জাল হাদীস- : রাসূল (স) কে মহান আল্লাহ্ তাঁর নিজের নূর থেকে সৃষ্টি করেছেন
আমাদের সমাজের কিছু মানুষের মাঝে আরেকটি ভ্রান্ত বিশ্বাস প্রচলিত যে, আল্লাহ্ ‘আয্যা ওয়া জাল্লা তাঁর নিজের নূর থেকে মুহাম্মাদ (স) কে সৃষ্টি করেছেন। তাদের বিশ্বাস আল্লাহ্ 'আয্যা ওয়া জাল্লা আসমান ও জমিনের নূর, তিনি তাঁর নূর থেকে সর্বপ্রথম নবী মুহাম্মাদ (স) এর নূরকে তৈরি করেছেন।
ইসলামের প্রথম ৫০০ বছরের ইতিহাসে এই হাদীসের কথা পৃথিবীর কেউ শুনেননি।q এই যুগের কোনো সাহাবী, তাবে'য়ী, তাবে তাবেয়ী, সালাফ বা ইমাম কেউই এ ধরনের হাদীস শুনেননি বা বলেন নি। সেজন্য এই কথাটি সেই যুগের আক্বীদা, তাফসীর, হাদীস, ফিকহের কিতাবে এই বিষয়ে কোনো আলোচনাই নেই। যেমন ইমাম আবূ হানিফা (র) তখন তাঁর রচিত ‘আল ফিকহুল আকবার' নামক আক্বীদার কিতাবেও এই বিষয়ে কোনো আলোচনা করেননি। অর্থাৎ সে সময়ে লিখিত কিতাবসমূহে নবী ( সঃ) নূরের তৈরি নাকি মাটির তৈরি এমন কোনো আলোচনাই নেই, এমনকি রাসূল(সঃ) এর সৃষ্টিগত উপাদান নিয়েই কোনো আলোচনা নেই ।
৭ম-৮ম হিজরী শতক থেকে কোন কোন আলিম নবী (সা) কে নূরের তৈরি দাবিকরে একটি হাদীসকে দলীল হিসেবে পেশ করে রেফারেন্স হিসেবে ‘মুসান্নাফে আব্দুর রায্যাক' এর কথা উল্লেখ করেছেন। কিন্তু পরবর্তীতে মুহাদ্দিসীনে কিরাম ‘মুসান্নাফে আব্দুর রাযযাকে' এই হাদীস খুঁজে পাননি । অতঃপর সম্মানিত মুহাদ্দিসগণ আল্লামা আব্দুর রাযযাক সান'আনী (২১১ হি.) (রহঃ) এর লিখিত অন্যান্য কিতাবেও খুঁজে এ হাদীসটি পাননি । পরবর্তীতে কোনো কোনো আলিম এই হাদীসটি পুনরায় উল্লেখ করে 'বায়হাকীকে' দলিল হিসেবে পেশ করেছেন। মুহাদ্দিসগণ হাদীসটির এই দলিলেরও সত্যতা খুঁজে পাননি। সুদীর্ঘ হাদীসটির সংক্ষেপিত রূপ
আমাদের সমাজের কিছু মানুষের মাঝে আরেকটি ভ্রান্ত বিশ্বাস প্রচলিত যে, আল্লাহ্ ‘আয্যা ওয়া জাল্লা তাঁর নিজের নূর থেকে মুহাম্মাদ (স) কে সৃষ্টি করেছেন। তাদের বিশ্বাস আল্লাহ্ 'আয্যা ওয়া জাল্লা আসমান ও জমিনের নূর, তিনি তাঁর নূর থেকে সর্বপ্রথম নবী মুহাম্মাদ (স) এর নূরকে তৈরি করেছেন।
