জামায়াতে ইসলামীর প্রতিষ্ঠাতা গুরু সাইয়েদ আবুল আলা মওদূদী আহলে সুন্নাত ওয়াল জামা'তের দৃষ্টিভঙ্গি ও তাদের আকীদা-বিশ্বাসের পরিপন্থী যেসব মন্তব্য করেছেন সেগুলোকে মওদূদী মতবাদ বলে আখ্যায়িত করা হয়।
(১) আল্লাহ তা'আলা সম্পর্কে মওদূদী আকীদাঃ
আল্লাহ তা'আলা যালেম। কেননা যেক্ষেত্রে নর ও নারীর অবাধ মেলামেশা রয়েছে, সেক্ষেত্রে ব্যাভিচারের কারণে আল্লাহর নির্দেশ রজম প্রয়োগ করা নিঃসন্দেহে জুলুম। (তাফহীমাতঃ ২/২৮১)
(২) ফেরেশতাদের সম্পর্কে মওদূদী আকীদাঃ
ফেরেশতারা ঐসব মাখলূকের মত যাদেরকে গ্রীক, ভারত ও অন্যান্য অঞ্চলের মুশরিকরা দেব-দেবী স্থির করেছে। (তাফহীমাত)
(৩) নবীগণ সম্পর্কে মওদূদী আকীদাঃ
অন্যদের কথাতো স্বতন্ত্র, প্রায়শই পয়গম্বরগণও তাদের কুপ্রবৃত্তির মারাত্মক আক্রমণের শিকার হয়েছেন। (তাফহীমাতঃ ২/১৯৫)
(৪) নবীজী(সাঃ) সম্পর্কে মওদূদী আকীদাঃ
রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম মানুষের উর্ধে নন এবং মানবীয় দূর্বলতা থেকেও মুক্ত নন। (তরজমানুল কুরআনঃ এপ্রিল ১৯৭৬)
আল্লাহ তা’য়ালার নিকট কাতর কন্ঠে এই আবেদন করুন, যে কাজের দায়িত্ব আপনাকে দেওয়া হয়েছিল, তা সম্পন্ন করার ব্যাপারে আপনার দ্বারা যে ভুল ত্রুটি হয়েছে কিম্বা তাতে যে অসম্পূর্ণতা রয়ে গেছে তা যেন তিনি ক্ষমা করে দেন।
[তাফহিমুল কোরআন (বাংলা) ১৯শ খন্ড, ২৮০পৃ. মুদ্রনে ওরিয়েন্টাল প্রেস, ঢাকা ১৯৮০ ইং; কোরআনের চারটি মৌলিক পরিভাষা(বাংলা) ১১২পৃ. ৮ম প্রকাশ, আধুনিক প্রকাশনী:জুন ২০০২]
(৫) কুরআনুল কারীম সম্পর্কে মওদূদী আকীদাঃ
"কুরআন অবতীর্ণ হওয়ার সময় এ শব্দগুলোর (ইলাহ, রব, দ্বীন, ইবাদত) যে মৌল অর্থ প্রচলিত ছিল, পরবর্তী শতকে তা ধীরে ধীরে পরিবর্তিত হতে থাকে। শেষ পর্যন্ত এক একটি শব্দ ব্যাপকতা হারিয়ে একান্ত সীমিত, বরং অস্পষ্ট অর্থের জন্য নির্দিষ্ট হয়ে পড়ে।" এক পৃষ্ঠা পরলিখেন- "এটা সত্য যে, কেবল এ চারটি মৌলিক পরিভাষার তাৎপর্যে আবরণ পড়ে যাওয়ার কারণেই কুরআনের তিন চতুর্থাংশের চেয়েও বেশি শিক্ষা এবং তার সত্যিকার স্পিরিটই দৃষ্টি থেকে প্রচ্ছন্ন হয়ে যায়।"
(কুরআন কী চার বুনিয়াদী ইসতিলাহেঃ ৮-১০)
(৬) হাদীস সম্পর্কে মওদূদী আকীদাঃ
বুখারী শরীফে বর্ণিত হযরত ইবরাহীম (আঃ) ও হযরত সারা (আঃ) এর ঘটনা সম্বন্ধে বলেন, "এটি একটি মিথ্যা নাটক।"
(রাসায়েল ও মাসায়েলঃ ৩/৩৬)
হাদীস তো কতিপয় মানুষ সুত্রে বর্ণিত হয়ে কতিপয় মানুষের কাছে পৌছেছে। কাজেই এসবের সত্যতা সম্বন্ধে নিশ্চিত বিশ্বাস জন্মিতে পারে না। বড়জোর ধারনা জন্মিতে পারে।
(তাফহীমাতঃ ১/৩৫৬)
(৭) উসূলে হাদীস সম্পর্কে মওদূদী আকীদাঃ
এ আধুনিক যুগে পূর্ব যুগের বাজে কথা কে শোনে?
