আল-আযীয: আল-আযীয (সর্বাধিক সম্মানিত, মহাসম্মানিত), আল-কাবীউ (সর্বশক্তিমান, শক্তিশালী)[1], আল-মাতীন (সুদৃঢ়, সুস্থির)[2], আল-কাদীর (মহা ক্ষমতাধর)[3]।
এ মহান নামগুলো অর্থ খুব কাছাকাছি। আল্লাহ তা‘আলা পূর্ণ ক্ষমতা, মহাকুদরত ও সর্বব্যাপী সম্মানের অধিকারী। আল্লাহ তা‘আলা বলেছেন,
“নিশ্চয় সকল মর্যাদা আল্লাহর।” [সূরা ইউনুস, আয়াত: ৬৫][4]
আল-আযীয হলেন যার রয়েছে সকল মর্যাদা। ক্ষমতার মর্যাদা, বিজয়ের মর্যাদা, কোন কিছু বারণ করার মর্যাদা। সুতরাং সৃষ্টিকুলের কেউ তাঁকে ধরা ছোঁয়া অসম্ভব, কেউ তাঁর সমকক্ষ হওয়া অসম্ভব। তিনি সমস্ত অস্তিত্বশীলকে ধমক ও ক্ষমতার মধ্যে আবদ্ধ রাখেন, সৃষ্টিকুল তাঁর নৈকট্য লাভের প্রচেষ্টায় ব্যস্ত, তাঁর মহা ক্ষমতা ও বড়ত্বের কারণে সবাই তাঁর সমীপে নতশির।[5]
সুতরাং ইজ্জতের তিনটি অর্থের সবগুলোই পূর্ণরূপে মহান আল্লাহর মধ্যে বিদ্যমান। আল-আযীম তথা মহা সম্মানিত নাম তাঁর মহা শক্তির মর্যাদা প্রমাণ করে। আল্লাহর এ নামের আরেকটি অর্থ আল-কাবীউ (সর্বশক্তিমান, শক্তিশালী), আল-মাতীন (সুদৃঢ়, সুস্থির)। এটি আল্লাহর মহান সিফাত, সৃষ্টিকুলের কেউ এ শক্তির অধিকারী নয়; সে যত বড়ই হোক না কেন। আল-আযীযের আরেক অর্থ পরমুখাপেক্ষীহীনতার মর্যাদা।
মহান আল্লাহ যাতীগত ভাবেই মুখাপেক্ষীহীন, কারো কাছে তাঁর কোন প্রয়োজন নেই, বান্দারা সকলে মিলে তাঁর কোন ক্ষতি করতে চাইলেও তারা তাঁর কোন ক্ষতি করতে সক্ষম হবে না, আবার তারা সবাই মিলে তাঁর কোন উপকার করতে চাইলেও তাঁর কোন উপকার করতে পারবে না; বরং তিনিই ক্ষতিকারী, উপকারকারী, দানকারী এবং তিনিই দান দেওয়া থেকে বারণকারী।
তাঁর রয়েছে সমস্ত সৃষ্টির উপর ক্ষমতা, প্রভাব ও বিজয় লাভের মর্যাদা। সমস্ত সৃষ্টিই তাঁর মহত্ব ও বড়ত্বের সামনে বিনয়ী, নতশির এবং তাঁর ইচ্ছায় আনুগত্যশীল। অত:এব, সমস্ত সৃষ্টির ভাগ্য তাঁরই হাতে। তাঁর থেকে এক ইঞ্চি পরিমাণও নড়চড় করে না, তাঁর ইচ্ছা, শক্তি ও অনুমতি ব্যতীত কোন কিছুই পরিবর্তন ও নড়াচড়া করতে সক্ষম নয়। তিনি যা চান তা-ই হয়, আর তিনি যা চান না তা কখনও হবে না।
