- Joined
- Jan 3, 2023
- Threads
- 890
- Comments
- 1,044
- Reactions
- 9,990
- Thread Author
- #1
'বিচিত্র বোধের এ ভূবনা;
লক্ষকোটি মন
একই বিশ্ব লক্ষকোটি করে জানে
রূপে রসে নানা অনুমানে।
লক্ষকোটি কেন্দ্র তারা জগতের;
সংখ্যাহীন স্বতন্ত্র পথের
জীবনযাত্রার যাত্রী,
দিনরাত্রি
নিজের স্বাতন্ত্র্যরক্ষা-কাজে
একান্ত রয়েছে বিশ্বমাঝে।'
লক্ষকোটি মন
একই বিশ্ব লক্ষকোটি করে জানে
রূপে রসে নানা অনুমানে।
লক্ষকোটি কেন্দ্র তারা জগতের;
সংখ্যাহীন স্বতন্ত্র পথের
জীবনযাত্রার যাত্রী,
দিনরাত্রি
নিজের স্বাতন্ত্র্যরক্ষা-কাজে
একান্ত রয়েছে বিশ্বমাঝে।'
বিচিত্র এই ধরাধামে যত রকমের চেহারা আছে, তত রকমের মন আছে। এক জনের চেহারার সাথে যেমন অপরজনের চেহারার পরিপূর্ণ মিল থাকে না, তেমনি একজনের মনের সাথে অপরজনের মনের মিল না থাকাটাই স্বাভাবিক। জিভের স্বাদ এক এক জনের এক এক রকম। চোখের পছন্দ; রঙ-রূপও তেমনি সকলের কাছে এক নয়।
মনোবিজ্ঞানীরা বলেন, জীবনের সব ব্যাপারেই দুই ব্যক্তির মধ্যে আগ্রহের মিল হওয়া খুব দুর্লভ ব্যাপার।
সুতরাং তোমার যেই বল, তার মন সর্বদিক থেকে তোমার মনের মত নয়। তোমার অর্ধাঙ্গিনীও নয় সর্বদিক দিয়ে তোমার মন মত। তোমার ছেলেমেয়েরাও ভিন্নরূপ।
আদর্শ জীবন সবারই হয় না। একজন নবী, সাহাবী ও ওলীর জীবন আদর্শ জীবন। তা বলে কি সবাই তাঁদের মত হতে পারে?
আসিয়া, রহিমা, মারিয়াম, খাদিজা, আয়েশা, ফাতেমা, রমিসা প্রভৃতি নারীর জীবন আদর্শ জীবন। তা বলে কি সব নারীই তাঁদের কারো মত হতে পারবে? তোমার মন হয়তো চাইবে যে, তোমার অর্ধাঙ্গিনী তাঁদের কারো মত হোক। কিন্তু না হলে তো মন বিষ করে লাভ নেই বন্ধু! নসীহত কর, তরবিয়ত দাও । এ ছাড়া গাধা পিটিয়ে ঘোড়া তো করতে পার না তুমি।
একেবারে একশ' পারসেন্ট মনের মত বন্ধু কেউ পেয়েছে বলে দাবী করলে সে মিথ্যুক। তদনুরূপ স্ত্রীও। অনেক সময় আদর্শগত কলহ নিয়ে স্বামী যদি বলে, তুমি কেন আয়েশার মত নও? তাহলে স্ত্রী তার উত্তরে বলে, তুমি কেন নবীর মত নও? তুমি নবীর মত হলে আমি আয়েশার মত হতে পারতাম। স্বামী বলে, তুমি আয়েশার মত ব্যবহার দেখালে আমিও নবীর মত তোমাকে ভালোবাসতাম। আর তার মানে এই যে, আদর্শগত দিক দিয়ে উভয়েই অসম্পূর্ণ। কেউ কাউকে মেনে নিতে রাজী নয়। অথচ ছোট যদি বড়কে মেনে নেয়, তাহলে দাম্পত্য জীবনে অনেক সুখভোগ করা যায়। আর দুটি মন যদি দুধে-চিনির মত মিশে গিয়ে এক হয়, তাহলে তো বেহেশতী সুখের আশা করা যায় সেই দাম্পত্যে। স্বামী যদি ফেরাউন হয়, তাহলে স্ত্রীকে আসিয়া হতে বাধা কোথায়? স্বামী অধম হলে স্ত্রীর উত্তম হতে বাধা কিসের? সেই তো ছোট এবং লাভ তো তারই।
ভাই-বন্ধু যেই হোক না কেন, বড় যদি ছোটদেরকে পাত্তা না দেয়, তাহলে ছোটদেৱকে বাস্তবতা স্বীকার করে নিয়ে বড়কে মেনে নিতে হয়। যেহেতু বড়র বড় সাজা চলে, কিন্তু ছোটর বড় সাজা অন্যায়। আর এ ক্ষেত্রে ছোট জেদ ধরলে অশান্তি বেড়েই যায়।
আদম হতে দুনিয়ার শেষ মানুষটি পর্যন্ত কেউ কারো মত নয়। তোমার মতও কেউ নয়। তোমার খেয়াল-খুশী অনুযায়ী চলবে দুনিয়াতে এমন কেউ নয়। তোমার স্ত্রীর মতও কেউ নয়। তোমার স্ত্রীর মনমত তুমিও চলতে অপারগ। অতএব কেউ তোমার মনের বিপরীত চললে, তাতে দুঃখ কিসের বন্ধু? মহান আল্লাহ বলেন, “প্রত্যেকের জন্য একটি দিক আছে, সে সেদিকে অভিমুখ করবে।” – সূরা বাকারা, ২:১৪৮
হ্যাঁ, যথাসম্ভব একে অন্যের মনের কাছাকাছি হতে চেষ্টা কর। আর জেনে রেখো যে, সম্পূর্ণরূপে কেউ কারো মনের মত হতে পারবে না। আল্লাহর রসূল (স) বলেছেন, “তোমরা (প্রত্যেক বিষয়ে) কর্তব্যনিষ্ঠ রহ; আর তাতে কখনই সক্ষম হবে না।”
– সুখের সন্ধান, লেখক: শাইখ আব্দুল হামীদ ফাইজী আল মাদানী, ওয়াহীদিয়া ইসলামিয়া লাইব্রেরি