ইসলামের প্রথম ৫০০ বছরের ইতিহাসে এই হাদীসের কথা পৃথিবীর কেউ শুনেননি।q এই যুগের কোনো সাহাবী, তাবে'য়ী, তাবে তাবেয়ী, সালাফ বা ইমাম কেউই এ ধরনের হাদীস শুনেননি বা বলেন নি। সেজন্য এই কথাটি সেই যুগের আক্বীদা, তাফসীর, হাদীস, ফিকহের কিতাবে এই বিষয়ে কোনো আলোচনাই নেই। যেমন ইমাম আবূ হানিফা (র) তখন তাঁর রচিত ‘আল ফিকহুল আকবার' নামক আক্বীদার কিতাবেও এই বিষয়ে কোনো আলোচনা করেননি। অর্থাৎ সে সময়ে লিখিত কিতাবসমূহে নবী ( সঃ) নূরের তৈরি নাকি মাটির তৈরি এমন কোনো আলোচনাই নেই, এমনকি রাসূল(সঃ) এর সৃষ্টিগত উপাদান নিয়েই কোনো আলোচনা নেই ।
৭ম-৮ম হিজরী শতক থেকে কোন কোন আলিম নবী (সা) কে নূরের তৈরি দাবিকরে একটি হাদীসকে দলীল হিসেবে পেশ করে রেফারেন্স হিসেবে ‘মুসান্নাফে আব্দুর রায্যাক' এর কথা উল্লেখ করেছেন। কিন্তু পরবর্তীতে মুহাদ্দিসীনে কিরাম ‘মুসান্নাফে আব্দুর রাযযাকে' এই হাদীস খুঁজে পাননি । অতঃপর সম্মানিত মুহাদ্দিসগণ আল্লামা আব্দুর রাযযাক সান'আনী (২১১ হি.) (রহঃ) এর লিখিত অন্যান্য কিতাবেও খুঁজে এ হাদীসটি পাননি । পরবর্তীতে কোনো কোনো আলিম এই হাদীসটি পুনরায় উল্লেখ করে 'বায়হাকীকে' দলিল হিসেবে পেশ করেছেন। মুহাদ্দিসগণ হাদীসটির এই দলিলেরও সত্যতা খুঁজে পাননি। সুদীর্ঘ হাদীসটির সংক্ষেপিত রূপ
«أَوَّلُ مَا خَلَقَ اللَّهُ نُورَ نَبِيِّكَ مِنْ نُورِهِ»
“সর্বপ্রথম আল্লাহ্ তোমার নবীর নূরকে তাঁর নূর থেকে সৃষ্টি করেন।” একারণেই সকল মুহাদ্দিসীনে কিরাম এই হাদীসটি জাল, মিথ্যা ও বানোয়াট হওয়ার ব্যাপারে একমত। এটা কোনো হাদীসের গ্রন্থেই আসেনি। এটা আক্বীদার কোনো বিষয়ই নয়। আক্বীদার বিষয় হলে নিশ্চয়ই আক্বীদার কিতাবসমূহে এই বিষয়টা থাকতো।
আল্লাহ্ ‘আয্যা ওয়া জাল্লা আল-কুরআনুল কারীমের বিভিন্ন স্থানে নূরের কথা বলেছেন,
আল্লাহ্ ‘আয্যা ওয়া জাল্লা আল-কুরআনুল কারীমের বিভিন্ন স্থানে নূরের কথা বলেছেন,
ক)
الَّذِينَ يَتَّبِعُونَ الرَّسُولَ النَّبِئَ الْأُتِيَ الَّذِي يَجِدُونَهُ مَكْتُوبًا عِنْدَهُمْ فِي التَّوْرَةِ وَ الْإِنْجِيلِ يَأْمُرُهُمْ بِالْمَعْرُوفِ وَيَنْهُهُمْ عَنِ الْمُنْكَرِ وَيُحِلُّ لَهُمُ الطَّيِّبَتِ وَيُحَرِّمُ عَلَيْهِمُ الْخَبيثَ وَيَضَعُ عَنْهُمْ اِصْرَهُمْ وَالْأَغْلَلَ الَّتِي كَانَتْ عَلَيْهِمْ فَالَّذِينَ آمَنُوا بِهِ وَعَذَرُوهُ وَ نَصَرُوهُ وَاتَّبَعُوا النُّوْرَ الَّذِي أُنْزِلَ مَعَةَ أُولَبِكَ هُمُ الْمُفْلِحُونَ