তিনি ব্যতীত কারো কোন শক্তি ও সামর্থ নেই। তাঁর শক্তি ও ইচ্ছার একটি উদাহরণ হলো, তিনি মাত্র ছয় দিনে আসমান, জমিন ও এর মধ্যকার সব কিছু সৃষ্টি করেছেন। তিনি সমস্ত সৃষ্টি সৃষ্টি করেছেন, অত:পর তিনি তাদেরকে মৃত্যু দান করবেন, তিনি আবার তাদেরকে পুনরুত্থিত করবেন এবং সকলেই তাঁর কাছে প্রত্যাবর্তন করবে। আল্লাহ তা‘আলা বলেছেন,
“তোমাদের সৃষ্টি ও তোমাদের পুনরুত্থান কেবল একটি প্রাণের (সৃষ্টি ও পুনরুত্থানের) মতই।” [সূরা লুকমান, আয়াত: ২৮]
“আর তিনিই সৃষ্টির সূচনা করেন তারপর তিনিই এর পুনরাবৃত্তি করবেন। আর এটা তো তাঁর জন্য অধিকতর সহজ।” [সূরা আর-রূম, আয়াত: ২৭] তাঁর কদরতের অন্যতম নিদর্শন হলো, তুমি জমিনকে দেখতে পাবে শুষ্কাবস্থায়, অতঃপর যখনই তিনি তাতে পানি বর্ষণ করেন, তখন তা আন্দোলিত ও স্ফীত হয় এবং উদগত করে সকল প্রকার সুদৃশ্য উদ্ভিদ। তাঁর কুদরতের আরেকটি নিদর্শন হলো, পূর্ববর্তী মিথ্যাবাদী, কাফির ও যালিমদের উপর নানা ধরণের আযাব ও গজব পতিত হওয়া কিন্তু আল্লাহর আযাব যখন তাদের উপর এসেছে তখন তাদের কোন কৌশল, ষড়যন্ত্র, চক্রান্ত, ধন-সম্পদ, সৈন্য ও বড় বড় দুর্গ তাদের কোন কাজে আসে নি, তারা সে আযাব প্রতিরোধ করতে পারে নি।
তারপর যখন রবের নির্দেশ আসল তখন তাদের এসব কোন উপকারে আসে নি এবং তারা ধ্বংস ছাড়া তাদের আর কিছুই বৃদ্ধি করে নি। বিশেষ করে সে সময় যখন তাদের শক্তি সামর্থ ছিল প্রচুর, আবিষ্কার ছিল নানা ধরণের, সে জাতির সামর্থ এমন পর্যায়ে পৌঁছেছিল যে, তারা ভেবেছিল তারা আল্লাহর চেয়েও শক্তিশালী, তাঁর চেয়েও অধিক জ্ঞানী; কিন্তু তাদের কোন জ্ঞান ও শক্তিই কোন কাজে আসে নি।
আল্লাহর নিদর্শনাবলীর অন্যতম হলো, সৃষ্টির শক্তি, কুদরত, আবিষ্কার কোন কিছুই আল্লাহর বালা-মুসিবত, শাস্তি ও ধ্বংস থেকে রক্ষা করতে পারবে না; যদিও তারা এর মোকবিলায় তাদের সর্বাত্মক চেষ্টা ব্যয় করে। কিন্তু আল্লাহর নির্দেশই সর্বদা বিজয় লাভ করে। তাঁর কুদরতের মধ্যে আরেকটি হলো, ঊর্ধ্ব জগত ও নিম্ন জগতের সব কিছুই তাঁর কাছে অনুগত ও নত।
