- Credit
- 1,533
- Thread starter
- #1
আমার অপরিচিত কারো ব্যাপারে যখন শুনি যে, সে সুন্নাহ বাস্তবায়ন ও হাদীস অনুযায়ী আমল করতে সচেষ্ট, তখন মন আমার আনন্দে নেচে ওঠে। আর কে-ইবা খুশি হবে না!?
তবে সুন্নাহর বাস্তবায়নের সাথে সাথে ব্যক্তিটি যেন এই সুন্নাহয় মুতাবা'আতের খেয়াল রাখে, এই তামান্না করি।
কারণ অনেক হাদীস অনুসরণের দাবিদারই সুন্নাহ থেকে ভ্রষ্ট হয়েছে শুধুমাত্র মুতাবা'আতের অযত্নের কারণে।
প্রাচীন কিছু আলেম বলতেনঃ "ফকীহরা ছাড়া অন্যদের জন্য হাদীস বিভ্রান্তিকর হতে পারে!"
এর ব্যাখ্যা হলো: যে ব্যক্তি হাদীস বাস্তবায়নের চেষ্টা করছে, সে নিম্নোক্ত বিষয়গুলোর প্রতি সচেতন নজর রাখবেঃ
১. হাদীসটি যেন মুহকাম হয়, মানসূখ না হয়। কারণ:
উপরের যেকোনো একটি অবস্থা কোনো হাদীসের হলে, সেই হাদীস দিয়ে আমল করাটাই কিন্তু সুন্নাহ বিরোধী! কেননা তার মাঝ থেকে মুতাবা'আতের শর্ত গায়েব হয়ে গেছে।
২. হাদীসের সনদ সহীহ হয়েছে, এর রহিতকরণ বা অর্থ নির্দিষ্টকরণ অথবা শর্তযুক্তিও জানা যায় না; তবে সালাফগণ এর বিপরীত আমল করতেন! গবেষণায় এটাও হাদীস ত্রুটিযুক্ত হওয়ার অন্যতম একটি কারণ হিসেবে বিবেচিত, যেমনটি ইবনু রজব হাম্বলী রহিমাহুল্লাহ তার "ইলালুত তিরমিযী সগীর" এর ব্যাখ্যার শুরুর দিকে আলোচনা করেছেন।
৩. রাসূল ﷺ এর উদ্দেশ্য ও অবস্থা/পরিস্থিতি খেয়াল করা।
উদাহরণস্বরূপ, এই যে কিছুক্ষণ আগে আমার কাছে একজন মেসেজ পাঠাল, সেখানে সে জুমার খতীবদের মিম্বারে জোর আওয়াজ ও চিল্লাচিল্লি সম্পর্কে দৃষ্টি আকর্ষণ করে কিছু লিখেছে। ব্যাপারটা হলো, খতীব কিন্তু রাসূলের ঐ হাদীস বাস্তবায়নের চেষ্টা করছে, যেখানে এসেছে: রাসূল ﷺ খুতবা দিলে তাঁর শিরা ফুলে উঠত, কন্ঠ উঁচু হতো, যেন তিনি সৈন্যদের সতর্কবার্তা দিচ্ছেন; "সকালেই শত্রুবাহিনী আসল বলে, বিকেলেই আসল বলে..."। এটা তো সঠিক এবং এটাই সুন্নাহ।
কিন্তু কথা হলো, রাসুল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম কি মাইক থাকা সত্ত্বেও এরকম করেছেন? মসজিদের এই ছোট্ট এরিয়ায় সাউন্ডবক্সের এই উচ্চ আওয়াজ কি মানুষের কান সহ্য করতে পারে? এই সময় মানুষের অবস্থা কি কখনো খেয়াল করেছেন?
