‼️ পোস্টটি সুন্দরভাবে দেখতে এখানে ক্লিক করুন।‼️

পৃথিবীকে সমতল বলা লোকদের খণ্ডন - পর্ব ৪

shafinchowdhury

Salafi

Salafi User
Threads
39
Comments
54
Reactions
681
Credits
203
بسم الله الرحمن الرحيم، الحمد لله رب العالمين والصلاة والسلام على من لا نبي بعد.
ফেসবুকে সমতল পৃথিবীবাদী এক ব্যক্তি দাবি করেছে ইমাম কাহতানী আল আন্দালুসি (রাহিমাহুল্লাহ) তার নুনিয়্যাহ তে পৃথিবীকে সমতল বলেছেন। সেই নুন্যিয়াহ এর শরাহ প্রচার করছে শাইখ স্বলেহ আস-সুহাইমী (হাফিযাহুল্লাহ) এর।
যেই বইটি সে তার পোস্টে প্রচার করছে (স্ক্রিনশট দ্রষ্টব্য) সেই বইটির মুসান্নিফ শায়েখ সালেহ আস্-সুহাইমী (হাফিযাহুল্লাহ) নিজেই ফ্ল্যাট আর্থ থিওরীর বিরুদ্ধে উক্ত বইয়ে প্রায় ৪-৫ পৃষ্ঠা আলোচনা করেছেন। ইমাম কাহতানীর কবিতাটি উদ্ধৃত করার পর শায়েখ সালেহ আস্-সুহাইমী (হাফিযাহুল্লাহ) বলেন,

"মুহানদিস (প্রকৌশলী/বিজ্ঞানী) বলতে এখানে তাকে বুঝানো হয়েছে যে তার অনুমানভিত্তিক প্রকৌশল বিদ্যার উপর ভিত্তি করে তারকারাজির ব্যাপারে গায়েবী ইলম রাখার দাবি করে যেটা প্রায়োগিক বিজ্ঞান নির্ভর নয়, যেটা বাস্তবতা ভিত্তিক নয়, যেটা বস্তুগত বিজ্ঞান যেমন পদার্থবিজ্ঞান, রসায়ন, ইলেক্ট্রনিক্স ইত্যাদি এর সাথে সম্পর্কিত নয়।
(অর্থাৎ এর ব্যাখায় তিনি বুঝাচ্ছেন এটা বাস্তব বিজ্ঞান ভিত্তিক ইলম নয় যেটা আমরা পরীক্ষা-নিরীক্ষা করে গবেষণার মাধ্যমে পাই, বরং গবেষণা বা প্রায়োগিক কাজ ছাড়াই অনুমান ও আক্বলি-যুক্তিনির্ভর ইলম এবং তার মাধ্যমে গায়েব জানার দাবি করা - অনুবাদক)

তেমনিভাবে, এর দ্বারা কতিপয় দার্শনিকদেরও বুঝানো হতে পারে। এখানে মুহানদিস (প্রকৌশলী) দ্বারা তিনি বর্তমান সময়ে প্রকৌশলীদের বুঝাচ্ছেন না, যারা কিনা তাদের বিদ্যায় পারদর্শী। তাদের ক্ষেত্রে কোনো আপত্তি নেই। বরং প্রকৌশল বিদ্যা তো এমন উপকারী বিদ্যাসমূহের অন্তর্ভুক্ত যেটা প্রয়োজনীয়। মুসলিমদের উপর এই বিদ্যা আয়ত্ত করা ওয়াজিব, আর এসব বিদ্যার ক্ষেত্রে অন্যদের উপর নির্ভরশীল হওয়া উচিত নয়।
যেকেউ ইলমুল গায়িব রাখার দাবি করবে সে প্রকৌশলী, জ্যোতিষী যা-ই হোক না কেন, সে নিশ্চিতভাবে নাস্তিক- কাফির.
কারণ, সে এমন কিছু দাবি করছে যেটা আল্লাহ তার নিজের জন্য নির্দিষ্ট করেছেন (অর্থাৎ গায়েবী ইলম কেবল আল্লাহর জন্য খাস).
আল-মুনাজ্জিম: মুনাজ্জিম (জ্যোতিষী) হলো এমন ব্যক্তি যে নক্ষত্র এবং চাঁদের উদয়-অস্ত যাওয়ার জ্ঞান দ্বারা ইলমুল গায়িব (ভবিষ্যতে কি হবে তা আগেই জেনে যায়) রাখার দাবি করে। সে নক্ষত্রসমূহের দ্বারা ভবিষ্যতের ঘটনার সাথে যোগসূত্র স্থাপন করে।"

