আত্মার সংশোধন ও সংস্কারে মৃত্যুর স্মরণ অনেক বড় প্রভাব ফেলে। কারণ, মানুষের আত্মা দুনিয়া ও দুনিয়ার বিলাস-ব্যসনে প্রভাবিত থাকে, এ জীবনে দীর্ঘকাল স্থায়ী হওয়ার আশা রাখে, কখনো কখনো গুনাহর দিকে ঝাঁপিয়ে পড়ে, কখনো কখনো ইবাদতে ঘাটতি করে; কিন্তু যদি মৃত্যু সর্বদা বান্দার মনের মধ্যে সটান হয়ে বিরাজ করে, তবে বান্দার চোখে দুনিয়ার মূল্য কমে আসে, মৃত্যুর স্মরণ বান্দাকে তার নফসের সংশোধনে, বক্রতাকে সঠিক করতে সচেষ্ট করে।
আনাস বিন মালিক (রাদিআল্লাহু আনহু) হতে বর্ণিত, রাসুল (সল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম) বলেন, 'তোমরা দুনিয়ার স্বাদ বিনষ্টকারী মৃত্যুকে অধিক পরিমাণে স্মরণ করো। জীবনের সংকীর্ণতায় যদি কেউ মৃত্যুকে স্মরণ করে, তবে তার জীবনে প্রশস্ততা আসে। আর প্রশস্ততায় মৃত্যুকে স্মরণ করলে জীবন সংকীর্ণ হয়। — শুআবুল ইমান, ইবনে হিব্বান (রাহিমাহুল্লা) কৃত সহিহ, বাজ্জার (রাহিমাহুল্লাহ) তার মুসনাদে হাসান সনদে বর্ণনা করেন।
ইমাম ইবনুল মুবারক (রাহিমাহুল্লাহ) উল্লেখ করেন, সালিহ আল-মুররি বলেন, 'মৃত্যুর স্মরণ যখন কিছু সময়ের জন্য আমাকে ছেড়ে যায়, তখন আমার অন্তর কলুষিত হয়ে
পড়ে। — আয যুহদ ওয়ার রাকায়িক : ৮৮ পৃষ্ঠা
দাক্কাক (রাহিমাহুল্লাহ) বলেন, 'যে ব্যক্তি মৃত্যুকে স্মরণ করবে, সে তিনটি জিনিসের দান পাবে। যথা : ক. দ্রুত তাওবা করা । খ. হৃদয়ের পরিতুষ্টি। গ. ইবাদতে উদ্যম।
আর যে মৃত্যুকে ভুলে যায়, তিনটি জিনিস তার কাছে দ্রুত এসে পড়ে। যথা : ক. তাওবার দীর্ঘসূত্রতা। খ. যথেষ্টতায় পরিতুষ্ট হতে না পারা। গ. ইবাদতে অলসতা। — আত তাযকীরাহ : ৭ পৃষ্ঠা
কুরতুবি (রাহিমাহুল্লাহ) বলেন, 'মৃত্যুর স্মরণ এ ক্ষণস্থায়ী দুনিয়ার প্রতি বিরক্তিবোধ ও অনাগ্রহ তৈরি করে। আর জীবনের প্রতিটি মুহূর্তে চিরস্থায়ী আখিরাতের প্রতি
অভিমুখিতা সৃষ্টি করে। — আত তাযকীরাহ : ৮ পৃষ্ঠা
তিনি বর্ণনা করেন, এক নারী আয়িশা (রাদিআল্লাহু আনহা) -এর কাছে তার অন্তরের কাঠিন্যের অভিযোগ করল। তখন আয়িশা (রাদিআল্লাহু আনহা) তাকে বললেন, “বেশি বেশি মৃত্যুকে স্মরণ করো, তোমার অন্তর নরম হবে।” সে নারী এমনটাই করল, ফলে তার অন্তর সত্যিই নরম হলো। — আত তাযকীরাহ : ১২ পৃষ্ঠা
