যে ব্যক্তি বিনা ওজরে রমাযানের রোযা ত্যাগ করে সে ব্যক্তির দুটি কারণ হতে পারে; হয় সে তা ফরয বলে অস্বীকার করছে এবং তাকে একটি ইবাদত বলে স্বীকৃতি দিচ্ছে না, (নাঊযু বিল্লাহি মিন যালিক।) আর না হয় সে আলসেমি করে তা রাখছে না।
সুতরাং যদি সে রোযা ফরয বলে অস্বীকার করে ও বলে যে, রোযা শরীয়তে ফরয নয়, তাহলে সে কাফের ও মুরতাদ্দ্; যেমন এ কথা পূর্বে বলা হয়েছে। কারণ, সে দ্বীনের সর্ববাদিসম্মত এমন একটি ব্যাপারকে অস্বীকার করে যা আম-খাস সকলের পক্ষে জানা সহজ এবং যা ইসলামের একটি রুকন।
আর তার এই মুরতাদ্দ্ হওয়ার ফলে একজন মুরতাদ্দের মাল ও পরিবারের ব্যাপারে যা বিধান আছে তা কার্যকর হবে। সরকারের কাছে সে হত্যাযোগ্য অপরাধী বলে গণ্য হবে। তার গোসল-কাফন ও জানাযা হবে না এবং মুসলিমদের গোরস্থানে তাকে দাফন করাও যাবে না। অবশ্য যদি কেউ নওমুসলিম হওয়ার ফলে অথবা ইসলামী পরিবেশ ও উলামা থেকে দূরে থাকার ফলে এ ধরনের কথা বলে থাকে, তাহলে তার কথা ভিন্ন।
পক্ষান্তরে যদি কেউ আলসেমি করে রোযা না রাখে, তাহলে ভয়ানক কঠিন শাস্তি তার জন্য অপেক্ষা করছে।
আবূ উমামাহ বাহেলী (রাঃ) কর্তৃক বর্ণিত, তিনি বলেন, আমি শুনেছি আল্লাহর রসূল (সাল্লাল্লাহু আলাইহে ওয়াসাল্লাম) বলেছেন যে, ‘‘একদা আমি ঘুমিয়ে ছিলাম; এমন সময় (স্বপ্নে) আমার নিকট দুই ব্যক্তি উপস্থিত হলেন। তাঁরা আমার উভয় বাহুর ঊর্ধ্বাংশে ধরে আমাকে এক দুর্গম পাহাড়ের নিকট উপস্থিত করলেন এবং বললেন, ‘আপনি এই পাহাড়ে চড়ুন।’ আমি বললাম, ‘এ পাহাড়ে চড়তে আমি অক্ষম।’ তাঁরা বললেন, ‘আমরা আপনার জন্য চড়া সহজ করে দেব।’ সুতরাং আমি চড়ে গেলাম। অবশেষে যখন পাহাড়ের চূড়ায় গিয়ে পৌঁছলাম তখন বেশ কিছু চিৎকার-ধ্বনি শুনতে পেলাম। আমি জিজ্ঞাসা করলাম ‘এ চিৎকার-ধ্বনি কাদের?’ তাঁরা বললেন, ‘এ হল জাহান্নামবাসীদের চীৎকার-ধ্বনি।’ পুনরায় তাঁরা আমাকে নিয়ে চলতে লাগলেন। হঠাৎ দেখলাম একদল লোক তাদের পায়ের গোড়ালির উপর মোটা শিরায় (বাঁধা অবস্থায়) লটকানো আছে, তাদের কশগুলো কেটে ও ছিঁড়ে আছে এবং কশ বেয়ে রক্তও ঝরছে। নবী (সাল্লাল্লাহু আলাইহে ওয়াসাল্লাম) বলেন, আমি বললাম, ‘ওরা কারা?’ তাঁরা বললেন, ‘ওরা হল তারা; যারা সময় হওয়ার পূর্বে-পূর্বেই ইফতার করে নিত---।’’[1]
‘ওরা হল তারা; যারা সময় হওয়ার পূর্বে-পূর্বেই ইফতার করে নিত---।’ রোযা রাখার পরেও তাদের যদি ঐ অবস্থা হয়, তাহলে যারা পূর্ণ দিন মূলেই রোযা রাখে না, তাদের অবস্থা এবং যারা পূর্ণ মাসই রোযা রাখে না, তাদের অবস্থা যে কত করুণ, কত সঙ্গিন তা অনুমেয়!
