(১) ইমাম ইবনুল জাওযী বর্ণনা করেন, একদিন আমরা মন্ত্রী ইবনু হুবায়রার পাশে বসে ছিলাম। এ সময় এক ব্যক্তি অপর এক ব্যক্তিকে হাতকড়া লাগিয়ে তার নিকট নিয়ে এসে বলল, সে আমার ভাইকে হত্যা করেছে। মন্ত্রী তাকে জিজ্ঞেস করলেন, তুমি কি তার ভাইকে হত্যা করেছ?, সে স্বীকার করল। নিহতের ভাই বলল, সে যেহেতু স্বীকার করেছে, তাকে আমাদের হাতে সোপর্দ করুন, আমরা তাকে হত্যা করব। তিনি আসামীর দিকে তাকিয়ে চিনে ফেললেন যে, এ ব্যক্তি তাঁর গ্রাম আদ-দূরের অধিবাসী। সে মন্ত্রীর সাথে কোন এক সময় খারাপ আচরণ করেছিল। তিনি বললেন, তাকে হত্যা কর না; বরং তাকে ছেড়ে দাও। এ কথা শুনে বাদী বলল, এটা কি করে হয়, সে তো আমার ভাইয়ের হত্যাকারী? মন্ত্রী বললেন, তোমরা তাকে বিক্রি করে দাও। অতঃপর তিনি নিজে ছয়শ’ দীনার দিয়ে তাকে কিনে নিয়ে মুক্ত করে দিলেন এবং বললেন, তুমি এখানে যতদিন ইচ্ছা অবস্থান কর। শুধু তাই নয় মন্ত্রী ইবনু হুবায়রা তাকে ৫০ দীনারও প্রদান করলেন। আমরা বললাম, আপনি তো তার সাথে অত্যন্ত সদাচরণ করলেন। মহানুভবতার পরিচয় দিলেন এবং তার প্রতি সর্বোচ্চ ইহসান করলেন। তখন তিনি বললেন, তোমরা কি জান যে, আমি ডান চোখে কিছু দেখতে পাই না? আমরা বললাম, আমাদের তো তা জানা নেই! তিনি বললেন, মূলতঃ আমার ডান চোখ অন্ধ। আর এর জন্য এ ব্যক্তিই দায়ী, যার পক্ষ থেকে আমি মুক্তিপণ আদায় করলাম এবং ইহসান করলাম। একদিন আমি আদ-দূরের এক রাস্তায় বসেছিলাম, আমার হাতে ফিক্হের একটি কিতাব ছিল, যা পাঠে আমি মশগূল ছিলাম। এ ব্যক্তি একটি ফলের টুকরী নিয়ে এসে বলল, এটা বহন করে আমার সাথে চল। আমি বললাম, আমি ব্যস্ত, অন্য কাউকে ঠিক কর। তখন সে সজোরে আমাকে চড়-ঘুষি মারা শুরু করল। এমনকি সে আমার চোখ উপড়ে ফেলল। অতঃপর সে চলে গেল। এরপর আমি তাকে কোথাও দেখিনি। আমার সাথে তার কৃত আচরণের কথা স্মরণ করে ভাবলাম, আমি সাধ্যমত ভালো কাজের মাধ্যমে তার খারাপ আচরণের প্রতিদান দিব। আমি তাকে এই দুরবস্থায় দেখে প্রতিশোধ না নিয়ে অনুগ্রহ করলাম।
