‼️ পোস্টটি সুন্দরভাবে দেখতে এখানে ক্লিক করুন।‼️

অন্যান্য মুসলিম উম্মাহর এতো অধঃপতনের নেপথ্যে

১) ঈমানী দূর্বলতা ও
২) ইলমী ঘাটতি।

শায়খুল ইসলাম ইবনু তায়মিয়্যাহ রহিমাহুল্লাহ বলেনঃ

ইলম উঠিয়ে নেয়া আর কুরআন উঠিয়ে নেয়া এক নয়। কেননা অন্য হাদীসে এসেছে: "এই সময়েই ইলম উঠিয়ে নেয়া হবে। তখন আনসারীদের মাঝ থেকে একজন বলে উঠলেন: কিভাবে ইলম উঠে যাবে?!! অথচ তা আমরা পাঠ করি এবং সন্তান ও স্ত্রীদের পড়াই!!

তখন রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বললেন: তোমার মা তোমাকে হারিয়ে ফেলুক, আমি তো তামাকে মদীনাবাসীদের মাঝে অন্যতম বিজ্ঞ লোক ভাবতাম!! আরে ইহুদী খৃষ্টানদের কাছে কি তাওরাত-ইঞ্জীল নেই?? এটা তাদের কি উপকার করেছে!!?"

সুতরাং স্পষ্ট হলো যে, শুধু কুরআনের উপস্থিতি এই (শরয়ী) ইলমের থাকাকে আবশ্যক করে না। বিশেষতঃ যখন এই কুরআনকে মুমিন মুনাফিক সবাই পড়ে; এমনকি এমন নিরক্ষর মূর্খ লোকও পড়ে, যারা শুধু কল্পিত আশা ছাড়া কুরআনের কিছুই বোঝে না।

হাসান বাসরী রহিমাহুল্লাহ বলেনঃ "ইলম দুই প্রকার। ১) এমন ইলম, যা অন্তরে থাকে এবং
২) এমন ইলম, যা মুখে মুখে ঘুরে বেড়ায়।
তো এই অন্তরের ইলমটাই হচ্ছে ইলমে নাফে' তথা উপকারী জ্ঞান। আর মুখের ইলম হলো বান্দার উপর আল্লাহর হুজ্জত।"

সুতরাং যখন আল্লাহ আলেমদের উঠিয়ে নেবেন, তখন শুধু কুরআনের এমন পাঠক থাকবে, যারা তিলাওয়াত করবে কোনো প্রকার ইলম ছাড়াই। ফলে তখন এটা চলবে শুধু মুখস্থ ও কুরআনের পাতাতে।

এখন যদি কেউ বলে যে, সহীহায়নে বর্ণিত হুযায়ফা রাযিয়াল্লাহু আনহুর হাদীস, যেটাতে আমানত উঠিয়ে নেয়ার ধরন বর্ণনা করা হয়েছে এভাবেঃ
"মানুষ এক সময় ঘুমাবে। তার অন্তর থেকে আমানত উঠিয়ে নেয়া হবে। তখন একটি বিন্দুর মত চিহ্ন অবশিষ্ট থাকবে। এরপর সে আবার ঘুমাবে। তারপর আবার তুলে নেয়া হবে, তখন ফোস্কার মত তার চিহ্ন অবশিষ্ট থাকবে; যেমন একটা জ্বলন্ত অঙ্গারকে যদি তুমি পায়ের উপর রেখে দাও, আর এতে পায়ে ফোস্কা পড়ে, তখন তুমি সেটাকে ফোলা দেখবে। অথচ তার মধ্যে কিছুই থাকে না।"

তার উত্তরে বলা হবে: আমানত ও ঈমান উঠিয়ে নেয়া আর ইলম উঠিয়ে নেয়া এক বিষয় নয়।

কারণ এমনো লোক ঈমান আনে, যার ইলম কম। তো এই ধরনের (ইলমহীন) ঈমান তাদের অন্তর থেকে ঠিক সেভাবেই উঠে যাবে, যেভাবে বাছুর দেখে বনী ইসরাইল ঈমানহারা হয়েছিল।

পক্ষান্তরে যারা ঈমানের পাশাপাশি ইলম লাভ করেছে, তাদের অন্তর থেকে ঈমান উঠবে না। আর এই ধরনের ব্যক্তিরা কখনো ইসলাম থেকে বের হয়ে যায় না; কিন্তু বের হয়ে যায় তারাই, যারা শুধু কুরআন জানে বা শুধু ঈমান এনেছে (ইলম ছাড়া), এদের ঈমানই হারিয়ে যেতে পারে।

মূলত এটাই বাস্তবতা।

আমরা বেশিরভাগ তাদেরকেই মুরতাদ হিসেবে দেখতে পাই, যারা ইলম ও ঈমান ছাড়া কুরআন পড়ে বা ইলম ও কুরআন ছাড়া শুধু ঈমানদার।

কিন্তু যারা যারা কুরআন ও ঈমান লাভের পাশাপাশি ইলম অর্জন করেছে, এর অন্তর থেকে ঈমান উঠবে না।
আল্লাহই সর্বাধিক অবগত।

--[মাজমূ' ফতোয়া ইবনে তায়মিয়্যাহ, ৪/১১৮]

(শায়খ মুহাম্মাদ বিন উমার বাযমূল হাফিযাহুল্লাহ এর পেজ থেকে)
 

Share this page