“যারা অনুসরণ করে রাসূলের, যে উম্মী নবী; যার গুণাবলী তারা নিজদের কাছে তাওরাত ও ইঞ্জিলে লিখিত পায়, যে তাদেরকে সৎ কাজের আদেশ দেয় ও বারণ করে অসৎ কাজ থেকে এবং তাদের জন্য পবিত্র বস্তু হালাল করে আর অপবিত্র বস্তু হারাম করে। আর তাদের থেকে বোঝা ও শৃঙ্খল- যা তাদের ওপরে ছিল- অপসারণ করে। সুতরাং যারা তার প্রতি ঈমান আনে, তাকে সম্মান করে, তাকে সাহায্য করে এবং তার সাথে যে নূর নাযিল করা হয়েছে তা অনুসরণ করে তারাই সফলকাম। ” 88
খ)
يُرِيدُونَ لِيُطْفِئُوا نُورَ اللهِ بِأَفْوَاهِهِمْ وَاللَّهُ مُتِمُّ نُورِهِ وَلَوْ كَرِهَ الْكَفِرُونَ
“তারা তাদের মুখের ফুৎকারে 'আল্লাহর নূরকে' নিভিয়ে দিতে চায়, কিন্তু আল্লাহ তাঁর নূরকে পূর্ণতাদানকারী। যদিও কাফিররা তা অপছন্দ করে।'
গ)
يا هل الْكِتَبِ قَدْ جَاءَكُمْ رَسُوْلُنَا يُبَيِّنُ لَكُمْ كَثِيرًا مِّمَّا كُنتُمْ تُخْفُونَ مِنَ الْكِتَبِ وَيَعْفُوا عَنْ كَثِيرِ قَدْ جَاءَكُمْ مِنَ اللَّهِ نُورٌ وَ كِتَبٌ مُّبِينٌ
“হে কিতাবীগণ, তোমাদের নিকট আমার রাসূল এসেছে, কিতাব থেকে যা তোমরা গোপন করতে, তার অনেক কিছু তোমাদের নিকট সে প্রকাশ করছে এবং অনেক কিছু ছেড়ে দিয়েছে। অবশ্যই তোমাদের নিকট আল্লাহর পক্ষ থেকে আলো ও স্পষ্ট কিতাব এসেছে।
৪৪ সূরা আল-আ'রাফ (৭): ১৫৭ আয়াত । ৪৫ সূরা আস-সাফ (৬১): ৮ আয়াত।
নবী (সঃ) কে নূরের তৈরি প্রমাণ করতে উপরিউক্ত আয়াতটি দলিল হিসেবে পেশ করা হয়। এখানে মহান আল্লাহ্ বলেছেন নূর এবং সুস্পষ্ট কিতাব এসেছে। এখানে আল্লাহ্ নূর/জ্যোতি বলেছেন। নূর কী এটা কিন্তু আল্লাহ্ তা'আলা বলেন নি। তাহলে নূর দ্বারা কী বুঝানো হয়েছে তা ব্যাখ্যার দাবি রাখে। আর ঈমান ও আক্বীদার কোনো বিষয় ব্যাখ্যার ওপর প্রতিষ্ঠিত হয় না। রঈসুল মুফাস্সিরিন আব্দুল্লাহ্ ইবনে আব্বাস রাদিয়াল্লাহু 'আনহুমাসহ আরো অনেক মুফাস্সিরীনে কিরাম আল-কুরআনুল কারীমের বিভিন্ন আয়াতের 'নূর' শব্দটির ৫টি ব্যাখ্যা করেছেন ।
১. আব্দুল্লাহ্ বিন আব্বাস রাদিয়াল্লাহু 'আনহুমা এবং ইবনে জায়েদ (রঃ) বলেছেন 'নূর' মানে আল-কুরআন ।
২. আল্লামা সুদ্দী (রহঃ) এর মতে 'নূর' মানে ইসলাম ।
৩. ইমাম দাহ্হাক (রহঃ) বলেন, 'নূর' মানে মুহাম্মাদ (স)।
৪. ইমাম ইবনে বাহার (রহঃ) বলেন, 'নূর' হলো আল বাইয়্যিনাহ্ বা দলীল প্রমাণাদি ।
৫. ইবনে ঈসা (র) বলেন, 'নূর' হলো আশ শাম্স বা সূর্য। ৪৭
আমাদের মনে রাখতে হবে এগুলো সবই ব্যাখ্যা। এগুলো থেকে যে কোনো একটি ঠিক আবার এমনও হতে পারে এখান থেকে হয়তো সবগুলোই গ্রহণযোগ্য ।
