‼️ পোস্টটি সুন্দরভাবে দেখতে এখানে ক্লিক করুন।‼️

যাকাত ও ফিতরা যাকাত ফরয হওয়ার শর্তাবলী কী কী?

Habib Bin Tofajjal

If you're in doubt ask الله.

Forum Staff
Moderator
Generous
ilm Seeker
Uploader
Exposer
HistoryLover
Q&A Master
Salafi User
Threads
689
Comments
1,225
Solutions
17
Reactions
6,668
Credits
5,528
যাকাত ফরয হওয়ার শর্তাবলী নিম্নরূপ:

ক. ইসলাম। খ. স্বাধীন। গ. নিসাবের মালিক হওয়া ও তা স্থীতিশীল থাকা। ঘ. বছর পূর্ণ হওয়া।

ইসলাম :কাফিরের ওপর যাকাত ফরয নয়। যাকাতের নামে সে প্রদান করলেও আল্লাহ তা কবুল করবেন না। আল্লাহ বলেন,
﴿وَمَا مَنَعَهُمۡ أَن تُقۡبَلَ مِنۡهُمۡ نَفَقَٰتُهُمۡ إِلَّآ أَنَّهُمۡ كَفَرُواْ بِٱللَّهِ وَبِرَسُولِهِۦ وَلَا يَأۡتُونَ ٱلصَّلَوٰةَ إِلَّا وَهُمۡ كُسَالَىٰ وَلَا يُنفِقُونَ إِلَّا وَهُمۡ كَٰرِهُونَ ٥٤﴾ [التوبة: ٥٤]
“তাদের সম্পদ ব্যয় শুধু মাত্র এ কারণে গ্রহণ করা হবে না যে, তারা আল্লাহ ও তার রাসূলের সাথে কুফুরী করেছে। অলসভঙ্গিতে ছাড়া তারা সালাতে আসে না এবং মনের অসন্তুষ্টি নিয়ে খরচ করে।” [সূরা আত-তাওবা, আয়াত: ৫৪]

কাফিরের ওপর যাকাত ফরয নয় এবং আদায় করলেও গ্রহণ করা হবে না একথার অর্থ এটা নয় যে, পরকালেও তাকে ক্ষমা করে দেওয়া হবে; বরং তাকে এজন্য শাস্তি দেওয়া হবে। আল্লাহ বলেন,
﴿كُلُّ نَفۡسِۢ بِمَا كَسَبَتۡ رَهِينَةٌ ٣٨ إِلَّآ أَصۡحَٰبَ ٱلۡيَمِينِ ٣٩ فِي جَنَّٰتٖ يَتَسَآءَلُونَ ٤٠ عَنِ ٱلۡمُجۡرِمِينَ ٤١ مَا سَلَكَكُمۡ فِي سَقَرَ ٤٢ قَالُواْ لَمۡ نَكُ مِنَ ٱلۡمُصَلِّينَ ٤٣ وَلَمۡ نَكُ نُطۡعِمُ ٱلۡمِسۡكِينَ ٤٤ وَكُنَّا نَخُوضُ مَعَ ٱلۡخَآئِضِينَ ٤٥ وَكُنَّا نُكَذِّبُ بِيَوۡمِ ٱلدِّينِ ٤٦ حَتَّىٰٓ أَتَىٰنَا ٱلۡيَقِينُ ٤٧ ﴾ [المدثر: ٣٨، ٤٧]
“প্রত্যেক ব্যক্তি তার কৃতকর্মের জন্য দায়ী; কিন্তু ডান দিকস্থরা। তারা থাকবে জান্নাতে এবং পরস্পরে জিজ্ঞাসাবাদ করবে অপরাধীদের সম্পর্কে। বলবে, তোমাদেরকে কিসে জাহান্নামে প্রবেশ করিয়েছে? তারা বলবে, আমরা সালাত পড়তাম না, অভাবগ্রস্তকে আহার্য দিতাম না। আমরা সমালোচকদের সাথে সমালোচনা করতাম এবং আমরা প্রতিফল দিবসকে অস্বীকার করতাম। এমনকি আমাদের মৃত্যু এসে গেছে।” [সূরা মুদ্দাসসির: ৩৮-৪৭] এ থেকে বুঝা যায় ইসলামের বিধি-বিধান না মেনে চলার কারণে কাফিরদেরকে শাস্তি দেওয়া হবে।

