সালাফী আকিদা ও মানহাজে - Salafi Forum

Salafi Forum হচ্ছে সালাফী ও সালাফদের আকিদা, মানহাজ শিক্ষায় নিবেদিত একটি সমৃদ্ধ অনলাইন কমিউনিটি ফোরাম। জ্ঞানগর্ভ আলোচনায় নিযুক্ত হউন, সালাফী আলেমদের দিকনির্দেশনা অনুসন্ধান করুন। আপনার ইলম প্রসারিত করুন, আপনার ঈমানকে শক্তিশালী করুন এবং সালাফিদের সাথে দ্বীনি সম্পর্ক গড়ে তুলুন। বিশুদ্ধ আকিদা ও মানহাজের জ্ঞান অর্জন করতে, ও সালাফীদের দৃষ্টিভঙ্গি শেয়ার করতে এবং ঐক্য ও ভ্রাতৃত্বের চেতনাকে আলিঙ্গন করতে আজই আমাদের সাথে যোগ দিন।
Farhad Molla

মৃত্যু ও পরবর্তী ইসলামী শারী‘আতে হত্যা ও আত্মহত্যার ভয়াবহতা

Farhad Molla

Susceptible

Exposer
Q&A Master
Reporter
Salafi User
Threads
130
Comments
205
Solutions
1
Reactions
1,323
Credits
1,198
ইসলামী শারী‘আতে হত্যা ও আত্মহত্যার ভয়াবহতা

এক) হত্যাকারীর শাস্তি জাহান্নাম, তার ওপর আরও রয়েছে আল্লাহর লা‘নত, গযব ও ভয়াবহ আযাব।

وَ مَنۡ یَّقۡتُلۡ مُؤۡمِنًا مُّتَعَمِّدًا فَجَزَآؤُهٗ جَهَنَّمُ خٰلِدًا فِیۡهَا وَ غَضِبَ اللّٰهُ عَلَیۡهِ وَ لَعَنَهٗ وَ اَعَدَّ لَهٗ عَذَابًا عَظِیۡمًا ﴿۹۳﴾

“আর যে ইচ্ছাকৃত কোন মু’মিনকে হত্যা করবে, তার প্রতিদান হচ্ছে জাহান্নাম, সেখানে সে স্থায়ী হবে। আর আল্লাহ তার ওপর ক্রুদ্ধ হবেন, তাকে লা‘নত করবেন এবং তার জন্য বিশাল আযাব প্রস্তুত করে রেখেছেন।” [সূরা আন নিসা- ৪:৯৩]

দুই) অন্যায়ভাবে কাউকে হত্যা করা মানসিক অস্থিরতার কারণ।

عَنْ ابْنِ عُمَرَ قَالَ قَالَ رَسُولُ اللهِ ﷺ لَنْ يَزَالَ الْمُؤْمِنُ فِي فُسْحَةٍ مِنْ دِينِهِ مَا لَمْ يُصِبْ دَمًا حَرَامًا.

ইবনে উমার রাদ্বিয়াল্লাহু আনহু হতে বর্ণিত। তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ ﷺ বলেছেন, “মু’মিন তার দ্বীনের ব্যাপারে পূর্ণ স্বস্তিতে থাকে, যতক্ষণ না কোন রক্তপাতে লিপ্ত হয়।” [সহীহ বুখারী- ৬৮৬২]

তিন) কোন মুসলিমকে অন্যায়ভাবে হত্যা করা আল্লাহর কাছে পৃথিবী ধ্বংস হওয়া অপেক্ষাও গুরুতর।

عَنْ عَبْدِ اللَّهِ بْنِ عَمْرِو بْنِ الْعَاصِ قَالَ قَالَ رَسُولُ اللَّهِ ﷺ وَالَّذِي نَفْسِي بِيَدِهِ لَقَتْلُ مُؤْمِنٍ أَعْظَمُ عِنْدَ اللَّهِ مِنْ زَوَالِ الدُّنْيَا

আবদুল্লাহ ইবনে আমর ইবনুল আস রাদ্বিয়াল্লাহু আনহু থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ ﷺ বলেছেন, “ঐ সত্ত্বার শপথ! যার হাতে আমার প্রাণ, কোন মুসলিমকে অন্যায়ভাবে হত্যা করা আল্লাহর কাছে পৃথিবী ধ্বংস হওয়া অপেক্ষাও গুরুতর।” [সহীহ নাসাঈ- ৩৯৯৭]

চার) মু’মিন হত্যার পেছনে জড়িত সকলকে জাহান্নামে যেতে হবে।

وَعَن أبي سعيدٍ وَأبي هريرةَ عَن رسولِ ﷺ قَالَ: «لَوْ أَنَّ أَهْلَ السَّمَاءِ وَالْأَرْضِ اشْتَرَكُوا فِي دَمِ مُؤْمِنٍ لَأَكَبَّهُمُ اللَّهُ فِي النَّارِ»

আবূ সা‘ঈদ খুদরী ও আবূ হুরাইরাহ রাদ্বিয়াল্লাহু আনহুমা হতে বর্ণিত। তারা বলেন, রাসূলুল্লাহ ﷺ বলেছেন, “যদি আকাশমণ্ডলী ও যমীনের সকল অধিবাসীরা সম্মিলিতভাবে একজন মু’মিনকে হত্যা করে, তাহলে আল্লাহ তা‘আলা সকলকে জাহান্নামে নিক্ষেপ করবেন।” [সহীহুল জামে‘- ৫২৪৭]

পাঁচ) ইচ্ছাকৃত কোন মু’মিন হত্যা করা এবং কাফির হয়ে মৃত্যুবরণ কারীর কোন ক্ষমা নেই।

ٍعَنْ أَبِي إِدْرِيسَ قَالَ سَمِعْتُ مُعَاوِيَةَ يَخْطُبُ وَكَانَ قَلِيلَ الْحَدِيثِ عَنْ رَسُولِ اللَّهِ ﷺ قَالَ سَمِعْتُهُ يَخْطُبُ يَقُولُ سَمِعْتُ رَسُولَ اللَّهِ ﷺ يَقُولُ كُلُّ ذَنْبٍ عَسَى اللَّهُ أَنْ يَغْفِرَهُ إِلَّا الرَّجُلُ يَقْتُلُ الْمُؤْمِنَ مُتَعَمِّدًا أَوْ الرَّجُلُ يَمُوتُ كَافِرًا

আবূ ইদরীস রাহিমাহুল্লাহ থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, আমি মু‘আবিয়া রাদ্বিয়াল্লাহু আনহুকে খুতবা দিতে শুনেছি, আর তিনি রাসূলুল্লাহ ﷺ হতে অতি অল্পই হাদীস বর্ণনা করেছেন। খুতবায় তিনি বলেন, “আমি রাসূলুল্লাহ ﷺ কে বলতে শুনেছি, “আশা করা যায় প্রত্যেক গুনাহ আল্লাহ ক্ষমা করবেন, তবে ঐ ব্যক্তির গুনাহ ব্যতীত, যে ইচ্ছাকৃত কোন মু’মিনকে হত্যা করে অথবা কাফির হয়ে মৃত্যুবরণ করে।” [সুনান নাসাঈ- ৩৯৯৫]

ছয়) মুসলিমের হত্যাকারী ব্যক্তি তাওবার সুযোগ থেকে বঞ্চিত হবেন।

قال رسول الله ﷺ : أبى الله أن يجعل لقاتل المؤمن توبة

“আল্লাহ তা‘আলা কোন মু’মিনের হত্যাকারীকে তাওবার সুযোগ দেন না।” [সহীহুল জামে‘- ২৩]

সাত) সাতটি ধ্বংসকারী বিষয়ের একটি হলো আল্লাহ যাকে হত্যা করা হারাম করেছেন শারী‘আত সম্মত কারণ ব্যতিরেকে তাকে হত্যা করা।

عَنْ أَبِيْ هُرَيْرَةَ عَنْ النَّبِيِّ ﷺ قَالَ اجْتَنِبُوْا السَّبْعَ الْمُوْبِقَاتِ قَالُوْا يَا رَسُوْلَ اللهِ وَمَا هُنَّ قَالَ الشِّرْكُ بِاللهِ وَالسِّحْرُ وَقَتْلُ النَّفْسِ الَّتِيْ حَرَّمَ اللهُ إِلَّا بِالْحَقِّ وَأَكْلُ الرِّبَا وَأَكْلُ مَالِ الْيَتِيْمِ وَالتَّوَلِّيْ يَوْمَ الزَّحْفِ وَقَذْفُ الْمُحْصَنَاتِ الْمُؤْمِنَاتِ الْغَافِلَاتِ

আবূ হুরাইরাহ রাদ্বিয়াল্লাহু আনহু সূত্রে বর্ণিত, নবী ﷺ বলেছেন, “সাতটি ধ্বংসকারী বিষয় থেকে তোমরা বিরত থাকবে। সাহাবীগণ বললেন, ‘হে রাসূলুল্লাহ ﷺ! সেগুলো কী?’ তিনি বললেন, আল্লাহর সঙ্গে শরীক করা, যাদু করা, আল্লাহ তা‘আলা যাকে হত্যা করা হারাম করেছেন শারী‘আত সম্মত কারণ ব্যতিরেকে তাকে হত্যা করা, সুদ খাওয়া, ইয়াতীমের মাল গ্রাস করা, রণক্ষেত্র থেকে পালিয়ে যাওয়া এবং সরল স্বভাবা সতী-সাধ্বী মু’মিনাদের অপবাদ দেওয়া।” [সহীহ বুখারী- ২৭৬৬]

আট) দু’জন মুসলিম ব্যক্তি পরস্পরকে হত্যার চেষ্টা করলে হত্যাকারী ও নিহত ব্যক্তি উভয়েই জাহান্নামি হবে।

عَنْ الأَحْنَفِ بْنِ قَيْسٍ قَالَ ذَهَبْتُ لِأَنْصُرَ هَذَا الرَّجُلَ فَلَقِيَنِي أَبُو بَكْرَةَ فَقَالَ أَيْنَ تُرِيدُ قُلْتُ أَنْصُرُ هَذَا الرَّجُلَ قَالَ ارْجِعْ فَإِنِّي سَمِعْتُ رَسُولَ اللهِ ﷺ يَقُولُ إِذَا الْتَقَى الْمُسْلِمَانِ بِسَيْفَيْهِمَا فَالْقَاتِلُ وَالْمَقْتُولُ فِي النَّارِ قُلْتُ يَا رَسُولَ اللهِ هَذَا الْقَاتِلُ فَمَا بَالُ الْمَقْتُولِ قَالَ إِنَّهُ كَانَ حَرِيصًا عَلَى قَتْلِ صَاحِبِهِ.

আহনাফ ইবনে ক্বাইস রাহিমাহুল্লাহ হতে বর্ণিত। তিনি বলেন, আমি তাকে (আলী রাদ্বি.) সাহায্য করার জন্য যাচ্ছিলাম। এমন সময় আমার সঙ্গে আবূ বাকরাহ রাদ্বিয়াল্লাহু আনহুর সাক্ষাৎ ঘটলো। তিনি বললেন, ‘কোথায় যাচ্ছ?’ আমি বললাম, ‘ঐ ব্যক্তিকে সাহায্য করতে।’ তিনি বললেন, ফিরে যাও। কেননা, আমি রাসূলুল্লাহ ﷺ কে বলতে শুনেছি, “যখন দু’জন মুসলিম তলোয়ার নিয়ে পরস্পর সংঘর্ষে লিপ্ত হয় তখন হত্যাকারী ও নিহত ব্যক্তির অবস্থান হবে জাহান্নাম।” আমি বললাম, ‘হে আল্লাহর রাসূল! হত্যাকারীর ব্যাপারটা তো বুঝা গেল। কিন্তু নিহত ব্যক্তির ব্যাপারটা কেমন?’ তিনি ﷺ বললেন, “সে-ও তার বিরোধীকে হত্যা করতে আগ্রহান্বিত ছিলো।” [সহীহ বুখারী- ৬৮৭৫]

নয়) মু’মিনের রক্ত আল্লাহর কাছে অন্যতম সম্মানিত একটি বিষয়।

ُعَنْ ابْنِ عَبَّاسٍ أَنَّ رَسُولَ اللهِ ﷺ خَطَبَ النَّاسَ يَوْمَ النَّحْرِ فَقَالَ يَا أَيُّهَا النَّاسُ أَيُّ يَوْمٍ هَذَا قَالُوا يَوْمٌ حَرَامٌ قَالَ فَأَيُّ بَلَدٍ هَذَا قَالُوا بَلَدٌ حَرَامٌ قَالَ فَأَيُّ شَهْرٍ هَذَا قَالُوا شَهْرٌ حَرَامٌ قَالَ فَإِنَّ دِمَاءَكُمْ وَأَمْوَالَكُمْ وَأَعْرَاضَكُمْ عَلَيْكُمْ حَرَامٌ كَحُرْمَةِ يَوْمِكُمْ هَذَا فِي بَلَدِكُمْ هَذَا فِي شَهْرِكُمْ هَذَا فَأَعَادَهَا مِرَارًا ثُمَّ رَفَعَ رَأْسَهُ فَقَالَ اللَّهُمَّ هَلْ بَلَّغْتُ اللَّهُمَّ هَلْ بَلَّغْتُ قَالَ ابْنُ عَبَّاسٍ فَوَالَّذِي نَفْسِي بِيَدِهِ إِنَّهَا لَوَصِيَّتُهُ إِلَى أُمَّتِهِ فَلْيُبْلِغْ الشَّاهِدُ الْغَائِبَ لاَ تَرْجِعُوا بَعْدِي كُفَّارًا يَضْرِبُ بَعْضُكُمْ رِقَابَ بَعْضٍ

ইবনে আব্বাস রাদ্বিয়াল্লাহু আনহু হতে বর্ণিত, “রাসূলুল্লাহ ﷺ কুরবানীর দিন লোকদের উদ্দেশ্যে একটি খুতবাহ দিলেন। তিনি বললেন, হে লোক সকল! আজকের এ দিনটি কোন দিন? সকলেই বললেন, সম্মানিত দিন। অতঃপর তিনি বললেন, এ শহরটি কোন শহর? তাঁরা বললেন, সম্মানিত শহর। অতঃপর তিনি বললেন, এ মাসটি কোন মাস? তারা বললেন, সম্মানিত মাস। তিনি বললেন, তোমাদের রক্ত, সম্পদ, ইযযত তোমাদের জন্য তেমনি সম্মানিত, যেমন সম্মানিত তোমাদের এ দিনটি, তোমাদের এ শহরে এবং তোমাদের এ মাস। এ কথাটি তিনি কয়েকবার বললেন। পরে মাথা উঠিয়ে বললেন, হে আল্লাহ! আমি কি (আপনার পয়গাম) পৌঁছিয়েছি? হে আল্লাহ! আমি কি পৌঁছিয়েছি? ইবনে আব্বাস রাদ্বিয়াল্লাহু আনহু বলেন, সে সত্ত্বার কসম, যাঁর হাতে আমার প্রাণ, নিশ্চয়ই এ কথাগুলো ছিল তাঁর উম্মাতের জন্য ওয়াসীয়্যাত। (নবী ﷺ আরও বলেন) উপস্থিত ব্যক্তি যেন অনুপস্থিত ব্যক্তির কাছে পৌঁছিয়ে দেয়। আমার পরে তোমরা কুফরীর দিকে ফিরে যেও না, পরস্পর পরস্পরকে হত্যা করো না।” [সহীহ বুখারী- ১৭৩৯]

দশ) যে যেভাবে আত্মহত্যা করবে তাকে ক্বিয়ামতে সেভাবেই শাস্তি দেওয়া হবে।

ُعَنْ أَبِي هُرَيْرَةَ عَنْ النَّبِيِّ ﷺ قَالَ مَنْ تَرَد‘ى مِنْ جَبَلٍ فَقَتَلَ نَفْسَه فَهُوَ فِي نَارِ جَهَنَّمَ يَتَرَدّ‘ى فِيهِ خَالِدًا مُخَلَّدًا فِيهَا أَبَدًا وَمَنْ تَحَسّٰى سُمًّا فَقَتَلَ نَفْسَه فَسُمُّه فِي يَدِه يَتَحَسَّاه فِي نَارِ جَهَنَّمَ خَالِدًا مُخَلَّدًا فِيهَا أَبَدًا وَمَنْ قَتَلَ نَفْسَه بِحَدِيدَةٍ فَحَدِيدَتُه فِي يَدِه يَجَأُ بِهَا فِي بَطْنِه فِي نَارِ جَهَنَّمَ خَالِدًا مُخَلَّدًا فِيهَا أَبَدًا.

আবূ হুরাইরাহ রাদ্বিয়াল্লাহু আনহু হতে বর্ণিত। তিনি বলেন, নবী ﷺ বলেছেন, “যে লোক পাহাড়ের উপর থেকে লাফিয়ে পড়ে আত্মহত্যা করে, সে জাহান্নামের আগুনে পুড়বে; চিরকাল সে জাহান্নামে ঐভাবে লাফিয়ে পড়তে থাকবে; যে লোক বিষপানে আত্মহত্যা করবে, তার বিষ জাহান্নামের আগুনের মধ্যে তার হাতে থাকবে, চিরকাল সে জাহান্নামের মধ্যে তা পান করতে থাকবে; যে লোক লোহার আঘাতে আত্মহত্যা করবে, জাহান্নামের আগুনের ভিতর সে লোহা তার হাতে থাকবে, চিরকাল সে তা দিয়ে নিজের পেটে আঘাত করতে থাকবে।” [সহীহ বুখারী- ৫৭৭৮; সহীহ মুসলিম- ১০৯]

এগারো) শারীরিক কষ্ট সহ্য না করতে পেরে আত্মহত্যাকারীর জন্য আল্লাহ জান্নাত হারাম করেছেন।

عَنْ الْحَسَنِ حَدَّثَنَا جُنْدَبُ بْنُ عَبْدِ اللهِ فِيْ هَذَا الْمَسْجِدِ وَمَا نَسِيْنَا مُنْذُ حَدَّثَنَا وَمَا نَخْشَى أَنْ يَكُوْنَ جُنْدُبٌ كَذَبَ عَلَى رَسُوْلِ اللهِ قَالَ قَالَ رَسُوْلُ اللهِ ﷺ كَانَ فِيْمَنْ كَانَ قَبْلَكُمْ رَجُلٌ بِهِ جُرْحٌ فَجَزِعَ فَأَخَذَ سِكِّينًا فَحَزَّ بِهَا يَدَهُ فَمَا رَقَأَ الدَّمُ حَتَّى مَاتَ قَالَ اللهُ تَعَالَى بَادَرَنِيْ عَبْدِيْ بِنَفْسِهِ حَرَّمْتُ عَلَيْهِ الْجَنَّةَ

হাসান বসরী রাহিমাহুল্লাহ বলেন, জুনদুব ইবনে আবদুল্লাহ রাদ্বিয়াল্লাহু আনহু বসরার এক মাসজিদে আমাদের নিকট হাদীস বর্ণনা করেন। সে দিন হতে আমরা না হাদীস ভুলেছি, না আশঙ্কা করেছি যে, জুনদুব রাদ্বিয়াল্লাহু আনহু নবী ﷺ এর প্রতি মিথ্যারোপ করেছেন। তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ ﷺ বলেছেন, “তোমাদের পূর্ব যুগে জনৈক ব্যক্তি আঘাত পেয়েছিলো, তাতে কাতর হয়ে পড়েছিলো; অতঃপর সে একটি ছুরি হাতে নিলো এবং তা দিয়ে তার হাতটি কেটে ফেললো। ফলে রক্ত আর বন্ধ হলো না। শেষ পর্যন্ত সে মারা গেল। মহান আল্লাহ বললেন, ‘আমার বান্দাটি নিজেই প্রাণ দেওয়ার ব্যাপারে আমার হতে অগ্রগামী হলো, কাজেই আমি তার ওপর জান্নাত হারাম করে দিলাম।” [সহীহ বুখারী- ৩৪৬৩]

বারো) কোন লোক দুনিয়াতে যে জিনিস দিয়ে আত্মহত্যা করবে, ক্বিয়ামতের দিন সে জিনিস দিয়েই তাকে আযাব দেওয়া হবে।

أَنَّ ثَابِتَ بْنَ الضَّحَّاكِ، وَكَانَ، مِنْ أَصْحَابِ الشَّجَرَةِ حَدَّثَهُ أَنَّ رَسُولَ اللَّهِ ﷺ قَالَ ‏"‏مَنْ حَلَفَ عَلَى مِلَّةٍ غَيْرِ الإِسْلاَمِ فَهْوَ كَمَا قَالَ، وَلَيْسَ عَلَى ابْنِ آدَمَ نَذْرٌ فِيمَا لاَ يَمْلِكُ، وَمَنْ قَتَلَ نَفْسَهُ بِشَىْءٍ فِي الدُّنْيَا عُذِّبَ بِهِ يَوْمَ الْقِيَامَةِ، وَمَنْ لَعَنَ مُؤْمِنًا فَهْوَ كَقَتْلِهِ، وَمَنْ قَذَفَ مُؤْمِنًا بِكُفْرٍ فَهْوَ كَقَتْلِهِ"‏‏.‏

ছাবিত ইবনে যাহহাক রাদ্বিয়াল্লাহু আনহু হতে বর্ণিত। তিনি গাছের নীচে বাই‘আত গ্রহণকারীদের অন্যতম সাহাবী ছিলেন। রাসূলুল্লাহ ﷺ বলেছেন, “যে ব্যক্তি ইসলাম ব্যতীত অন্য কোন দলের ওপর কসম খাবে, সে ঐ দলেরই শামিল হয়ে যাবে; আর মানুষ যে জিনিসের মালিক নয়, এমন জিনিসের নযর আদায় করা তার ওপর ওয়াজিব নয়। আর কোন লোক দুনিয়াতে যে জিনিস দিয়ে আত্মহত্যা করবে, ক্বিয়ামতের দিন সে জিনিস দিয়েই তাকে আযাব দেওয়া হবে। কোন লোক কোন মু’মিনের ওপর অভিশাপ দিলে, তা তাকে হত্যা করারই শামিল হবে। আর কোন মু’মিনকে কাফির বললে, তা-ও তাকে হত্যা করার মতোই হবে।” [সহীহ বুখারী- ৬০৪৭]

তেরো) শাইখ সালেহ আল উছাইমীন রাহিমাহুল্লাহ এর উক্তি।

قال ابن عثيمين رحمه الله : « نرى أن العمليات الانتحارية التي يتيقن الإنسان أنه يموت فيها حرام بل هي من كبائر الذنوب؛ لأن النبي أخبر بأن (من قتل نفسه بشيء في الدنيا عذب به يوم القيامة) ، ولم يستثن شيئا بل هو عام ...

“আমরা বিশ্বাস করি যে আত্মঘাতী অপারেশন যেখানে একজন ব্যক্তি নিশ্চিত যে তার মৃত্যু হবে তা হারাম, বরং একটি কবীরা গুনাহ। কারণ নবী ﷺ বলেছেন, যে (যে ব্যক্তি এই পৃথিবীতে কোন কিছু দিয়ে আত্মহত্যা করবে তাকে ক্বিয়ামতের দিন তা দিয়ে শাস্তি দেওয়া হবে) এবং তিনি কিছুতেই বাদ দেননি, বরং এটি সাধারণ ...।” [মাজমূ‘ ফাতাওয়া- ২৫/৩৫৮]

আল্লাহ সুবহানাহু ওয়া তা‘আলা আমাদের সকল প্রকার গুনাহ থেকে বাঁচিয়ে রাখুন।

সম্পাদনা:
শাইখ ড. মুহাম্মাদ সাইফুল্লাহ হাফিযাহুল্লাহ
২ মুহাররাম ১৪৪৬ হিজরী
৯ জুলাই ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ
 
Top