‼️ পোস্টটি সুন্দরভাবে দেখতে এখানে ক্লিক করুন।‼️

তাওহীদ শরীআতের বিধান প্রণয়ন

Abu Abdullah

Knowledge Sharer

ilm Seeker
Uploader
Salafi User
Threads
745
Comments
997
Solutions
19
Reactions
9,896
Credits
6,114
শরী‘আত প্রণয়ন মহান আল্লাহ তা‘আলারই অধিকার। শরী‘আত প্রনয়ণের অর্থ হচ্ছে সে সকল রীতি-নীতি প্রণয়ন যা আল্লাহ তাঁর বান্দাদের জন্য নাযিল করেছেন। এ হচ্ছে সে রীতি-নীতি বান্দাগণ যা তাদের আকীদাহ, মু‘আমালাত ও অন্যান্য ক্ষেত্রে মেনে চলবে। এর মধ্যে রয়েছে হালাল হারামের বিধান। সুতরাং আল্লাহ যা হালাল করেছেন তা ছাড়া অন্য কিছুকে হালাল করার অধিকার কারো নেই এবং আল্লাহ যা হারাম করেছেন তা ছাড়া অন্য কিছুকে হারাম করার অধিকারও কারো নেই। আল্লাহ তা‘আলা বলেন,

﴿وَلَا تَقُولُواْ لِمَا تَصِفُ أَلۡسِنَتُكُمُ ٱلۡكَذِبَ هَٰذَا حَلَٰلٞ وَهَٰذَا حَرَامٞ لِّتَفۡتَرُواْ عَلَى ٱللَّهِ ٱلۡكَذِبَۚ﴾ [النحل: ١١٦]​

“যেহেতু তোমাদের জিহ্বা মিথ্যা আরোপ করে, তাই আল্লাহর প্রতি মিথ্যা আরোপ করার জন্য তোমরা বলো না এটা হালাল এবং ওটা হারাম।” [সূরা আন-নাহল, আয়াত: ১১৬]

আল্লাহ তা‘আলা আরো বলেন,

﴿قُلۡ أَرَءَيۡتُم مَّآ أَنزَلَ ٱللَّهُ لَكُم مِّن رِّزۡقٖ فَجَعَلۡتُم مِّنۡهُ حَرَامٗا وَحَلَٰلٗا قُلۡ ءَآللَّهُ أَذِنَ لَكُمۡۖ أَمۡ عَلَى ٱللَّهِ تَفۡتَرُونَ ٥٩ ﴾ [يونس: ٥٩]​

“বল, তোমরা কি ভেবে দেখেছো, আল্লাহ তোমাদেরকে যে রিযিক দিয়েছেন তোমরা তার কিছু হালাল ও হারাম করেছ? বল, আল্লাহ কি তোমাদেরকে এর অনুমতি দিয়েছেন? নাকি তোমরা আল্লাহর প্রতি মিথ্যারোপ করছ?” [সূরা ইউনুস, আয়াত: ৫৯]

আল্লাহ কুরআন এবং সুন্নাহর কোনো দলীল ছাড়া হালাল ও হারাম সাব্যস্ত করাকে নিষেধ করেছেন। আর তিনি জানিয়ে দিয়েছেন যে, এটা হচ্ছে আল্লাহর ওপর মিথ্যা আরোপ করার শামিল। তিনি আরো বলেছেন যে, যে ব্যক্তি কোনো দলীল ছাড়া কোনো কিছুকে ওয়াজিব বলে সাব্যস্ত করে অথবা হারাম বলে সাব্যস্ত করে, সে নিজেকে এমন ক্ষেত্রে আল্লাহর একজন শরীক বলে স্থির করল যেটি আল্লাহ তা‘আলারই বৈশিষ্ট্যের অন্তর্ভুক্ত। আর সেটি হচ্ছে শরী‘আত প্রণয়ন। আল্লাহ তা‘আলা বলেন,

