‼️ পোস্টটি সুন্দরভাবে দেখতে এখানে ক্লিক করুন।‼️

প্রশ্নোত্তর আধুনিক যোগাযোগ মাধ্যমে শোক সংবাদ প্রচার করা

FORUM BOT

Doing Automated Jobs

Threads
4,139
Comments
4,353
Solutions
1
Reactions
37,583
Credits
24,212
প্রশ্ন: আমাদের কিছু ভায়েরা (আল্লাহ্‌ তাদেরকে উত্তম প্রতিদান দিন) ফেইসবুক, টুইটার ও ওয়াটসআপে কিছু পেইজ খুলেছেন যে সব পেইজে তারা তাদের শহরের শোক সংবাদগুলো প্রচার করেন। তারা জানাযার নামাযের তথ্য জানাতে তাদের বন্ধু-বান্ধবদের মোবাইলে মেসেজও পাঠান। এ ধরণের কর্ম কি শরিয়তে নিষিদ্ধ প্রচারণার অধীনে পড়বে?


উত্তর


এক: ইসলামে শোক সংবাদ তিন প্রকার: হারাম, মাকরুহ ও মুবাহ।


হারাম শোক সংবাদ: যে প্রচারণা জাহেলি যুগের প্রচারণার মত। সাধারণ গণজমায়েতের স্থানগুলোতে ঘোষণার মাধ্যমে মৃত্যুর সংবাদ জ্ঞাপন এবং সাথে মৃতব্যক্তির বংশীয়-গৌরব ও কীর্তিগুলো উল্লেখ করা কিংবা ঘোষণার সাথে বিলাপ, আর্তনাদ ও হাহুতাশ প্রকাশ করা হয়।


মাকরুহ শোক সংবাদ: বংশীয়-গৌরবগাঁথা কিংবা কীর্তি উল্লেখ না করে ঘোষণার মাধ্যমে মৃত্যু সংবাদ জ্ঞাপন করা ও স্বর উচ্চ করা।


আর মুবাহ বা বৈধ শোক সংবাদ: কোন ঘোষণা ব্যতীত শুধু মৃতব্যক্তির মৃত্যুর সংবাদটা জ্ঞাপন করা।


সুন্নাহ্‌র দলিলগুলো শেষ প্রকারের শোক সংবাদ বৈধ হওয়ার প্রমাণ বহন করে। যেমন নাজাশির ক্ষেত্রে, মুতা যুদ্ধের শহীদদের ক্ষেত্রে ও অন্যান্য ক্ষেত্রে নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম শোকবার্তা জানিয়েছিলেন।


ইতিপূর্বে 60008 নং প্রশ্নোত্তরে এটি জায়েয হওয়ার পক্ষে আলেমদের বক্তব্যগুলো উল্লেখ করা হয়েছে।


কাসানি বলেন: "মৃতব্যক্তির মৃত্যু সংবাদ তার আত্মীয়স্বজন, বন্ধুবান্ধব ও প্রতিবেশীদেরকে জ্ঞাপন করতে কোন আপত্তি নেই; যাতে করে তারা জানাযার নামায পড়া, দোয়া করা ও দাফনে অংশগ্রহণ করার মাধ্যমে মৃতব্যক্তির হক আদায় করতে পারে। আর যেহেতু সংবাদ দেয়ার মধ্যে নেক কাজের প্রতি উদ্বুদ্ধকরণ ও প্রস্তুতি নেয়ার প্রতি উৎসাহিত করণ রয়েছে। তাই এটি নেকী ও তাকওয়ার কাজে সহযোগিতা করার মধ্যে পড়বে এবং ভাল কাজের মাধ্যম হওয়া ও সন্ধান দেয়ার পর্যায়ভুক্ত হবে।"[বাদায়িউস সানায়ি (৩/২০৭)]


স্থায়ী কমিটির ফতোয়াসমগ্রে (৮/৪০২) এসেছে যে, কেউ মারা গেলে তার আত্মীয়স্বজন, বন্ধুবান্ধব ও প্রতিবেশীদেরকে আহ্বান করা জায়েয; যাতে করে তারা জানাযার নামায পড়তে পারে, তার জন্য দোয়া করতে পারে, তার লাশের সাথে যেতে পারে এবং দাফনকর্মে সহযোগিতা করতে পারে। কেননা নাজাশি যখন মারা গিয়েছিল তখন নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তাঁর সাথীবর্গকে তার মৃত্যুর সংবাদ জানিয়েছেন যাতে করে তারা তার জানাযার নামায পড়তে পারে।


দুই: সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমগুলো যেমন- ফেইসবুক, টুইটার ও ওয়াটসআপ ইত্যাদিতে কিংবা ইমেইলে ও মোবাইল মেসেজে কারো মৃত্যু সংবাদ প্রচার করতে কোন আপত্তি নেই; যদি এর উদ্দেশ্য হয় যাতে করে মানুষ জানাযার নামাযে উপস্থিত হতে পারে, মৃতব্যক্তির জন্য দোয়া ও ইস্তিগফার (ক্ষমাপ্রার্থনা) করতে পারে কিংবা মৃতের পরিবার-পরিজনের প্রতি সমবেদনা জানাতে পারে। কেননা এ অবহিতকরণ এ সমস্ত নেক কাজের মাধ্যম।


শাইখ বিন বায (রহঃ)কে পত্র-পত্রিকায় মৃত্যু সংবাদ প্রচার করা সম্পর্কে জিজ্ঞেস করা হলে তিনি বলেন: "খবর হিসেবে জানানোর ক্ষেত্রে আমরা কোন আপত্তিকর কিছু জানি না।"[মাসায়িলুল ইমাম বিন বায (পৃষ্ঠা-১০৮)]


শাইখ উছাইমীন বলেন: "পক্ষান্তরে, মৃতব্যক্তির মৃত্যুর সংবাদ জ্ঞাপন করা: যদি কোন কল্যাণের কারণে হয়; যেমন- মৃতব্যক্তির সাথে মানুষের আদান-প্রদানের ব্যাপক লেনদেন থাকে এবং তার মৃত্যু সংবাদ প্রচার করা হলে তার কাছে কারো পাওনা থাকলে তার পাওনা তাকে বুঝিয়ে দেওয়া যাবে কিংবা এ ধরণের কিছু: তাহলে তাতে কোন আপত্তি নেই।"[মাজমুউ ফাতাওয়া ওয়া রাসায়িলি উছাইমীন (১৭/৪৬১)]


শাইখ বিন জিবরীন (রহঃ) বলেন: "নেককাজ ও ভালকাজের মাধ্যমে মশহুর হয়েছেন এমন ব্যক্তিদের মৃত্যু সংবাদ প্রচার করতে কোন আপত্তি নেই; যাতে করে তাদের জন্য রহমত প্রার্থনা করা হয় এবং মুসলমানদের পক্ষ থেকে দোয়া করা হয়। তবে, এমন প্রশংসা করা জায়েয নয় যা তাদের মধ্যে নেই। কেননা সেটা হবে স্পষ্ট মিথ্যা।"[ফাতাওয়া ইসলামিয়্যা (২/১০৬) থেকে সমাপ্ত]


আল্লাহ্‌ই সর্বজ্ঞ।


সূত্রঃ ইসলাম জিজ্ঞাসা ও জবাব
 

Share this page