তাঁর পূর্ণ ইজ্জত, কুদরত ও এ দুটি গুণ ব্যাপক হওয়ার আরেকটি প্রমাণ হলো, তিনি যেমনিভাবে বান্দাকে সৃষ্টি করেছেন, তেমনিভাবে তিনি তাদের আমল, আনুগত্য ও অবাধ্যতাও সৃষ্টি করেছেন; অথচ এগুলো বান্দারই কাজ। এগুলোকে আল্লাহর দিকে সম্পৃক্ত করা হয়ে এ হিসেবে যে, তিনি যেহেতু এগুলোর সৃষ্টিকারী ও পরিচালনাকারী। আর বান্দার দিকে বাস্তবিক ও প্রকৃতিগত ভাবে সম্বন্ধ করা হয়, যেহেতু বান্দাই কাজটি করে। এভাবে বললে বিষয়টিতে কোন বৈপরীত্য নেই। কেননা তাদের শক্তি-সামর্থ, ও ইচ্ছাশক্তির স্রষ্টা, এমনিভাবে তিনি কোন কাজে সংঘটিত হওয়ার কারণ ও ও উপকরণেরও স্রষ্টিকারী। আল্লাহ তা‘আলা বলেছেন,
“অথচ আল্লাহই তোমাদেরকে এবং তোমরা যা কর তা সৃষ্টি করেছেন?” [সূরা আস-সাফফাত, আয়াত: ৯৬]
আল্লাহর অপরিসীম কুদরতের আরেকটি নিদর্শন হলো, তিনি তাঁর কিতাবে তাঁর প্রিয় বান্দাদেরকে যুগে যুগে শত্রুর মোকাবিলায় সাহায্য করেছেন, বিজয় দান করেছেন; যদিও শত্রুরা সংখ্যায় ছিল অনেক এবং তাদের সমর প্রস্তুতিও ছিল ব্যাকপ, আর মুমিনরা সংখ্যায় অতি নগণ্য ছিল। আল্লাহ তা‘আলা বলেছেন,
“কত ছোট দল আল্লাহর হুকুমে বড় দলকে পরাজিত করেছে!” [সূরা আল-বাকারা, আয়াত: ২৪৯]
তাঁর কুদরত ও রহমতের নিদর্শন হলো, তিনি জান্নাতীদের সুখ-শান্তি, চিরস্থায়ী অফুরন্ত নি‘আমত ও জাহান্নামীদের নানা ধরণের আযাব সম্পর্কে আগেই বর্ণনা করে দিয়েছেন। [6]
[1] আল্লাহ তা‘আলা বলেছেন,
﴿إِنَّ رَبَّكَ هُوَ ٱلۡقَوِيُّ ٱلۡعَزِيزُ٦٦﴾ [هود: ٦٦]
“নিশ্চয় আপনার রব, তিনি শক্তিশালী, পরাক্রমশালী।” [সূরা হূদ, আয়াত: ৬৬]
[2] আল্লাহ তা‘আলা বলেছেন,
﴿إِنَّ ٱللَّهَ هُوَ ٱلرَّزَّاقُ ذُو ٱلۡقُوَّةِ ٱلۡمَتِينُ٥٨﴾ [الذاريات: ٥٨]
“নিশ্চয় আল্লাহই রিযিকদাতা, তিনি শক্তিধর, পরাক্রমশালী।” [সূরা আয-যারিয়াত, আয়াত: ৫৮]
[3] আল্লাহ তা‘আলা বলেছেন,
﴿وَٱللَّهُ قَدِيرٞۚ وَٱللَّهُ غَفُورٞ رَّحِيمٞ٧﴾ [الممتحنة : ٧]
“আর আল্লাহ সর্ব শক্তিমান এবং আল্লাহ অতিশয় ক্ষমাশীল, পরম দয়ালু।” [সূরা আল-মুমতাহিনা, আয়াত: ৭]
[4] আল-হাক্কুল ওয়াদিহ আল-মুবীন, পৃ. ৪৪; তাওদীহুল কাফিয়া আশ-শাফিয়া, পৃ. ১১৯।
[5] আত-তাফসীর, ৫/৬২৪।
[6] আল-হাক্কুল ওয়াদিহ আল-মুবীন, পৃ. ৪৪-৪৬; আত-তাফসীর, ১/৩৫৬ ও ৫/৫৬৩।
এ মহান নামগুলো অর্থ খুব কাছাকাছি। আল্লাহ তা‘আলা পূর্ণ ক্ষমতা, মহাকুদরত ও সর্বব্যাপী সম্মানের অধিকারী। আল্লাহ তা‘আলা বলেছেন,