المهندس هو الذي يشتغل بادعاء علم الغيب فيما يتعلق بالنجوم بناء على هندسته التخرصية التي لا تعتمد على علم تجريبي، ولا تستند إلى حقيقة، ولا ترجع إلى علم مادي معروف كالفيزياء والكيمياء والإليكترونيات ونحو ذلك.
وكذلك قد يطلق على بعض الفلاسفة، وليس المقصود بالمهندس في هذه المنظومة المتعارف عليه اليوم، ممن يتقن صنعته، فهذا لا اعتراض عليه، بل الهندسة من العلوم النافعة التي قد تتعين، ويجب على المسلمين أن يتقنوها، ولا يكونوا عالة على غيرهم في هذه العلوم. ومدعي علم الغيب سواء سموه مهندسا أو منجما فإنه ملحد كافر؛ لأنه يدعي ما استأثر الله به، وقد تقدم الكلام على ذلك عند كلام الناظم على الكهان والسحرة
والمنجمين: والمنجم هو الذي يدعي علم الغيب بدعوى معرفته لمطالع النجوم والقمر، ويربط علم المغيبات بالنجوم.
القطوف الدواني في شرح نونية القحطاني, ص ٣٨١

আল ক্বাতুফুদ দাওয়ান্যি ফী শারহি নুন্যিয়াতিল ক্বাহাতানী লিশ-শাইখ স্বলেহ আস-সুহাইমী, পৃষ্ঠা ৩৮১.

অতঃপর ইমাম কাহতানী (রাহিমাহুল্লাহ) এর পৃথিবীকে গোলাকার বলতে অস্বীকৃতি জানানোর বিষয়ে তিনি লিখেছেন:
"সম্ভবত যখন নাজিম (রাহিমাহুল্লাহ) পৃথিবী গোল হবার বিষয়টি অস্বীকার করেন তখন তিনি কিছু ভৌগলিক এবং জ্যোতিঃশাস্ত্রীয় গবেষণাগুলোর সমন্ধে অজ্ঞাত ছিলেন যেগুলো পৃথিবী গোলাকার হবার ইঙ্গিত দেয়, যা তখন সেসব বিদ্যায় স্বীকৃত ছিল। পৃথিবী গোলাকৃতি হবার ইজমাটি শাইখুল ইসলাম ইবনু তাইমিয়্যাহ (রাহিমাহুল্লাহ) হতে বর্ণিত হয়েছে।
পৃথিবীর গোলাকৃতি হওয়া এর পৃষ্ঠের সমতলতা, স্থিরতা, মসৃণতা, প্রশস্ততা এবং এর উপরে থাকা পাহাড়ের অনড় থাকার বিষয়টির সাথে সাংঘর্ষিক নয়। আর পৃথিবীর ঘূর্ণনশীল এই বক্তব্যটির ক্ষেত্রে বলা যায় যে এটি কুরআনের বাহ্যিক অর্থের সাথে সাংঘর্ষিক: যেখানে এটাকে নিশ্চিতভাবে স্থির এবং সূর্যকে নিশ্চিতভাবে ঘূর্ণনশীল বলা হয়েছে। আমাদের শাইখ আব্দুল আজিজ বিন বায (রাহিমাহুল্লাহ) এর একটি মূল্যবান রিসালাহ রয়েছে যাতে এই প্রসঙ্গে তার প্রতিবেদন আছে।
এটি গোলাকার হবার বিষয়টি শাইখুল ইসলাম ইবনু তাইমিয়্যাহ এবং অন্যান্য আলেমদের হতে বর্ণিত হয়েছে। পৃথিবীর গোলাকৃতি মূলত ডিম্বাকার হবার নিকটবর্তী। তবে গোলাকার হওয়া সত্ত্বেও এর বৃহদায়তন, বড়ত্ব এবং বিশালাকৃতির দরুন এটি মানুষের জন্য সমতল হবার ক্ষেত্রে প্রতিবন্ধক নয়। এটির নির্দিষ্ট কেন্দ্র রয়েছে যার উপর এটি অধঃস্থ।"