ইমাম তাবারী (রহঃ) তাঁর বিখ্যাত তাফসীরগ্রন্থ ‘তাফসীরে তাবারী' -তে 'নূর' অর্থ মুহাম্মাদ হওয়ার ব্যাপারে ব্যাখ্যা পেশ করে বলেন,
নবী (সঃ) কে নূরের তৈরি প্রমাণ করতে উপরিউক্ত আয়াতটি দলিল হিসেবে পেশ করা হয়। এখানে মহান আল্লাহ্ বলেছেন নূর এবং সুস্পষ্ট কিতাব এসেছে। এখানে আল্লাহ্ নূর/জ্যোতি বলেছেন। নূর কী এটা কিন্তু আল্লাহ্ তা'আলা বলেন নি। তাহলে নূর দ্বারা কী বুঝানো হয়েছে তা ব্যাখ্যার দাবি রাখে। আর ঈমান ও আক্বীদার কোনো বিষয় ব্যাখ্যার ওপর প্রতিষ্ঠিত হয় না। রঈসুল মুফাস্সিরিন আব্দুল্লাহ্ ইবনে আব্বাস রাদিয়াল্লাহু 'আনহুমাসহ আরো অনেক মুফাস্সিরীনে কিরাম আল-কুরআনুল কারীমের বিভিন্ন আয়াতের 'নূর' শব্দটির ৫টি ব্যাখ্যা করেছেন ।
১. আব্দুল্লাহ্ বিন আব্বাস রাদিয়াল্লাহু 'আনহুমা এবং ইবনে জায়েদ (রঃ) বলেছেন 'নূর' মানে আল-কুরআন ।
২. আল্লামা সুদ্দী (রহঃ) এর মতে 'নূর' মানে ইসলাম ।
৩. ইমাম দাহ্হাক (রহঃ) বলেন, 'নূর' মানে মুহাম্মাদ (স)।
৪. ইমাম ইবনে বাহার (রহঃ) বলেন, 'নূর' হলো আল বাইয়্যিনাহ্ বা দলীল প্রমাণাদি ।
৫. ইবনে ঈসা (র) বলেন, 'নূর' হলো আশ শাম্স বা সূর্য। ৪৭
আমাদের মনে রাখতে হবে এগুলো সবই ব্যাখ্যা। এগুলো থেকে যে কোনো একটি ঠিক আবার এমনও হতে পারে এখান থেকে হয়তো সবগুলোই গ্রহণযোগ্য ।
ইমাম তাবারী (রহঃ) তাঁর বিখ্যাত তাফসীরগ্রন্থ ‘তাফসীরে তাবারী' -তে 'নূর' অর্থ মুহাম্মাদ হওয়ার ব্যাপারে ব্যাখ্যা পেশ করে বলেন,
يَعْنِي بِالنُّورِ مُحَمَّدًا : الَّذِي أَنَارَ اللهُ بِهِ الْحَقَّ وَأَظْهَرَ بِهِ الْإِسْلَامَ وَمَحَقَ بِهِ الشِّرْكَ فَهُوَ نُورٌ لِمَنِ اسْتَنَارَ بِهِ يُبَيِّنُ الْحَقَّ وَمِنْ إِنَارَتِهِ الْحَقَّ تَبْيِينُهُ لِلْيَهُودِ كَثِيرًا مِمَّا كَانُوا يُخْفُونَ مِنَ الْكِتَابِ
অর্থ : 'নূর' দ্বারা মুহাম্মাদ (স) কে বুঝানোর অর্থ হবে আল্লাহ্ পাক নবী(সঃ)এর মাধ্যমে হক্ব বা সত্যকে আলোকিত করেছেন, সারা পৃথিবীতে ইসলামকে বিজয়ী করেছেন, শির্কের অন্ধকার দূর করেছেন। যারা সত্য অনুসন্ধানী তাদের জন্য তিনি নূর বা আলো, ইহুদীরা তাদের কিতাবে যা গোপন করেছে, তিনি তা প্রকাশকারী।৪৮