﴿أَمۡ لَهُمۡ شُرَكَٰٓؤُاْ شَرَعُواْ لَهُم مِّنَ ٱلدِّينِ مَا لَمۡ يَأۡذَنۢ بِهِ ٱللَّهُۚ ﴾ [الشورى: ٢١]​

“নাকি তাদের এমন শরীকগণ রয়েছে যারা তাদের জন্য দীনের এমন কিছু বিষয় শরী‘আত সিদ্ধ করেছে যার অনুমতি আল্লাহ দেননি।” [সূরা আশ-শুরা, আয়াত: ২১]

যে ব্যক্তি জেনে শুনে আল্লাহর পরিবর্তে শরী‘আত প্রণয়নকারী এ ব্যক্তির আনুগত্য করবে এবং তার কার্যবলীর সাথে একমত পোষণ করবে সে মূলতঃ তাকে আল্লাহর সাথে শরীক করল। আল্লাহ তা‘আলা বলেন,

﴿وَإِنۡ أَطَعۡتُمُوهُمۡ إِنَّكُمۡ لَمُشۡرِكُونَ ١٢١ ﴾ [الانعام: ١٢١]​

“যদি তোমরা তাদের আনুগত্য করো তাহলে নিশ্চয় তোমরা মুশরিক হবে।” [সূরা আল-আন‘আম, আয়াত: ১২১]

অর্থাৎ আল্লাহ যেসব মৃতকে হারাম করেছেন যারা সেগুলোকে হালাল করে, তাদেরকে যারা এতে অনুসরণ করবে তারা হবে মুশরিক। যেমন, আল্লাহ সুবহানাহু ওয়া তা‘আলা জানিয়ে দিয়েছেন, যারা আল্লাহর হারামকৃত বস্তুকে হালাল করার ক্ষেত্রে এবং আল্লাহ হালালকৃত বস্তুকে হারাম করার ক্ষেত্রে পাদ্রী ও ধর্মজাযকদের অনুসরণ করবে তারা আল্লাহর পরিবর্তে তাদেরকে রব হিসেবে গ্রহণ করে নিল। আল্লাহ তা‘আলা বলেন,

﴿ٱتَّخَذُوٓاْ أَحۡبَارَهُمۡ وَرُهۡبَٰنَهُمۡ أَرۡبَابٗا مِّن دُونِ ٱللَّهِ وَٱلۡمَسِيحَ ٱبۡنَ مَرۡيَمَ وَمَآ أُمِرُوٓاْ إِلَّا لِيَعۡبُدُوٓاْ إِلَٰهٗا وَٰحِدٗاۖ لَّآ إِلَٰهَ إِلَّا هُوَۚ سُبۡحَٰنَهُۥ عَمَّا يُشۡرِكُونَ ٣١﴾ [التوبة: ٣١]​

“তারা আল্লাহ ব্যতীত তাদের পণ্ডিতগণকে ও সংসারবিরাগীগণকে তাদের প্রভূরূপে গ্রহণ করেছে আর মরিয়ম তনয় মসীহকেও। অথচ তারা এক ইলাহের ইবাদাত করার জন্যই আদিষ্ট হয়েছিল। তিনি ব্যতীত অন্য কোনো প্রকৃত ইলাহ নেই। তারা যাকে শরীক করে তা থেকে তিনি কতই না পবিত্র!” [সূরা আত-তাওবাহ, আয়াত: ৩১]