ويبدو أن الناظم رحمة الله عندما أنكر كروية الأرض لم يصل إلى علمه بعض الدراسات الجغرافية والفلكية التي دلت على كروية الأرض؛ الأمر الذي أصبح مسلما به. وقد حكى الإجماع على كرويتها شيخ الإسلام ابن تيمية رحمة الله (٢). القطوف الدواني وكرويتها لا تتعارض مع تسطيحها ومع ثباتها وتمهيدها وانبساطها وكون الجبال رواسي عليها. أما القول بدوران الأرض فيقال فيه: إنه معارض لظاهر القرآن: أنها قرار وأن الشمس تجري. ولشيخنا الشيخ عبد العزيز بن باز رحمه الله رسالة نفيسة في تقرير ذلك. وأما كرويتها فكما قرره شيخ الإسلام ابن تيمية وغيره من أهل العلم؛ فالأرض أقرب ما تكون كروية بيضاوية. وهذا لا يمنع أن تكون مسطحة للناس نظرا لسعتها وعظمها وكبر حجمها. ولها مركز معين ترتكز عليه.
القطوف الدواني في شرح نونية القحطاني، ص ٣٨٢

আল ক্বাতুফুদ দাওয়ান্যি ফী শারহি নুন্যিয়াতিল ক্বাহাতানী লিশ-শাইখ স্বলেহ আস-সুহাইমী, পৃষ্ঠা ৩৮২.

পাঠক লক্ষ্য করে দেখুন, এখানে উক্ত ব্যক্তি অনুবাদে মুনাজ্জিম পরিভাষার অনুবাদ করেছে জ্যোতির্বিদ, অথচ মুনাজ্জিম দ্বারা মূলত জ্যোতিষী উদ্দেশ্য, জ্যোতির্বিদ নয়। যেটা শাইখ তার শরাহ তে স্পষ্ট করেছেন -
"মুনাজ্জিম (জ্যোতিষী) হলো এমন ব্যক্তি যে নক্ষত্র এবং চাঁদের উদয়-অস্ত যাওয়ার জ্ঞান দ্বারা ইলমুল গায়িব (ভবিষ্যতে কি হবে তা আগেই জেনে যায়) রাখার দাবি করে। সে নক্ষত্রসমূহের দ্বারা ভবিষ্যতের ঘটনার সাথে যোগসূত্র স্থাপন করে।"

আর মুহানদিস বলতেও বর্তমানে প্রচলিত মুহানদিস নয় বরং পূর্বেকার যুগে যারা অনুমানভিত্তিক বিদ্যার ভিত্তিতে সৌরজগত, তারকারাজির ব্যাপারে ইলমুল গায়েব রাখার দাবি করতো। তাদের কাজ নিন্দার যোগ্য এজন্যই যে এগুলো কোনো প্রমাণ, গবেষণা বা বাস্তবিক বিজ্ঞানের পরীক্ষা-নিরীক্ষা লব্ধ ফলাফল ছিল না, বরং নিছক অনুমানের ভিত্তিতে পাওয়া ছিল। তাই ইমাম কাহতানী (রাহিমাহুল্লাহ) এর নিন্দাকে শায়েখও সমর্থন করেছেন এবং এর দ্বারা কাদের উদ্দেশ্য ব্যাখাও করেছেন। কিন্তু কেউ যদি পরীক্ষা-নিরীক্ষা লব্ধ ফলাফলের উপর ভিত্তি করে বলে তাহলে সেটা গায়েবী ইলমের/অদৃশ্য জ্ঞানের দাবি নয় বরং তাদের কাজের ভিত্তিতে সে বলেছে। সে ভুল বা সঠিক উভয়ই হতে পারে। কিন্তু সে অনুমানভিত্তিকভাবে ভবিষ্যত জানার দাবি করেনি, বরং পরীক্ষা-নিরীক্ষার ফলে প্রাপ্ত সম্ভাবনার কথা বলেছে। দুটোর ভেতর ফারাক বিদ্যমান।
শীঘ্রই এই কবিতায় পৃথিবীকে সমতল বলার অংশটির ব্যাপারে আহলুস সুন্নাহর আরো একাধিক উলামাদের মতামত এনে খণ্ডন করবো ইন শা আল্লাহ। আপাতত প্রতিপক্ষের দেয়া বই থেকেই তার দলিলের অসারতা দেখালাম। ইহা সংক্ষিপ্ত ইলযামি জবাব।

লেখা: সাফিন চৌধুরী
Facebook
Telegram
 

Attachments

  • 462855067_1544819649754762_8162436886111885482_n.webp
    194.9 KB · Views: 3
  • 462902348_1544825826420811_8000984797326128303_n.webp
    203.2 KB · Views: 1
  • 462929230_1544819706421423_2596301557537059920_n.webp
    211 KB · Views: 2
  • 463057583_1544825736420820_6041309454378094446_n.webp
    326.9 KB · Views: 1
  • 462759781_1544825773087483_2687648749967035480_n.webp
    200.4 KB · Views: 1

Share this page