সূরা আল মায়িদা ১৫ নং আয়াতের প্রথম অংশ লক্ষ করলে দেখি যে, এখানে সম্বোধনই করা হয়েছে আহলে কিতাবদের। আল্লাহ্ ‘আয্যা ওয়া জাল্লা এমন এক রাসূল (স) পাঠিয়েছেন, যিনি তাদের কিতাবের গোপন অংশ প্রকাশ করে দিয়েছেন, যা তারা গোপন করে রাখতো। আর আয়াতটি শেষ হয়েছে নূর ও সমুজ্জল গ্রন্থ আসার সংবাদ দিয়ে। তার মানে যেহেতু তিনি (সঃ) ইহুদীদের কিতাবের গোপনকৃত অংশ প্রকাশ করে দেন, তাই তিনি (স) নূর বা প্রকাশকারী। আর 'নূর' মানে আলো। এই আলোর মাধ্যমেই জাহিলিয়াতের সকল অন্ধকার দূর হয়েছে।
রাসূলুল্লাহ্ (সঃ) আমাদেরকে মসজিদে গমনের জন্য একটি সুন্দর দু'আ শিখিয়েছেন। দু'আটি নিম্নরূপ :
সূরা আল মায়িদা ১৫ নং আয়াতের প্রথম অংশ লক্ষ করলে দেখি যে, এখানে সম্বোধনই করা হয়েছে আহলে কিতাবদের। আল্লাহ্ ‘আয্যা ওয়া জাল্লা এমন এক রাসূল (স) পাঠিয়েছেন, যিনি তাদের কিতাবের গোপন অংশ প্রকাশ করে দিয়েছেন, যা তারা গোপন করে রাখতো। আর আয়াতটি শেষ হয়েছে নূর ও সমুজ্জল গ্রন্থ আসার সংবাদ দিয়ে। তার মানে যেহেতু তিনি (সঃ) ইহুদীদের কিতাবের গোপনকৃত অংশ প্রকাশ করে দেন, তাই তিনি (স) নূর বা প্রকাশকারী। আর 'নূর' মানে আলো। এই আলোর মাধ্যমেই জাহিলিয়াতের সকল অন্ধকার দূর হয়েছে।
রাসূলুল্লাহ্ (সঃ) আমাদেরকে মসজিদে গমনের জন্য একটি সুন্দর দু'আ শিখিয়েছেন। দু'আটি নিম্নরূপ :
اللَّهُمَّ اجْعَلُ في قَلْبِي نُورًا وَفِي بَصَرِي نُورًا وَفِي سَمْعِي نُورًا وَعَنْ يَمِينِي نُورًا وَعَنْ يَسَارِي نُورًا وَفَوْقِي نُورًا وَتَحْتِي نُورًا وَأَمَامِي نُورًا وَخَلْفِي نُورًا وَعَظمُ لِي نُورًا
'হে আল্লাহ! তুমি আমার হৃদয়ে আলো দান কর, আমার চোখে আলো দান কর, আমার কানে বা শ্রবণ শক্তিতে আলো দান কর। আমার ডান দিকে আলো দান কর, আমার বাঁ দিকে আলো দান কর, আমার ওপর দিকে আলো দান কর, আমার নীচের দিকে আলো দান কর, আমার সামনে আলো দান কর, আমার পিছনে আলো দান কর এবং আমার আলোকে বিশাল করে দাও ৷ ” ৪৯
৪৮ তাফসীর, তাবারী (৩১০ হি.) -৬/১৬১।
৪৯ সহীহুল বুখারী হা/৬৩১৬; সহীহ মুসলিম হা/৭৬৩।
হাদীসে উল্লিখিত ওপরের দু'আ থেকে আমরা বুঝতে পারি কোনো একজন মানুষ যদি প্রতিনিয়ত এই দু'আ করতে থাকে; আর আল্লাহ যদি তা কবুল করেন, তাহলে ঐ ব্যক্তিটিও আপাদমস্তক নূর। নবী-রাসূল 'আলাইহিমুস সালামগণ নূর, মহান আল্লাহ্ কুরআন নূর, রাসূল (স) এর হাদীস নূর, যে ব্যক্তি কুরআন হাদীস মেনে চলে সে ব্যক্তিও নূর। আল-কুরআনুল কারীমের আরেকটি নাম 'আন-নূর'। সেই হিসেবে কুরআন মাজীদের সাথে যাদের সম্পর্ক তারাও নূর। কিন্তু এই নূর মানে কি নূরের তৈরি?