ইমাম কুরতুবি (রাহিমাহুল্লাহ) বলেন, 'আলিমগণ বলেন, মৃত্যুর স্মরণ পাপে প্রবেশ হতে ভীত রাখে। শক্ত অন্তরকে নরম করে। দুনিয়ার আনন্দ দূর করে। বিপদাপদ সহজ করে দেয়।’ — আত তাযকীরাহ : ১২ পৃষ্ঠা
কুরতুবি (রাহিমাহুল্লাহ) আরও বলেন, 'আলিমগণ বলেন, অন্তরের জন্য কবর জিয়ারতের চেয়ে অধিক উপকারী কিছু নেই। বিশেষ করে যদি কারও অন্তর শক্ত-কঠিন
হয়। যার অন্তর শক্ত, তাকে শক্ত-অন্তরের চিকিৎসা করতে হবে তিনটি কাজের মাধ্যমে :
১. নিজের সময়কে যে বাজে কাজে নষ্ট করে, তার উৎপাটন করতে হবে ইলমের মজলিসে হাজির হয়ে ওয়াজ-উপদেশ, করণীয় স্মরণ করা, জাহান্নামের ভয়, জান্নাতের উৎসাহ, নেককারদের ঘটনাবলি শুনে। কারণ, এসব আলোচনা অন্তরকে নরম করে।
২. মৃত্যুর স্মরণ : যার অন্তর শক্ত, তাকে মৃত্যুর কথা স্মরণ করতে হবে। যে মৃত্যু দুনিয়ার ভোগবিলাসের স্বাদ ধ্বংস করে। মানুষের কাছ থেকে তাকে আলাদা করে। সন্তানসন্ততিকে এতিম করে।
৩. মুমূর্ষু ব্যক্তিকে অবলোকন করা : মরণাপন্ন ব্যক্তিকে অবলোকন করা, তার মৃত্যুযন্ত্রণা দেখা, মৃত ব্যক্তির অবলোকিত অবস্থার কথা চিন্তা করা মানুষের অন্তর থেকে দুনিয়ার ভোগবিলাসের আকাঙ্ক্ষা দূর করে দেয়, অন্তর থেকে আনন্দ মুছে দেয়, চোখের ঘুম ও শরীরের আরাম কেড়ে নেয়, আমলে উৎসাহী ও সচেষ্ট করে, ইবাদতে মুজাহাদা বাড়িয়ে দেয়। — আত তাযকিরাহ : ১২ পৃষ্ঠা
ইমাম হাসান বসরি (রাহিমাহুল্লাহ) থেকে বর্ণিত, তিনি একবার এক রোগীকে দেখতে গেলেন। তাকে তিনি মৃত্যুযন্ত্রণায় কাতরাতে দেখলেন। তিনি তখন তার এ কঠিন
অবস্থার প্রতি দৃষ্টি দিলেন। রোগীকে দেখে ঘরে ফিরলেন। ঘর থেকে যেমন বেরিয়েছেলেন, ঘরে ফিরলেন ঠিক তার উল্টো অবস্থা বিবর্ণ চেহারা নিয়ে।
ঘরের লোকেরা বলল, "আল্লাহ আপনার ওপর রহম করুন, খাবার প্রস্তুত।” তখন তিনি বলে উঠলেন, “হে আমার পরিবার, তোমরা তোমাদের খাবার-পানীয় নিয়ে থাকো। আল্লাহর কসম, আমি মৃত্যু দেখেছি। যতদিন না মৃত্যুকে আলিঙ্গন করে নিচ্ছি, ততদিন আমি আমল করে যাব। — আত তাযকিরাহ : ১২ পৃষ্ঠা
সাহাবী আবু দারদা (রাদিআল্লাহু আনহা) বলেন, 'যে মৃত্যুকে অধিক স্মরণ করে, তার আনন্দ বিলোপ পায়, হিংসা কমে যায়।’ — ইবনুল মুবারাক কৃত আয যুহদ ওয়ার রাকায়িক