﴿إِنَّ ٱلۡعِزَّةَ لِلَّهِ جَمِيعًا٦٥﴾ [يونس : ٦٥]
“নিশ্চয় সকল মর্যাদা আল্লাহর।” [সূরা ইউনুস, আয়াত: ৬৫][4]
আল-আযীয হলেন যার রয়েছে সকল মর্যাদা। ক্ষমতার মর্যাদা, বিজয়ের মর্যাদা, কোন কিছু বারণ করার মর্যাদা। সুতরাং সৃষ্টিকুলের কেউ তাঁকে ধরা ছোঁয়া অসম্ভব, কেউ তাঁর সমকক্ষ হওয়া অসম্ভব। তিনি সমস্ত অস্তিত্বশীলকে ধমক ও ক্ষমতার মধ্যে আবদ্ধ রাখেন, সৃষ্টিকুল তাঁর নৈকট্য লাভের প্রচেষ্টায় ব্যস্ত, তাঁর মহা ক্ষমতা ও বড়ত্বের কারণে সবাই তাঁর সমীপে নতশির।[5]
সুতরাং ইজ্জতের তিনটি অর্থের সবগুলোই পূর্ণরূপে মহান আল্লাহর মধ্যে বিদ্যমান। আল-আযীম তথা মহা সম্মানিত নাম তাঁর মহা শক্তির মর্যাদা প্রমাণ করে। আল্লাহর এ নামের আরেকটি অর্থ আল-কাবীউ (সর্বশক্তিমান, শক্তিশালী), আল-মাতীন (সুদৃঢ়, সুস্থির)। এটি আল্লাহর মহান সিফাত, সৃষ্টিকুলের কেউ এ শক্তির অধিকারী নয়; সে যত বড়ই হোক না কেন। আল-আযীযের আরেক অর্থ পরমুখাপেক্ষীহীনতার মর্যাদা।
মহান আল্লাহ যাতীগত ভাবেই মুখাপেক্ষীহীন, কারো কাছে তাঁর কোন প্রয়োজন নেই, বান্দারা সকলে মিলে তাঁর কোন ক্ষতি করতে চাইলেও তারা তাঁর কোন ক্ষতি করতে সক্ষম হবে না, আবার তারা সবাই মিলে তাঁর কোন উপকার করতে চাইলেও তাঁর কোন উপকার করতে পারবে না; বরং তিনিই ক্ষতিকারী, উপকারকারী, দানকারী এবং তিনিই দান দেওয়া থেকে বারণকারী।
তাঁর রয়েছে সমস্ত সৃষ্টির উপর ক্ষমতা, প্রভাব ও বিজয় লাভের মর্যাদা। সমস্ত সৃষ্টিই তাঁর মহত্ব ও বড়ত্বের সামনে বিনয়ী, নতশির এবং তাঁর ইচ্ছায় আনুগত্যশীল। অত:এব, সমস্ত সৃষ্টির ভাগ্য তাঁরই হাতে। তাঁর থেকে এক ইঞ্চি পরিমাণও নড়চড় করে না, তাঁর ইচ্ছা, শক্তি ও অনুমতি ব্যতীত কোন কিছুই পরিবর্তন ও নড়াচড়া করতে সক্ষম নয়। তিনি যা চান তা-ই হয়, আর তিনি যা চান না তা কখনও হবে না।
তিনি ব্যতীত কারো কোন শক্তি ও সামর্থ নেই। তাঁর শক্তি ও ইচ্ছার একটি উদাহরণ হলো, তিনি মাত্র ছয় দিনে আসমান, জমিন ও এর মধ্যকার সব কিছু সৃষ্টি করেছেন। তিনি সমস্ত সৃষ্টি সৃষ্টি করেছেন, অত:পর তিনি তাদেরকে মৃত্যু দান করবেন, তিনি আবার তাদেরকে পুনরুত্থিত করবেন এবং সকলেই তাঁর কাছে প্রত্যাবর্তন করবে। আল্লাহ তা‘আলা বলেছেন,