‘আদি ইবন হাতিম রাদিয়াল্লাহু আনহু যখন এ আয়াতটি শুনলেন তখন তিনি বললেন, ইয়া রাসূলাল্লাহ! আমরাতো তাদের ইবাদাত করি না। তখন তাদেরকে নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছিলেন, “আল্লাহ যা হারাম করেছেন তারা কি তা হালাল করে না, আর তোমরাও তা হালাল বলে মেনে নাও? আল্লাহ যা হালাল করেছেন তারা কি তা হারাম করে না, আর তোমরাও তা হারাম বলে মেনে নাও?” তিনি বললেন, হ্যাঁ। তখন নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বললেন, “এটিই হচ্ছে তাদের ইবাদাত করার অর্থ।”[1] শাইখ আব্দুর রহমান ইবন হাসান রহ. বলেন, হাদীসটিতে এ প্রমাণ রয়েছে যে, পণ্ডিত ও সংসারবিরাগী ধর্মযাজকদের আল্লাহর নাফরমানির ক্ষেত্রে অনুসরণ এর মানে হচ্ছে আল্লাহর পরিবর্তে তাদের ইবাদাত করা এবং তা বড় শির্কের অন্তর্ভুক্ত হবে যা আল্লাহ ক্ষমা করবেন না। কেননা আল্লাহ আয়াতের শেষে বলেছেন,

﴿وَمَآ أُمِرُوٓاْ إِلَّا لِيَعۡبُدُوٓاْ إِلَٰهٗا وَٰحِدٗاۖ لَّآ إِلَٰهَ إِلَّا هُوَۚ سُبۡحَٰنَهُۥ عَمَّا يُشۡرِكُونَ ٣١﴾ [التوبة: ٣١]​

“অথচ তারা এক ইলাহের ইবাদাত করার জন্য আদিষ্ট হয়েছিল। তিনি ব্যতীত অন্য প্রকৃত কোনো ইলাহ নেই। তারা যাকে শরীক করে তা হতে তিনি কত পবিত্র ও মহান!” [সূরা আত-তাওবাহ, আয়াত: ৩১]

এ আয়াতের অনুরূপ আরেকটি আয়াতে আল্লাহ বলেছেন,

﴿وَلَا تَأۡكُلُواْ مِمَّا لَمۡ يُذۡكَرِ ٱسۡمُ ٱللَّهِ عَلَيۡهِ وَإِنَّهُۥ لَفِسۡقٞۗ وَإِنَّ ٱلشَّيَٰطِينَ لَيُوحُونَ إِلَىٰٓ أَوۡلِيَآئِهِمۡ لِيُجَٰدِلُوكُمۡۖ وَإِنۡ أَطَعۡتُمُوهُمۡ إِنَّكُمۡ لَمُشۡرِكُونَ ١٢١﴾ [الانعام: ١٢١]​

“যাতে আল্লাহর নাম নেওয়া হয় নি তার কিছুই তোমরা আহার করো না তা অবশ্যই পাপ। নিশ্চয় শয়তানেরা তাদের বন্ধুদেরকে তোমাদের সাথে বিবাদ করতে প্ররোচনা দেয়। যদি তোমরা তাদের কথা মত চল তবে তোমরা অবশ্যই মুশরিক হবে।” [সূরা আল-আন‘আম, আয়াত: ১২১]

বহু লোক এতে নিপতিত হয়েছে। আর এসব লোকদেরকে অন্যরা অন্ধ অনুকরণ করেছে। কেননা তারা অনুসৃত ব্যক্তির যখন বিরোধীতা করে তখন কোনো দলীল প্রমাণকে বিবেচনায় আনেনি। আর এটি হচ্ছে শির্কের অন্তর্গত।

অতএব, আল্লাহর শরী‘আতকে সঠিকভাবে মেনে চলা এবং এ শরী‘আতের বিপরীত আর সবকিছু পরিত্যাগ করা ‘লা-ইলাহা ইল্লাল্লাহ’-এর দাবী।

তাওহীদ পরিচিতি
ড. সালিহ ইবন ফাওযান আল-ফাওযান
অনুবাদ: ড. মোহাম্মদ মানজুরে ইলাহী
সম্পাদনা: ড. আবু বকর মুহাম্মাদ যাকারিয়া​


[1] হাদীসটি সুনান তিরমীযিতে বর্ণিত হয়েছে।
 
COMMENTS ARE BELOW
Threads
0
Comments
5
Reactions
3
Credits
3
জাযাকাল্লাহ খাইরান
 

Share this page