— মৃত্যু থেকে মহাপ্রলয়, ড. উমর সুলাইমান আল আশকার; রুহামা পাবলিকেশন
বি. দ্র : রুহামা পাবলিকেশন সালাফী প্রকাশনী নয়। সকলকে সাবধানতা অবলম্বনের অনুরোধ করছি। কোনো বিষয়ে সন্দেহ হলে সম্মানিত সালাফী আলেমদের শরণাপন্ন হোন।
আনাস বিন মালিক (রাদিআল্লাহু আনহু) হতে বর্ণিত, রাসুল (সল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম) বলেন, 'তোমরা দুনিয়ার স্বাদ বিনষ্টকারী মৃত্যুকে অধিক পরিমাণে স্মরণ করো। জীবনের সংকীর্ণতায় যদি কেউ মৃত্যুকে স্মরণ করে, তবে তার জীবনে প্রশস্ততা আসে। আর প্রশস্ততায় মৃত্যুকে স্মরণ করলে জীবন সংকীর্ণ হয়। — শুআবুল ইমান, ইবনে হিব্বান (রাহিমাহুল্লা) কৃত সহিহ, বাজ্জার (রাহিমাহুল্লাহ) তার মুসনাদে হাসান সনদে বর্ণনা করেন।
ইমাম ইবনুল মুবারক (রাহিমাহুল্লাহ) উল্লেখ করেন, সালিহ আল-মুররি বলেন, 'মৃত্যুর স্মরণ যখন কিছু সময়ের জন্য আমাকে ছেড়ে যায়, তখন আমার অন্তর কলুষিত হয়ে
পড়ে। — আয যুহদ ওয়ার রাকায়িক : ৮৮ পৃষ্ঠা
দাক্কাক (রাহিমাহুল্লাহ) বলেন, 'যে ব্যক্তি মৃত্যুকে স্মরণ করবে, সে তিনটি জিনিসের দান পাবে। যথা : ক. দ্রুত তাওবা করা । খ. হৃদয়ের পরিতুষ্টি। গ. ইবাদতে উদ্যম।
আর যে মৃত্যুকে ভুলে যায়, তিনটি জিনিস তার কাছে দ্রুত এসে পড়ে। যথা : ক. তাওবার দীর্ঘসূত্রতা। খ. যথেষ্টতায় পরিতুষ্ট হতে না পারা। গ. ইবাদতে অলসতা। — আত তাযকীরাহ : ৭ পৃষ্ঠা
কুরতুবি (রাহিমাহুল্লাহ) বলেন, 'মৃত্যুর স্মরণ এ ক্ষণস্থায়ী দুনিয়ার প্রতি বিরক্তিবোধ ও অনাগ্রহ তৈরি করে। আর জীবনের প্রতিটি মুহূর্তে চিরস্থায়ী আখিরাতের প্রতি
অভিমুখিতা সৃষ্টি করে। — আত তাযকীরাহ : ৮ পৃষ্ঠা
তিনি বর্ণনা করেন, এক নারী আয়িশা (রাদিআল্লাহু আনহা) -এর কাছে তার অন্তরের কাঠিন্যের অভিযোগ করল। তখন আয়িশা (রাদিআল্লাহু আনহা) তাকে বললেন, “বেশি বেশি মৃত্যুকে স্মরণ করো, তোমার অন্তর নরম হবে।” সে নারী এমনটাই করল, ফলে তার অন্তর সত্যিই নরম হলো। — আত তাযকীরাহ : ১২ পৃষ্ঠা
ইমাম কুরতুবি (রাহিমাহুল্লাহ) বলেন, 'আলিমগণ বলেন, মৃত্যুর স্মরণ পাপে প্রবেশ হতে ভীত রাখে। শক্ত অন্তরকে নরম করে। দুনিয়ার আনন্দ দূর করে। বিপদাপদ সহজ করে দেয়।’ — আত তাযকীরাহ : ১২ পৃষ্ঠা