﴿مَّا خَلۡقُكُمۡ وَلَا بَعۡثُكُمۡ إِلَّا كَنَفۡسٖ وَٰحِدَةٍ٢٨﴾ [لقمان: ٢٨]
“তোমাদের সৃষ্টি ও তোমাদের পুনরুত্থান কেবল একটি প্রাণের (সৃষ্টি ও পুনরুত্থানের) মতই।” [সূরা লুকমান, আয়াত: ২৮]
﴿وَهُوَ ٱلَّذِي يَبۡدَؤُاْ ٱلۡخَلۡقَ ثُمَّ يُعِيدُهُۥ وَهُوَ أَهۡوَنُ عَلَيۡهِ٢٧﴾ [الروم: ٢٧]
“আর তিনিই সৃষ্টির সূচনা করেন তারপর তিনিই এর পুনরাবৃত্তি করবেন। আর এটা তো তাঁর জন্য অধিকতর সহজ।” [সূরা আর-রূম, আয়াত: ২৭] তাঁর কদরতের অন্যতম নিদর্শন হলো, তুমি জমিনকে দেখতে পাবে শুষ্কাবস্থায়, অতঃপর যখনই তিনি তাতে পানি বর্ষণ করেন, তখন তা আন্দোলিত ও স্ফীত হয় এবং উদগত করে সকল প্রকার সুদৃশ্য উদ্ভিদ। তাঁর কুদরতের আরেকটি নিদর্শন হলো, পূর্ববর্তী মিথ্যাবাদী, কাফির ও যালিমদের উপর নানা ধরণের আযাব ও গজব পতিত হওয়া কিন্তু আল্লাহর আযাব যখন তাদের উপর এসেছে তখন তাদের কোন কৌশল, ষড়যন্ত্র, চক্রান্ত, ধন-সম্পদ, সৈন্য ও বড় বড় দুর্গ তাদের কোন কাজে আসে নি, তারা সে আযাব প্রতিরোধ করতে পারে নি।
তারপর যখন রবের নির্দেশ আসল তখন তাদের এসব কোন উপকারে আসে নি এবং তারা ধ্বংস ছাড়া তাদের আর কিছুই বৃদ্ধি করে নি। বিশেষ করে সে সময় যখন তাদের শক্তি সামর্থ ছিল প্রচুর, আবিষ্কার ছিল নানা ধরণের, সে জাতির সামর্থ এমন পর্যায়ে পৌঁছেছিল যে, তারা ভেবেছিল তারা আল্লাহর চেয়েও শক্তিশালী, তাঁর চেয়েও অধিক জ্ঞানী; কিন্তু তাদের কোন জ্ঞান ও শক্তিই কোন কাজে আসে নি।
আল্লাহর নিদর্শনাবলীর অন্যতম হলো, সৃষ্টির শক্তি, কুদরত, আবিষ্কার কোন কিছুই আল্লাহর বালা-মুসিবত, শাস্তি ও ধ্বংস থেকে রক্ষা করতে পারবে না; যদিও তারা এর মোকবিলায় তাদের সর্বাত্মক চেষ্টা ব্যয় করে। কিন্তু আল্লাহর নির্দেশই সর্বদা বিজয় লাভ করে। তাঁর কুদরতের মধ্যে আরেকটি হলো, ঊর্ধ্ব জগত ও নিম্ন জগতের সব কিছুই তাঁর কাছে অনুগত ও নত।