তাহলে বোঝা গেল, সাউন্ড বক্সের সাথে এই সুন্নাহর বাস্তবায়নকারী কিন্তু মূলত সুন্নাহর মুতাবা'আত তথা অনুসরণ করল না, বরং বিরোধিতা করল! কেননা রাসূল ﷺ এই সুন্নাহ আদায় করেছেন মাইক ছাড়া অবস্থায়।
দ্বিতীয় আরেকটা উদাহরণ দেখুন। সুন্নাহর বাস্তবায়নের নামে যদি কেউ জুতা পড়ে সালাত আদায় করতে চায়, এজন্য যদি গালিচা বা কার্পেটের উপর সালাত আদায় করে, তাহলে সে মূলত সুন্নাহর খেলাফ করল! কারণ এর বাস্তবায়নে সে রাসূলের অবস্থা মানেনি।
আমার সাথে একটু চিন্তা করুন। ভেজা জুতায় যদি আপনি কার্পেটের উপর দাঁড়ান, তাহলে কার্পেটের কি অবস্থা হবে? রাস্তার ময়লা লেগে আছে, এই জুতো দিয়ে গালিচায় দাঁড়ালে কি অবস্থা হবে? রাসূল ﷺ কি বিছানা/চাদরের উপর জুতা পড়ে সালাত আদায় করেছেন?
অতএব, কোনো হাদীস বাস্তবায়ন করতে গেলে অবশ্যই সুন্নাহর মুতাবা'আতের কথা খেয়াল রাখতে হবে।
এজন্যই আমি দৃষ্টি আকর্ষণ করি এই মর্মে যে, সব হাদীসই সুন্নাহ নয়!
আবার সব সুন্নাহ মারফূ' হাদীসের মাঝেই সীমাবদ্ধ নয়। বরং সাহাবায়ে কেরাম রাযিয়াল্লাহু আনহুমের আমল থেকেও আমরা অনেক সুন্নাহ জানতে পারি। যেমন, রাতের নামাজের রাকাত সংখ্যা সাহাবীদের আমলের মাধ্যমে জানা যায়।
আল্লাহ তাওফীক দিন।
তবে সুন্নাহর বাস্তবায়নের সাথে সাথে ব্যক্তিটি যেন এই সুন্নাহয় মুতাবা'আতের খেয়াল রাখে, এই তামান্না করি।
কারণ অনেক হাদীস অনুসরণের দাবিদারই সুন্নাহ থেকে ভ্রষ্ট হয়েছে শুধুমাত্র মুতাবা'আতের অযত্নের কারণে।
প্রাচীন কিছু আলেম বলতেনঃ "ফকীহরা ছাড়া অন্যদের জন্য হাদীস বিভ্রান্তিকর হতে পারে!"
এর ব্যাখ্যা হলো: যে ব্যক্তি হাদীস বাস্তবায়নের চেষ্টা করছে, সে নিম্নোক্ত বিষয়গুলোর প্রতি সচেতন নজর রাখবেঃ
১. হাদীসটি যেন মুহকাম হয়, মানসূখ না হয়। কারণ:
- হতে পারে হাদীসটি মানসূখ, কিন্তু সে জানে না!