কুরতুবি (রাহিমাহুল্লাহ) আরও বলেন, 'আলিমগণ বলেন, অন্তরের জন্য কবর জিয়ারতের চেয়ে অধিক উপকারী কিছু নেই। বিশেষ করে যদি কারও অন্তর শক্ত-কঠিন
হয়। যার অন্তর শক্ত, তাকে শক্ত-অন্তরের চিকিৎসা করতে হবে তিনটি কাজের মাধ্যমে :
১. নিজের সময়কে যে বাজে কাজে নষ্ট করে, তার উৎপাটন করতে হবে ইলমের মজলিসে হাজির হয়ে ওয়াজ-উপদেশ, করণীয় স্মরণ করা, জাহান্নামের ভয়, জান্নাতের উৎসাহ, নেককারদের ঘটনাবলি শুনে। কারণ, এসব আলোচনা অন্তরকে নরম করে।
২. মৃত্যুর স্মরণ : যার অন্তর শক্ত, তাকে মৃত্যুর কথা স্মরণ করতে হবে। যে মৃত্যু দুনিয়ার ভোগবিলাসের স্বাদ ধ্বংস করে। মানুষের কাছ থেকে তাকে আলাদা করে। সন্তানসন্ততিকে এতিম করে।
৩. মুমূর্ষু ব্যক্তিকে অবলোকন করা : মরণাপন্ন ব্যক্তিকে অবলোকন করা, তার মৃত্যুযন্ত্রণা দেখা, মৃত ব্যক্তির অবলোকিত অবস্থার কথা চিন্তা করা মানুষের অন্তর থেকে দুনিয়ার ভোগবিলাসের আকাঙ্ক্ষা দূর করে দেয়, অন্তর থেকে আনন্দ মুছে দেয়, চোখের ঘুম ও শরীরের আরাম কেড়ে নেয়, আমলে উৎসাহী ও সচেষ্ট করে, ইবাদতে মুজাহাদা বাড়িয়ে দেয়। — আত তাযকিরাহ : ১২ পৃষ্ঠা
ইমাম হাসান বসরি (রাহিমাহুল্লাহ) থেকে বর্ণিত, তিনি একবার এক রোগীকে দেখতে গেলেন। তাকে তিনি মৃত্যুযন্ত্রণায় কাতরাতে দেখলেন। তিনি তখন তার এ কঠিন
অবস্থার প্রতি দৃষ্টি দিলেন। রোগীকে দেখে ঘরে ফিরলেন। ঘর থেকে যেমন বেরিয়েছেলেন, ঘরে ফিরলেন ঠিক তার উল্টো অবস্থা বিবর্ণ চেহারা নিয়ে।
ঘরের লোকেরা বলল, "আল্লাহ আপনার ওপর রহম করুন, খাবার প্রস্তুত।” তখন তিনি বলে উঠলেন, “হে আমার পরিবার, তোমরা তোমাদের খাবার-পানীয় নিয়ে থাকো। আল্লাহর কসম, আমি মৃত্যু দেখেছি। যতদিন না মৃত্যুকে আলিঙ্গন করে নিচ্ছি, ততদিন আমি আমল করে যাব। — আত তাযকিরাহ : ১২ পৃষ্ঠা
সাহাবী আবু দারদা (রাদিআল্লাহু আনহা) বলেন, 'যে মৃত্যুকে অধিক স্মরণ করে, তার আনন্দ বিলোপ পায়, হিংসা কমে যায়।’ — ইবনুল মুবারাক কৃত আয যুহদ ওয়ার রাকায়িক
— মৃত্যু থেকে মহাপ্রলয়, ড. উমর সুলাইমান আল আশকার; রুহামা পাবলিকেশন
বি. দ্র : রুহামা পাবলিকেশন সালাফী প্রকাশনী নয়। সকলকে সাবধানতা অবলম্বনের অনুরোধ করছি। কোনো বিষয়ে সন্দেহ হলে সম্মানিত সালাফী আলেমদের শরণাপন্ন হোন।