তাঁর পূর্ণ ইজ্জত, কুদরত ও এ দুটি গুণ ব্যাপক হওয়ার আরেকটি প্রমাণ হলো, তিনি যেমনিভাবে বান্দাকে সৃষ্টি করেছেন, তেমনিভাবে তিনি তাদের আমল, আনুগত্য ও অবাধ্যতাও সৃষ্টি করেছেন; অথচ এগুলো বান্দারই কাজ। এগুলোকে আল্লাহর দিকে সম্পৃক্ত করা হয়ে এ হিসেবে যে, তিনি যেহেতু এগুলোর সৃষ্টিকারী ও পরিচালনাকারী। আর বান্দার দিকে বাস্তবিক ও প্রকৃতিগত ভাবে সম্বন্ধ করা হয়, যেহেতু বান্দাই কাজটি করে। এভাবে বললে বিষয়টিতে কোন বৈপরীত্য নেই। কেননা তাদের শক্তি-সামর্থ, ও ইচ্ছাশক্তির স্রষ্টা, এমনিভাবে তিনি কোন কাজে সংঘটিত হওয়ার কারণ ও ও উপকরণেরও স্রষ্টিকারী। আল্লাহ তা‘আলা বলেছেন,
﴿وَٱللَّهُ خَلَقَكُمۡ وَمَا تَعۡمَلُونَ٩٦﴾ [الصافات : ٩٦]
“অথচ আল্লাহই তোমাদেরকে এবং তোমরা যা কর তা সৃষ্টি করেছেন?” [সূরা আস-সাফফাত, আয়াত: ৯৬]
আল্লাহর অপরিসীম কুদরতের আরেকটি নিদর্শন হলো, তিনি তাঁর কিতাবে তাঁর প্রিয় বান্দাদেরকে যুগে যুগে শত্রুর মোকাবিলায় সাহায্য করেছেন, বিজয় দান করেছেন; যদিও শত্রুরা সংখ্যায় ছিল অনেক এবং তাদের সমর প্রস্তুতিও ছিল ব্যাকপ, আর মুমিনরা সংখ্যায় অতি নগণ্য ছিল। আল্লাহ তা‘আলা বলেছেন,
﴿كَم مِّن فِئَةٖ قَلِيلَةٍ غَلَبَتۡ فِئَةٗ كَثِيرَةَۢ بِإِذۡنِ ٱللَّهِ٢٤٩﴾ [البقرة: ٢٤٩]
“কত ছোট দল আল্লাহর হুকুমে বড় দলকে পরাজিত করেছে!” [সূরা আল-বাকারা, আয়াত: ২৪৯]
তাঁর কুদরত ও রহমতের নিদর্শন হলো, তিনি জান্নাতীদের সুখ-শান্তি, চিরস্থায়ী অফুরন্ত নি‘আমত ও জাহান্নামীদের নানা ধরণের আযাব সম্পর্কে আগেই বর্ণনা করে দিয়েছেন। [6]
[1] আল্লাহ তা‘আলা বলেছেন,
﴿إِنَّ رَبَّكَ هُوَ ٱلۡقَوِيُّ ٱلۡعَزِيزُ٦٦﴾ [هود: ٦٦]
“নিশ্চয় আপনার রব, তিনি শক্তিশালী, পরাক্রমশালী।” [সূরা হূদ, আয়াত: ৬৬]
[2] আল্লাহ তা‘আলা বলেছেন,
﴿إِنَّ ٱللَّهَ هُوَ ٱلرَّزَّاقُ ذُو ٱلۡقُوَّةِ ٱلۡمَتِينُ٥٨﴾ [الذاريات: ٥٨]
“নিশ্চয় আল্লাহই রিযিকদাতা, তিনি শক্তিধর, পরাক্রমশালী।” [সূরা আয-যারিয়াত, আয়াত: ৫৮]
[3] আল্লাহ তা‘আলা বলেছেন,
﴿وَٱللَّهُ قَدِيرٞۚ وَٱللَّهُ غَفُورٞ رَّحِيمٞ٧﴾ [الممتحنة : ٧]
“আর আল্লাহ সর্ব শক্তিমান এবং আল্লাহ অতিশয় ক্ষমাশীল, পরম দয়ালু।” [সূরা আল-মুমতাহিনা, আয়াত: ৭]
[4] আল-হাক্কুল ওয়াদিহ আল-মুবীন, পৃ. ৪৪; তাওদীহুল কাফিয়া আশ-শাফিয়া, পৃ. ১১৯।
[5] আত-তাফসীর, ৫/৬২৪।
[6] আল-হাক্কুল ওয়াদিহ আল-মুবীন, পৃ. ৪৪-৪৬; আত-তাফসীর, ১/৩৫৬ ও ৫/৫৬৩।