সালাফী আকিদা ও মানহাজে - Salafi Forum

Salafi Forum হচ্ছে সালাফী ও সালাফদের আকিদা, মানহাজ শিক্ষায় নিবেদিত একটি সমৃদ্ধ অনলাইন কমিউনিটি ফোরাম। জ্ঞানগর্ভ আলোচনায় নিযুক্ত হউন, সালাফী আলেমদের দিকনির্দেশনা অনুসন্ধান করুন। আপনার ইলম প্রসারিত করুন, আপনার ঈমানকে শক্তিশালী করুন এবং সালাফিদের সাথে দ্বীনি সম্পর্ক গড়ে তুলুন। বিশুদ্ধ আকিদা ও মানহাজের জ্ঞান অর্জন করতে, ও সালাফীদের দৃষ্টিভঙ্গি শেয়ার করতে এবং ঐক্য ও ভ্রাতৃত্বের চেতনাকে আলিঙ্গন করতে আজই আমাদের সাথে যোগ দিন।

প্রবন্ধ আল-আউয়াল আল-আখির আল-বাতিন নামের অর্থ ও ব্যাখ্যা

Abu Abdullah

Knowledge Sharer

ilm Seeker
Uploader
Salafi User
Threads
745
Comments
997
Solutions
19
Reactions
10,257
Credits
6,303
আল-আউয়াল[1]: আল-আউয়াল (প্রথম), আল-আখির (শেষ), আয-যাহির (প্রকাশ্য), আল-বাতিন (গোপন)।

এ নামের পূর্ণাঙ্গ ও সুস্পষ্ট ব্যাখ্যা রাসূলুল্লাহ্ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম নিম্নোক্ত হাদীসে দিয়েছেন। তিনি সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন,

«أَنْتَ الْأَوَّلُ فَلَيْسَ قَبْلَكَ شَيْءٌ، وَأَنْتَ الْآخِرُ فَلَيْسَ بَعْدَكَ شَيْءٌ، وَأَنْتَ الظَّاهِرُ فَلَيْسَ فَوْقَكَ شَيْءٌ، وَأَنْتَ الْبَاطِنُ فَلَيْسَ دُونَكَ شَيْءٌ».​

“আপনিই প্রথম, আপনার আগে আর কিছু নেই; আপনিই শেষ, আপনার পরে আর কিছুই নেই। আপনিই প্রকাশ্য, আপনার চেয়ে প্রকাশ্য আর কিছুই নেই। আর আপনিই অপ্রকাশ্য, আপনার চাইতে গোপন আর কিছুই নেই।”[2]

রাসূলুল্লাহ্ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম উক্ত হাদীসে আল্লাহর নামগুলোকে তার অর্থানুযায়ী ব্যাখ্যা করেছেন এবং এসব নামের বিপরীত অর্থকে প্রত্যাখান করেছেন।[3] গনণাকারীগণ যত সময়-ই গণনা করুন, পূর্ববর্তী যত সময়-ই নির্ধারণ করুক, আল্লাহ সে সময়ের আগেই বিদ্যমান এবং পরবর্তী সময়ে যতই সময় আসুক, যতই দিন চলতে থাকুক আল্লাহ সে সময়ের পরেও বিদ্যমান। এ কারণেই ওয়াজিবুল ওয়াজুদ তথা সদা বিদ্যমান গুণটি একমাত্র তাঁর জন্যই নির্দিষ্ট। কেননা সদা বিদ্যমান গুণটি একমাত্র সে সত্ত্বার জন্য প্রযোজ্য যা পূর্ণাঙ্গ অস্তিত্বমান, সদা বিদ্যমান। অত:এব, তাঁর অস্তিত্বের সর্বদা বিরাজমানে কেউ অংশিদার নেই। তিনি সব সময়ই তাঁর পরিপূর্ণ গুণাবলী সহকারে বিদ্যমান। তিনিই সময় সৃষ্টি করেছেন। সব কিছুর অস্তিত্ব ও বিলিন হওয়া আল্লাহর উপরই নির্ভরশীল।[4]

আল-আউয়াল (প্রথম):

তিনি প্রথম। এ নাম প্রমাণ করে যে, তিনি ব্যতীত যা কিছু আছে তা সৃষ্টিশীল ও ধ্বংসশীল যা একসময় ছিল না এবং এক সময় আবার থাকবে না। বান্দার উপর কর্তব্য হলো, সে দীন ও দুনিয়া সব ব্যাপারে তার রবের নি‘আমত স্মরণ করবে ও অনুভব করবে; যেতেতু সমস্ত সবব (দুনিয়ায় আগমনের কারণ) ও মুসাব্বাব (যার কারণে সে আসতে পেরেছে) তাঁর থেকেই।

আল-আখির (শেষ):

তিনিই শেষ। এ নামের দ্বারা বুঝা যায় যে, তিনিই শেষ গন্তব্য, তিনি অমুখাপেক্ষী। কোন কিছু চাওয়া-পাওয়া, আশা-আকাঙ্ক্ষা ও যাবতীয় প্রয়োজনে সমস্ত সৃষ্টি তাঁর কাছেই মুখাপেক্ষী ও নির্ভরশীল।

আয-যাহির: তিনি প্রকাশ্য, স্পষ্ট। এ নাম দ্বারা তাঁর বড়ত্ব ও মহান গুণ বুঝায়। সৃষ্টিকুলের থেকে তাঁর যাতী ও সিফাতী মহানত্ব ও উচুঁ মর্যাদা প্রমাণ করে।

আল-বাতিন (অতি গোপন):

তিনি অপ্রকাশ্য, গোপন। এ নাম দ্বারা তাঁর গোপন রহস্য, অপ্রকাশ্য বিষয়াদি, লুকায়িত জিনিস ও সূক্ষ্ম বিষয়াদি প্রমাণ করে। এমনিভাবে এ নাম তাঁর পরিপূর্ণ নিকটবর্তীতাও বুঝা যায় এবং এটি আয-যাহির নামের বিপরীত নয়। কেননা আল্লাহ যাবতীয় গুণাবলীতে কারো সাদৃশ নয়। তিনি নিকটর্তীতার হিসেবে আল-‘আলী তথা উঁচু আবার উঁচু মর্যাদার হিসেবে তিনি আল-কারীব তথা অতি নিকটবর্তী।


[1] এ নামের দলিল হলো আল্লাহর নিম্নোক্ত আয়াত:

﴿هُوَ ٱلۡأَوَّلُ وَٱلۡأٓخِرُ وَٱلظَّٰهِرُ وَٱلۡبَاطِنُۖ وَهُوَ بِكُلِّ شَيۡءٍ عَلِيمٌ٣﴾ [الحديد: ٣]​

“তিনিই প্রথম ও শেষ এবং প্রকাশ্য ও গোপন।” [সূরা আল-হাদীদ, আয়াত: ৩]

[2] সহীহ মুসলিম, হাদীস নং ২৭১৩।
[3] আল-হাক্কুল ওয়াদিহ আল-মুবীন, পৃ. ২৫।
[4] তাওদীহুল কাফিয়া আশ-শাফিয়া, পৃ. ১১৬ ও ১১৭।
 
Top