(তরজমানুল কুরআন ৪র্থ সংখ্যাঃ ১১১)
(৮) সাহাবায়ে কিরাম সম্পর্কে মওদূদী আকীদাঃ
সাহাবায়ে কিরাম সত্যের মাপকাঠি বলে জানবে না এবং তাদের অনুসরন করবে না।
(দস্তুরে জামাতে ইসলামীঃ ৭)
(৯) দাড়ি সম্পর্কে মওদূদী আকীদাঃ
হাদীসে শুধু দাড়ি রাখার হুকুম আছে। সুতরাং পরিমাণ যাই হোক হাদীসের উপর আমল হয়ে যাবে।
(১০) তাকলীদ সম্পর্কে মওদূদী আকীদাঃ
আমার মতে দ্বীনী ইলমে বুৎপত্তি রাখেন এমন ব্যক্তির জন্য তাকলীদ (মাযহাবের অনুসরণ) শুধু না-জায়েয ও গোনাহ নয় বরং এর চেয়েও জঘণ্যতম।
(রাসায়েল ও মাসায়েলঃ ১/২৪৪)
উপরোক্ত আকীদাসমূহ ছাড়াও মাওলানা মওদুদীর আরো অনেক ভ্রান্ত আকীদা রয়েছে। নমুনা হিসেবে মাত্র কয়েকটি উল্লেখ করা হল।
মওদুদী ফেতনা সম্পর্কে আরো বিস্তারিত জানতে হলে পড়ুন:
১. ইতিহাসের কাঠগড়ায় হযরত মুয়াবিয়া (রাঃ) -জাস্টিস তাকী উসমানী (রশীদ কল্যান ট্রাস্ট)
২. মাওলানা মওদূদীর সাথে আমার সাহচার্যের ইতিবৃত্ত – মাওলানা মনজুর নোমানী (রহঃ) (ঐ)
৩. মওদূদী সাহেব ও ইসলাম -মুফতি রশীদ আহমাদ লুধীয়ানভী (রঃ) (দারুল উলুম লাইব্রেরী-৩৭,নর্থব্রুক হল রোড, বাংলাবাজার)
৪. মওদূদীর চিন্তাধারা ও মওদূদী মতবাদ -ইজহারে হক ফাউন্ডেশান; প্রাপ্তিস্থানঃ (দারুল উলুম লাইব্রেরী-৩৭,নর্থব্রুক হল রোড, বাংলাবাজার)
৫. ফিতনায়ে মওদুদীয়াত – মাওলানা যাকারিয়া (রহ.)
৬. ভুল সংশোধন -মাওলানা শামসুল হক ফরিদপুরী (রহ.)
৭. সতর্কবাণী -মাওলানা মোহাম্মাদুল্লাহ হাফেজ্জী হুজুর (রহ.)
৮. হক্ব বাতিলের চিরন্তন দ্বন্দ্ব- আল্লামা আহমাদ শফী, হাটহাজারী।
৯. ঈমান ও আক্বীদা -ইসলামিক রিসার্স সেন্টার, বসুন্ধরা।
১০. ফতোয়ায়ে দারুল উলূম (আংশিক)
১১. বিদেশী ও স্বদেশী ফেরাকে বাতেলাহ