- হতে পারে হাদীসটি ব্যাপকার্থবোধক হলেও উদ্দেশ্য সুনির্দিষ্ট, কিন্তু সে জানে না।
- হাদীসটি শর্তযুক্ত (مقيد) হতে পারে, অথচ সে এটা খেয়াল করেনি।
উপরের যেকোনো একটি অবস্থা কোনো হাদীসের হলে, সেই হাদীস দিয়ে আমল করাটাই কিন্তু সুন্নাহ বিরোধী! কেননা তার মাঝ থেকে মুতাবা'আতের শর্ত গায়েব হয়ে গেছে।
২. হাদীসের সনদ সহীহ হয়েছে, এর রহিতকরণ বা অর্থ নির্দিষ্টকরণ অথবা শর্তযুক্তিও জানা যায় না; তবে সালাফগণ এর বিপরীত আমল করতেন! গবেষণায় এটাও হাদীস ত্রুটিযুক্ত হওয়ার অন্যতম একটি কারণ হিসেবে বিবেচিত, যেমনটি ইবনু রজব হাম্বলী রহিমাহুল্লাহ তার "ইলালুত তিরমিযী সগীর" এর ব্যাখ্যার শুরুর দিকে আলোচনা করেছেন।
৩. রাসূল ﷺ এর উদ্দেশ্য ও অবস্থা/পরিস্থিতি খেয়াল করা।
উদাহরণস্বরূপ, এই যে কিছুক্ষণ আগে আমার কাছে একজন মেসেজ পাঠাল, সেখানে সে জুমার খতীবদের মিম্বারে জোর আওয়াজ ও চিল্লাচিল্লি সম্পর্কে দৃষ্টি আকর্ষণ করে কিছু লিখেছে। ব্যাপারটা হলো, খতীব কিন্তু রাসূলের ঐ হাদীস বাস্তবায়নের চেষ্টা করছে, যেখানে এসেছে: রাসূল ﷺ খুতবা দিলে তাঁর শিরা ফুলে উঠত, কন্ঠ উঁচু হতো, যেন তিনি সৈন্যদের সতর্কবার্তা দিচ্ছেন; "সকালেই শত্রুবাহিনী আসল বলে, বিকেলেই আসল বলে..."। এটা তো সঠিক এবং এটাই সুন্নাহ।
কিন্তু কথা হলো, রাসুল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম কি মাইক থাকা সত্ত্বেও এরকম করেছেন? মসজিদের এই ছোট্ট এরিয়ায় সাউন্ডবক্সের এই উচ্চ আওয়াজ কি মানুষের কান সহ্য করতে পারে? এই সময় মানুষের অবস্থা কি কখনো খেয়াল করেছেন?
তাহলে বোঝা গেল, সাউন্ড বক্সের সাথে এই সুন্নাহর বাস্তবায়নকারী কিন্তু মূলত সুন্নাহর মুতাবা'আত তথা অনুসরণ করল না, বরং বিরোধিতা করল! কেননা রাসূল ﷺ এই সুন্নাহ আদায় করেছেন মাইক ছাড়া অবস্থায়।
দ্বিতীয় আরেকটা উদাহরণ দেখুন। সুন্নাহর বাস্তবায়নের নামে যদি কেউ জুতা পড়ে সালাত আদায় করতে চায়, এজন্য যদি গালিচা বা কার্পেটের উপর সালাত আদায় করে, তাহলে সে মূলত সুন্নাহর খেলাফ করল! কারণ এর বাস্তবায়নে সে রাসূলের অবস্থা মানেনি।
আমার সাথে একটু চিন্তা করুন। ভেজা জুতায় যদি আপনি কার্পেটের উপর দাঁড়ান, তাহলে কার্পেটের কি অবস্থা হবে? রাস্তার ময়লা লেগে আছে, এই জুতো দিয়ে গালিচায় দাঁড়ালে কি অবস্থা হবে? রাসূল ﷺ কি বিছানা/চাদরের উপর জুতা পড়ে সালাত আদায় করেছেন?
অতএব, কোনো হাদীস বাস্তবায়ন করতে গেলে অবশ্যই সুন্নাহর মুতাবা'আতের কথা খেয়াল রাখতে হবে।
এজন্যই আমি দৃষ্টি আকর্ষণ করি এই মর্মে যে, সব হাদীসই সুন্নাহ নয়!
আবার সব সুন্নাহ মারফূ' হাদীসের মাঝেই সীমাবদ্ধ নয়। বরং সাহাবায়ে কেরাম রাযিয়াল্লাহু আনহুমের আমল থেকেও আমরা অনেক সুন্নাহ জানতে পারি। যেমন, রাতের নামাজের রাকাত সংখ্যা সাহাবীদের আমলের মাধ্যমে জানা যায়।
আল্লাহ তাওফীক দিন।
শায়খ মুহাম্মাদ বিন উমার বাযমূল হাফিযাহুল্লাহ।