত হা/৭৯৮ ‘সালাতের বিবরণ’ অনুচ্ছেদ।
[5]. মির‘আত ৫/৪৬, ৫১, ৫২ পৃঃ।
[6]. মির‘আত হা/১৪৫৫-এর আলোচনা ৫/৫৩ পৃঃ।
[7]. আবূদাঊদ হা/১১৫৩।
[8]. সহীহাহ হা/২৯৯৭।
[9]. দ্রঃ ‘সালাতুর রাসূল (ﷺ)’ ২১১-১২ পৃঃ।
[10]. কুরতুবী, তাফসীর সূরা ছাফফাত ১০২-১১৩ আয়াত।
[11]. বুখারী হা/১।
[12]. মাসায়েলে কুরবানী ২৯-৩২ পৃঃ।
[13]. আবূদাঊদ হা/১১৩৪; মিশকাত হা/১৪৩৯।
[14]. বুখারী হা/৯৮০; মিশকাত হা/১৪৩১।
[15]. মির‘আত ৫/৩১।
[16]. বুখারী, মুসলিম, মিশকাত হা/১৯৭০।
[17]. সালাতুর রাসূল (ﷺ) ২০৫-০৬ পৃঃ।
[18]. তিরমিযী হা/১৫২২; আবূদাঊদ হা/২৮৩৭; মিশকাত হা/৪১৫৩।
[19]. বুখারী হা/১৯৯১; মুসলিম হা/১১৩৮; মিশকাত হা/২০৪৮।
[20]. মুসলিম হা/১১৪১; মিশকাত হা/২০৫০।
[21]. ফিক্ব্হুস সুন্নাহ ১/২৪২।
[22]. ফিক্ব্হুস সুন্নাহ ১/২৪১।
সূত্র: আত-তাহরীক।
Last edited: