সালাফী আকিদা ও মানহাজে - Salafi Forum

Salafi Forum হচ্ছে সালাফী ও সালাফদের আকিদা, মানহাজ শিক্ষায় নিবেদিত একটি সমৃদ্ধ অনলাইন কমিউনিটি ফোরাম। জ্ঞানগর্ভ আলোচনায় নিযুক্ত হউন, সালাফী আলেমদের দিকনির্দেশনা অনুসন্ধান করুন। আপনার ইলম প্রসারিত করুন, আপনার ঈমানকে শক্তিশালী করুন এবং সালাফিদের সাথে দ্বীনি সম্পর্ক গড়ে তুলুন। বিশুদ্ধ আকিদা ও মানহাজের জ্ঞান অর্জন করতে, ও সালাফীদের দৃষ্টিভঙ্গি শেয়ার করতে এবং ঐক্য ও ভ্রাতৃত্বের চেতনাকে আলিঙ্গন করতে আজই আমাদের সাথে যোগ দিন।

জীবনী ইমাম আল বারবাহারী রাহিমাহুল্লাহ এর জীবনী

নাম, কুনিয়্যাহ এবং বংশাবলী:

তিনি ইমাম, মুজাহিদ, হাম্বলী আলিম এবং তার সময়ের সর্বোত্তম ব্যক্তিত্ব আবু মুহাম্মাদ আল-হাসান ইবনু 'আলী ইবনু খালাফ আল-বারবাহারী। তাকে বারবাহারের সাথে নিসবত করা হয়, যা ছিল ভারত থেকে আমদানিকৃত ঔষধ।

জন্মস্থান এবং শৈশব:

তার জন্ম কিংবা শৈশব সম্পর্কে তেমন কিছু জানা যায় না। তিনি বাগদাদে জন্মগ্রহণ করেন এবং সেখানেই লালিত পালিত হন। বিদ্বানগণের মধ্যে ছাড়াও জনসাধারনের মধ্যে তার বেশ খ্যাতি ছাড়িয়ে পড়ে। অধিকন্তু আল-বারবাহারী আহলে সুন্নাহ্ ওয়াল জামা'আতের ইমাম আহমাদ ইবনু হাম্বল (রাহি.) এর একদল সঙ্গীগণের দারসে বসেন। তিনি তাদের নিকটে পড়াশোনা করেন, যাদের বেশির ভাগই বাগদাদী ছিলেন। আল-বারবাহারী এমন এক পরিবেশে বেড়ে উঠেছিলেন যেখানে জ্ঞান এবং সুন্নাহ্র ব্যাপক চর্চা হচ্ছিল। যা তার ব্যক্তিত্বের উপর বিশাল প্রভাব ফেলেছিল।

তার শিক্ষকগণ এবং তার জ্ঞান অন্বেষণের প্রচেষ্টা:

আল-বারবাহারীর জ্ঞান অন্বেষণের প্রতি ছিল প্রবল ঝোঁক, আর প্রচন্ড চেষ্টার মাধ্যমে তা তিনি অর্জন করেন। তিনি আহমাদ ইবনু হানবালের জ্যেষ্ঠ ছাত্রদের নিকটে জ্ঞান অর্জন করেন, কিন্তু দুঃখজনকভাবে দু'জন ব্যতীত তাদের বেশিরভাগ সম্পর্কেই জানা যায় না-

(১) আহমাদ ইবনু মুহাম্মাদ ইবনু হাজ্জাজ ইবনু ‘আব্দুল-‘আজিজ; যিনি ‘আবু বকর আল-মারওয়াযী' নামে পরিচিত। একজন ন্যায়-নিষ্ঠ ইমাম, আলিম, মুহাদ্দিস, আর ইমাম আহমাদের মত বিদ্বানের ছাত্র ছিলেন। তিনি ২৭৫ হিঃ ৬ই জুমাদুল- “উলায় মৃত্যুবরণ করেন।

(২) সাহল ইবনু আব্দুল্লাহ ইবনু ইউনুস আত-তুসতারী; আবু-মুহাম্মাদ। একজন ইমাম, জাহিদ ব্যক্তিত্ব, বহু বিদ্বান তার থেকে বিভিন্ন বর্ণনা এবং ঘটনা সংগ্ৰহ করেছেন। ৮০ বছর বয়সে ২৮৩ হিঃ সনের মুহরমে মৃত্যুবরণ করেন।

তার ‘ইলম এবং তার প্রতি বিদ্বানগণের মূল্যায়ন

ইমাম আল-বারবাহারী (রাহি.) ছিলেন একজন দুর্দান্ত ও জবরদস্ত ইমাম, যিনি ছিলেন সত্যপন্থী একজন বক্তা, সুন্নাহ্ দিকে আহবানকারী এবং হাদীছের অনুসরণকারী। তিনি শাসকদের নিকটে পরিচিত এবং সম্মানিত ছিলেন। তার নিকটে বিভিন্ন লোকজন জড়ো হতো হাদীছ, আছার এবং ফিকহ্ সংগ্রহ করার উদ্দেশ্যে। (এই লোকজন) তারা হাদীছ এবং ফিকহের অন্যান্য বিদ্বানদের দারসেও যোগদান করত।

ইমাম আবু ‘আব্দুল্লাহ্ বলেন, “যদি তুমি দেখ বাগদাদের কোন লোককে, যিনি আবুল হাসান ইবনু বাশশার এবং আবু মুহাম্মাদ আল বারবাহারীকে ভালোবাসে তাহলে জেনে রাখ সে সুন্নাহপন্থী”

তার উচ্চ মর্যাদা সম্পর্কে তার ছাত্র ইবনু বাত্তাহ (রাহি.) বলেন, “যখন তিনি হজে যাওয়ার সময় তখন আমি তাকে বলতে শুনেছি-অর্থাৎ ইমাম বারবাহারী বলেন, “হে লোকসকল! তোমাদের যদি কারও প্রয়োজন হয় এক লক্ষ দিনার, এক লক্ষ দিনার, এক লক্ষ দিনার- এভাবে পাঁচ বার তাহলে আমি তাকে সাহায্য করব”। ইবনু বাত্তাহ বলেন,“যদি তিনি চাইতেন এভাবে লোকজনকে দিবেন তাহলে দিতে পারতেন”।

ইবনু আবি ই'য়ালা বলেন, “তার সময়ে তিনি ছিলেন তার সম্প্রদায়ের শাইখ, বিদ'আতীদের বিরুদ্ধে অনুযোগকারী শীর্ষস্থানীয় ব্যক্তিত্ব এবং হাত ও মুখের দ্বারা তাদের প্রতিবাদকারী, আর জ্ঞানের আধিক্যের কারণে তিনি শাসকদের নিকটেও

প্রসিদ্ধি লাভ করেন। তিনি ছিলেন মেধাবী বিদ্ধান, বিশিষ্ট মূলপাঠ মুখস্থকারী এবং মুমিনদের নিকটে বিশ্বাসযোগ্য ব্যক্তিত্ব”।

আয-যাহাবী ‘আল ইবারে বলেন, “অনুকরণীয় আলিম, সমস্যার সমাধান, কথাবার্তা ও চাল চলনে ইরাকের হানবালী শাইখ, তিনি ছিলেন খুবই প্রসিদ্ধ এবং পূৰ্ণ সম্মানিত ৷

ইবনু আল-জাওযী বলেন, “তিনি জ্ঞান অন্বেষণকারী, দুনিয়া বিমুখ (যুহদ) এবং বিদ'আতীদের তীব্র বিরোধী ছিলেন”।

ইবনু কাসীর বলেন, “স্বল্পাহারী, জ্ঞানী, হানবালী বিদ্বান, সতর্ককারী এবং পাপ ও বিদ'আতীদের বিরুদ্ধে খুব কঠোর। তিনি মহান খ্যাতি অর্জন করে ছিলেন, সমাজের অভিজাত এবং সাধারণ লোকজন তাকে সম্মানের দৃষ্টিতে দেখতেন”।

তার ধর্মানুরাগ ও যুহদ:

ইমাম আল-বারবাহারী উভয় গুণেই গুণান্বীত ছিলেন। আবুল-হাসান ইবনু বাশার উল্লেখ করেছেন যে, “আল-বারবাহারী (রাহি.) উত্তরাধিকারী সূত্রে তার পিতা হতে ৭০ হাজার দিরহাম পেয়েছিলেন যা তিনি পরিহার করেন”।

ইবনু আবি ‘ইয়ালা বলেন,“আল-বারবাহারী দীনের জন্য অসংখ্য বার সংগ্রাম করেছিলেন এবং কঠোর অবস্থান নিয়েছিলেন”।

বিদ'আতপন্থী ও পথভ্রষ্ট দল সম্পর্কে তার অবস্থান:

ইমাম আল-বারবাহারী (রহমানের) বিদ'আতী ও পথভ্রষ্ট দলের ব্যাপারে ছিলেন অত্যন্ত কঠোর, তিনি মুখ (জিহ্বা) ও হাতের সাহায্যে তাদের প্রতিবাদ করে ছিলেন, সব সময় তিনি অনুসরণ করতেন আহলুস সুন্নাহ্ ওয়াল- জামা'আতের পথ এবং এর সাথে সাথে বিদ'আতী ও পথভ্রষ্টদেরকেও এ পথের প্রতি আহবান করতেন। তার ইচ্ছা ছিল দীন বিশুদ্ধ থাকুক এবং বিদ'আতী ও পথভ্রষ্টদের ছায়া থেকে মুক্ত থাকুক এবং আরো মুক্ত থাকুক জামিয়া, মু'তাযিলা, আশ'আরী, সুফি, শী'য়া এবং রাফেযীদের ফিতনা হতে।

একারণেই আমরা এই কিতাবে তাকে দেখেছি যে, তিনি বড় বিদ'আতের আগেই ছোট বিদ'আত সম্পর্কে সচেতন করেছেন। এমনকি তিনি ৭ নং মাসআলাতে বলেছেন: “সতর্ক হও ছোট বিদ'আত হতে, কারণ এক সময় সেগুলো বৃদ্ধি পেয়ে পরিণত হবে বড় বিদ'আতে।” এভাবে তিনি বিদ'আত হতে সচেতনতার ব্যাপারে অত্যন্ত মুল্যবান আলোচনা করেছেন।

এবং আমরা আরো দেখেছি যে, তিনি প্রবৃত্তির অনুসরণকারী ভ্রষ্ট দলগুলোর বিদ'আত প্রচলনের পদ্ধতি নিয়ে স্পষ্ট আলোচনা করেছেন। এবং তাদের পথ ও পদ্ধতিতে আকস্মিক পতিত হওয়া থেকে সচেতন করেছেন।

তিনি আমাদের জন্য আরো রেখে গিয়েছেন প্রশস্ত ও স্পষ্ট রূপরেখা যাতে বর্ণনা করা হয়েছে পথভ্রষ্ট এবং বিদ'আতীদের অবস্থান। তিনি এমনভাবে তা বর্ণনা করেছেন যেন তাদেরকে স্বচক্ষে দেখা যায়।

সার সংক্ষেপ হলো, তার অবস্থান পথভ্রষ্ট ও বিদ'আতীদের বিরুদ্ধে ছিল অত্যন্ত কঠোর এবং স্পষ্ট, আর তার সতর্কতা এবং ভালোবাসা ছিল সুন্নাহ্র প্রতি যেখানে প্রত্যেক বিদ'আতী পথভ্রষ্টরা সুন্নাহকে আক্রমনের প্রচেষ্টায় লিপ্ত ছিল। বিদ'আতী, পথভ্রষ্ট এবং বিপথগামী লোকজনের বিষয়ে তার অবস্থান ছিল আইনসঙ্গত, আর তিনি ছিলেন আহলুস সুন্নাহর ইমামের প্রকৃষ্ট উদাহরণ।

তার ছাত্রগণ :

বহু সংখ্যক ছাত্ররা (তলিবুল 'ইলম) তার থেকে শিক্ষা লাভ করে উপকৃত হয়। তার কতিপয় ছাত্রের নাম নিম্নরূপ:

(১) অনুসরণীয় ইমাম এবং আলিম, আবু আব্দুল্লাহ ইবনু ‘উবায়দুল্লাহ্ ইবনু মুহাম্মাদ আল-“উকবারী; তিনি ইবনু বাত্তহ্ নামে সর্বজন পরিচিত, তিনি ৩৮৭ হিঃ মুহাররাম মাসে মারা যায়। [৫]

(২) অনুসরণীয় ইমাম, জ্ঞানগর্ভ কথা বলার কারণে সর্বজন বিদিত ব্যক্তিত্ব মুহাম্মাদ ইবনু আহমাদ ইবনু ইসমাঈল আল-বাগদাদী, আবুল-হুসাইন ইবন সাম‘উন; সতর্ককারী (দা'ঈ), তার কর্ম এবং অবস্থানের কারণে তিনি ছিলেন সুপরিচিত। তিনি ৩৮৭ হিঃ জুল-ক্বাদাতে মৃত্যুবরণ করেন।[৬]

(৩) আহমাদ ইবনু কামিল ইবনু খালফ ইবনু শাজারাহ, আবু বকর; লিখকের নিকট হতে এই গ্রন্থের বর্ণনাকারী।

(৪) মুহাম্মাদ ইবনু মুহাম্মাদ ইবনু ‘উসমান, আবু বকর; তার সম্পর্কে আল-খাতিব (আল-বাগদাদী) বলেন, “এটি আমার নিকটে পৌঁছেছে যে, তিনি দুনিয়া বিমুখ জীবন যাপন করতেন, আর তার সকল বিষয়ই ভালো ছিল, শুধুমাত্র কিছু দুর্বল এবং ভিত্তিহীন বর্ণনা ছাড়া” [৭]

পরীক্ষা এবং মৃত্যু:

ইমাম আল-বারবাহারী (রাহি.) খ্যাতি লাভ করেছিলেন সাধারন ও অভিজাত লোকজনের নিকটে এবং শাসকদের চোখেও তিনি সম্মানিত ছিলেন। যদিও পথভ্রষ্ট এবং বিদ'আতী দলের মধ্য হতে তার শত্রুরা, তার প্রতি শাসককে উত্তেজিত করার ক্ষেত্রে কোন ছাড় / ক্ষান্ত দেয়নি, যার কারণে ৩২১ হিজরিতে তার বিরুদ্ধে খলীফা আল-কাহিরের অন্তর বিষিয়ে উঠে এবং তার মন্ত্রী ইবনু মুকলাহকে আদেশ করেন ইমাম বারবাহারী ও তার ছাত্রদের গ্রেফতার করার জন্য। ইমাম আত্মগোপন করেন, আর তার ছাত্রদের মধ্যে একটা বড় অংশ আটক হন এবং তাদেরকে বসরায় পাঠিয়ে দেয়া হয়।

ইবনু মুকলাহকে তার কর্মের জন্য আল্লাহ শাস্তি দিয়েছিলেন, খলীফা কাহির বিল্লাহ হঠাৎ করেই ইবনু মুকলা প্রতি রাগান্বিত হয়ে পড়ে, যার কারণে সে পলায়ন করে, তাকে তার পদ থেকে অপসারিত করা হয় এবং তার বাড়ি পুড়িয়ে দেয়া হয়েছিল। অতঃপর ৩২২ হিঃ ৬ষ্ঠ জুমাদুল আখিরে কাহির বিল্লাহকে বন্দি করা হয়, তাকেও খিলাফার পদ থেকে অব্যাহতি দেওয়া হয় এবং দু'চোখ অন্ধ করে দেয়া হয়। মহান আল্লাহ তা'আলা ইমাম আল-বারবাহারীকে আবার তার সম্মানিত স্থানে ফিরিয়ে আনেন।

৩২৩হিঃ সফরে ‘আব্দুল্লাহ ইবনু ‘আরাফা মৃত্যুবরণ করেন, তিনি নিতাওয়া নামে পরিচিত ছিলেন, তার জানাযাতে অসংখ্য বিশিষ্ট ব্যক্তি এবং বিদ্বানগণের সমাবেশ ঘটে, এ সময় ইমাম আল-বারবাহারী তার জানাযার জ্বলাতে ইমামতি করেন। এ বছরই ইমামের খ্যাতি চরম পর্যায় উন্নীত হয় এবং তার প্রত্যেকটি কথাই ব্যাপক গুরুত্ব বহন করে, তার ছাত্ররা দৃষ্টিগোচর হয়, বিদ'আতীদেরকেও তাদের কাজের জন্য তিরষ্কার করা হয়। এটি এমন অবস্থায় পৌঁছেছিল যে, ইমাম শহরের পশ্চিম পার্শ্বে থাকাকালীন একদিন হাঁচি দেন, তার সঙ্গীগণ এতে দোয়া পাঠ করেন, (তাদের সংখ্যা এত ছিল ) যাতে এমন শব্দের সৃষ্টি হয়েছিল যে, খলীফা তার বাসভবনে থেকে এ শব্দ শুনতে পান। খলীফা জিজ্ঞাসা করেন এটি কিসের শব্দ, তখন তাকে এটি জানানো হলে, তিনি ভীত হয়ে পড়েন। এ সময়ও বিদ'আতীরা ইমামের বিরুদ্ধে খলিফা আর-রাজীকে কুমন্ত্রনা দেওয়া শুরু করে, তখন খলীফা তার পুলিশ প্রধান বদর উল-হারাসীকে আদেশ করেন বাগদাদের লোকজনের নিকটে যেতে এবং ঘোষণা দিতে যে ইমাম বারবাহারীর দু'জন ছাত্রের একত্রিত হয়ে কথা / সাক্ষাত করার অনুমতি নেই। ইমাম পুনরায় আত্মগোপনে চলে যান, তার পুরাতন বাসস্থানে। যা শহরের পশ্চিম পার্শ্বে অবস্থিত ছিল, আর এ সময় তিনি গোপনে শহরের পূর্বপার্শ্ব পর্যন্ত চলাফেরা করতেন। ৩২৯ হিজরিতে মৃত্যুর আগ পর্যন্ত তিনি এখানেই অবস্থান করতেন।

ইবনু আবি ইয়ালা বলেন: মুহাম্মাদ ইবন আল-হাসান আল-মুকরী আমাদের নিকটে বর্ণনা করেন, বলেন: আমার দাদা-দাদী এ বিষয়ে আমাকে বর্ণনা করেন যে, “আবু মুহাম্মাদ আল বারবাহারী আত্মগোপন করে ছিলেন টোজনের বোনের বাড়িতে যেটি ছিল শহরের পূর্ব পার্শ্বে জনসাধারনের হাম্মাম খানার সরুগলিতে তিনি সেখানে মাসাধিক কাল অবস্থান করেন, আর তখন তার রক্ত প্রবাহিত করাকে মূল্যহীন ঘোষণা করা হয়েছিল।

যখন আল-বারবাহারী আত্মগোপন থাকা অবস্থায় মৃত্যুবরণ করেন, তখন টোজনের বোন তার চাকরকে বলেন, “তাকে গোসল দেওয়ার জন্য কাউকে খুঁজে নিয়ে আস”। বাহির দিয়ে দরজা বন্ধ থাকা অবস্থায় সকলের অজান্তে কেউ একজন তাকে গোসল দিয়েছিলেন; বাড়ির মালিক মহিলা হঠাৎ করে ঘরের ভিতরে তাকান আর দেখতে পান সাদা এবং সবুজ কাপড় পরিহিত একজন যিনি সম্পূর্ণ মানুষের মত দেখতে, তার জানায়ার ছুলাত আদায় করছে।

জানাযার ছুলাত শেষ হওয়ার পর মহিলা সেখানে আর কাউকে দেখতে পাননা, সুতরাং মহিলা তার চাকরকে ডেকে আনে এবং বলে,“তুমি আমাকে এবং আমার ভাইকে ধ্বংস করেছ!”, চাকর উত্তর দেয়, “আমি যা দেখেছি আপনি কি তা দেখেননি?” মহিলা উত্তর দেয়, “হ্যা দেখেছি”। চাকর বলে,“দরজার চাবি এখানে, আর এটি এখনও বন্ধ”। তখন মহিলা বলে, “তাকে আমার বাড়িতেই কবর দাও এবং যখন আমি মারা যাব তখন তার কবরের নিকটে আমাকে কবর দিও”।

আল্লাহ তা'আলা তার অনুগ্রহ দ্বারা ইমাম আল-বারবাহারীকে আচ্ছাদিত করুন এবং তাকে উত্তম পুরুষ্কারে ভূষিত করুন। তিনি ছিলেন সত্যপন্থী ইমাম, আল্লাহ তা'আলা সম্পর্কে জ্ঞানী, সুন্নাহ্ প্রকৃত অনুসারী এবং বিদ'আতী ও পথভ্রষ্টদের বিরুদ্ধে এক কোষমুক্ত তরবারী।



[১] আস-সাম'আনীর, ‘আল-আনসাব’; ২/১৩৩ এবং ‘আল- লুবাব ফী তাহজীবিল আনসাব'; ১/১৩৩।
[২] * তারিখ বাগদাদ'; ৫/১৮৮, আস-সিরাজীর — ত্ববাক্বাতুল ফুকাহা'; (পৃ: ১৭০), ' ত্ববাক্বাতুল হানাবিলাহ'; ১/৫৬ এবং “সিয়ারু আলামিন- নুবালা'; ১৩/১৭৩।
[৩] ‘আল-‘ইবার’; ১/৪০৭ এবং আস-সিয়ার; ১৩/৩৩০
[৪] 'ত্ববাক্বাতুল হানাবিলাহ'; ২/৫৮।
[৫] ‘আল-‘ইবার'; (২/১৭১) এবং আস-সিয়ার; ১৬/৫২৯
[৬] ‘আল- ‘ইবার’; (২/১৭২) এবং আস-সিয়ার; ১৬/৫০৫
[৭] তারিখ বাগদাদ'; ৩/৪৪৪ এবং আল-মিযান; ৪/২৮।
 
Top