আমরা অনেক সময় বলি 'তিনি এই গ্রামের মাথা' এই কথা দ্বারা যেমন শরীরের অঙ্গ বুঝিনা, বুঝি তিনি গ্রামটির নেতা বা সর্দার। তেমনি নূর মানে নূরের তৈরি নয় ।
সুতরাং রাসূল (স) নূর কিন্তু নূরের তৈরি নয়। ফেরেশতারা নূরের তৈরি এই বিষয়টি আমরা সহীহ হাদীস থেকে জানতে পারি। আল্লাহ্র রাসূল (সঃ) নূরের তৈরি হলে একথাও নিশ্চয়ই আমরা কুরআন ও সহীহ হাদীসে এর স্পষ্ট বিবরণ পেতাম। রাসূল (স) নূর; নূর মানে আলো। যে আলোতে বাতিলের সকল অন্ধকার দূরীভূত হয়ে হক্বের পথ আমাদের সামনে আলোকিত হয়েছে ।
৪৯ সহীহুল বুখারী হা/৬৩১৬; সহীহ মুসলিম হা/৭৬৩।
হাদীসে উল্লিখিত ওপরের দু'আ থেকে আমরা বুঝতে পারি কোনো একজন মানুষ যদি প্রতিনিয়ত এই দু'আ করতে থাকে; আর আল্লাহ যদি তা কবুল করেন, তাহলে ঐ ব্যক্তিটিও আপাদমস্তক নূর। নবী-রাসূল 'আলাইহিমুস সালামগণ নূর, মহান আল্লাহ্ কুরআন নূর, রাসূল (স) এর হাদীস নূর, যে ব্যক্তি কুরআন হাদীস মেনে চলে সে ব্যক্তিও নূর। আল-কুরআনুল কারীমের আরেকটি নাম 'আন-নূর'। সেই হিসেবে কুরআন মাজীদের সাথে যাদের সম্পর্ক তারাও নূর। কিন্তু এই নূর মানে কি নূরের তৈরি?
আমরা অনেক সময় বলি 'তিনি এই গ্রামের মাথা' এই কথা দ্বারা যেমন শরীরের অঙ্গ বুঝিনা, বুঝি তিনি গ্রামটির নেতা বা সর্দার। তেমনি নূর মানে নূরের তৈরি নয় ।
সুতরাং রাসূল (স) নূর কিন্তু নূরের তৈরি নয়। ফেরেশতারা নূরের তৈরি এই বিষয়টি আমরা সহীহ হাদীস থেকে জানতে পারি। আল্লাহ্র রাসূল (সঃ) নূরের তৈরি হলে একথাও নিশ্চয়ই আমরা কুরআন ও সহীহ হাদীসে এর স্পষ্ট বিবরণ পেতাম। রাসূল (স) নূর; নূর মানে আলো। যে আলোতে বাতিলের সকল অন্ধকার দূরীভূত হয়ে হক্বের পথ আমাদের সামনে আলোকিত হয়েছে ।
৪৬ সূরা আল-মায়িদাহ ৫ : ১৫ আয়াত।
৪৭ তাফসীর : জামিউল বায়ান, তাবারী (৩১০ হি.) - ৬/১৬১; তাফসীর, কুরতুবী (৬৭১ হি.) - ৬/১১৮; তাফসীর, ইবনু কাসীর (৭৭৪ হি.) -২/৩৫।
৪৭ তাফসীর : জামিউল বায়ান, তাবারী (৩১০ হি.) - ৬/১৬১; তাফসীর, কুরতুবী (৬৭১ হি.) - ৬/১১৮; তাফসীর, ইবনু কাসীর (৭৭৪ হি.) -২/৩৫।
সমাজে বহুল প্রচলিত ১০০ জাল হাদীস
ড. মোহাম্মদ ইষাষ হোসাইন সহকারী অধ্যাপক, জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়, গাজীপুর, বাংলাদেশ