স্বাধীনতা: ক্রীতদাসের কোনো সম্পদ নেই। কোনো সম্পদ থাকলেও তা তার মালিকের সম্পদ হিসেবে গণ্য হবে। কেননা নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেন, مَنِ ابْتَاعَ عَبْدًا فَمَالُهُ لِلَّذِي بَاعَهُ إِلَّا أَنْ يَشْتَرِطَ الْمُبْتَاع “সম্পদের অধিকারী কোনো ক্রীতদাস যদি কেউ বিক্রয় করে, তবে উক্ত সম্পদের মালিকানা বিক্রেতার থাকবে। কিন্তু যদি ক্রেতা উক্ত সম্পদের শর্তারোপ করে থাকে তবে ভিন্ন কথা।”[1]

নিসাবের মালিক হওয়া: অর্থাৎ তার কাছে এমন পরিমাণ সম্পদ থাকবে, শরী‘আত যা নিসাব হিসেবে নির্ধারণ করেছে। সম্পদের প্রকারভেদ অনুযায়ী এর পরিমাণ বিভিন্নরূপ হয়ে থাকে। অতএব, মানুষের কাছে নিসাব পরিমাণ সম্পদ না থাকলে বা নেসাবের কম সম্পদ থাকলে তাতে যাকাত দিতে হবে না। কেননা তার সম্পদ কম। আর অল্প সম্পদ দ্বারা অন্যের কল্যাণ করা সম্ভব নয়।

চতুষ্পদ জন্তুর নিসাবে শুরু এবং শেষ সংখ্যার খেয়াল রাখতে হবে। কিন্তু অন্যান্য সম্পদে শুধু প্রথমে কত ছিল তার হিসাব ধর্তব্য। পরে যা অতিরিক্ত হবে তার হিসাব করে যাকাত দিতে হবে।

বছর অতিক্রান্ত হওয়া: কেননা বছর পূর্ণ না হওয়া সত্বেও যাকাত আবশ্যক করে দেওয়ার মাধ্যমে সম্পদশালীর প্রতি কঠোরতা আরোপ করা হয়। বছর পূর্তি হওয়ার পরও যাকাত বের না করলে যাকাতের হকদারদের প্রতি অবিচার করা হয়; তাদের ক্ষতি করা হয়। এ কারণে প্রজ্ঞাপূর্ণ শরী‘আত এর জন্য একটি সীমারেখা নির্ধারণ করেছে এবং এর মধ্যে যাকাতের আবশ্যকতা নির্ধারণ করেছে। আর তা হচ্ছে বছরপূর্তি। অতএব, এর মধ্যে সম্পদশালী ও যাকাতের হকদারদের মধ্যে একটি সামঞ্জস্যতা বিধান করা হয়েছে।

এ কারণে বছর পূর্ণ হওয়ার পূর্বে কোনো মানুষ যদি মারা যায় বা তার সম্পদ বিনষ্ট হয়ে যায়, তবে যাকাত রহিত হয়ে যাবে। অবশ্য তিনটি জিনিস এ বিধানের ব্যতিক্রম:

১) ব্যবসার লভ্যাংশ ২) চতুষ্পদ জন্তুর বাচ্চা ৩) উশর।

ব্যবসার লভ্যাংশে ব্যবসার মূল সম্পদের সাথে যোগ করে যাকাত দিতে হবে। আর চতুস্পদ জন্তুর ভুমিষ্ট বাচ্চার যাকাত তার মায়ের সাথে মিলিত করে দিতে হবে। আর উশর অর্থাৎ যমীনে উৎপাদিত ফসল ঘরে উঠালেই যাকাত দিতে হবে।


[1] সহীহ বুখারী, কিতাবুল মুসাক্বাত, অনুচ্ছেদ: খেজুরের বাগানে কারো যদি চলার পথ থাকে বা পানির ব্যবস্থা থাকে সহীহ মুসলিম, অধ্যায়: বেচা-কেনা, অনুচ্ছেদ: ফল সমৃদ্ধ যে ব্যক্তি খেজুর গাছ বিক্রয় করে ।
 

Share this page