মুস্তাফা মুহাম্মাদ আম্মারাহ তাঁর তারগীবের টীকায়[2] বলেন, ‘উক্ত হাদীসের ভাবার্থ এই যে, মহান আল্লাহ তাঁর নবী (সাল্লাল্লাহু আলাইহে ওয়াসাল্লাম)-কে রোযা ভঙ্গকারীদের আযাব সম্বন্ধে ওয়াকেফহাল করেছেন। তিনি দেখেছেন, তাদের সেই দুরবস্থা; তাদের আকার-আকৃতি ছিল বড় মর্মান্তিক ও নিকৃষ্ট। কঠিন যন্ত্রণায় তারা কুকুর ও নেকড়ের মত চিৎকার করছে। তারা সাহায্য প্রার্থনা করছে অথচ কোন সাহায্যকারী নেই। তাদের পায়ের শেষ প্রান্তে (গোড়ালির উপর মোটা শিরায়) জাহান্নামের আঁকুশি দিয়ে কসাইখানার যবাই করা ছাগলের মত তাদেরকে নিম্নমুখে ঝুলিয়ে রাখা হয়েছে। আর তাদের কশ বেয়ে মুখভর্তি রক্ত ঝরছে! আশা করি নাফরমান বেরোযাদার মুসলিম সম্প্রদায় এই আযাবের কথা জেনে আল্লাহর নিকট তওবা করবে এবং তাঁর সেই আযাবকে ভয় করে যথানিয়মে রোযা পালন করবে।’
ইমাম যাহাবী (রঃ) বলেন, ‘মুমিনদের নিকটে এ কথা স্থির-সিদ্ধান্ত যে, যে ব্যক্তি কোন রোগ ও ওজর না থাকা সত্ত্বেও রমাযানের রোযা ত্যাগ করে, সে ব্যক্তি একজন ব্যভিচারী ও মদ্যপায়ী থেকেও নিকৃষ্ট। বরং মুসলিমরা তার ইসলামে সন্দেহ পোষণ করে এবং ধারণা করে যে, সে একজন নাস্তিক ও নৈতিক শৈথিল্যপূর্ণ মানুষ।[3]
সুতরাং যদি সে রোযা ফরয বলে অস্বীকার করে ও বলে যে, রোযা শরীয়তে ফরয নয়, তাহলে সে কাফের ও মুরতাদ্দ্; যেমন এ কথা পূর্বে বলা হয়েছে। কারণ, সে দ্বীনের সর্ববাদিসম্মত এমন একটি ব্যাপারকে অস্বীকার করে যা আম-খাস সকলের পক্ষে জানা সহজ এবং যা ইসলামের একটি রুকন।
আর তার এই মুরতাদ্দ্ হওয়ার ফলে একজন মুরতাদ্দের মাল ও পরিবারের ব্যাপারে যা বিধান আছে তা কার্যকর হবে। সরকারের কাছে সে হত্যাযোগ্য অপরাধী বলে গণ্য হবে। তার গোসল-কাফন ও জানাযা হবে না এবং মুসলিমদের গোরস্থানে তাকে দাফন করাও যাবে না। অবশ্য যদি কেউ নওমুসলিম হওয়ার ফলে অথবা ইসলামী পরিবেশ ও উলামা থেকে দূরে থাকার ফলে এ ধরনের কথা বলে থাকে, তাহলে তার কথা ভিন্ন।
পক্ষান্তরে যদি কেউ আলসেমি করে রোযা না রাখে, তাহলে ভয়ানক কঠিন শাস্তি তার জন্য অপেক্ষা করছে।
আবূ উমামাহ বাহেলী (রাঃ) কর্তৃক বর্ণিত, তিনি বলেন, আমি শুনেছি আল্লাহর রসূল (সাল্লাল্লাহু আলাইহে ওয়াসাল্লাম) বলেছেন যে, ‘‘একদা আমি ঘুমিয়ে ছিলাম; এমন সময় (স্বপ্নে) আমার নিকট দুই ব্যক্তি উপস্থিত হলেন। তাঁরা আমার উভয় বাহুর ঊর্ধ্বাংশে ধরে আমাকে এক দুর্গম পাহাড়ের নিকট উপস্থিত করলেন এবং বললেন, ‘আপনি এই পাহাড়ে চড়ুন।’ আমি বললাম, ‘এ পাহাড়ে চড়তে আমি অক্ষম।’ তাঁরা বললেন, ‘আমরা আপনার জন্য চড়া সহজ করে দেব।’ সুতরাং আমি চড়ে গেলাম। অবশেষে যখন পাহাড়ের চূড়ায় গিয়ে পৌঁছলাম তখন বেশ কিছু চিৎকার-ধ্বনি শুনতে পেলাম। আমি জিজ্ঞাসা করলাম ‘এ চিৎকার-ধ্বনি কাদের?’ তাঁরা বললেন, ‘এ হল জাহান্নামবাসীদের চীৎকার-ধ্বনি।’ পুনরায় তাঁরা আমাকে নিয়ে চলতে লাগলেন। হঠাৎ দেখলাম একদল লোক তাদের পায়ের গোড়ালির উপর মোটা শিরায় (বাঁধা অবস্থায়) লটকানো আছে, তাদের কশগুলো কেটে ও ছিঁড়ে আছে এবং কশ বেয়ে রক্তও ঝরছে। নবী (সাল্লাল্লাহু আলাইহে ওয়াসাল্লাম) বলেন, আমি বললাম, ‘ওরা কারা?’ তাঁরা বললেন, ‘ওরা হল তারা; যারা সময় হওয়ার পূর্বে-পূর্বেই ইফতার করে নিত---।’’[1]
‘ওরা হল তারা; যারা সময় হওয়ার পূর্বে-পূর্বেই ইফতার করে নিত---।’ রোযা রাখার পরেও তাদের যদি ঐ অবস্থা হয়, তাহলে যারা পূর্ণ দিন মূলেই রোযা রাখে না, তাদের অবস্থা এবং যারা পূর্ণ মাসই রোযা রাখে না, তাদের অবস্থা যে কত করুণ, কত সঙ্গিন তা অনুমেয়!