(২) একদিন এক তুর্কী সিপাহী ইবনু হুবায়রার কক্ষে প্রবেশ করল। তখন তিনি তাঁর নিরাপত্তারক্ষীদেরকে বললেন, তাকে বিশ দীনার দিয়ে বাহির থেকেই বিদায় করে দাও। সে যেন দ্বিতীয়বার আমার দফতরে প্রবেশ করতে না পারে। অতঃপর তিনি পাশে বসে থাকা লোকদেরকে বললেন, একদা আমার গ্রাম আদ-দূরে এক ব্যক্তি নিহত হল। তখন তুর্কী সিপাহীরা এসে আমাকে সহ গ্রামবাসীকে তাড়িয়ে নিয়ে চলল। এ সিপাহী ঐ ব্যক্তি, আমরা যার নিয়ন্ত্রণে ছিলাম। সে আমাদের হাত পিছনে বেঁধে নিজে ঘোড়ায় আরোহণ করে আমাদেরকে তার আগে চলার নির্দেশ দিল। পথিমধ্যে আমার সাথীরা তাকে টাকা দিতে লাগল। যে টাকা দেয়, সিপাহী তাকে ছেড়ে দেয়। কিন্তু আমার নিকটে নিজেকে মুক্ত করানোর মত কিছুই ছিল না। সে তখন আমাকে নির্দয়ভাবে প্রহার করতে থাকে। আছরের ছালাতের সময় হয়ে গেল। আমি ছালাতের জন্য অনুমতি চাইলাম। সে অনুমতি না দিয়ে উল্টো আমাকে গালি দিল। আজ তার অবস্থা কিভাবে পরিবর্তন হয়েছে? আল্লাহ আমাকে তার উপরে বিজয়ী করেছেন। আমি চাইলে আজ তার কাছ থেকে বদলা নিতে পারতাম। কিন্তু আমি তাকে ক্ষমা করে দিলাম।
— ইবনু কাছীর, আল-বিদায়াহ ১২/২৫০; ইবনু রজব, কিতাবুল যাইল আলা ত্বাবাকাতিল হানাবেলা ২/১২৭; যাহাবী, সিয়ারু আ‘লামিন নুবালা ১৫/১৭৪
— মাসিক আত তাহরীক, ফেব্রুয়ারী ২০১৫
(২) একদিন এক তুর্কী সিপাহী ইবনু হুবায়রার কক্ষে প্রবেশ করল। তখন তিনি তাঁর নিরাপত্তারক্ষীদেরকে বললেন, তাকে বিশ দীনার দিয়ে বাহির থেকেই বিদায় করে দাও। সে যেন দ্বিতীয়বার আমার দফতরে প্রবেশ করতে না পারে। অতঃপর তিনি পাশে বসে থাকা লোকদেরকে বললেন, একদা আমার গ্রাম আদ-দূরে এক ব্যক্তি নিহত হল। তখন তুর্কী সিপাহীরা এসে আমাকে সহ গ্রামবাসীকে তাড়িয়ে নিয়ে চলল। এ সিপাহী ঐ ব্যক্তি, আমরা যার নিয়ন্ত্রণে ছিলাম। সে আমাদের হাত পিছনে বেঁধে নিজে ঘোড়ায় আরোহণ করে আমাদেরকে তার আগে চলার নির্দেশ দিল। পথিমধ্যে আমার সাথীরা তাকে টাকা দিতে লাগল। যে টাকা দেয়, সিপাহী তাকে ছেড়ে দেয়। কিন্তু আমার নিকটে নিজেকে মুক্ত করানোর মত কিছুই ছিল না। সে তখন আমাকে নির্দয়ভাবে প্রহার করতে থাকে। আছরের ছালাতের সময় হয়ে গেল। আমি ছালাতের জন্য অনুমতি চাইলাম। সে অনুমতি না দিয়ে উল্টো আমাকে গালি দিল। আজ তার অবস্থা কিভাবে পরিবর্তন হয়েছে? আল্লাহ আমাকে তার উপরে বিজয়ী করেছেন। আমি চাইলে আজ তার কাছ থেকে বদলা নিতে পারতাম। কিন্তু আমি তাকে ক্ষমা করে দিলাম।
— ইবনু কাছীর, আল-বিদায়াহ ১২/২৫০; ইবনু রজব, কিতাবুল যাইল আলা ত্বাবাকাতিল হানাবেলা ২/১২৭; যাহাবী, সিয়ারু আ‘লামিন নুবালা ১৫/১৭৪
— মাসিক আত তাহরীক, ফেব্রুয়ারী ২০১৫