• আসসালামু আলাইকুম, খুব শীঘ্রই আমাদের ফোরামে মেজর কিছু চেঞ্জ আসবে যার ফলে ফোরামে ১-৩ দিন আপনারা প্রবেশ করতে পারবেন না। উক্ত সময়ে আপনাদের সকলকে ধৈর্য ধারণের অনুরোধ জানাচ্ছি।

সালাফী আকিদা ও মানহাজে - Salafi Forum

Salafi Forum হচ্ছে সালাফী ও সালাফদের আকিদা, মানহাজ শিক্ষায় নিবেদিত একটি সমৃদ্ধ অনলাইন কমিউনিটি ফোরাম। জ্ঞানগর্ভ আলোচনায় নিযুক্ত হউন, সালাফী আলেমদের দিকনির্দেশনা অনুসন্ধান করুন। আপনার ইলম প্রসারিত করুন, আপনার ঈমানকে শক্তিশালী করুন এবং সালাফিদের সাথে দ্বীনি সম্পর্ক গড়ে তুলুন। বিশুদ্ধ আকিদা ও মানহাজের জ্ঞান অর্জন করতে, ও সালাফীদের দৃষ্টিভঙ্গি শেয়ার করতে এবং ঐক্য ও ভ্রাতৃত্বের চেতনাকে আলিঙ্গন করতে আজই আমাদের সাথে যোগ দিন।

সিয়াম সাধারণভাবে রোযার ফযীলত

Abu Abdullah

Knowledge Sharer

ilm Seeker
Uploader
Salafi User
Threads
745
Comments
997
Solutions
19
Reactions
10,263
Credits
6,307
সাধারণভাবে রোযার ফযীলত বর্ণনা করে বহু হাদীস বর্ণিত হয়েছে। নিম্নে কতিপয় সহীহ হাদীস প্রণিধানযোগ্যঃ-

১। আবু হুরাইরা (রাঃ) কর্তৃক বর্ণিত, তিনি বলেন, আল্লাহর রসূল (সাল্লাল্লাহু আলাইহে ওয়াসাল্লাম) বলেছেন, ‘‘আল্লাহ আয্যা অজাল্ল বলেন, ‘আদম সন্তানের প্রত্যেক আমল তার নিজের জন্য; তবে রোযা নয়, যেহেতু তা আমারই জন্য এবং আমি নিজেই তার প্রতিদান দেব।’ রোযা ঢাল স্বরূপ। সুতরাং তোমাদের কারো রোযার দিন হলে সে যেন অশ্লীল না বকে ও ঝগড়া-হৈচৈ না করে; পরন্তু যদি তাকে কেউ গালাগালি করে অথবা তার সাথে লড়তে চায়, তবে সে যেন বলে, ‘আমি রোযা রেখেছি, আমার রোযা আছে।’ সেই সত্তার শপথ যাঁর হাতে মুহাম্মদের প্রাণ আছে! নিশ্চয়ই রোযাদারের মুখের দুর্গন্ধ আল্লাহর নিকট কস্ত্তরীর সুবাস অপেক্ষা অধিকতর সুগন্ধময়। রোযাদারের জন্য রয়েছে দু’টি খুশী, যা সে লাভ করে; যখন সে ইফতার করে তখন ইফতারী নিয়ে খুশী হয়। আর যখন সে তার প্রতিপালকের সাথে সাক্ষাৎ করবে তখন তার রোযা নিয়ে খুশী হবে।[1]

২। হুযাইফা (রাঃ) বলেন, আমি নবী (সাল্লাল্লাহু আলাইহে ওয়াসাল্লাম)-কে বলতে শুনেছি যে, ‘‘মানুষের পরিবার, ধন-সম্পদ ও প্রতিবেশীর ব্যাপারে ঘটিত বিভিন্ন ফিতনা ও গোনাহর কাফ্ফারা হল নামায, রোযা ও সদকাহ।’’[2]