মুস্তাফা মুহাম্মাদ আম্মারাহ তাঁর তারগীবের টীকায়[2] বলেন, ‘উক্ত হাদীসের ভাবার্থ এই যে, মহান আল্লাহ তাঁর নবী (সাল্লাল্লাহু আলাইহে ওয়াসাল্লাম)-কে রোযা ভঙ্গকারীদের আযাব সম্বন্ধে ওয়াকেফহাল করেছেন। তিনি দেখেছেন, তাদের সেই দুরবস্থা; তাদের আকার-আকৃতি ছিল বড় মর্মান্তিক ও নিকৃষ্ট। কঠিন যন্ত্রণায় তারা কুকুর ও নেকড়ের মত চিৎকার করছে। তারা সাহায্য প্রার্থনা করছে অথচ কোন সাহায্যকারী নেই। তাদের পায়ের শেষ প্রান্তে (গোড়ালির উপর মোটা শিরায়) জাহান্নামের আঁকুশি দিয়ে কসাইখানার যবাই করা ছাগলের মত তাদেরকে নিম্নমুখে ঝুলিয়ে রাখা হয়েছে। আর তাদের কশ বেয়ে মুখভর্তি রক্ত ঝরছে! আশা করি নাফরমান বেরোযাদার মুসলিম সম্প্রদায় এই আযাবের কথা জেনে আল্লাহর নিকট তওবা করবে এবং তাঁর সেই আযাবকে ভয় করে যথানিয়মে রোযা পালন করবে।’
ইমাম যাহাবী (রঃ) বলেন, ‘মুমিনদের নিকটে এ কথা স্থির-সিদ্ধান্ত যে, যে ব্যক্তি কোন রোগ ও ওজর না থাকা সত্ত্বেও রমাযানের রোযা ত্যাগ করে, সে ব্যক্তি একজন ব্যভিচারী ও মদ্যপায়ী থেকেও নিকৃষ্ট। বরং মুসলিমরা তার ইসলামে সন্দেহ পোষণ করে এবং ধারণা করে যে, সে একজন নাস্তিক ও নৈতিক শৈথিল্যপূর্ণ মানুষ।[3]
[1] (ইবনে খুযাইমাহ, সহীহ, ইবনে হিববান, সহীহ, বাইহাকী ৪/২১৬, হাকেম, মুস্তাদ্রাক ১/৪৩০, সহীহ তারগীব, আলবানী ৯৯১নং)
[2] (২/১০৯)
[3] (মাজমূ’ ফাতাওয়া, ইবনে তাইমিয়্যাহ ২৫/২২৫, আল-কাবায়ের, যাহাবী ৪৯পৃঃ, ফিকহুস সুন্নাহ ১/৩৮৪, ফাইযুর রাহীমির রাহমান, ফী আহকামি অমাওয়াইযি রামাযান, আব্দুল্লাহ ত্বাইয়ার ২০-২১পৃঃ, তাওজীহাতুন অফাওয়াএদ লিসসা-য়েমীনা অসসায়েমাত ৭৪পৃঃ)
রমাযানের ফাযায়েল ও রোযার মাসায়েল
শাইখ আব্দুল হামীদ আল-ফাইযী আল-মাদানী
শাইখ আব্দুল হামীদ আল-ফাইযী আল-মাদানী