৩। সাহ্ল বিন সা’দ (রাঃ) হতে বর্ণিত, নবী (সাল্লাল্লাহু আলাইহে ওয়াসাল্লাম) বলেন, জান্নাতের এক প্রবেশদ্বার রয়েছে, যার নাম ‘রাইয়ান।’ কিয়ামতের দিন ঐ দ্বার দিয়ে রোযাদারগণ প্রবেশ করবে। তারা ছাড়া তাদের সাথে আর কেউই ঐ দ্বার দিয়ে প্রবেশ করবে না। বলা হবে, ‘কোথায় রোযাদারগণ?’ সুতরাং তারা ঐ দরজা দিয়ে (জান্নাতে) প্রবেশ করবে। অতঃপর যখন তাদের সর্বশেষ ব্যক্তি প্রবেশ করবে, তখন সে দ্বার রুদ্ধ করা হবে। ফলে সে দ্বার দিয়ে আর কেউই প্রবেশ করতে পারবে না।’’[3]

৪। আবু হুরাইরা (রাঃ) কর্তৃক বর্ণিত, তিনি বলেন, আল্লাহর রসূল (সাল্লাল্লাহু আলাইহে ওয়াসাল্লাম) বলেন, ‘‘--- আর যে ব্যক্তি রোযা রাখায় অভ্যাসী হবে, তাকে (কিয়ামতের দিন) ‘রাইয়ান’ দুয়ার হতে (জান্নাতের দিকে) আহবান করা হবে। ---’’[4]

৫। আবু সাঈদ (রাঃ) কর্তৃক বর্ণিত, তিনি বলেন, আল্লাহর রসূল (সাল্লাল্লাহু আলাইহে ওয়াসাল্লাম) বলেন, ‘যে বান্দা আল্লাহর রাস্তায় একদিন মাত্র রোযা রাখবে সেই বান্দাকে আল্লাহ ঐ রোযার বিনিময়ে জাহান্নাম থেকে ৭০ বছরের পথ পরিমাণ দূরত্বে রাখবেন।’’[5]

৬। আম্র বিন আবাসাহ (রাঃ) কর্তৃক বর্ণিত, তিনি বলেন, আল্লাহর রসূল (সাল্লাল্লাহু আলাইহে ওয়াসাল্লাম) বলেছেন, ‘‘যে ব্যক্তি আল্লাহর রাস্তায় একদিন মাত্র রোযা রাখবে সেই ব্যক্তি থেকে জাহান্নাম ১০০ বছরের পথ পরিমাণ দূরে সরে যাবে।’’[6]

৭। আবু উমামাহ (রাঃ) হতে বর্ণিত, মহানবী (সাল্লাল্লাহু আলাইহে ওয়াসাল্লাম) বলেন, ‘‘যে ব্যক্তি আল্লাহর পথে একটি রোযা রাখবে, আল্লাহ সেই ব্যক্তি ও দোযখের মাঝে একটি এমন প্রতিরক্ষার খাদ তৈরী করে দেবেন; যা আকাশ ও পৃথিবীর মধ্যবর্তী জায়গা সমপরিমাণ চওড়া।’’[7]

৮। উসমান বিন আবূল আস কর্তৃক বর্ণিত, মহানবী (সাল্লাল্লাহু আলাইহে ওয়াসাল্লাম) বলেন, ‘‘রোযা হল দোযখ থেকে বাঁচার জন্য ঢালস্বরূপ; যেমন যুদ্ধের সময় নিজেকে রক্ষা করার জন্য তোমাদের ঢাল হয়ে থাকে।’’[8]

৯। আবূ হুরাইরা (রাঃ) কর্তৃক বর্ণিত, আল্লাহর রসূল (সাল্লাল্লাহু আলাইহে ওয়াসাল্লাম) বলেন, ‘‘রোযা হল জাহান্নাম থেকে রক্ষার জন্য ঢাল ও দুর্ভেদ্য দুর্গস্বরূপ।’’[9]

১০। আব্দুল্লাহ বিন আম্র (রাঃ) কর্তৃক বর্ণিত, আল্লাহর রসূল (সাল্লাল্লাহু আলাইহে ওয়াসাল্লাম) বলেন, ‘‘কিয়ামতের দিন রোযা এবং কুরআন বান্দার জন্য সুপারিশ করবে। রোযা বলবে, ‘হে আমার প্রতিপালক! আমি ওকে পানাহার ও যৌনকর্ম থেকে বিরত রেখেছিলাম। সুতরাং ওর ব্যাপারে আমার সুপারিশ গ্রহণ কর।’ আর কুরআন বলবে, ‘আমি ওকে রাত্রে নিদ্রা থেকে বিরত রেখেছিলাম। সুতরাং ওর ব্যাপারে আমার সুপারিশ গ্রহণ কর।’ নবী (সাল্লাল্লাহু আলাইহে ওয়াসাল্লাম) বলেন, ‘‘অতএব ওদের উভয়ের সুপারিশ গৃহীত হবে।’’[10]

১১। আবু উমামাহ (রাঃ) হতে বর্ণিত, তিনি বলেন, আমি বললাম, ‘হে আল্লাহর রসূল! আমাকে এমন কোন আমলের আজ্ঞা করুন; যদদ্বারা আল্লাহ আমাকে লাভবান করবেন।’ (অন্য এক বর্ণনায় আছে, ‘যার মাধ্যমে আমি জান্নাত যেতে পারব।’) তিনি বললেন, তুমি রোযা রাখ, কারণ এর সমতুল কিছু নেই।’ পুনরায় আমি বললাম, হে আল্লাহর রসূল! আমাকে কোন আমলের আদেশ করুন।’ তিনিও পুনঃ ঐ কথাই বললেন, ‘‘তুমি রোযা রাখ, কারণ এর সমতুল কিছু নেই।’[11]

১২। হুযাইফা (রাঃ) হতে বর্ণিত, তিনি বলেন, নবী (সাল্লাল্লাহু আলাইহে ওয়াসাল্লাম) আমার বুকে হেলান দিয়ে ছিলেন। সেই সময় তিনি বললেন, ‘‘লা ইলাহা ইল্লাল্লাহ’ বলার পর যে ব্যক্তির জীবনের পরিসমাপ্তি ঘটবে সে জান্নাতে প্রবেশ করবে। আল্লাহর সন্তুষ্টিলাভের উদ্দেশ্যে একদিন রোযা রাখার পর যে ব্যক্তির জীবনের পরিসমাপ্তি ঘটবে সে জান্নাতে প্রবেশ করবে। আর আল্লাহর সন্তুষ্টিলাভের আশায় কিছু সাদকাহ করার পর যে ব্যক্তির জীবনের পরিসমাপ্তি ঘটবে সেও জান্নাত প্রবেশ করবে।’’[12]


[1] (বুখারী ১৯০৪, মুসলিম ১১৫১ নং)
[2] (বুখারী ১৮৯৫, মুসলিম ১৪৪নং)
[3] (বুখারী১৮৯৬ নং, মুসলিম ১১৫২ নং, নাসাঈ, তিরমিযী)
[4] (বুখারী ১৮৯৭, মুসলিম ১০২৭নং)
[5] (বুখারী ২৮৪০ নং, মুসলিম ১১৫৩ নং , তিরমিযী, নাসাঈ)
[6] (নাসাঈ, সহীহুল জামেইস সাগীর, আলবানী ৬৩৩০নং উকবাহ হতে,ত্বাবারানী কাবীর ও আওসাত্ব, সহীহ তারগীবঃ৯৭৫ নং)
[7] (তিরমিযী, সহীহুল জামেইস সাগীর, আলবানী ৬৩৩৩নং)
[8] (আহমাদ, মুসনাদ, নাসাঈ, ইবনে মাজাহ, সহীহুল জামেইস সাগীর, আলবানী ৩৮৭৯নং)
[9] (আহমাদ, মুসনাদ, বাইহাকী শুআবুল ঈমান, সহীহুল জামেইস সাগীর, আলবানী ৩৮৮০নং)
[10] (আহমাদ, মুসনাদ, ত্বাবারানী, মু’জাম কাবীর, হাকেম, মুস্তাদ্রাক, ইবনে আবিদ্দুনয়্যার ‘কিতাবুল জু’, সহীহ তারগীব, আলবানী ৯৬৯ নং)
[11] (নাসাঈ, ইবনে খুযাইমাহ, সহীহ, হাকেম, মুস্তাদ্রাক, সহীহ তারগীব, আলবানী ৯৭৩ নং)
[12] (আহমাদ, মুসনাদ, সহীহ তারগীব, আলবানী ৯৭২ নং)


রমাযানের ফাযায়েল ও রোযার মাসায়েল
শাইখ আব্দুল হামীদ আল-ফাইযী আল-মাদানী​
 
Last edited:
COMMENTS ARE BELOW
Top